অষ্টম শ্রেণী ইতিহাস| ষষ্ঠ অধ্যায়|২ ও ৩ নম্বরের প্রশ্ন ও উত্তর| ভারতের জাতীয় আন্দোলনের আদর্শ ও বিবর্তন

অষ্টম শ্রেণী ইতিহাস| ষষ্ঠ অধ্যায়|২ ও ৩ নম্বরের প্রশ্ন ও উত্তর|ভারতের জাতীয় আন্দোলনের আদর্শ ও বিবর্তন

অষ্টম শ্রেণী ইতিহাস ষষ্ঠ অধ্যায় ২ ও ৩উত্তর| 

প্রিয় বন্ধুরা 

অষ্টম শ্রেণী ইতিহাস| ষষ্ঠ অধ্যায়|২ ও ৩ নম্বরের প্রশ্ন ও উত্তর| ভারতের জাতীয় আন্দোলনের আদর্শ ও বিবর্তন আজকে আলোচনা করব|তোমরা West Bengal Class 8 History পেয়ে যাবে|অষ্টম শ্রেণীর ইতিহাস প্রশ্ন ও উত্তর|অষ্টম শ্রেণী ইতিহাস ষষ্ঠ অধ্যায় ২ নম্বরের প্রশ্ন ও উত্তর|West Bengal Class 3rd Eight| অষ্টম শ্রেণী ইতিহাস ষষ্ঠ অধ্যায় ৩ নম্বরের প্রশ্ন ও উত্তর|Class 8 History Question and Answer|Class 8 History 6th chapter Suggestion WBBSE|Class 8 History 6th chapter Notes WBBSE |ইতহাস প্রশ্নোত্তর|ইতিহাস মক টেস্ট| itihas proshno o uttor|History Mock Test|


এছাড়াও তোমরা পাবে অষ্টম শ্রেণী ষষ্ঠ অধ্যায় ভারতের জাতীয় আন্দোলনের আদর্শ ও বিবর্তন বহুবিকল্প ভিত্তিক সংক্ষিপ্ত অতিসংক্ষিপ্ত এবং রচনাধর্মী প্রশ্ন উত্তর|MCQ, Very Short Question, Short Questions, Descriptive Question and Answer এগুলি তোমরা যারা পশ্চিমবঙ্গের VIII History Examination এর জন্য পরিক্ষা দিতে যাচ্ছ অথবা পশ্চিমবঙ্গ অষ্টম শ্রেণীতে পড়াশুনা করছো তাদের ইতিহাস পরীক্ষার জন্য এই ২ নম্বরের প্রশ্নগুলি খুবই গুরুত্বপূর্ন এবং তোমরা যারা অষ্টম শ্রেণী ইতিহাস (ষষ্ঠ অধ্যায় ভারতের জাতীয় আন্দোলনের আদর্শ ও বিবর্তন) ৩ নম্বরের প্রশ্ন এবং উত্তর চাইছো, তারা নীচের দেওয়া প্রশ্নউত্তর গুলি ভালো করে পড়ে নিতে পারবে।


অষ্টম শ্রেণী ইতিহাস| ষষ্ঠ অধ্যায়|২ ও ৩ নম্বরের প্রশ্ন ও উত্তর|ভারতের জাতীয় আন্দোলনের আদর্শ ও বিবর্তন

1.ভারতের উপর প্রথম বিশ্বযুদ্ধের প্রভাব  সংক্ষেপে লেখাো।

উ:-  ভারতের উপর প্রথম বিশ্বযুদ্ধের প্রভাবগুলি ছিল

ভারতের ঔপনিবেশিক সরকারের সামরিক খাতে ব্যয় অনে বেড়ে গিয়েছিল। ফলে প্রয়াোজনীয় জিনিসের মূল্যবৃদ্ধি ঘটেছিল

i. খাদ্যশস্যের উৎপাদন কমে যায়।

ii.বিশ্বযুদ্ধের সময়ে ভারতের অনেক মানুষ দুর্ভিক্ষ এবং সংক্রাম ব্যাধির কারণে প্রাণ হারায়। প্রথম বিশ্বযুদ্ধে বহু ভারতীয় সৈন্য প্রাণ হারায়। বিশ্বযুদ্ধের ফতে অর্থনীতিতে যে সংকট দেখা দিয়েছিল তা ভারতের সামাজি জীবনকে বিপর্যস্ত করে দেয় এবং ব্রিটিশ শাসনের উপর মান আরও বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে।


2. দক্ষিণ আফ্রিকার আন্দোলন মহাত্মা গান্ধির রাজনৈতিক জীবনে কী প্রভাব ফেলেছিল?

