মাধ্যমিক ইতিহাস ষষ্ঠ অধ্যায়||২ নম্বরের প্রশ্ন ও উত্তর||বিশ শতকে ভারতের কৃষক শ্রমিক ও বামপন্থী আন্দোলন

2

মাধ্যমিক ইতিহাস ষষ্ঠ অধ্যায়||২ নম্বরের প্রশ্ন  ও উত্তর||বিশ শতকে ভারতের কৃষক শ্রমিক ও বামপন্থী আন্দোলন



মাধ্যমিক ইতিহাস ষষ্ঠ অধ্যায় ২ নম্বরের প্রশ্ন  ও উত্তর




প্রিয় দশম শ্রেনীর শিক্ষার্থীরা,

আজকে তোমাদের সঙ্গে শেয়ার করবো, মাধ্যমিক ইতিহাস ষষ্ঠ অধ্যায়||২ নম্বরের প্রশ্ন ও উত্তর||বিশ শতকে ভারতের কৃষক শ্রমিক ও বামপন্থী আন্দোলন|মাধ্যমিক ইতিহাস ২ নম্বরের প্রশ্ন ও উত্তর With PDF Download|মাধ্যমিক ইতিহাস প্রশ্নোত্তর|তোমরা এই ওয়েবসাইটের মাধ্যমে দশম শ্রেনী ষষ্ঠ অধ্যায় বিশ শতকে ভারতের কৃষক শ্রমিক ও বামপন্থী আন্দোলন ৮ নম্বরের প্রশ্ন ও উত্তর|Class 10 History 6th Chapter 2 Marks Question Answers| মাধ্যমিক ষষ্ঠ অধ্যায় বিশ শতকে ভারতের কৃষক শ্রমিক ও বামপন্থী আন্দোলন ১ ও ২ নম্বরের প্রশ্ন ও উত্তর|তোমরা এই অধ্যায়ের অর্থাৎ বিশ শতকে ভারতের কৃষক শ্রমিক ও বামপন্থী আন্দোলন থেকে ১ নম্বরের প্রশ্ন ও উত্তর|Madhyamik History 6th Chapter Suggestion|বিশ শতকে ভারতের কৃষক শ্রমিক ও বামপন্থী আন্দোলন থেকে ২ নম্বরের প্রশ্ন ও উত্তর|বিশ শতকে ভারতের কৃষক শ্রমিক ও বামপন্থী আন্দোলন থেকে ৪ নম্বরের প্রশ্ন ও উত্তর|ষষ্ঠ অধ্যায় থেকে ৮ নম্বরের প্রশ্ন ও উত্তর' পেয়ে যাবে|এগুলি তোমাদের ফাইনাল পরিক্ষার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ন হবে|

তো বন্ধুরা ষষ্ঠ অধ্যায় বিশ শতকে ভারতের কৃষক শ্রমিক ও বামপন্থী আন্দোলন থেকে বহুবিকল্পভিত্তিক, সংক্ষিপ্ত, অতিসংক্ষিপ্ত এবং রোচনাধর্মী প্রশ্ন উত্তর|MCQ Very Short Short Descriptive Question and Answer|তোমাদের এই পোস্টের মাধ্যমে মাধ্যমিক ইতিহাস ষষ্ঠ অধ্যায় ষষ্ঠ ২ নম্বরের প্রশ্ন ও উত্তর সম্পর্কে আলোচনা করা আছে। আমাদের আশা এই প্রশ্নগুলি তোমাদের পরিক্ষায় খুবই কাজে আসবে।

মাধ্যমিক ইতিহাস ষষ্ঠ অধ্যায়||২ নম্বরের প্রশ্ন ও উত্তর||বিশ শতকে ভারতের কৃষক শ্রমিক ও বামপন্থী আন্দোলন


1.সত্যাগ্রহ বলতে কী বোঝো?

