স্বাধীনতার পরে ভাষার ভিত্তিতে ভারত কীভাবে পুনর্গঠিত হয়েছিল? || মাধ্যমিক অষ্টম অধ্যায় || উত্তর ঔপনিবেশিক ভারত: বিশ শতকের দ্বিতীয় পর্ব

0

স্বাধীনতার পরে ভাষার ভিত্তিতে ভারত কীভাবে পুনর্গঠিত হয়েছিল?||মাধ্যমিক অষ্টম অধ্যায়||উত্তর ঔপনিবেশিক ভারত: বিশ শতকের দ্বিতীয় পর্ব


ভাষার ভিত্তিতে ভারত কীভাবে পুনর্গঠন


প্রিয় মাধ্যমিকের শিক্ষার্থীরা,

আজকে তোমাদের সঙ্গে শেয়ার করবো স্বাধীনতার পরে ভাষার ভিত্তিতে ভারত কীভাবে পুনর্গঠিত হয়েছিল?||মাধ্যমিক অষ্টম অধ্যায়||উত্তর ঔপনিবেশিক ভারত: বিশ শতকের দ্বিতীয় পর্ব||৪ নম্বরের প্রশ্ন ও উত্তর||ইতিহাস প্রশ্নত্তোর|itihass class 10| Madhyamik History Question and Answer|History chapter 8 question answer 10th History Examination|ইতিহাস মক টেস্ট|দশম শ্রেনীর ইতিহাস প্রশ্ন উত্তর|দশম শ্রেণী অষ্টম অধ্যায় প্রশ্ন উত্তর|এই ওয়েবসাইটে মাধ্যমিক অষ্টম অধ্যায় ২ নম্বরের প্রশ্ন ও উত্তর|Ten History Examination|মাধ্যমিক অষ্টম অধ্যায় ৪ নম্বরের প্রশ্ন ও উত্তর|স্বাধীন ভারতের কোথায় কোথায় ভাষাভিত্তিক রাজ্য গঠনের দাবিতে আন্দোলন হয়?|দশম শ্রেণীর ইতিহাস প্রশ্ন ও উত্তর পেয়ে যাবে এগুলি তোমাদের ফাইনাল পরিক্ষার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ন হবে। এছাড়াও তোমরা মাধ্যমিক ষষ্ঠ অধ্যায় ১ নম্বরের প্রশ্ন ও উত্তর পেয়ে যাবে|


তো বন্ধুরা উত্তর ঔপনিবেশিক ভারত: বিশ শতকের দ্বিতীয় পর্ব অষ্টম অধ্যায় থেকে বহু বিকল্প ভিত্তিক সংক্ষিপ্ত অতিসংক্ষিপ্ত এবং রচনাধর্মী প্রশ্ন উত্তর MCQ Very Short Short Descriptive Question and Answer|তোমাদের এই পোস্টের মাধ্যমে ইতিহাস অষ্টম অধ্যায় উত্তর ঔপনিবেশিক ভারত: বিশ শতকের দ্বিতীয় পর্ব থেকে স্বাধীনতার পরে ভাষার ভিত্তিতে ভারত কীভাবে পুনর্গঠিত হয়েছিল ? সম্পর্কে আলোচনা করা আছে। আমাদের আশা এই প্রশ্নগুলি তোমাদের পরিক্ষায় খুবই কাজে আসবে।


স্বাধীনতার পরে ভাষার ভিত্তিতে ভারত কীভাবে পুনর্গঠিত হয়েছিল?||মাধ্যমিক অষ্টম অধ্যায়||উত্তর ঔপনিবেশিক ভারত: বিশ শতকের দ্বিতীয় পর্ব


স্বাধীনতার পরে ভাষার ভিত্তিতে ভারত কীভাবে পুনর্গঠিত হয়েছিল?

অথবা

স্বাধীন ভারতের কোথায় কোথায় ভাষাভিত্তিক রাজ্য গঠনের দাবিতে আন্দোলন হয়?


ভূমিকা:-ভারতবর্ষ একটি বিশাল দেশ। এখানে বহু ভাষাভাষী মানুষ পাশাপাশি বসবাস করে। ব্রিটিশ আমলের রাজ্য সীমানা স্বাধীন ভারতের পরিবর্তিত পরিস্থিতির জন্য বদলাতে হয়। এর অন্যতম কারণ ছিল ভাষা ও সংস্কৃতির প্রেক্ষিতে রাজ্যসীমা পরিবর্তনের আন্দোলন।


ভাষাভিত্তিক রাজ্য গঠনের দাবিতে আন্দোলনন:- গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থায় প্রশাসনিক কাজে স্থানীয় ভাষার ব্যবহার করলে সুবিধা হবে এই দৃষ্টিভঙ্গি থেকেই ভারতের বিভিন্ন অংশে ভাষাভিত্তিক রাজ্য গঠনের দাবিকে কেন্দ্র করে আন্দোলন গড়ে ওঠে।