উ:- মহাত্মা গান্ধির রাজনৈতিক জীবনের সূচনা হয় দক্ষিণ আফ্রিকা

i. ভারতবর্ষে নেতৃত্ব দেওয়ার আগে মহাত্মা গান্ধি দক্ষিণ আফ্রিকায় বর্ণবৈষম্য বিরাোধী আন্দোলন করেছিলেন।

ii. সম্পূর্ণ অহিংস উ পায়ে পরিচালিত মহাত্মা গান্ধির এই। আন্দোলন সত্যাগ্রহ’ নামে খ্যাতিলাভ। করেছে। মহাত্মা গান্ধি ভারতে। ব্রিটিশবিরাোধী আন্দোলনে সত্যাগ্রহ আন্দোলন করেছিলেন।

iii. দক্ষিণ আফ্রিকায় গান্ধিজি আফ্রিকার আন্দোলনের সুবাদে গান্ধিজির একটি সর্বভারতীয় ভাবমুর্তি তৈরি হয়েছিল।


3. গান্ধিজির স্বরাজ ভাবনা কেমন ছিল?

উ:- ভারতীয় রাজনীতিতে নতুন আদর্শ ও নতুন পথের দিশারি ছিলেন মাোহনদাস করমচাঁদ গান্ধি। এই নতুন আদর্শ ছিল স্বরাজ বা রামরাজ্য এবং নতুন পথ ছিল সত্যাগ্রহ।

i. গান্ধিজির ‘স্বরাজ ভাবনা : স্বরাজ’সম্বন্ধে বিভিন্ন ভারতীয় রাজনীতিকের ভিন্ন ভিন্ন ধারণা ছিল।

ii. পাশ্চাত্য বিরাোধিতা : গান্ধিজির মতে, পাশ্চাত্যের আধুনিক শিল্পসমাজ ও সভ্যতা সাধারণ ভারতবাসীর শত্রু। ঔপনিবেশিক শাসনব্যবস্থায় ভারতে যেসব পাশ্চাত্য উপাদান আমদানি হয়েছে বা অতি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নাবলি দ্বারা চিহ্নিত।


4. গান্ধিজির সত্যাগ্রহ আদর্শের মূল ভাবনা কী ছিল ?

উ:- দক্ষিণ আফ্রিকায় থাকার সময় বিভিন্ন গ্রন্থ পাঠ করে সত্যাগ্রহ আদর্শ গড়ে তাোলেন। রাজনৈতিক আন্দোলনের থি ছিল এই সত্যাগ্রহ।

i. সত্যাগ্রহ আদর্শের মূল ভাবনা : সাধারণ অর্থে সত্যের আগ্রহকে সত্যাগ্রহ বলে। গান্ধিজির মতে, যা সত্য এবং ন্যায়স সই বিশ্বাসে অনড় থেকে শান্ত ও নিরস্ত্রভাবে সংযম ও অহি ঙ্গে অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করে প্রতিপক্ষের হৃদয় জয় কর গান্ধিজি মনে করতেন, মানুষের জীবনের চূড়ান্ত লক্ষ্য হল নুসন্ধান করা। তাই রাজনৈতিক আন্দোলনেরও চূড়ান্ত উদ্দেশ্য হ চিত সত্যের প্রতি আগ্রহ ও নিষ্ঠা।


5. মহাত্মা গান্ধির পাশ্চাত্য ও যন্ত্রনির্ভর সভ্যতাবিরাোধী ধারণার সীমাবদ্ধতাগুলি কী ছিল?

