ষষ্ঠ শ্রেণী ইতিহা সপ্তম অধ্যায়|৫ নম্বরের প্রশ্ন ও উত্তর|প্রাচীন ভারতীয় উপমহাদেশের সংস্কৃতিচর্চার নানা দিক
প্রিয় বন্ধুরা
ষষ্ঠ শ্রেণী ইতিহা সপ্তম অধ্যায়|৫ নম্বরের প্রশ্ন ও উত্তর|প্রাচীন ভারতীয় উপমহাদেশের সংস্কৃতিচর্চার নানা দিক আজকে আলোচনা করব|তোমরা West Bengal Class 6 History পেয়ে যাবে|ষষ্ঠ শ্রেণীর ইতিহাস প্রশ্ন ও উত্তর|ষষ্ঠ শ্রেণী ইতিহাস সপ্তম অধ্যায় ৫ নম্বরের প্রশ্ন ও উত্তর|West Bengal Class Six|Class 6 History Question and Answer|Class 6 History 7th chapter Suggest -ion WBBSE|Class 6 History 7th chapter Notes WBBSE|Class 6 History 5 marks Question and Answer|ইতহাস প্রশ্নোত্তর|ইতিহাস মক টেস্ট|itihas proshno o uttor| History Mock Test|
এছাড়াও তোমরা পাবে ষষ্ঠ শ্রেণী সপ্তম অধ্যায় প্রাচীন ভারতীয় উপমহাদেশের সংস্কৃতিচর্চার নানা দিক থেকে বহুবিকল্প ভিত্তিক সংক্ষিপ্ত অতিসংক্ষিপ্ত এবং রচনাধর্মী প্রশ্ন উত্তর|MCQ, Very Short Question, Short Quest -ions, Descriptive Question and Answer এগুলি তোমরা যারা পশ্চিমবঙ্গের VI History Examination এর জন্য পরিক্ষা দিতে যাচ্ছ অথবা পশ্চিমবঙ্গ ষষ্ঠ শ্রেণীতে পড়াশুনা করছো তাদের ইতিহাস পরীক্ষার জন্য এই ৫ নম্বরের প্রশ্নগুলি খুবই গুরুত্বপূর্ন এবং তোমরা যারা ষষ্ঠ শ্রেণী ইতিহাস (সপ্তম অধ্যায় প্রাচীন ভারতীয় উপমহাদেশের সংস্কৃতিচর্চার নানা দিক) ৫ নম্বরের প্রশ্ন এবং উত্তর চাইছো, তারা নীচের দেওয়া প্রশ্নউত্তর গুলি ভালো করে পড়ে নিতে পারবে।
ষষ্ঠ শ্রেণী ইতিহা সপ্তম অধ্যায়|৫ নম্বরের প্রশ্ন ও উত্তর|প্রাচীন ভারতীয় উপমহাদেশের সংস্কৃতিচর্চার নানা দিক
১. গুপ্ত ও পল্পৰ শিল্পের বৈশিষ্ট্যগুলি উল্লেখ করো ।
উত্তর :- গুপ্ত যুগে
ইট ও পাথর দিয়ে সর্বপ্রথম মণিদর স্থাপত্যের সূচনা হয়, গুহ গাত পূর্ণতা লাভ করে, আর
গণধার শিল্পের প্রভাব ভাস্কর্যের সূচনা হয়।
গুপ্ত যুগের
শিল্পকলার বৈশিষ্ট্য :-
গুপ্ত যুগের শেষদিকে
মন্দির স্থাপত্যে তিনটি শৈলীর উদ্ভব হয় যথা __
(ক) নাগর (বর্গাকৃতি মন্দির এবং গর্ভংহের নিন বা চূড়ার
আকার মোচাকৃতি),
(খ) দ্রাবিড় (অষ্টকোণাকৃতি মন্দির) এবং
(গ) বেসর (বৃত্তাকৃতি মন্দির)।
এযুগের স্থাপত্য ভাস্কর্য
শিল্পগুলির উৎকৃষ্ট নয়ন হল—তিগোয়ার বিষ্ণুমন্দির, ভূমারের শিবমন্দির, টেম্বর, মনিনাগ ও সাঁচির
মন্দিরগুলি! পাৰ্শি ব্রাউন দেওবরের দশাবতারের মন্দিরটিকে গুপ্ত যুগের শ্রেষ্ট শিল্পকর্ন