সত্যাগ্রহ' কথাটির অর্থ হল সত্যের প্রতি একান্ত নিষ্ঠা। গান্ধিজি রাজনৈতিক ক্ষেত্রে অহিংস সত্যাগ্রহকে নীতি ও কৌশল হিসেবে গ্রহণ করেন। শান্ত ও নিরস্ত্রভাবে ও সত্যের পথে অন্যায়ের বিরুদ্ধে সংগ্রামকে তিনি সত্যাগ্রহ’ আখ্যা দেন। আত্মকষ্টের মাধ্যমে ও অহিংস উপায়ে প্রতিপক্ষকে জয় করাই ছিল এর লক্ষ্য। এটি একটি নৈতিক শক্তি



2.AITUC কবে প্রতিষ্ঠিত হয়? এর প্রধান সভাপতি কে ছিলেন?

1920 খ্রিস্টাব্দে AITUC বা লিখিল ভারত ট্রেড ইউনিয়ন কংগ্রেস প্রতিষ্ঠিত হয়। এর প্রথম সভাপতি ছিলেন লালা লাজপত রায়।1932 খ্রিস্টাব্দ থেকে 1934 খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত।



3.AITUC কবে, কেন প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল?

বিংশ শতাব্দীর প্রথমপর্বে ভারতব্যাপী বিভিন্ন শ্রমিক আন্দোলনকে সংঘবদ্ধকরণ এবং শ্রমিকদের অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক দাবিদাওয়া আদায়ের জন্য 1920 খ্রিস্টাব্দে প্রতিষ্ঠিত হয় ‘নিখিল ভারত ট্রেড ইউনিয়ন কংগ্রেস। এর প্রথম সভাপতি ছিলেন লালা লাজপত রায়।



4.তিন কাঠিয়া প্রথা কি?

বিহারের চম্পারণে নীলকর সাহেবরা চাষিদের জমিতে বিঘাপ্রতি (20 কাঠায় এক বিঘা) তিন কাঠা জমিতে নীল চাষ করতে বাধ্য করতো। অর্থাৎ, চাষিরা 20 কাঠা জমির মধ্যে তিন কাঠা জমিতে নীল উৎপাদন করতে বাধ্য হত। শুধু উৎপাদন নয়, উৎপাদিত নীল নীলকর সাহেবদের কাছে নির্দিষ্ট দামে বিক্রি করতে বাধ্য থাকত। এই ব্যবস্থা ‘তিন কাঠিয়া’ প্রথা নামে পরিচিত।



5.সর্বভারতীয় কিষাণ সভা গঠনের দুটি উদ্দেশ্য লেখ।

অথবা 

সারা ভারত কিষান সভার কর্মসূচি কি ছিল?



জমিদারি প্রথা উচ্ছেদঃ- জমিদারি প্রথা ছিল কৃষকদের দুর্দশার অন্যতম কারণ। তাই কিষান সভা জমিদারি প্রথার উচ্ছেদের দাবি জানায়।


কৃষিঋণ মকুবঃ- কৃষকরা ঋণ নিয়ে অনন্তকাল ঋণের জালে জড়িয়ে থাকত। কিষান সভা এই ঋণ মকুবের দাবি জানায়। এছাড়াও বেগার প্রথার অবসান,খাজনা হ্রাস ,বনজসম্পদে অধিকার,জমি প্রদান ইত্যাদি সর্বভারতীয় কিষাণ সভা গঠনের উদ্দেশ্য বা কর্মসূচি ছিল



6.একা আন্দোলন কি?

1921-1922 খ্রিস্টাব্দে উত্তরপ্রদেশে কংগ্রেস ও খিলাফতি নেতাদের উদ্যোগে এবং মাদারি পাশির নেতৃত্বে হরদৌ, সীতাপুর, বারাচ, বা্রাবাকী জেলায় কৃষক আন্দোলন শুরু হয়। এই আন্দোলন একা বা একতা আন্দোলন নামে খ্যাত।


কারণঃ- 

(i) কৃষকদের নির্ধারিত করের ওপর আরও বাড়তি 50% কর ছাড়াও নানারকম উপকর আরোপ

(ii) কর আদায়ের ক্ষেত্রে কৃষকদের ওপর সীমাহীন অত্যাচার 

(iii) জমি ও খামারে বিনা মজুরিতে কৃষকদের বেগার শ্রম দানে বাধ্য করা ও কৃষকদের জমি থেকে উৎখাত করা

(iv) কংগ্রেস ও খিলাফত নেতাদের উদ্যোগ গ্রহণ ইত্যাদি ছিল ‘একা’ বা ‘একতা’ আন্দোলন গড়ে ওঠার প্রধান কারণ।



7.মিরাট ষড়যন্ত্র মামলা কি?