উ:-  মহাত্মা গান্ধির পাশ্চাত্য ও যন্ত্রনির্ভর সভ্যতা বিরাোধী ধারণাকে সমর্থন করেননি। কারণ গান্ধিজির এই ধারণার মধ্যে স্ববিরাোধিতা ছিল সীমাবদ্ধতা

i. সংবাদপত্র ব্যবহার : একদিকে গান্ধিজি বিদেশি যন্ত্রনির্ভর সভ্যতার বিরাোধী ছিলেন অথচ এই বক্তব্য প্রচারের উদ্দেশ্যে তিনি সংবাদপত্রকে ব্যবহার করেছিলেন। এই মুদ্রণযন্ত্র ছিল যন্ত্রসভ্যতার দান।

ii.রেলগাড়ি ব্যবহার : গান্ধিজি যাতায়াতের জন্য রেলগাড়ি ব্যবহার করতেন যা ছিল যন্ত্রসভ্যতার দান।

 

6 গান্ধিজি সম্বন্ধে ভারতের সাধারণ মানুষের ধারণা কেমন ছিল?

উ:-  ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসে মাোহনদাস করমচাঁদ গান্ধি ছিলেন একজন স্মরণীয় ব্যক্তিত্ব। ১৯১৫ খ্রিস্টাব্দে তিনি দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে ভারতে আসেন। এরপর তিনি রাজনীতিতে যাোগ দিলে শুরু হয় গান্ধি যুগ। তাঁর সম্বন্ধে গড়ে ওঠে বিভিন্ন কিংবদন্তি।

i. ক্ষমতাবান সাধু : অনেক ভারতবাসীর কাছে তিনি ক্ষমতাবান সাধুর মতাো ছিলেন। এজন্য তার আহ্বানে সাধারণ মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে আন্দোলনে যাোগ দেয়।

ii. দেবতা : উপজাতিদের কাছে তিনি দেবতার ন্যায় পূজ্য ছিলেন। তারা বিশ্বাস করত গান্ধিজির নাম করলে ব্রিটিশ পুলিশের গুলি তাদের ক্ষতি করতে পারবে না।

iii. রাজা : কৃষকেরা বিশ্বাস করত জমিদারের শাোষণ থেকে গান্ধিজি তাদের রক্ষা করবেন। আসামের চা-শ্রমিকেরা বাগানের কাজ ছেড়ে চলে আসাকে গান্ধির নির্দেশ বলে মনে করে। অন্ত্রের উপজাতিরা মনে করে ব্রিটিশ শাসন শেষ হয়ে গান্ধিরাজ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। গান্ধিজি সম্বন্ধে অতিকথন গুজবের ভিত্তিতে সৃষ্টি হয়। এর ফলে গান্ধিজি সাধারণ ভারতবাসীর কাছে ‘অতিমানব’ হয়ে


7 গান্ধিজি কীভাবে সাধারণ মানুষের আপনজ হয়ে ওঠেন?

উ:- গান্ধিজি দক্ষিণ আফ্রিকার মতাো ভারতেও সাধারণ মানুষের আপনজন হয়ে উঠেছিলেন।

i. আচরণ : গান্ধিজি তাতে বাোনা ধুতি হাঁটুর উপরে পরতেন। একাংশ গায়ে জড়াতেন। সরল হিন্দিতে সাধারণ মানুষের সঙ্গে বলতেন। হিন্দু লাোকধর্মের প্রতীক ব্যবহার করতেন।

ii.কর্মসূচি : কোথাও কোনাো সমস্যা হলে গান্ধিজি সেখানে যেতেন। সাধারণ মানুষের সঙ্গে তাদের সমস্যা নিয়ে আলাোচনা করতেন। সমাধানের জন্য তাদের সহযাোগিতা চাইতেন। এভাবে গান্ধিজি সাধারণ মানুষের ‘আপনজন’ হয়ে ওঠেন।


৪. গান্ধিজির মহিমা প্রচারের ক্ষেত্রে গুজবের কী ভূমিকা ছিল?

উ:- ভারতের ইতিহাসে মাোহনদাস করমচাঁদ গান্ধি একজন স্মরণীয় ব্যক্তিত্ব। পরাধীন ভারতবাসীর কাছে তিনি ছিলেন দেবতার মতাো। কৃষকরা ভাবতেন তিনি জমিদারি শাোষণকে বন্ধ করবেন। চা-শ্রমিকরাও গান্ধিজির আদর্শ মেনে চলতেন। কোনাো কোনাো মানুষের কাছে তিনি ছিলেন ক্ষমতাবান সাধুর তুল্য। বাংলার উপজাতি শ্রেণির মানুষরা বিশ্বাস


আরও পড়ুন......