বরে গরি করেছেন। অজন্তা, ইলোরা, উদয়গিরির গুহা-মন্দিরগুলি আজও আমাদের বিস্মিত করে।
শিল্প সংস্কৃতির ইতিহাসে দক্ষিণ ভারতে পল্পব রাজাদের রাজত্বকাল ছিল বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। সম্পূর্ণ ভারতীয় রানায় পল্লব রাজাদের পৃষ্ঠপোষকতায় খ্রিস্টীয় ষষ্ঠ শতক থেকে নবম শতকের শেষ পর্যন্ত পল্পৰ শিল্পের নিজস্ব রীতির উদ্ভব হয় ।
পল্লৰ শিল্পের
বৈশিষ্ট্য :-
পল্লৰ স্থাপত্যকর্মগুলি
চারটি পৃথক ঘরানায় গড়ে ওঠে, যেমন __
(ক) মাহেন্দ্রবর্মন অনুসৃত মহেন্দ্ররীতি :- এই রীতির প্রধান বৈশিষ্ট্য হল পাথর কেটে গুহামন্দির
তৈরি ও ছাদের অবলম্বন হিসেবে থামের ব্যবহার ।
(খ) নরসিংহবর্মন অনুসৃত মহামন্ত্র রীতি :- এর বৈশিষ্ট্য ছিল গ্রানাইট পাথর কেটে রথের আদলে
মন্দির নির্মাণের কৌশল। এই ঘরানার প্রকৃষ্ট নমুনা হল মহাবলিপুরমের ‘পঞ্চপাণ্ডব রথ’ ও ‘দ্রৌপদী রথ। এগুলিকে বলা
হয় ‘সপ্ত প্যাগোডা।
(গ) দ্বিতীয় নরসিংহবর্মন অনুসৃত রাজসিংহ রীতি :- পাথর সাজিয়ে মন্দির (উদাহরণ: কৈলাসনাথ মন্দির)
নির্মাণের কৌশল ছিল এই শিল্পরীতির অন্যতম আকর্ষণ।
(ঘ) এ ছাড়া ছিল চোলস্থাপত্য ঘেঁষা অপরাজিত শিল্প
রীতি।
২. বিহার বা সংঘের সঙ্গে মহাবিহারের কী সাদৃশ্য ও বৈসাদৃশ্য রয়েছে
?
উত্তর:- বিহার বা সংঘ
এবং মহাবিহার দুটিই হল বৌদ্ধ স্থাপত্যকার্যের উল্লেখযোগ্য নিদর্শন।
মিল :-
(ক) বিহার এবং মহাবিহার উভয় শিক্ষাকেন্দ্রেই বোদ্ধ
শিক্ষা দেওয়া হত।
(খ) বৌদ্ধ বিহারগুলিতে ধর্মীয় শিক্ষার পাশাপাশি কৃষি,
চিকিৎসা, রাজ্যশাসন, রণনীতি, ব্যাবহারিক শিক্ষা দেওয়া হত। মহাবিহারগুলিতেও একই ধরনের
বিষয় শিক্ষা দেওয়া হত।
অমিল
:-
(ক) বিহার বা সংঘে বৌদ্ধ শ্ৰমণ ও ভিক্ষুরা পড়াশোনা
করত। মহাবিহারে সকল ধর্মের ছাত্ররা বিশেষত দেশবিদেশ থেকে ছাত্ররা পড়তে আসত।
(খ) বিহারগুলিতে ধর্মীয় শিক্ষার পাশাপাশি কিছু জ্যোতিষ,
ব্যাকরণ, গণিত শিক্ষাও দেওয়া হত। কিন্তু মহাবিহারে ধর্ম শিক্ষা, জ্যোতিষ, বিজ্ঞান,
রাজনীতি, অর্থনীতি, শাসননীতি সকল বিষয় পড়ানো হত।
৩. প্রাচীন ভারতের সাহিত্য-সংস্কৃতির সংক্ষিপ্ত পরিচয় দাও।
উত্তর:- ভারতবর্ষ একটি
প্রাচীন দেশ। এই দেশের শিল্প, সাহিত্য ও বিজ্ঞানচর্চা এক আলাদা মাত্রায় পৌঁছেছিল।
প্রাচীন
ভারতের সাহিত্য সংস্কৃতি :-
(ক) সাহিত্য :- ভারতের প্রাচীনতম সাহিত্য হল বেদ ও বৈদিক সাহিত্য। গুপ্ত যুগে অসংখ্য
নটিক যেমন-কালিদাসের রঘুবংশম, মেঘদূতম, বিশাখদত্তের মুদ্রারাক্ষস প্রভৃতি রচিত হয়।অর্থশাস্ত্র, অষ্টাধ্যায়ী, মৃচ্ছকটিকম, রামচরিত, রাজতরঙ্গিনী প্রভৃতি অসংখ্য গ্রন্থ
