ঔপনিবেশিক ভারতে বাংলায় বিজ্ঞান শিক্ষার বিকাশ সম্পর্কে কী জান ?

2

ঔপনিবেশিক ভারতে বাংলায়  বিজ্ঞান শিক্ষার বিকাশ সম্পর্কে কী জান ?



ঔপনিবেশিক ভারতে বাংলায়  বিজ্ঞান শিক্ষার বিকাশ


প্রিয় মাধ্যমিকের শিক্ষার্থীরা,

আজকে তোমাদের সঙ্গে শেয়ার করবো ঔপনিবেশিক ভারতে বাংলায় বিজ্ঞান শিক্ষার বিকাশ সম্পর্কে কী জান? | Madhyamik History Question and Answer | 10th History Examination দশম শ্রেনীর পঞ্চম অধ্যায় বিকল্প চিন্তা ও উদ্যোগ : বৈশিষ্ট্য ও পর্যালোচনা ১ ও ২ নম্বরের প্রশ্ন ও উত্তর পেয়ে যাবে। এছাড়াও তোমরা মাধ্যমিক পঞ্চম অধ্যায় ১ নম্বরের প্রশ্ন ও উত্তর | মাধ্যমিক পঞ্চম অধ্যায় ২ নম্বরের প্রশ্ন ও উত্তর |Ten History Examination- মাধ্যমিক পঞ্চম অধ্যায় ৪ নম্বরের প্রশ্ন ও উত্তর ঔপনিবেশিক ভারতে বাংলায় বিজ্ঞান শিক্ষার বিকাশ সম্পর্কে কী জানতে পারবে | দশম শ্রেণির ইতিহাস প্রশ্ন উত্তর | এটি তোমাদের ফাইনাল পরিক্ষার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ন হবে।

তো বন্ধুরা বিকল্প চিন্তা ও উদ্যোগ : বৈশিষ্ট্য ও পর্যালোচনা পঞ্চম অধ্যায় থেকে বহুবিকল্পভিত্তিক, সংক্ষিপ্ত, অতিসংক্ষিপ্ত এবং রোচনাধর্মী প্রশ্ন উত্তর (MCQ, Very Short, Short, Descriptive Question and Answer) সম্পর্কে আলোচনা করা আছে। আমাদের আশা এই প্রশ্নটি তোমাদের পরিক্ষায় খুবই কাজে আসবে।

ঔপনিবেশিক ভারতে বাংলায়  বিজ্ঞান শিক্ষার বিকাশ সম্পর্কে কী জান ?

উনিশ শতকের প্রথম ভাগে ইংরেজ কোম্পানির শিক্ষানীতির হাত ধরে ভারতে পাশ্চাত্য শিক্ষা তথা জ্ঞান-বিজ্ঞান চর্চার পথ প্রশস্ত হয়। এর ব্যতিক্রম ছিল না বাংলা। উনিশ শতক থেকে শুরু করে কুড়ি শতকের প্রথম ভাগ পর্যন্ত এর জয়যাত্রা অব্যাহত ছিল। 


বাংলায় বিজ্ঞান শিক্ষার বিকাশ:-

ব্যক্তিগত উদ্যোগঃ

উনিশ শতকের সূচনাকাল থেকেই বাংলায় ব্যক্তিগত উদ্যোগে বিজ্ঞানচর্চার অভূতপূর্ব উন্নতি হয়। অনেকের মত যে, বাংলায় খ্রিস্টান মিশনারিদের (মার্শম্যান, ওয়ার্ড ও কেরি) উদ্যোগে প্রথম বিজ্ঞান শিক্ষার প্রসার ঘটে। জন ম্যাক ১৮২১ খ্রিস্টাব্দে বাংলা ভাষায় রসায়নবিদ্যার ওপর একটি বই লেখেন। তত্ত্ববােধিনী, বঙ্গদর্শন প্রভৃতি পত্রিকা বাংলায় বিজ্ঞানমনস্ক পরিবেশ গড়ে তুলতে এক ইতিবাচক ভূমিকা পালন করে। শিবপুর বােটানিক্যাল গার্ডেনের পরিদর্শক রক্মবর্গ বাংলায় ৩৫০০টি গাছের নাম সংবলিত ‘হার্টস বেঙ্গেলেনসিস’ নামক একটি বই লেখেন। এ প্রসঙ্গে রাধানাথ শিকদার, প্রমথনাথ বসুর নাম উল্লেখ্য।  পরবর্তীকালে জগদীশচন্দ্র বসু ‘ক্রেসকোগ্রাফ’ যন্ত্র আবিষ্কার করে উদ্ভিদের বৃদ্ধির হার নির্ণয় করেন। আচার্য প্রফুল্ল চন্দ্র রায় আবিষ্কার করেন ‘মারকিউরাস নাইট্রাইট। রচনা করেন ‘হিস্ট্রি অব হিন্দু কেমিস্ট্রি। 