আন্দোলনের পটভূমি:-১৯৪৮ খ্রিস্টাব্দে কংগ্রেসের জয়পুর অধিবেশনে ভাষাভিত্তিক রাজ্য গঠনের আলোচনার সাপেক্ষে বিচারপতি এস কেদারের নেতৃত্বে 'দার কমিশন' গঠিত হয়। এই কমিশন ভাষাভিত্তিক প্রদেশ গঠনের বিরোধিতা করলে সারা ভারত জুড়ে বিক্ষিপ্তভাবে ভাষাভিত্তিক রাজ্য গঠনের দাবিতে আন্দোলন শুরু হয়।


অঞলে আন্দোলনঃ- ভাষাভিত্তিক রাজ্য গঠনের ক্ষেত্রে প্রথম তামিল ভাষা অধ্যুষিত মাদ্রাজ প্রেসিডেন্সি থেকে তেলুগু ভাষাভাষী অন্ধ্র অঞ্চলকে পৃথকী করণের দাবি ওঠে। এই দাবিকে গুরুত্ব না দিলে গান্ধিবাদী নেতা পাত্তি শ্রীরামালু অনশন শুরু করেন 1952 খ্রি. 19 অক্টোবর। 58 দিন অনশনের পর তার মৃত্যু হয়। তার মৃত্যুর সাথে সাথে অন্ধ্র ভাষামঞ্চের নেতৃত্বে মাদ্রাজ প্রেসিডেন্সির 11 টি জেলায় বিক্ষোভ শুরু হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে ভারত সরকার 1952 খ্রিস্টাব্দের 18 ডিসেম্বর অন্ধ্রপ্রদেশ রাজ্য গঠনের সিদ্ধান্ত নেয়। তামিল ভাষীদের নিয়ে তামিলনাড়ু এবং তেলুগু ভাষীদের নিয়ে অন্ধ্রপ্রদেশ গঠিত হয় 1 অক্টোবর 1953 খ্রিস্টাব্দে।


বোম্বাই প্রেসিডেন্সিঃ- 1953 খ্রি. রাজ্য পুনর্গঠন কমিশনের সুপারিশের ভিত্তিতে 1956 খ্রিস্টাব্দে রাজ্য পুনর্গঠন আইন পাস হয় । এরপর বোম্বাই প্রেসিডেন্সির সংযুক্ত মহারাষ্ট্র সমিতি এবং মহা গুজরাট জনতা পরিষদ যথাক্রমে মারাঠিভাষী ও গুজরাটিভাষী রাজ্যের দাবিতে আন্দোলন করে। গণ আন্দোলন প্রবল হয়ে ওঠে এবং মুখ্যমন্ত্রী মোরারজি দেশাই পদত্যাগ করেন। বহু আলোচনার পর ভারত সরকার 1960 খ্রিস্টাব্দের মে মাসে বোম্বাই মোরারজি দেশাই প্রেসিডেন্সিকে ভাগ করে মহারাষ্ট্র ও গুজরাট রাজ্য সৃষ্টি করে।


কেরালা:- মালাবার জেলাকে ত্রিবাঙ্কুর ও কোচিনের সঙ্গে যুক্ত করে কেরালা রাজ্য গঠন করা হয়।

পাঞ্জাব:- পাঞ্জাবের শিখরা গুরুমুখীভাষী অঞ্চল নিয়ে পাঞ্জাবের সীমানা নির্ধারণ করতে চেয়েছিল। আকালি দল এই দাবিকে সমর্থন জানায়। জনসংঘ হিন্দিভাষা ও হিন্দুদের সমর্থন করে। শেষে গুরুমুখী হিন্দি ও পাহাড়ি ভাষার ভিত্তিতে যথাক্রমে পাঞ্জাব হরিয়ানা হিমাচল প্রদেশ গঠিত হয় ও রাজ্যসীমা নির্ধারিত হয় 1966 খ্রিস্টাব্দে।


মূল্যায়নঃ- এইভাবে ভাষা ও সংস্কৃতি রক্ষার দাবিতে রাজ্য গঠনের জন্য গণ আন্দোলন শুরু হয়। সরকারের সদিচ্ছায় নতুন রাজ্যের সৃষ্টি হয় এবং পুরোনো রাজ্যের সীমানা পরিবর্তিত হয়।


অথবা


স্বাধীনতার পরে ভাষার ভিত্তিতে ভারত কীভাবে পুনর্গঠিত হয়েছিল ?