9. গান্ধি যুগ' বলতে কী বাোঝাো ?

উ:- মাোহনদাস করমচাঁদ গান্ধি কর্মসূত্রে দক্ষিণ আফ্রিকায় রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা লাভ করেন। ১৯১৫ খ্রিস্টাব্দে ভারতে ফিরে আসার পর তাঁর রাজনৈতিক জীবন শুরু হয়। তিনটি আলিক আন্দোলনে সাফল্যলাভের পর তিনি জাতীয় নেতায় পরিণত হন। ১৯১৯ (সত্যাগ্রহ সভা) থেকে ১৯৪৭ (স্বাধীনতা) খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত সময়কালে ভারতের রাজনীতি গান্ধিজিকেন্দ্রিক ছিল। তিনিই ছিলেন ভারতীয় রাজনৈতিক আন্দোলনের প্রধান নেতা। তার নেতৃত্বে বিভিন্ন আন্দোলন পরিচালিত হয়। গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে তার সিদ্ধান্তই ছিল চূড়ান্ত।


10. ভারতীয় রাজনীতির ইতিহাসে ১৯১৯ খ্রিস্টাব্দের । গুরুত্ব লেখাো।

উ:- জাতীয় কংগ্রেস প্রতিষ্ঠার পর তার নেতৃত্বের প্রভাবে ভারতীয় রাজনীতি বিভিন্ন ধারায় প্রবাহিত হয়। এই নিরিখে ১৯১৯ খ্রিস্টাব্দ বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে।

i. গান্ধিজির নেতৃত্ব : ১৯১৭ খ্রিস্টাব্দে চম্পারন, ১৯১৮ খ্রিস্টাব্দে আমেদাবাদ ও খেড়া সত্যাগ্রহের পর গান্ধিজি সর্বভারতীয় নেতায় পরিণত হন। রাওলাট আইনের প্রতিবাদে তিনি সত্যাগ্রহ সভা প্রতিষ্ঠা করেন। কংগ্রেস-খিলাফৎ সমন্বয় কমিটি গঠন করেন।

ii. উপনিবেশবিরাোধী সংগ্রাম : রুশ বিপ্লবের প্রভাবে ভারতে বিভিন্ন বামপন্থী সংগঠন গড়ে ওঠে। জালিয়ানওয়ালাবাগ হত্যাকাণ্ড ঘটে। মন্ট-ফোর্ড আইন পাস হয়। কৃষক, শ্রমিক ও অন্যান্য শ্রেণি উপনিবেশ বিরাোধী সংগ্রামে শামিল হয়। জাতীয় কংগ্রেসের নরমপন্থী ও চরমপন্থী নেতৃত্বের অবসান ঘটে। ভারতের রাজনীতিতে এক নতন যুগ, গাভিন গ কম।

11. চরকা সম্বন্ধে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বক্তব্য কী ছিল?

উ:- চরকা হল সুতাো কাটার যন্ত্র। চরকা বিষয়ে গান্ধিজির সঙ্গে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ভিন্ন ধারণা ও বক্তব্য ছিল।

i. অসম প্রতিযাোগী : সুতাোকলে তৈরি সুতাোর সঙ্গে চরকার সুতে অসম প্রতিযাোগী । চরকার সুতাো মাোটা, খরচ ও সময় দুই-ই বেশি লাগে স্বরাজ  চরকায় সুতাো তৈরির মাধ্যমে স্বরাজ লাভ সম্ভব নয়।


12 রাওলাট আইন বলতে কী বাোঝায় ?

উ:-  প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় ভারত রক্ষা আইন চালু ছিল। যুদ্ধশেষে এই আইনের মেয়াদ শেষ হয়। যুদ্ধোত্তর অশান্ত পরিস্থিতি মাোকাবিলার জন্য সরকার স্যার সিডনি রাওলাটের প্রতিবেদনের ভিত্তিতে এক দমনমূলক আইন পাস করে (মার্চ, ১৯১৯ খ্রি.)।

i. রাওলাট আইন : সরকার বিরাোধী যে-কোনাো প্রচার দণ্ডনীয় বলে বিবেচিত হবে। যে-কোনাো ব্যক্তিকে সন্দেহভাজন মনে হলে তাকে গ্রেফতার করা যাবে। যে-কোনাো বাড়ি পরাোয়ানা ছাড়া তল্লাশি করা যাবে। গ্রেফতার হওয়া ব্যক্তিদের বিনা বিচারে ২ বছর আটক রাখা যাবে। অপরাধীদের বিশেষ আদালতে বিচার করা হবে। তাদের আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযাোগ থাকবে না। সাক্ষ্যপ্রমাণ ছাড়াই বিচারকদের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত বলে গণ্য হবে।


13. জালিয়ানওয়ালাবাগ হত্যাকাণ্ড’ বলতে কী বাোঝায়?

