অষ্টম শ্রেণী ইতিহাস|চতূর্থ অধ্যায়|২ ও ৩ নম্বরের প্রশ্ন ও উত্তর|উপনিবেশিক শাসনের প্রতিক্রিয়া সহযোগিতা ও বিদ্রোহ
অষ্টম শ্রেণী ইতিহাস চতূর্থ অধ্যায় ২ ও ৩ উত্তর |
প্রিয় বন্ধুরা
অষ্টম শ্রেণী ইতিহাস|চতূর্থ অধ্যায়|২ ও ৩ নম্বরের প্রশ্ন ও উত্তর|উপনিবেশিক শাসনের প্রতিক্রিয়া সহযোগিতা ও বিদ্রোহ|আজকে আলোচনা করব|তোমরা West Bengal Class 8 History পেয়ে যাবে|অষ্টম শ্রেণীর ইতিহাস প্রশ্ন ও উত্তর|অষ্টম শ্রেণী ইতিহাস চতূর্থ অধ্যায় ২ নম্বরের প্রশ্ন ও উত্তর|West Bengal Class 3rd Eight| অষ্টম শ্রেণী ইতিহাস চতূর্থ অধ্যায় ৩ নম্বরের প্রশ্ন ও উত্তর|Class 8 History Question and Answer|Class 8 History 4th chapter Suggestion WBBSE|Class 8 History 4th chapter Notes WBBSE|ইতহাস প্রশ্নোত্তর|ইতিহাস মক টেস্ট|itihas proshno o uttor|History Mock Test|
এছাড়াও তোমরা পাবে অষ্টম শ্রেণী চতূর্থ অধ্যায় উপনিবেশিক শাসনের প্রতিক্রিয়া সহযোগিতা ও বিদ্রোহ থেকে বহুবিকল্প ভিত্তিক সংক্ষিপ্ত অতিসংক্ষিপ্ত এবং রচনাধর্মী প্রশ্ন উত্তর|MCQ, Very Short Question, Short Questions, Descriptive Question and Answer এগুলি তোমরা যারা পশ্চিমবঙ্গের VIII History Examin -ation এর জন্য পরিক্ষা দিতে যাচ্ছ অথবা পশ্চিমবঙ্গ অষ্টম শ্রেণীতে পড়াশুনা করছো তাদের ইতিহাস পরীক্ষার জন্য এই ২ নম্বরের প্রশ্নগুলি খুবই গুরুত্বপূর্ন এবং তোমরা যারা অষ্টম শ্রেণী ইতিহাস (চতুর্থ অধ্যায় উপনিবেশিক শাসনের প্রতিক্রিয়া সহযোগিতা ও বিদ্রোহ) ৩ নম্বরের প্রশ্ন এবং উত্তর চাইছো, তারা নীচের দেওয়া প্রশ্নউত্তর গুলি ভালো করে পড়ে নিতে পারবে।
অষ্টম শ্রেণী ইতিহাস|চতূর্থ অধ্যায়|২ ও ৩ নম্বরের প্রশ্ন ও উত্তর|উপনিবেশিক শাসনের প্রতিক্রিয়া সহযোগিতা ও বিদ্রোহ
1. ভারতে পাশ্চাত্য শিক্ষাবিস্তারের ফলাফল সম্পর্কে লেখাো ?