লিখিত হয়। রামায়ণ ও মহাভারত মহাকাব্য দুটি ভারতের অমূল্য সম্পদ।
(খ) শিল্প :- (অ) মৌর্য যুগ থেকে ভারতে প্রকৃত শিল্পকলা শুরু হয়। এযুগে অসংখ্য স্থূপ, চৈত্য ও মঠ স্থাপিত হয়। যেমন- সাঁচি স্থূপ।
(আ) কুষাণ যুগে গন্ধার শিল্পের উদ্ভব হয়। এযুগে কনিষ্ক বহু বৌদ্ধ মঠ, স্থূপ। ও চৈত্য নির্মাণ করেন।
(ই) গুপ্ত
যুগে স্থাপত্যশিল্পের ব্যাপক উন্নতি হয়। এযুগে অসংখ্য মন্দির, বিহার ও স্তূপ তৈরি
হয়।
৪. টীকা লেখো : দীপঙ্কর-শ্রীজ্ঞান (অতীশ)।
উত্তর:- দীপঙ্কর-শ্রীজ্ঞান
(অতীশ) ছিলেন বিক্রমশীলা বিশ্ববিদ্যা -লয়ের (মহাবিহার) অধ্যক্ষ। তার পূর্বনাম ছিল চন্দ্রগঞ্জ।
তিনি ৯৮০ খ্রিস্টাব্দে বঙ্গল অঞ্চলের বিক্রমণিপুরের বজ্রযোগিনী গ্রামে বাংলাদেশের বিক্রমপুরে
জন্মগ্রহণ করেন।
বাল্যকালে চন্দ্রগর্ভ
ওদন্তপুরী বিশ্ববিদ্যালয়ে লেখাপড়া করেন। পরে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ শীলরক্ষিতের
নিকট বৌদ্ধধর্মে দীক্ষা গ্রহণ করেন এবং শ্রীজ্ঞান’ উপাধিতে ভূষিত হন। তিনি বহুকাল তিব্বতে ছিলেন। তিব্বতীদের
কাছে তিনি অতীশ বা জ্ঞানী নামেই পরিচিত ছিলেন। ১৯ বছর বয়সে তিনি বিক্রমশীলা মহাবিহারের
অধ্যক্ষ হন।
সেখানে তিনি কিছুদিন
অধ্যাপনা করেন। পরে তিব্বতের রাজা জ্ঞানপ্রভের অনুরোধে তিনি তিব্বত যান।
সেখানে ১৩ বছর ধরে মহাযান
বৌদ্ধ ধর্মমত প্রচার করেন। জীবনের শেষ সময় তিনি সেখানেই অতিবাহিত করেন। এই মহান শিক্ষাবিদ
১০৫ খ্রিস্টাব্দে পরলোকগমন করেন। অতীশ দীপঙ্কর বৌদ্ধধর্মের ওপর ২০০টি অমূল্য গ্রন্থ
রচনা করেন। তাঁর বিখ্যাত গ্রন্থ হল ব্রজযান সাধন।
৫. সম্রাট কনিষ্কের সংস্কৃতি অনুরাগিতার পরিচয় দাও।
উত্তর:- প্রাচীন ভারতের
ইতিহাসে কনিষ্কের শাসনকাল এক গৌরবময় অধ্যায়। তিনি শুধু বীর যোদ্ধাই ছিলেন না, সাহিত্য
সংস্কৃতির প্রতি ছিল তাঁর গভীর অনুরাগ।
সম্রাট
কনিকের সাহিত্যানুরাগিতা :-
শিল্প-সংস্কৃতির প্রতি
কনিষ্কের গভীর অনুরাগ ছিল। বিশিষ্ট সাহিত্যিক অশ্বঘোষ ও বসুবন্ধু ছিলেন তাঁর রাজ্যসভার
অন্যতম ব্যক্তিত্ব। অশ্বঘোষের বুদ্ধচরিত তাঁর আমলেই রচিত হয়। চরক ও সুশ্রত ছিলেন সেযুগের
বিখ্যাত ভেষজবিদ ও শল্যবিদ। বিজ্ঞানী নাগার্জুন রচনা করেন প্রজ্ঞাপারমিতা সূত্র।
কনিষ্কের
শিল্পবোধ :-
প্রাচীন ভারতের ইতিহাসে
কনিষ্কের শাসনকাল ছিল এক গৌরবজ্জ্বল অধ্যায়। তাঁর আমলেই গ্রিক, রোমান ও ভারতীয় শিল্পরীতির
সংমিশ্রণে গান্ধার শিল্প বিকাশ লাভ করে। তিনি বহু চৈত্য, শিল্প ও ধূপ নির্মাণ করেন।