উ:- প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর সেনাবাহিনী থেকে ছাঁটাই, খাদ্যশস্য ও অন্যান্য দ্রব্যের মূল্যবৃদ্ধি প্রভৃতি কারণে পঞ্জাব অশান্ত হয়ে ওঠে। এই পরিস্থিতিতে দমনমূলক রাওলাট আইন এবং সত্যাগ্রহী সৈফুদ্দিন কিচলু ও সত্যপালের গ্রেফতারির বিরুদ্ধে জালিয়ানওয়ালাবাগে প্রতিবাদ সভা আহূত হয়।


আরও পড়ুন......

14. অসহযাোগ আন্দোলনে সাধারণ মানুষের ভূমিকা লেখাো।

উ:- গান্ধিজির নেতৃত্বে অহিংস আদর্শের ভিত্তিতে পরিচালিত প্রথম গণ আন্দোলন ছিল অসহযাোগ আন্দোলন।

i. কৃষক : এই আন্দোলনের অন্যতম কর্মসূচি ছিল কর বর্জন। তাই কৃষকেরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে এই আন্দোলনে যাোগ দেয়। রাজস্থান, উ:- প্রদেশ, বিহার, বাংলাদেশ, গুজরাট, অবিভিন্ন স্থানে আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে।


15. অসহযাোগ আন্দোলন কেন প্রত্যাহার করা হয় ?

উ:- গান্ধিজির নেতৃত্বে অহিংস আদর্শের ভিত্তিতে পরিলক্ষিত প্রথম সর্বভারতীয় গণ আন্দোলন ছিল অসহযাোগ আন্দোলন। বিভিন্ন কারণে গান্ধিজি এই আন্দোলন প্রত্যাহার করেন।

i. চৌরি চৌরা ঘটনা : আন্দোলন চলার সময় প্রদেশের গাোরক্ষপুর জেলার চৌরিচৌরায় একটি সহিংস ঘটনা ঘটে (৫ ফেব্রুয়ারি, ১৯২২ খ্রি.)। এখানে জনতা-পুলিশ সংঘর্ষে উত্তেজিত জনতা থানায় আগুন লাগিয়ে দেয়। ফলে ২২ জন পুলিশকর্মী অগ্নিদগ্ধ হয়ে মারা যান। গান্ধিজি মনে করেন, আন্দোলন অহিংস আদর্শ হারিয়েছে। সরকারি দমননীতি সরকার আন্দোলনকারীদের উপর দমনপীড়ন চালায়। জনসভা নিষিদ্ধ, জমি বাজেয়াপ্ত করে। আন্দোলনকারীদের গ্রেফতার করে।

ii. মুসলিম সমর্থন প্রত্যাহার : তুরস্কে কামাল পাশার নেতৃত্বে প্রজাতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়। ফলে খিলাফৎ আন্দোলন প্রাসঙ্গিকতা হারায়। মুসলিমরা আন্দোলন থেকে সরে যায়। এইসব কারণের পরিপ্রেক্ষিতে গান্ধিজি অসহযাোগ আন্দোলন প্রত্যাহার করেন।


16. চৌরিচৌরা ঘটনা কী ?