উ:- উনবিংশ শতকে ভারতে পাশ্চাত্য শিক্ষাবিস্তারের ফলাফল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
i.ভারতীয়দের মধ্যে জাতীয়তাবাোধের বিকাশ : পাশ্চাত্য শিক্ষার প্রসারের ফলে ভারতীয়দের মধ্যে জাতীয়তাবাোধের বিকাশ ঘটেছিল। জাতীয়তাবাদ ও উদারনৈতিক আদর্শে উদ্দীপ্ত ভারতীয়রা নিজেদের স্বার্থ সুরক্ষিত করার জন্য ইংরেজদের বিরুদ্ধে সংগ্রামে অবতীর্ণ হয়েছিল।
ii.মধ্যবিত্ত শ্রেণির উদ্ভব : পাশ্চাত্য শিক্ষার প্রসারের ফলে ভারতে ইংরেজি শিক্ষিত মধ্যবিত্ত শ্রেণির উদ্ভব হয়েছিল। ভারতীয়দের এক অংশ চাকুরিলাভের জন্য পাশ্চাত্য শিক্ষাগ্রহণ করেছিল।
iii.সমাজসংস্কার আন্দোলন : পাশ্চাত্য শিক্ষার প্রভাবে উনিশ শতকে সমাজসংস্কার আন্দোলন হয়েছিল। রাজা রামমাোহন রায়, ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর প্রমুখরা ভারতীয় সমাজ থেকে সতীদাহ প্রথা, বাল্যবিবাহ, বহুবিবাহ দূর করে বিধবাবিবাহ, নারীশিক্ষা প্রভৃতির প্রসারের জন্য আন্দোলন করেছিলেন।
iv.নারীশিক্ষার প্রসার : ভারতীয় সমাজে বাল্যবিবাহ, পর্দাপ্রথা, রক্ষণশীল মানসিকতা নারীশিক্ষা প্রসারের পথে প্রধান বাধা ছিল। উনিশ শতকে ইংরেজ সরকার, খ্রিস্টান মিশনারি ও কয়েকজন প্রগতিশীল সাকি সবের জন্য সচেষ্ট হয়েছিলেন।
2. ঔপনিবেশিক সমাজে কাদের মধ্যবিত্ত ভদ্রলাোক বলা ?
উ:-মধ্যবিত্ত ঔপনিবেশিক শাসনকালে ভারতীয় সমাজে পরিবর্তন ঘটেছিল। তখন আর্থিক সচ্ছলতার ক্ষেত্রে যাদের অবস্থান ছিল মাঝামাঝি স্তরে, তাদের মধ্যবিত্ত’ বলা হত। ভদ্রলাোক : আবার উচ্চবর্ণের হিন্দু সম্প্রদায়ভুক্ত মধ্যবিত্তদের ভদ্রলাোক বলা হত।
i. মধ্যবিত্ত ভদ্রলাোক : ব্রিটিশ আমলে ভারতে আর্থিক দিক থেকে মাঝামাঝি স্তরের উচ্চবর্ণের হিন্দুদের মধ্যবিত্ত ভদ্রলাোক’ বলা হত। এই নবাোদিত মধ্যবিত্ত শ্রেণি ইংরেজ শাসনের উগ্র সমর্থক এবং পৃষ্ঠপাোষক ছিল।
3. ইংরেজশাসনের বিরুদ্ধে কেন মধ্যবিত্তরা অসন্তুষ্ট হয় ?
উ:- মধ্যবিত্ত শ্রেণি একসময় ইংরেজ শাসনের সমর্থক ছিল। কিন্তু বিভিন্ন কারণে এই শ্রেণি ইংরেজদের প্রতি অসন্তুষ্ট হয়ে ওঠে।
i. বেকারত্ব ও বঞ্চনা : বহুসংখ্যক স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হওয়ায় শিক্ষিতের হার বেড়ে যায়। সেই অনুপাতে চাকরি না থাকায় বেকারত্ব বাড়ে। আবার যাোগ্য ভারতীয়রা সরকারি পদলাভে বঞিত হয়। এই বেকারত্ব ও বনা মধ্যবিত্তদের অসন্তুষ্ট করে।
ii. শাোষণ : স্কুলে শিক্ষিত মধ্যবিত্তদের কাছে ইংরেজ শাসনের শাোষণমূলক দিকটি ফুটে ওঠে। দাদাভাই নৌরজির লেখাও দারিদ্র্য ও ভারতে ব্রিটিশের অপশাসন’গ্রন্থে সম্পদের বহির্গমন তত্ত্বটি ফুটিয়ে তাোলা হয়।
iii. শাসন : ইংরেজ সরকারের বিভিন্ন দমনমূলক আইন ও কঠোর শাসন অধিকাংশ ভারতবাসীর মতাো মধ্যবিত্ত শ্রেণিকেও অসন্তুষ্ট করে।
4. ভারতে ঔপনিবেশিক সরকার ও ভারতীয়দের ইংরেজি শিক্ষার প্রয়াোজনীয়তা কী ছিল ?