অথবা মিরাট ষড়যন্ত্র মামলা কবে হয়? এর কয়েকজন অভিযুক্তের নাম লেখ।

ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলে কমিউনিস্ট তৎপরতায় শঙ্কিত হয়ে বামপন্থী শ্রমিক আন্দোলনকে দমন করার জন্য ব্রিটিশ সরকার জননিরাপত্তা আইনে 1929 খ্রিস্টাব্দে 20 মার্চ 33 জন কমিউনিস্ট শ্রমিক নেতাকে গ্রেপ্তার করে। তাদের বিরুদ্ধে যে মামলা রুজু করা হয়—তা মিরাট ষড়যন্ত্র মামলা নামে পরিচিত। এই মামলা চার বছর ধরে চলেছিল।

এই মামলায় অভিযুক্তরা ছিলেন- মজাফফর আহমেদ, এস.এ দাঙ্গে, পি.সি যোশী ছাড়াও বেঞ্জামিন ব্রাডলি ও ফিলিপ স্প্রাট নামে দুইজন ইংরেজ এবং হ্যাচিনসন নামে একজন সাংবাদিকের নাম জড়িত ছিল।



8.খেদা সত্যগ্রহ কি?

গুজরাটে খেদা জেলার কৃষকদের নিয়ে সরকারি রাজস্ব বৃদ্ধির (30 শতাংশ বৃদ্ধি করা হয়েছিল) প্রতিবাদে গান্ধিজির নেতৃত্বে 1918 খ্রিস্টাব্দে সত্যাগ্রহ পরিচালিত হয়েছিল, তা খেদা সত্যাগ্রহ নামে পরিচিত। গান্ধিজির প্রভাবে শেষ পর্যন্ত সরকার কৃষকদের সঙ্গে আপস-মীমাংসায় রাজি হয়।



9.রম্পা বিদ্রোহ কি?

অথবা রম্পা বিদ্রোহ কোথায় এবং কেন হয়?

অসহযোগ আন্দোলনের সময় অন্ধের গোদাবরী উপত্যকায় রম্পা উপজাতীরা যে বিদ্রোহ করে তা রম্পা বিদ্রোহ নামে পরিচিত। মহাজন' শ্রেণীর অত্যাচার এবং ইংরেজ সরকারের আইন যা তাদের বন থেকে কাঠ সংগ্রহ গোচারণ নিষিদ্ধ করলে তারা ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে। এই সময় আল্লুরি সীতারাম রাজুর নেতৃত্বে রম্পা উপজাতীরা বিদ্রোহ ঘোষণা করেন। গেরিলা পদ্ধতিতে যুদ্ধ শুরু করে তারা রাজুর গ্রেপ্তার এবং নিষ্ঠূর দমননীতির মাধ্যমেই এই বিদ্রোহ ব্যর্থ হয়। 



10.কংগ্রেস সমাজতন্ত্রী দল এর উদ্দেশ্য কি ছিল?

অথবা কংগ্রেস সমাজতন্ত্রী দল এর দুটি নীতি উল্লেখ করো।

আইন অমান্য আন্দোলনের পর থেকেই কংগ্রেসের অভ্যন্তরে বামপন্থী ও সামন্ততন্ত্রীদের প্রভাব বৃদ্ধি পেতে থাকে। 1934 খ্রিস্টাব্দের 23 শে অক্টোবর আচার্য নরেন্দ্র দেব এর সভাপতিত্বে বোম্বাই শহরে আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় কংগ্রেসের অভ্যন্তরের কংগ্রেস সমাজতন্ত্রী দল প্রতিষ্ঠিত হয়। কংগ্রেস সমাজতন্ত্রী দলের অন্যান্য সদস্যদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন জয়প্রকাশ নারায়ণ, অশোক মেহতা, অচুত্য পট্টবর্ধন, ইউসুফ মেহের আলী প্রমুখ।