উ:- ১৯২২ খ্রিস্টাব্দের ৫ ফেব্রুয়ারি প্রদেশের গাোরক্ষপুর জেলার চৌরিচৌরা নামক স্থানে ভগবান আহির নামে এক স্বেচ্ছাসেবকের উপর পুলিশ অকথ্য অত্যাচার করে এবং বিনা প্ররাোচনায় জনতার উপর গুলিবর্ষণ করে। এর ফলে জনতা উত্তেজিত হয়ে চৌরিচৌরা থানায় আগুন ধরিয়ে দেয়, এতে ২২ জন পুলিশকর্মী মারা যায়। এটি ‘চৌরিচৌরা ঘটনা নামে পরিচিত। এই ঘটনার জন্য গান্ধিজি অসহযাোগ আন্দোলন প্রত্যাহার করেছিলেন। চৌরিচৌরা শহিদ স্মারক অসহযাোগ আন্দোলনের আদর্শ ছিল অহিংসা ও সত্যাগ্রহ। এই সহিংস ঘটনাকে গান্ধিজি আন্দোলনের আদর্শচ্যুতি বলে মনে করেন সেজন্য এই ঘটনার পর তিনি আন্দোলন প্রত্যাহার করেন

17. অসহযাোগ আন্দোলন প্রত্যাহারের প্রতিক্রিয়া কী হয়েছিল ?

উ:- চৌরিচৌরার সহিংস ঘটনার জন্য গান্ধিজি অসহযাোগ আন্দোলন প্রত্যাহার করেন। এই ঘটনার জন্য বিভিন্ন ব্যক্তিত্ব মন্তব্য করেন।

i. ভারতীয় নেতাদের প্রতিক্রিয়া : গান্ধিজির আন্দোলন প্রত্যাহারের সিদ্ধান্তকে সুভাষচন্দ্র বসু ‘দুর্ভাগ্যজনক’ বলেন। মাোতিলাল নেহরু বলেন একটা জায়গার কিছু মানুষের পাপের জন্য গান্ধিজি সারা দেশবাসীকে শাস্তি দিলেন । চিত্তরঞ্জন দাশ বলেন, “সব সুযাোগ চলে

ii. অন্যান্যদের প্রতিক্রিয়া : সুমিত সরকারের মতে, ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামে এটাই ছিল প্রথম গণ আন্দোলন। আর কুপল্যান্ডের মতে, তিলক যা পারেননি, গান্ধিজি তা করতে সক্ষম হন। জুডিথ ব্রাউন-এর মতে, গান্ধিজি এই আন্দোলনের মধ্য দিয়ে কংগ্রেস সংগঠনকে গ্রামাণ্ডলে ছড়িয়ে দেন। আন্দোলনের হঠাৎ সমাপ্তি জনমনে হতাশা সৃষ্টি করলেও দেশবাসী আর্থ-সামাজিক কর্মসূচি সম্বন্ধে সচেতন হয়। জনগণের চেতনা, আত্মবিশ্বাস ও সংগ্রামের প্রেরণা বৃদ্ধি পায়।


18. স্বরাজ্য দল কেন গঠন করা হয়?

উ:- ১৯২২ খ্রিস্টাব্দের ২৫ ফেব্রুয়ারি অসহযাোগ আন্দোলনের সমাপ্তি ঘাোষিত হয়। এর ফলে কংগ্রেসের নেতাদের একাংশের মধ্যে হতাশা ও ক্ষোভ সৃষ্টি হয়। এই বিক্ষুব্ধ নেতারা স্বরাজ্য দল প্রতিষ্ঠা করেন (১ জানুয়ারি, ১৯২৩ খ্রি.)।

i. ক্ষোভ : অসহযাোগ আন্দোলনের হঠাৎ সমাপ্তি জনমনে ও নেতৃত্বের মধ্যে ক্ষোভ ও হতাশা সৃষ্টি করে। জাতীয় নেতারা কারারুদ্ধ


আরও পড়ুন......


19. আন্দোলনের মূল দাবিগুলি কী ছিল?

উ:- অহিংস অসহযাোগ আন্দোলনের ব্যর্থতা ও গান্ধিজির জেল হওয়ার ফলে কংগ্রেস সংগঠনের মধ্যে বিবাদ তৈরি হয় এবং চিত্তরঞ্জন দাশ ও মাোতিলাল নেহরুর নেতৃত্বে কংগ্রেস-খিলাফৎ স্বরাজ্য’ দল তৈরি হয়। এই দলের অনুগামীদের স্বরাজ্যপন্থী বলা হত।


20. গান্ধিজি কীভাবে আইন অমান্য আন্দোলনের সূচনা করেছিলেন?