উ:- ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির আমলে ভারতে ইংরেজি শিক্ষা চালু হয়েছিল। এতে সরকার ও ভারতীয়দের ভিন্ন ভিন্ন প্রয়াোজন ছিল। সরকারের প্রয়াোজন: ঔপনিবেশিক সরকার বুঝতে পেরেছিল যে, শাসন সংক্রান্ত কাজকর্ম চালানাোর জন্য ইংরেজি-জানা লাোকের প্রয়াোজন। আবার সুদূর ইংল্যান্ড থেকে লাোক আনার খরচও অনেক বেশি। তাই তারা ভারতীয়দের ইংরেজি শিক্ষায় শিক্ষিত করতে চেয়েছিলেন।ঔপনিবেশিক শিক্ষাব্যবস্থা
i. ভারতীয় প্রয়াোজন : ঔপনিবেশিক আমলে ভারতীয়রা মনে করতেন যে, ইংরেজি শিখলে তাদের ও তাদের ছেলেদের ভবিষ্যৎ তৈরি হবে এবং চাকরি পেতে সুবিধা হবে।
5. উনবিংশ শতকের ভারতেসমাজ ও শিক্ষাসংস্কারকেরা ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক আদর্শের প্রতি আস্থাবান ছিলেন কেন?
উ:- ঊনবিংশ শতকের ভারতে সমাজ ও শিক্ষাসংস্কারকেরা সাধারণত ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক আদর্শের প্রতি আস্থাবান ছিলেন। সংস্কারকরা ছিলেন মূলত ইংরেজি শিক্ষায় শিক্ষিত। ঔপনিবেশিক সরকার থাকার ফলে তারা পাশ্চাত্য জ্ঞান অর্জন করেছিলেন। তা ছাড়া তাদের অনেকে চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের সুফল পেয়েছিলেন। ভারতের সমাজ ও শিক্ষাসংস্কারকদের ঔপনিবেশিক সরকারের সাহায্য ও সহযাোগিতা প্রয়াোজন ছিল এবং তারা তা পেয়েছিলেন।
আরও পড়ুন......
- মুঘল সাম্রজ্যের পতনের কারনগুলি আলোচনা কর
- বক্সার যুদ্ধের কারনগুলি আলোচনা কর
- পলাশির যুদ্ধের কারনগুলি আলোচনা কর
6. উনিশ শতকের বাংলার সমাজসংস্কার আন্দোলনের বৈশিষ্ট্য কী ছিল?
উ:-সমাজসংস্কার আন্দোলনের বৈশিষ্ট্য উনিশ শতকের বাংলার সমাজসংস্কার আন্দোলনের বৈশিষ্ট্য হল—
i. নারীদের অবস্থার উন্নতির জন্য আন্দোলন : উনিশ শতকের বাংলার সমাজসংস্কারকরা সমাজে নারীদের অবস্থার উন্নতির জন্য আন্দোলন করেছিলেন।
ii. সমাজে প্রচলিত কুসংস্কারের বিরুদ্ধে আন্দোলন : তৎকালীন সমাজে সতীদাহ প্রথা, গঙ্গাসাগরে সন্তান বিসর্জন, জাতিভেদ, অস্পৃশ্যতা প্রভৃতি নানা কুসংস্কার প্রচলিত ছিল। সমাজসংস্কারকরা এইসব কুসংস্কারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছিলেন।
7. ভারতে জাতীয়তাবাোধ বিকাশের ক্ষেত্রে সংবাদপত্রের ভূমিকা লেখাো ?
উ:- ভারতে জাতীয়তাবাোধ বিকাশের ক্ষেত্রে সংবাদপত্রের প্রভাব উল্লেখযাোগ্য ছিল।
i. সংবাদপত্র : বিভিন্ন সংবাদপত্র জাতীয়তাবাোধ জাগরণের জন্য প্রচার চালায়। এগুলির নাম হল- সমাচার দর্পণ, বেঙ্গল গেজেট, সম্বাদ কৌমুদী, সংবাদ প্রভাকর, সংবাদ ভাস্কর, তত্ত্ববাোধিনী, হিন্দু প্যাট্রিয়ট, পাইওনিয়ার, অমৃতবাজার পত্রিকা, সাোমপ্রকাশ, হিন্দু
ii. অবদান: এইসব সংবাদপত্রগুলি সরকারি নীতির সমালাোচনা ভারতীয়দের আশা-আকাঙ্ক্ষা ও দাবিসমূহ প্রচার করে। এইসব সংবাদপত্রগুলি জাতীয় জনমানসে ঔপনিবেশিক শাসনবিরাোধী জাতীয় চেতনার বিকাশে সহায়তা করেছিল।
8. রাজা রামমাোহন রায় কোন্ কোন্ প্রথার বিরাোধিতা করেছিলেন?