কংগ্রেস সমাজতন্ত্রী দলের মূল নীতিগুলি হলো- 

i) অতিসত্বর স্বাধীনতা লাভ। 

ii) বামমনোভাবাপন্ন নেতাদের ঐক্যবদ্ধ করা। 

iii) সমাজতান্ত্রিক ভাবধারার প্রসার ঘটানো। 

iv) কৃষক শ্রমিক শ্রেণীর দাবি পূরণ করা।




11.ভারতে বামপন্থার জনপ্রিয়তার দুটি কারণ লেখ।

ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনে জাতীয় দল, আঞ্চলিক দল, উপজাতি গোষ্ঠী, ধর্মীয় গোষ্ঠী এবং বহু ব্যক্তি বিশেষের অবদান ছিল। দেরিতে হলেও বামপন্থীরা এই আন্দোলন সমর্থন করে ও এতে অংশগ্রহন করে ধীরে ধীরে তাদের জনপ্রিয়তা বাড়তে থাকে, তাদের এই জনপ্রিয়তা বৃদ্ধির কারন গুলি হল-

i) বামপন্থীরা রাজনীতিতে সামাজিক সাম্যের সমর্থক ছিলেন; কোন ব্যক্তি, গোষ্ঠী বা সম্প্রদায় বিশেষ অধিকারের সমর্থক ছিলেন না।

ii) জাতীয় কংগ্রেস ভারতবাসীর জন্য স্বায়ত্তশাসনের কথা বললেও এরা সম্পূর্ণ স্বাধীনতার পরিপন্থী ছিলেন।



12.ভারত ছাড়ো আন্দোলনে কমিউনিস্ট পার্টি যোগ দেয়নি কেন?

1947 খ্রিস্টাব্দে 3রা সেপ্টেম্বর দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হলে ভারতীয় নেতৃবৃন্দের সঙ্গে কোন প্রকার আলোচনা ছাড়াই ইংরেজ সরকার ভারতকে যুদ্ধরত দেশ বলে ঘোষণা করে করলে কমিউনিস্ট পার্টি কংগ্রেসের সঙ্গে সহযোগিতা করে ভারত ছাড়ো আন্দোলনে শামিল হয়। কিন্তু রাশিয়া নাৎসি জার্মানি দ্বারা আক্রান্ত হলে ভারতীয় কমিউনিস্ট দল সোভিয়েত রাশিয়া্র মিত্র ব্রিটেনের যুদ্ধ প্রচেষ্টায় সমর্থন জানাতে সিদ্ধান্ত নেন। ভারতীয় জাতীয়তাবাদীদের প্রতিবাদ অগ্রাহ্য করে তারা ব্রিটেনের যুদ্ধকেই জনযুদ্ধ বলে অভিহিত করেন। সুতরাং ভারতছাড়ো আন্দোলনের দ্বারা যুদ্ধরত  ব্রিটিশ সরকারকে তারা বিব্রত করা অনুচিত মনে করে ছাড়ো আন্দোলনে শামিল হয়নি।



13.এম এন রায় স্মরণীয় কেন?

মানবেন্দ্র রায় ওরফে নরেন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য ভারতের জাতীয় মুক্তি আন্দোলন ও বামপন্থী আন্দোলনের ক্ষেত্রে এক বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব।প্রথম জীবনে বাংলার বিপ্লবী আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন মানবেন্দ্র রায়।বাংলার বিখ্যাত বিপ্লবী বাঘা যতীনের সঙ্গে বিদেশ থেকে অস্ত্র আমদানি করে দেশকে স্বাধীন করার স্বপ্ন দেখেছিলেন তিনি। কিন্তু বুড়ি বালামের যুদ্ধে বাঘাযতিন এর মৃত্যু হলে তিনি আমেরিকায় পালিয়ে যান এবং সেখান থেকে মেক্সিকো গিয়ে তিনি মার্কসবাদী দীক্ষা নেন।1920 খ্রিস্টাব্দের 17 অক্টোবরে রাশিয়া তাসখন্দে তিনি ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি প্রতিষ্ঠা করেন।মানবেন্দ্র রায়ের উদ্যোগে ভারতের নানা প্রান্তে সাম্যবাদী আদর্শে বিশ্বাসী মানুষজনের সহযোগিতায় কমিউনিস্ট পার্টির শাখা গড়ে ওঠে যার চূড়ান্ত পরিণতি 1925 খ্রিস্টাব্দে কানপুরে ভারতের কমিউনিস্ট পার্টির প্রতিষ্ঠা।



14.মানবেন্দ্রনাথ রায়ের প্রতিষ্ঠিত দলের নাম কি তার রচিত একটি গ্রন্থের নাম কি?