ভূমিকা:- স্বাধীনোত্তর ভারতের বিভিন্ন সমস্যাগুলির মধ্যে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ছিল ভাষাভিত্তিক রাজ্য পুনর্গঠন সমস্যা। রাজ্যগুলির সীমানা উপজাতিভিত্তিক না ভাষাভিত্তিক হবে তা নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়।


বিভিন্ন কমিশন নিয়োগঃ-  1948 খ্রিঃ ভাষাভিত্তিক রাজ্য গঠনের দাবি জোরদার হলে ভারত সরকার এস কে দরের নেতৃত্বে পরে জে ভি পি কমিটি গঠন করেন। এগুলিতে ভাষাভিত্তিক রাজ্যগঠনের বিপক্ষে মত গেলে আন্দোলন জোরদার হয়।


পোত্তি শ্রীরামালুর অনশনে মৃত্যু:- মাদ্রাজ প্রদেশে তেলুগু ভাষা অঞ্চলের দাবিতে পোত্তি শ্রীরামালু 58 দিন অনশন করে 1952 খ্রিঃ মৃত্যুবরণ করলে ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। বাধ্য হয়ে সরকার তেলুগু ভাষাভাষীদের একত্রিত করে পৃথক অন্ধ্রপ্রদেশ 1953 খ্রিঃ গঠন করেন। এতে অন্যান্য প্রদেশেও ভাষাভিত্তিক রাজ্যগঠনের দাবি আরও জোরদার হয়।


রাজ্য পুনর্গঠন কমিশন:- স্বাধীন ভারতের অঙ্গরাজ্যের সীমানা নির্ধারণের জন্য প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরু রাজ্য পুনর্গঠন কমিশন 1953 খ্রিঃ গঠন করেন। এই কমিশনের সুপারিশের ভিত্তিতে 1956 খ্রিঃ রাজ্য পুনর্গঠন আইন পাস হয়।


ভাষাভিত্তিক রাজ্যগঠন:- 1956 খ্রিস্টাব্দের 1 নভেম্বর ভারত সরকার ভাষার ভিত্তিতে 14 টি রাজ্য ও 6 টি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল গঠন করে। 


এই আইনের ভিত্তিতে -

a. হায়দ্রাবাদ থেকে তেলেঙ্গানাকে বিচ্ছিন্ন করে অপ্রদেশের সঙ্গে যুক্ত করা হয়

b. কন্নড়ভাষী অঞ্চলগুলিকে মহীশূরের সঙ্গে যুক্ত করা হয়

c. মালাবার ত্রিবাঙ্কুর ও কোচিনকে যুক্ত করে কেরালা গঠন করা হয়

d. সৌরাষ্ট্র কচ্ছ ও হায়দ্রাবাদের মারাঠীভাষী অঞলের সমন্বয়ে গঠিত হয় বোম্বাই প্রদেশ

e. বিহারের পুর্ণিয়া জেলার কিছু অংশ ও পুরুলিয়াকে পশ্চিমবঙ্গের সঙ্গে যুক্ত করা হয়।


প্রতিক্রিয়া:- ভাষাভিত্তিক রাজ্য পুনর্গঠিত হওয়ার ফলে ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলে এজন্য জোরালো দাবি গড়ে ওঠে। এরই ফলশ্রুতিতে -


a. 1960 খ্রিস্টাব্দে বোম্বাই প্রদেশ ভেঙ্গে গড়ে ওঠে মারাঠী-ভাষী মহারাষ্ট্র ও গুজরাটি- ভাষী গুজরাট।

b. 1966 খ্রিস্টাব্দে পাঞ্জাব প্রদেশ ভেঙ্গে গড়ে ওঠে পাঞ্জাব ও হরিয়ানা। তাছাড়া আরও বহু ভাষাভিত্তিক রাজ্য গড়ে ওঠে।


উপসংহার:- ভাষাভিত্তিক রাজ্যগঠনে ভারতের জাতীয় সংহতির পক্ষে ক্ষতিকারক মনে হলেও এর সুদূরপ্রসারী ফলাফল ছিল গুরুত্বপূর্ণ। এটি ছিল এক যুক্তিসংগত পদক্ষেপ।



  • বন্ধুরা ২০২২ সালের অধ্যায় ভিত্তিক ইতিহাস সাজেশন এর জন্য  Click Here
  • নারী শিক্ষা বিস্তারে ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের অবদান আলোচনা করো Click Here

File Details

 

File Name/Book Name

স্বাধীনতার পরে ভাষার ভিত্তিতে ভারত কীভাবে পুনর্গঠিত হয়েছিল?

File Format

PDF

File Language

Bengali

File Size

80 KB

File Location

GOOGLE DRIVE

Download Link

Click Here to Download PDF File


Join Telegram... Members




একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)
To Top