উ:- ভারতীয় সমাজসংস্কারকদের মধ্যে রাজা রামমাোহন রায় অগ্রগণ্য।
i. কুপ্রথা : তিনি তৎকালীন হিন্দুসমাজে প্রচলিত কুপ্রথাগুলির বিরাোধিতা করেছিলেন। মূর্তিপূজা, পুরাোহিততন্ত্র, বহুঈশ্বর -বাদের বিরুদ্ধে তিনি সাোচ্চার হন। সতীদাহ প্রথা বন্ধ করার জন্য রামমাোহন রায় আন্দোলন করেছিলেন।
9. সতীদাহ প্রথা কী ?
উ:- সতীদাহ প্রথা পূর্বে হিন্দুসমাজে সতীদাহ প্রথা প্রচলিত ছিল। সতীদাহ বলতে বাোঝায় মৃত স্বামীর শবদাহ করার সময় একই চিতায় তার বিধবা স্ত্রীকে দাহ করা। একে সহমরণ প্রথাও বলা হয়। সতীদাহ প্রথা রদ রাজা রামমাোহন রায়ের প্রচেষ্টায় ১৮২৯ খ্রিস্টাব্দে লর্ড উইলিয়ম বেন্টিঙ্ক সতীদাহ প্রথা নিষিদ্ধ বলে ঘাোষণা করেন।
10. নারীশিক্ষা বিস্তারে বিদ্যাসাগর নিয়েছিলেন?
উ:- নারীশিক্ষা বিস্তারে ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছিলেন।
i. নারীশিক্ষা: মেয়েরা যাতে শিক্ষার আলাোয় আসতে পারে তার জন্য বেথুন সাহেবের সাথে যৌথ উদ্যোগে কলকাতায় মেয়েদের জন্য বেথুন স্কুল তৈরি করেছিলেন। তিনি বাংলার বিভিন্ন জায়গায় বেশ কিছু মেয়েদের স্কুল তৈরি করেছিলেন এবং যার মধ্যে অনেকগুলির খরচাই তিনি নিজে বহন করতেন। এই সমস্ত স্কুলগুলিতে অনেক ছাত্রী পড়াশাোনা করত। এইভাবে বিদ্যাসাগর নারীশিক্ষা বিস্তারে উদ্যোগী হন।
11. বিদ্যাসাগরের শিক্ষাসংস্কারমূলক কার্যাবলিগুলি কী ছিল ?
উ:- সংস্কৃত কলেজে শিক্ষকতা করার সময় ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর শিক্ষাসংস্কারের বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছিলেন— ঙ্গে সংস্কারসমূহ
i. তিনি সংস্কৃত কলেজে ব্রাত্মণ ও বৈদ্য পরিবারের ছাত্রদের সাথে কায়স্থ পরিবারের ছাত্রদের পড়বার সুযাোগ করে দেন। 2 তিনি সংস্কৃত শিক্ষার পাশাপাশি ইংরেজি শিক্ষাচর্চার উপরেও জোর দেন। তিনি ইংরেজি ভাষায় লেখা আধুনিক গণিতের চর্চা সংস্কৃত কলেজে শুরু করেন। সেই সময় বাংলাভাষায় শিশুপাঠ্য বই ছিল না। এজন্য তিনি বর্ণপরিচয় ও বাোধাোদয় রচনা করেন। এ ছাড়া ব্যাকরণ গ্রন্থ উপক্রমণিকা, বেতাল পঞ্চবিংশতি, শকুন্তলা, সীতার বনবাস ইত্যাদি গ্রন্থ অনুবাদ করেন। তিনি প্রচলিত পয়ার ছন্দ থেকে বাংলাভাষাকে আরও বলিষ্ঠ করেন।
আরও পড়ুন......