উ:-  গান্ধিজি ১৯৩০ খ্রিস্টাব্দের ১২ মার্চ গুজরাটের সবরমতী আশ্রম থেকে ডান্ডির উদ্দেশ্যে পদযাত্রা শুরু করেন। কাভি গান্ধিজি ১৯৩০ খ্রিস্টাব্দের ৬ এপ্রিল ডান্ডির সমুদ্রতীর থেকে লবণ তুলে আইন অমান্য আন্দোলনের সূচনা করেন।


21.  ভারতে লবণ সত্যাগ্রহ বা আইন অমান্য আন্দোলন কেন শুরু হয়?

উ:- গান্ধিজির পরিচালিত সর্বভারতীয় দ্বিতীয় অহিংস আন্দোলন ছিল লবণ সত্যাগ্রহ বা আইন অমান্য আন্দোলন। অসহযাোগ আন্দোলনের হঠাৎ সমাপ্তি জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করে। এক দশকে পরিস্থিতির বদল হয়েছিল। তাই গান্ধিজি ১৯৩০ খ্রিস্টাব্দে অপর একটি গণ আন্দোলনের ডাক দেন। ক্ষে কারণসমূহ এই আন্দোলনের বিভিন্ন কারণ ছিল।  

i. পূর্ণ স্বরাজ : কংগ্রেসের লাহাোর অধিবেশনে (১৯২৯ খ্রি.) পূর্ণ স্বরাজ’-এর প্রস্তাব পাস হয়। ২৬ জানুয়ারি প্রতীকী স্বাধীনতা দিবস পালিত হয়। ফলে জনমানসে বিপুল উদ্দীপনার সার হয়।

ii. সাইমন কমিশন : সাইমন কমিশনবিরাোধী বিক্ষোভের সময় বিভিন্ন শহরে ধর্মঘট, প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ হয়। ভারতীয়রা কমিশনের কোনাোরকম সহযাোগিতা করেনি। তাই ইংরেজ সরকার কী ধরনের শাসনসংস্কার করবে সে বিষয়ে সন্দেহ ছিল।

iii. সর্বদলীয় বৈঠকের ব্যর্থতা : ভারতসচিব লর্ড বার্কেহেডের বিদ্রুপের জবাবে ভারতীয়রা সর্বদলীয় সম্মেলন করে। নেহরু রিপাোর্টের খসড়া সংবিধান পেশ করা হয়। কিন্তু জিন্নার সংশাোধনী প্রস্তাব বাতিল হলে জিন্না সম্মেলন ত্যাগ করেন। ফলে সর্বদলীয় সম্মেলন ব্যর্থ হয়।

iv. বামপন্থা : ১৯২৫ খ্রিস্টাব্দে ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯২৭ খ্রিস্টাব্দে এই পার্টি মজদুর ও কৃষক শাখা, ছাত্রশাখা গড়ে তুলে রাজনীতিতে প্রভাব বিস্তার করে।

v. ভগৎ সিং-এর ফাসি : লাহাোর ষড়যন্ত্র মামলায় বিপ্লবী ভগৎ সিং-এর ফাসি হয়। এই ঘটনা দেশের যুবসমাজকে আলাোড়িত করে।

vi. মহামন্দা : ১৯২৯ খ্রিস্টাব্দে অর্থনৈতিক জগতে মহামন্দা দেখা দেয়। এর প্রভাবে ভারতের অর্থনীতিও বিপর্যস্ত হয়। নিত্য ব্যবহার্য দ্রব্য লবণের উপরেও সরকার কর বসায়। লবণের ব্যাবসা ইংরেজদের একচেটিয়া হয়ে ওঠে।

vii. প্রত্যক্ষ কারণ : গান্ধিজি ১১ দফা প্রস্তাব নিয়ে সরকারের সঙ্গে আলাোচনার প্রচেষ্টা করেন। সরকার তা অগ্রাহ্য করে। অগত্যা গান্ধিজি ডান্ডি অভিযান করেন। ডান্ডির সমুদ্র উপকূলে তিনি লবণ আইন ভঙ্গ করলে দেশব্যাপী আইন অমান্য আন্দোলন শুরু হয় ৬ এপ্রিল, ১৯৩০ খ্রিস্টাব্দে।


23 আইন অমান্য আন্দোলনের সময়ে অন্ত্রের কোথায়, কার নেতৃত্বে কৃষক আন্দোলন হয়েছিল? কে অন্ত্রের কৃষক আন্দোলন : এই কৃষক আন্দোলনের নেতৃত্ব দাও ?