মানবেন্দ্র রায়ের প্রতিষ্ঠিত দলের নাম হল ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি(1920 খ্রিস্টাব্দের 17 অক্টোবর-রাশিয়ার তাসখন্দে)। মানবেন্দ্র রায় রচিত দুটি গ্রন্থ হল “India and War” এবং “The Problems of Freedom”।



15.ওয়ার্কার্স এন্ড প্রেজেন্ট পার্টি কেন প্রতিষ্ঠিত হয়?

কংগ্রেস দল শ্রমিক ও কৃষকদের সংঘবদ্ধ করে ব্রিটিশ-বি্রোধী আন্দোলনকে শক্তিশালী করার যে উদ্যোগ নেয় সেক্ষেত্রে অত্যন্ত সক্রিয় ভূমিকা পালন করে ওয়ার্কার্স অ্যান্ড পেজেন্টস পার্টি।


উদ্দেশ্যঃ- ওয়ার্কার্স অ্যান্ড পেজেন্টস পার্টি প্রতিষ্ঠার প্রধান উদ্দেশ্যগুলি ছিল—

a. শ্রমিকদের কাজের সময়সীমা কমানো

b. সর্বনিম্ন মজুরির হার নির্ধারণ

c. জমিদারি প্রথার উচ্ছেদ প্রভৃতি



16.ভারতে কমিউনিস্ট পার্টিকে দ্বিজ বলা হয় কেন?

‘দ্বিজ’ কথাটির আক্ষরিক অর্থ হল যার দু-বার জন্ম। ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি দু-জায়গায় প্রতিষ্ঠিত হয় বলে একে ‘দ্বিজ বলা হয়। 

প্রথমঃ- 1920 খ্রিস্টাব্দের অক্টোবর মাসে মানবেন্দ্রনাথ রায়ের নেতৃত্বে রাশিয়ার তাসখন্দে প্রথম ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি প্রতিষ্ঠিত

হয়।

দ্বিতীয়ঃ- 1925 খ্রিস্টাব্দের ডিসেম্বর মাসে সিঙ্গারাভেল্ল চেটিয়ার-এঁর ভাপতিত্বে কানপুরে দ্বিতীয়বার ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি প্রতিষ্ঠিত হয়।


আরও পড়ুন......



17.বঙ্গভঙ্গ বিরোধী আন্দোলনে কৃষকেরা সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেনি কেন?

বঙ্গভঙ্গ-বিরোধী আন্দোলনে বাংলার বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মানুষ যোগদান করলেও কৃষক সম্প্রদায় নানা কারণে এই আন্দোলনে সামিল হয়নি।


কারণঃ-

a. এই আন্দোলনের কোনো সুনির্দিষ্ট কৃষিভিত্তিক কর্মসূচি যেমন কৃষকদের দুরবস্থার প্রতিকার, খাজনা বৃদ্ধি প্রতিরোধ, জমিদারি অত্যাচার বন্ধ ইত্যাদি বিষয় না-থাকায় কৃষকদের সামিল করা যায়নি,

b. জমিদার ও উচ্চশ্রেণির সাহায্যপুষ্ট হওয়ায় এই আন্দোলনের নেতৃবৃন্দ কৃষকদের আন্দোলনে সামিল করার তাগিদ অনুভব করেন নি।