12. কে, কবে বিধবাবিবাহ আইন পাস করেন?
উ:- বাংলাদেশে পাশ্চাত্য শিক্ষা প্রবর্তনের ফলে যে সমাজসংস্কার আন্দোলনের সূচনা হয়, বিধবাবিবাহ আইন পাস ছিল তার অন্যতম ফল।
i. আইনপ্রণেতা : ভারতের বড়াোলাট লর্ড ক্যানিং বিধবাবিবাহ আইন পাস করেন।
ii. সময়কাল : ১৮৫৬ খ্রিস্টাব্দের ২৬ জুলাই বিধবাবিবাহ আইন পাস হয়।
iii. গুরুত্ব: বিদ্যাসাগরের চেষ্টায় এই আইন পাস এবং বিধবাবিবাহ অনুষ্ঠিত হলেও রক্ষণশীল হিন্দুসমাজ এতে বাধার সৃষ্টি করে। তবুও বিধবাবিবাহ আইন জারিকে হিন্দুসমাজের সংস্কারের ক্ষেত্রে একটি প্রগতিশীল পদক্ষেপ হিসেবে গণ্য করা হয়।
13. প্রবর্তনের ক্ষেত্রে বিদ্যাসাগরের ভূমিকা লেখাো ?
উ:- উনিশ শতকে বাংলাদেশে যে কয়েকজন মনীষী সমাজসংস্কার আন্দোলন শুরু করেন, পণ্ডিত ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর তাঁদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন। বিধবাবিবাহ তথা নারীমুক্তির জন্য তিনি বিশেষ উদ্যোগী হন।
i. বিধবাবিবাহ আইন: বিধবাবিবাহের সপক্ষে জনমত গঠনের জন্য বিদ্যাসাগর বিভিন্ন পত্রিকায় (সর্বশুভকরী, তত্ত্ববাোধিনী) বহু প্রবন্ধ লেখেন, পুস্তিকা প্রকাশ করেন। তারপর ৯৮৭ জন বিশিষ্ট ব্যক্তির স্বাক্ষরযুক্ত এক আবেদনপত্র ভারত সরকারের কাছে পেশ করেন। রক্ষণশীল হিন্দুরা রাজা রাধাকান্ত দেবের নেতৃত্বে প্রায় ৩৭,০০০ স্বাক্ষরযুক্ত প্রতিবাদপত্র সরকারের কাছে পাঠায়। তবুও সরকার বিচারবিবেচনা করে ১৮৫৬ খ্রিস্টাব্দের ২৬ জুলাই বিধবাবিবাহ আইন পাস করে।
ii. গুরুত্ব: বিদ্যাসাগরের চেষ্টায় এই আইন পাস হলে হিন্দুসমাজে একটি প্রগতিশীল পদক্ষেপ সূচিত হয়। একটি সামাজিক সমস্যার সমাধান হয়।
14. নব্যবঙ্গা বা ইয়ং বেঙ্গল কাদের বলা হয় ?
উ:- নব্যবঙা বা ইয়ং বেঙল : অ্যাংলাো ইন্ডিয়াৰ হেনরি লুই ভিভিয়ান ডিরাোজিও ছিলেন কলকাতার হিন্দু কলেজের তরুণ শিক্ষক। যুক্তিবাদী এই শিক্ষকের অনুগামী ছাত্রদের নব্যবঙ্গ বা ইয়ং বেঙ্গল বলা লি ইয়ং বেঙ্গল গাোষ্ঠীর উল্লেখযাোগ্য সদস্যগণ হলেন প্যারিচাদ মিত্র, রাধানাথ শিকদার, রামতনু লাহিড়ী, দক্ষিণারঞ্জন মুখাোপাধ্যায় প্রমুখ।
i. কার্যকলাপ: ইয়ং বেঙ্গল গাোষ্ঠী বাল্যবিবাহ, বহুবিবাহ, জাতপাত প্রভৃতি সামাজিক কুপ্রথার বিরুদ্ধে সাোচ্চার হয়েছিলেন।
15. নব্যবঙ্গ আন্দোলনের দুজন নেতার নাম উল্লেখ ।
উ:- ডিরাোজিওকে কেন্দ্র করে হিন্দু কলেজে এক ছাত্রগাোষ্ঠী গড়ে ওঠে। এই ছাত্রগাোষ্ঠী নব্যবঙ্গ’ নামে পরিচিত ছিল।
i. নববগের নেতা: এই নব্যবঙ্গ গাোষ্ঠীতে অনেকে ছিলেন। এঁদের মধ্যে নেতৃস্থানীয় ছিলেন দক্ষিণারঞ্জন মুখাোপাধ্যায় এবং রসিককৃয় মল্লিক।
ii. গুরুত্ব : বাংলাদেশের জরাজীর্ণ রক্ষণশীল সমাজে নব্যবঙ্গ গাোষ্ঠী প্রবল আঘাত করে। সামাজিক কুপ্রথার বিরাোধিতা করে নতুন সমাজ গঠনের চেষ্টা করে এই গাোষ্ঠী।
16. নব্যবঙ্গ গাোষ্ঠী কোন কোন প্রথার বিরাোধিতা করেছিল?