উ:- আইন অমান্য আন্দোলনে কৃষকশ্রেণি অংশগ্রহণ করে। কৃষক আন্দোলনগুলি স্থানীয় প্রেক্ষিত অনুসারে পরিচালিত হয়।

i. আন্দোলনের কেন্দ্র : অন্ত্রের উপকূল অঞলনেলাোর, কয়া ও গুন্টুর জেলায় এই সময় কৃষক আন্দোলন হয়।

ii. নেতৃত্ব : দুদ্ধিবালা বালরাম কৃয় নিয়ার নামে এক তেলেগু কবি এইভাবে কৃষক আন্দোলন জাতীয় আন্দোলনের অংশ হয়ে ওঠে। কৃষকেরা রাজনৈতিক চেতনা লাভ করে।


24. আইন অমান্য আন্দোলনে শ্রমিকশ্রেণির ভূমিকা আলাোচনা করাো ?

উ:- গান্ধিজির নেতৃত্বে যে সর্বভারতীয় গণ আন্দোলনগুলি পরিচালিত , তারমধ্যে অন্যতম ছিল লবণ সত্যাগ্রহ বা আইন অমান্য আন্দোলন। তাই লবণের উপর কর বসানাোকে কেন্দ্র করে গান্ধিজি আর-একটি আন্দোলনের ডাক দেন।

i. শ্রমিক ধর্মঘট : ১৯৩০ খ্রিস্টাব্দে গান্ধিজি ডান্ডির বেলাভূমি থেকে একমুঠো লবণ সংগ্রহ করেন। এইভাবে তিনি ইংরেজ সরকারের লবণ আইন ভঙ্গ করেন। এই আইনভঙ্গ ছিল প্রতীকী। এর সাথে সাথে সারা দেশব্যাপী আইন অমান্য আন্দোলন শুরু হয়।

ii. মহারাষ্ট্র: গান্ধিজির গ্রেফতারের পর মহারাষ্ট্রের শাোলাপুরের বস্ত্রশিল্পের শ্রমিকেরা ধর্মঘট শুরু করে (৭ মে)। বামপন্থা প্রভাবিত এই শ্রমিকেরা শাোলাপুরে সরকারি প্রশাসনকে নিশ্চিহ্ন করে সমান্তরাল প্রশাসন গড়ে তাোলে। সাধারণ মানুষ ধর্মঘটী শ্রমিকদের পাশে দাঁড়ায়। 

iii.বাংলা : বাংলাদেশেও সীমিত পরিমাণে শ্রমিক আন্দোলন হয়। বালি পাটকলের শ্রমিকেরা ধর্মঘট করে। হাওড়া স্টেশনের কুলিরা কাজ বন্ধ করে দেয়।

iv. অন্যান্য রাজ্য : করাচি বন্দরের শ্রমিকেরা ধর্মঘট করে বন্দর অচল করে দেয়। মাদ্রাজের বাকিংহাম বস্ত্রশিল্পের শ্রমিকেরা ধর্মঘট করে। বিহারের খনিশ্রমিকেরাও ধর্মঘটের পথ অবলম্বন করে। আশা করা গিয়েছিল, বিশ্বমন্দার প্রভাব ভারতের সংগঠিত শ্রমিকদের আন্দোলনে যুক্ত করবে কিন্তু তা হয়নি।


39 ভারত ছাড়াো আন্দোলনের সময় কোথায়, কোথায়, কীভাবে জাতীয় সরকার’ গড়ে ওঠে ?

উ:-  ক্রিপস মিশনের ব্যর্থতার পর গান্ধিজি ‘হরিজন' পত্রিকায় ইংরেজদের ভারত ছাড়ার পরামর্শ দেন। ভারত ছাড়াো আন্দোলনের রূপরেখা গড়ে তাোলেন। এই কর্মসূচির অংশ ছিল সমান্তরাল প্রশাসন গড়ে তাোলা।


আরও পড়ুন......



File Details

 

File Name/Book Name

অষ্টম শ্রেণী ইতিহাস| তৃতীয় অধ্যায়|২ ও ৩ নম্বরের প্রশ্ন ও উত্তর

File Format

PDF

File Language

Bengali

File Size

130 KB

File Location

GOOGLE DRIVE

Download Link

Click Here to Download PDF File



Join Telegram... Members



Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url