গ্রিক শিল্পী এজেসিলাস পুরুষপুরে ভগবান বুদ্ধের দেহাবশেষের ওপর একটি বিশাল চৈত্য নির্মাণ
করেন।
মূল্যায়ন
:-
তারই আমলে ভগবান বুদ্ধের
স্মৃতি পুজোর প্রচলন ঘটে এবং লেী ধর্ম আন্তর্জাতিক ধর্মে পরিণত হয়।
৬. সম্রাট হর্ষবর্ধনের শিক্ষানুরাগিতার পরিচয় দাও ।
উত্তর :- সম্রাট হর্ষবর্ধনের
শিক্ষানুরাগিতা সম্পর্কে বলা যায় __
(ক) হর্ষবর্ধন শুধু একজন বীর যোদ্ধাই ছিলেন না; তিনি
ছিলেন বিদ্বান ও বিদ্যোৎসাহী। তিনি স্বয়ং সংস্কৃত ভাষায় তিনটি নাটক লেখেন। এগুলি
হল নাগানন্দ, রত্নাবলী ও প্রিয়দশিকা। তার সভাকবি ছিলেন বাণভট্ট। তিনিও দুটি বিখ্যাত
গ্রন্থ রচনা করেছেন, যথা- হর্ষচরিত ও কাদম্বরী। হর্ষবর্ধন জ্ঞানীগুণীর সমাদর করতেন।
তার প্রমাণ এই যে, তার রাজসভা অলংকৃত করতেন,ভর্তৃহরি, মাতঙ্গা, দিবাকর, জয়সিংহ প্রমুখ
ব্যক্তিত্ব।
(খ) হর্ষবর্ধনের পৃষ্ঠপােষকতায় নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয়টি
সেসময় (সপ্তম শতক) ভারতের শ্রেষ্ঠ প্রতিষ্ঠানের মর্যাদা লাভ করে। রাজকোশ থেকে তিনি
প্রচুর অর্থ। এই প্রতিষ্ঠানে ব্যয় বরাদ্দ করতেন।
ফলাফল
:-
এই বিরোধের ফলে শারীরবিদ্যা
ও শল্য-চিকিৎসার চর্চা ধীরে ধীরে কমে আসে। চিকিৎসার অভাবে অনেক মানুষের মৃত্যু ঘটতে
থাকে।
৭. টীকা লেখো : মৌর্য শিল্পকলা।
উত্তর :- প্রাচীন ভারতীয়
শিল্পকলার প্রকৃত সূচনা ঘটেছিল মৌর্য যুগে।
(ক) স্তূপ:- মৌর্য স্থাপত্যশিল্পের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হল তূপ। সম্রাট অশোকের আমলে
প্রায় ৮৪,০০০টি স্তুপ নির্মিত হয়। এগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল সাঁচি স্তুপ। এর
উচ্চতা ছিল ৭৮ ফুট। এতে চারটি তোরণ ছিল। সাচি স্তুপের ভিতরে দেয়াল গাত্রে বুদ্ধের
ভাস্কর্য খোদিত আছে।
(খ) চৈত্য:- অশোকের আমলে সাঁচি ও সারনাথে দুটি বিশাল চৈত্য নির্মিত হয়।
(গ) স্তম্ভ:- মৌর্য যুগে বহু স্তম্ভ নির্মিত হয়। অশোকের আমলেই সাঁচি, সারনাথ, এলাহাবাদ,
নন্দনগড় প্রভৃতি থানে ৩৭টি স্তম্ভ প্রতিষ্ঠিত হয়। সারনাথের সিংহস্তম্ভটি প্রাচীন
ভারতের শিল্পচেতনার এক অনন্য নমুনা। স্তম্ভগু লিতে প্রতীক হিসেবে সিংহ, বৃষ, হস্তি
ও চক্রের ব্যবহার করা হয়েছে। প্রতিটি স্তম্ভের উচ্চতা ছিল ৩০-৫০ ফুট। এর দুটি ভাগ
ছিল দণ্ড ও বোধিকা (শীৰ্য)।
৮. টীকা লেখো : মথুরা শিল্পরীতি।
উত্তর :- কুষাণ যুগে
গধার শিল্পের পাশাপাশি মথুরা শিল্প বেশ খ্যাতিলাভ করে। এই শিল্পরীতির বৈশিষ্ট্যগুলি