18.চৌরিচৌরা ঘটনার গুরুত্ব লেখ।

অথবা 

চৌরিচৌরা ঘটনার দুটি গুরুত্ব লেখো।

1922 খ্রিস্টাব্দের 5 ফেব্রুয়ারি উত্তরপ্রদেশের চৌরিচৌরাতে পুলিশের অত্যাচারে ক্ষিপ্ত হয়ে জনতা থানায় আগুন লাগিয়ে 22 জন পুলিশকর্মীকে জীবন্তদগ্ধ করে। গান্ধিজি এই ঘটনায় মর্মাহত হয়ে আন্দোলন প্রত্যাহার করেন। এর ফলে—

(i)  ভয়ঙ্কর পুলিশি অত্যাচারের হাত থেকে ভারতবাসীকে রক্ষা করা সম্ভব হয়, 

(ii) চৌরিচৌরা ঘটনার ফলে নিস্তেজ হয়ে যাওয়া আন্দোলন প্রত্যাহার করা সম্ভব হয়, 

(iii) এই ঘটনার পর সরকার কিছু সংস্কার সাধনে বাধ্য হয়।





19.তেভাগা আন্দোলনের মূল দাবি কি ছিল?

স্বাধীনতা লাভের প্রাক্কালে 1946 খ্রিস্টাব্দে  সেপ্টেম্বর মাসে বাংলার শাসিত, শোষিত কৃষক সম্প্রদায় বঙ্গীয় প্রাদেশিক কৃষক সভার উদ্যোগে এবং কমিউনিস্ট পার্টির নেতৃত্বে জমিদার, জোতদার ও ইংরেজ সরকারের বিরুদ্ধে যে আন্দোলন গড়ে তোলে তা ‘তেভাগা-আন্দোলন’ নামে পরিচিত।

তেভাগা আন্দোলকারীদের মূল দাবিগুলি ছিল—

a. উৎপন্ন ফসলের তিন ভাগের দু-ভাগ দিতে হবে,

b. জমিতে ভাগচাষিকে দখলিস্বত্ব দিতে হবে,

c. জমিদারী প্রথার উচ্ছেদ ঘটাতে হবে,

d. ভূমিরাজস্বের পরিমাণ হ্রাস করতে হবে ইত্যাদি।



20.তেলেঙ্গানা বিদ্রোহ স্মরণীয় কেন?

প্রাক স্বাধীনতার যুগে তেলেঙ্গানা ছিল হায়দ্রাবাদের নিজাম শাসিত অঞ্চল। এই  অঞ্চলের কৃষকরা বিভিন্নভাবে অত্যাচারিত হত, তাদের কোন স্বাধীন সত্তা ছিল না। তারা বেট্টি প্রথা বা বেগার শ্রমের শিকার ছিল। এই পরিপ্রেক্ষিতে 1946 সালে কমিউনিস্টরা গেরিলা প্রতিরোধ শুরু করে যা তেলেঙ্গানা বিদ্রোহ নামে পরিচিত।


গুরুত্বঃ-

a. সামন্তপ্রথার বন্ধ হয় এই বিদ্রোহের ফলে সামন্ত প্রথার পথ বন্ধ হয়।

b. নারীর মর্যাদা বৃদ্ধি পায় এবং কৃষকের মজুরি বৃদ্ধি পায়।

c. বেট্টি প্রথার লোপ হয়।

d. 1951 সালে এই বিদ্রোহের অবসান ঘটে । ঐতিহাসিক সুমিত সরকার বলেন- ‘’আধুনিক ভারতের ইতিহাসে এটি সবচেয়ে বড় গেরিলা যুদ্ধ”



21.চম্পারন আন্দোলন কি?

নীলকর সাহেবদের শোষণ ও অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে বিহারের চম্পারণ জেলার নীলচাষিরা 1917 খ্রিস্টাব্দে গান্ধিজির নেতৃত্বে এক আন্দোলন গড়ে তোলে। এটি চম্পারণ সত্যাগ্রহ' নামে পরিচিত।


ফলাফলঃ- আন্দোলনের তীব্রতায় সরকার চাষিদের অবস্থা অনুসন্ধানের জন্য 10 জুন 1917 খ্রি. একটি তদন্ত কমিটি নিয়োগ করে। এর ফলে ‘চম্পারণ কৃষি বিল’ (Champaran Agrarian Bill-1917) আইন পাস হয় এবং তিন কাঠিয়া প্রথার অবসান ঘটে।



22.মোপালা বিদ্রোহ কি?