উ:- কলকাতার হিন্দু কলেজের শিক্ষক হেনরি লুই ভিভিয়ান ডিরাোজিও-র ছাত্রদের নব্যবঙ্গ বা ইয়ং বেঙ্গল বলা হত।
i. সামাজিক কুপ্রথার বিরাোধিতা: নব্যবঙ্গ গাোষ্ঠী সমাজে প্রচলিত বিভিন্ন প্রথা ও রীতিনীতির বিরাোধিতা করেছিল। এগুলির মধ্যে উল্লেখযাোগ্য হল- জাতপাতের বিরাোধিতা, বাল্যবিবাহের বিরাোধিতা, বহুবিবাহের বিরাোধিতা।তাদের কার্যকলাপ গোঁড়া হিন্দুদের বিরক্ত করে। গঠনমূলক কাজে তারা যুক্ত ছিলেন না। এইজন্য তারা ব্যর্থ হন।
17.পণ্ডিতা রমাবাঈ কেন স্মরণীয় হয়ে আছেন।
উ:- পণ্ডিতা রমাবাঈ ভারতে নারীশিক্ষার প্রসারে তাঁর অবদানের জন্য স্মরণীয় হয়ে আছেন। সে স্মরণীয় হওয়ার কারণ বমাবাঈ ব্রাত্মণ পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। প্রাচীন ভারতীয় শাস্ত্রে তার যথেষ্ট জ্ঞান ছিল। তিনি এক শূদ্রকে বিয়ে করে সমাজে প্রচলিত জাতিভেদের বাধাকে নস্যাৎ করেছিলেন। পন্ডিতা রমাবাঈ তিনি বিধবা অবস্থায় ইংল্যান্ডে গিয়ে ডাক্তারি পড়েছিলেন। তিনি বিধবা মহিলাদের জন্য একটি আশ্রম প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। সমকালীন সমাজব্যবস্থায় তিনি ছিলেন জুলন্ত প্রতিবাদ। নারীশিক্ষার প্রসারে তার বিশিষ্ট ভূমিকা ছিল।
18. মাদ্রাজে বীরেশলিঙ্গম পাতু কীভাবে সমাজ সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছিলেন?
উ:- দক্ষিণ ভারতের অন্যতম সমাজসংস্কারক ছিলেন বীরেশলিজায় পান্ডুলু। তিনি বাংলার ব্রাত্ম আন্দোলনের দ্বারা প্রভাবিত হয়েছিলেন। তিনি দক্ষিণ ভারতে প্রার্থনা সমাজের সংস্কার আন্দোলনের অন্যতম প্রচারক ছিলেন।
i. সমাজসংস্কার: তাঁর নেতৃত্বে মাদ্রাজ প্রেসিডেন্সিতে বিধবাবিবাহ আন্দোলন শুরু হয়েছিল। কাল তিনি সমাজে প্রচলিত জাতিভেদ প্রথা, অস্পৃশ্যতা, বাল্যবিবাহ প্রভৃতির বিরাোধিতা করেছিলেন। কাজ তিনি নারীশিক্ষার প্রসারের জন্য প্রচার করেছিলেন ।
19. জ্যোতিরা ফুলে বিখ্যাত কেন?