হল—
(ক) মথুরা শিল্প গড়ে উঠেছিল সম্পূর্ণ ভারতীয় ঘরানায়।
(খ) মথুরা ভাস্কর্যশিল্পের উপপাদ্য বিষয় ছিল বৌদ্ধধর্ম
তথা বুদ্ধমূর্তি।
(গ) বুদ্ধের অবয়বগুলি নির্মিত হত লাল চুনাপাথরে অধিকাংশ
মূতিই ছিল দণ্ডায়মান, মস্তকমুণ্ডিত এবং গুম্ফবিহীন।
(ঘ) মূর্তিগুলির বিশালতা ও স্থূলতা ছিল এই শিল্পরীতির
অপর প্রধান বৈশিষ্ট্য।
উদাহরণ স্বরূপ বলা যায়-
মথুরা শিল্পরীতির বহু ভাস্কর্যের নমুনা ভারতের বিভিন্ন স্থানে খুঁজে পাওয়া গেছে। এগুলির
মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল কনিষ্কের আমলে প্রতিষ্ঠিত বোধিসত্ত্বের মূর্তি, সম্রাট কনিষ্কের
মূর্তি (কনিষ্কের মস্তকহীন প্রচলিত মূর্তি)।
৯. টীকা লেখো : গন্ধার শিল্প।
উত্তর :- প্রাচীন ভারতের
শিল্পকলার ইতিহাসে গন্ধার শিল্পের উদ্ভব একটি উল্লেখযোগ্য অধ্যায়। খ্রিস্টপূর্ব ৫০
অব্দ থেকে ৫০০ অব্দের মধ্যে জালালাবাদ, গন্ধার, বেগ্রাম, সোয়াট, তক্ষশিলা প্রভৃতি
অঞ্চলে এই শিল্পের উদ্ভব ঘটে। এই শিল্প চরম উৎকর্ষতা লাভ করে কুষাণ যুগে।
গন্ধার
শিল্পের বৈশিষ্ট্য :-
(ক) গন্ধার শিল্প গড়ে উঠেছিল গ্রিক, রোমান ও ভারতীয়
শিল্পরীতির সংমিশ্রণে।
(খ) এর বিষয়বস্তু ছিল ভারতীয় বৌদ্ধ ধর্ম ও বুদ্ধের
মূর্তি।
(গ) বুদ্ধের প্রতিকৃতি নির্মাণের উপকরণ হিসেবে ব্যবহৃত
হত চুন, বালি, প্লাস্টার অব প্যারিস, পোড়ামাটি, কালো পাথর ও সোনালি রং।
(ঘ) মূর্তিগুলি সাধারণত তৈরি হত ভারতীয় ও গ্রিক দেবদেবীর
আদলে।
(ঙ) মূর্তিগুলির মসৃণতা, প্রাণবন্ততা ও অলংকরণ ছিল
এর অনন্য বৈশিষ্ট্য।
মার্শাল ও পার্শি ব্রাউন
একে ‘গ্রিক-বৌদ্ধ’ শিল্প বলে উল্লেখ করেছেন।
১০. টীকা লেখো : পল্লব শিল্প।
উত্তর :- শিল্প সংস্কৃতির
ইতিহাসে দক্ষিণ ভারতে পল্লব রাজাদের রাজত্বকাল ছিল বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। পল্লব রাজাদের
পৃষ্ঠপোষকতায় খ্রিস্টীয় ষষ্ঠ থেকে নবম শতক পর্যন্ত দক্ষিণ ভারতে পল্লব শিল্পের নিজস্ব
রীতি গড়ে ওঠে।
এখানে প্রায় ১৫ টি
বিষয় পড়ানো হত, যেমন-বৌদ্ধদর্শন, বেদ, ব্যাকরণ, নীতিশাস্ত্র, জ্যোতিষশাস্ত্র, গণিত,
ভূগোল, ইতিহাস, আয়ুর্বেদ, পালি, সংস্কৃত প্রভৃতি। ছাত্রদের জন্য ছিল বিশাল গ্রন্থাগার,
শয়নকক্ষ ও শ্রেণিকক্ষ। উল্লেখ্য যে, নালন্দায় অবৈতনিক শিক্ষাব্যবস্থা চালু ছিল। গুপ্তরাজগণও
পরে হর্ষবর্ধনের অর্থানুকূল্যে এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটি টিকেছিল।
১২. গুপ্ত যুগের বিজ্ঞানচর্চা সম্পর্কে কী জানো ?