অসহযোগ আন্দোলনকালে ভারতের বিভিন্ন অঞলে যে সমস্ত কৃষক আন্দোলন সংঘটিত হয় তার মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ, ব্যাপক ও রক্তাক্ত আন্দোলনটি হল মালাবার অঞলের ‘মোপলা বিদ্রোহ।


নেতৃত্বঃ- 1921 খ্রিস্টাব্দে মহম্মদ হাজি আলি মুসালিয়র, ইয়াকুব হাসান প্রমুখের নেতৃত্বে কেরলের মালাবার অঞ্চলে এই বিদ্রোহটি সংঘটিত হয়।


কারণঃ- সামন্ততান্ত্রিক শাসন, শোষণ, খলিফার সাম্রাজ্য পুনরুদ্ধারের উন্মাদনা ও অসহযোগ আন্দোলনের ঢেউ এই তিনের প্রভাবে মোপলা বিদ্রোহ সংঘটিত হয়। এতে প্রায় 300 জন হিন্দুকে হত্যা করা হয় ও 2500 জন হিন্দুকে ধর্মান্তরিত করা হয়।


চরিত্রঃ- আন্দোলনটি হিন্দু-মুসলিম দাঙ্গায় পর্যবসিত হলেও মূল চরিত্রটি ছিল ইংরেজ ও সামন্ততন্ত্র বিরোধী।



23.কে, কবে, কেন অরন্ধনের ডাক দিয়েছিলেন?

বঙ্গভঙ্গ কার্যকর করার দিনটিকে (16 অক্টোবর, 1905 খ্রিস্টাব্দ) রামেন্দ্রসুন্দর ত্রিবেদী অরন্ধন’ দিবস হিসেবে পালন করার আবেদন জানান তার আবেদনে সাড়া দিয়ে ভারতীয় নারীরা ঘরে ঘরে সেদিন রন্ধনকার্য বন্ধ 

রেখে বঙ্গভঙ্গের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানায়।



24.তাম্রলিপ্ত জাতীয় সরকার কী?

ভারত ছাড়ো আন্দোলনকালে বাংলার মেদিনীপুর জেলার তমলুক মহকুমায় সতীশচন্দ্র সামন্তের নেতৃত্বে (17 ডিসেম্বর 1942খ্রিঃ) গড়ে ওঠে তাম্রলিপ্ত জাতীয় সরকার।


সরকারের উদ্যোগ :-

a.এই সরকার নিজস্ব বুলেটিন, ডাকবিভাগ, অর্থদপ্তর, আইন-শৃঙ্খলা কমিটি, ‘বিদ্যুৎ বাহিনী’ নামক সামরিক বাহিনী গঠন করে নব গঠিত ‘তাম্রলিপ্ত জাতীয় সরকারকে শক্তিশালী করে,

b. 1943 খ্রিস্টাব্দ বাংলার বিস্তীর্ণ অঞ্চলে ভয়াবহ বন্যা, দুর্ভিক্ষ দেখা দিলে এই সরকার ত্রাণসামগ্রী পাঠানোর ব্যবস্থা করে।

c. এই সরকার স্বার্থপর, অসাধু ব্যবসায়ী ও ধনী জোতদারদের উদ্বৃত্ত চাল প্রভৃতি ভোগ্য দ্রব্য কেড়ে সেগুলি সাধারণ মানুষের মধ্যে - বণ্টন করে ইত্যাদি।

1942খ্রিস্টাব্দ থেকে 1944 খ্রিস্টাব্দের আগস্ট পর্যন্ত এই সরকার স্থায়ী হয়েছিল।



  • বন্ধুরা ২০২২ সালের অধ্যায় ভিত্তিক ইতিহাস সাজেশন এর জন্য  Click Here


File Details

 

File Name/Book Name

 মাধ্যমিক ইতিহাস ষষ্ঠ অধ্যায় ২ নম্বরের প্রশ্ন ও উত্তর

File Format

PDF

File Language

Bengali

File Size

178 KB

File Location

GOOGLE DRIVE

Download Link

Click Here to Download PDF File



Join Telegram... Members

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

2 মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
To Top