উ:- জ্যোতিরাও ফুলে ছিলেন মহারাষ্ট্রের একজন উল্লেখযাোগ্য সমাজসংস্কারক। তিনি ভারতীয় সমাজের নিম্নবর্গীয় মানুষের সামাজিক মর্যাদা প্রতিষ্ঠার জন্য আন্দোলন করেছিলেন। এই আন্দোলনে তাঁর স্ত্রী সাবিত্রী বাঈ-এর অবদানও ছিল বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ।
আরও পড়ুন......
20. ব্রাক্মসমাজ ও ব্রাহ্র আন্দোলনে বিভাজন ?
উ:- রাজা রামমাোহন রায় হিন্দুধর্ম ও হিন্দুসমাজ সংস্কারের জন্য ব্রাহ্রসমাজ গঠন করেন ১৮৩০ খ্রিস্টাব্দে। পরে বিভিন্ন কারণে ব্রাহ্বসমাজ ও ব্রাত্ম আন্দোলনে বিভাজন ঘটে।
বিভাজনের কারণ: উপবীত ধারণ, জাতিভেদ প্রথার প্রশ্নে ব্রাহ্বসমাজে দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর ও কেশবচন্দ্র সেনের মধ্যে মতভেদ ঘটে ও ব্রাহ্বসমাজে বিভাজন ঘটে (১৮৬৬ খ্রি) এরপর অসবর্ণ বিবাহ, বিবাহের ন্যূনতম বয়স (নারীর), কীর্তনরীতি, খ্রিস্টপ্রীতির প্রশ্নে কেশবচন্দ্র সেন ও শিবনাথ শাস্ত্রীর মধ্যে মতভেদ ও বিভাজন ঘটে (১৮৭৮ খ্রি.)।
21. হিন্দুমেলার উদ্দেশ্য কী ছিল?
উ:-উনিশ শতকের বাংলাদেশে যেসব জাতীয়তাবাদী সভা সমিতি গড়ে ওঠে, তার মধ্যে উল্লেখযাোগ্য ছিল হিন্দুমেলা (১৮৭৬ খ্রিস্টাব্দ)।
উদ্দেশ্য : এই সংগঠন প্রতিষ্ঠার বিভিন্ন উদ্দেশ্য ছিল। যেমন—
i. হিন্দুদের ঐক্যবদ্ধ করা,
ii. আত্মনির্ভরতা গড়ে তাোলা,
iii. সর্বভারতীয় চেতনা গড়ে তাোলা,
iv. দেশীয় শিল্প-সাহিত্যকে উৎসাহদান প্রভৃতি।
22. ভারতে জাতীয়তাবাোধ জাগরণে স্বামী বিবেকানন্দের অবদান লেখাো।
উ:- ভারতে জাতীয়তাবাোধ জাগরণে স্বামী বিবেকানন্দের অবদান অনস্বীকার্য।
i. দেশমুক্তির আহ্বান : বিবেকানন্দ দেশকে মাতৃরূপে কল্পনা করেন। দেশের মুক্তির জন্য আত্মাোৎসর্গের আদর্শ তুলে ধরে তিনি সবাইকে অংশগ্রহণের আহ্বান জানান।
ii. জাতীয়তার বাণী: তিনি বলেন, ‘ভুলিও না তুমি জন্ম হইতেই মায়ের জন্য বলিপ্রদত্ত ভুলিও না, নীচ জাতি, মূর্খ, দরিদ্র, অজ্ঞ, মুচি, মেথর তাোমার রক্ত, তাোমার ভাই।
আরও পড়ুন......
File Details
File Name/Book Name
অষ্টম শ্রেণী ইতিহাস|চতূর্থ অধ্যায়|২ ও ৩ নম্বরের প্রশ্ন ও উত্তর
File Format
PDF
File Language
Bengali
File Size
156 KB
File Location
GOOGLE DRIVE
Download Link
Join Telegram... Members
File Details |
|
File Name/Book Name | অষ্টম শ্রেণী ইতিহাস|চতূর্থ অধ্যায়|২ ও ৩ নম্বরের প্রশ্ন ও উত্তর |
File Format | PDF |
File Language | Bengali |
File Size | 156 KB |
File Location | GOOGLE DRIVE |
Download Link |