উত্তর :- প্রাচীন ভারতে
বিজ্ঞানচর্চার প্রকৃত ঘরানা গড়ে ওঠে কুযাণ ও গুপ্ত যুগে। এই দুই যুগে গণিত, জ্যোতির্বিদ্যা,
ভেষজ ও রসায়ন শাস্ত্রের ব্যাপক উন্নতি পরিলক্ষিত হয়। কুষাণ যুগে বিজ্ঞানচর্চার জনক
ছিলেন নাগার্জুন, যিনি মাধ্যমিক সূত্র’ নামক গ্রন্থটি রচনা করেন। অনেকে এই গ্রন্থেই ‘আপেক্ষিক
তত্ত্বের প্রথম পাঠ খুঁজে পেয়েছেন।
গুপ্ত যুগে গণিতজ্ঞ
আর্যভট্ট ত্রিকোণমিতির সাইন ও কোসাইনেরর উদ্ভাবক ছিলেন। তিনি তাঁর সূর্যসিদ্ধান্ত গ্রন্থে
পৃথিবীর আহ্নিক গতি ও বার্ষিক গতি সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা পোষণ করেন। গণিতজ্ঞ ব্ৰত্মাগুপ্ত
রচনা করেন ‘খণ্ডবিদ্যা। মনে করা হয় তিনিইপ্রথম শূন্যের (0) ব্যবহার করেন। কুষাণ যুগে
চিকিৎসাবিজ্ঞানে অভূতপূর্ব উন্নতি সাধিত হয়। এই যুগের প্রখ্যাত আয়ুর্বেদ ছিলেন চরক,
যিনি চরকসংহিতা রচনা করেন। এযুগের শল্যবিদ ছিলেন সুশ্রুত, তিনি সুশ্রুতসংহিতা রচনা
করেন। ধন্বন্তরী ছিলেন গুপ্ত যুগের প্রখ্যাত চিকিৎসক।
আর্যভট্ট ছিলেন গুপ্ত
যুগের বিখ্যাত গণিতজ্ঞ, যিনি সূর্যসিদ্ধান্ত নামক গ্রন্থের রচয়িতা ছিলেন।
আরও পড়ুন......
- ষষ্ঠ শ্রেণি ইতিহাস (প্রথম অধ্যায়) ১ নম্বরের প্রশ্ন উত্তর
- ষষ্ঠ শ্রেণি ইতিহাস (দ্বিতীয় অধ্যায়) ১ নম্বরের প্রশ্ন উত্তর
- ষষ্ঠ শ্রেণি ইতিহাস (তৃতীয় অধ্যায়) ১ নম্বরের প্রশ্ন উত্তর
- ষষ্ঠ শ্রেণি ইতিহাস (চতুর্থ অধ্যায়) ১ নম্বরের প্রশ্ন উত্তর
- ষষ্ঠ শ্রেণি ইতিহাস (পঞ্চম অধ্যায়) ১ নম্বরের প্রশ্ন উত্তর
- ষষ্ঠ শ্রেণি ইতিহাস (ষষ্ঠ অধ্যায়) ১ নম্বরের প্রশ্ন উত্তর
- ষষ্ঠ শ্রেণি ইতিহাস (সপ্তম অধ্যায়) ১ নম্বরের প্রশ্ন উত্তর
- ষষ্ঠ শ্রেণি ইতিহাস (অষ্টম অধ্যায়) ১ নম্বরের প্রশ্ন উত্তর
- ষষ্ঠ শ্রেণি ইতিহাস (নবম অধ্যায়) ১ নম্বরের প্রশ্ন উত্তর
File Details |
|
File Name/Book Name | ষষ্ঠ শ্রেণী ইতিহাস সপ্তম অধ্যায় ৫ নম্বরের প্রশ্ন ও উত্তর |
File Format | PDF |
File Language | Bengali |
File Size | 85.6 KB |
File Location | GOOGLE DRIVE |
Download Link |