প্রাতিষ্ঠানিক উদ্যোগ : ব্যক্তিগত উদ্যোগ ছাড়াও প্রাতিষ্ঠানিক উদ্যোগে বাংলায় বিজ্ঞান চর্চার বিকাশ ঘটে। যেমন- 

A. স্কুল বুক ও এশিয়াটিক সােসাইটি:  ১৮১৭ খ্রিস্টাব্দে ডেভিড হেয়ারের উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত হয় ‘স্কুল বুক সােসাইটি। বাংলায় বিজ্ঞান শিক্ষা প্রসারে এর অবদান অনস্বীকার্য। এই প্রতিষ্ঠান বিদ্যালয় স্তরের জন্য অনেক পাঠ্যপুস্তক বাংলা ভাষায় প্রকাশ করেন। জানা যায় এই সােসাইটি ১১২ টি গণিত ও ৯৯টি চিকিৎসাশাস্ত্র বিষয়ক গ্রন্থ প্রকাশ করে। ১৭৮৪ খ্রিস্টাব্দে প্রতিষ্ঠিত হয় এশিয়াটিক সােসাইটি'। এটি একসময় বাংলায় বিজ্ঞানচর্চার প্রধান প্রাণকেন্দ্রে পরিণত হয়। 

B. IACS প্রতিষ্ঠা : বাংলার খ্যাতনামা চিকিৎসক ড. মহেন্দ্রলাল সরকার ১৮৭৬ খ্রিস্টাব্দে কলকাতায় সর্বপ্রথম ‘IACS’ বা ‘ইন্ডিয়ান অ্যাসােসিয়েশন ফর কাল্টিভেশন সায়েন্স’ প্রতিষ্ঠা করেন। ড. সরকার ছাড়াও এর সঙ্গে যুক্ত ছিলেন স্যার আশুতােষ মুখােপাধ্যায়, নীলরতন সরকার, জগদীশচন্দ্র বসু, প্রমথনাথ বসু প্রমুখ। তাঁদের লক্ষ ছিল পদার্থবিদ্যা ও রসায়নে মৌলিক গবেষণার কাজকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া। এরই ফলস্বরূপ ১৯৩০ খ্রিস্টাব্দে বিজ্ঞানী সি ভি রমন প্রতিষ্ঠান থেকে ‘রমন এফেক্ট’ আবিষ্কার করে বিজ্ঞানে নােবেল পুরস্কার লাভ করেন।

C. ডন সােসাইটির প্রতিষ্ঠা: বাংলায় বিজ্ঞানচর্চার অগ্রগতির জন্য ১৯০২ খ্রিস্টাব্দে সতীশ চন্দ্র মুখােপাধ্যায় প্রতিষ্ঠা করেন ‘ডন সােসাইটি এই সােসাইটির মুখপত্র ছিল ‘ডন’ পত্রিকা। এতে বিজ্ঞান বিষয়ক নানা প্রবন্ধ প্রকাশ করে বাংলায়। বিজ্ঞানমনস্ক পরিবেশ গড়েচিত্র: সি ভি রমন তােলার চেষ্টা করা হয়। এর সঙ্গে যুক্ত ছিলেন জগদীশচন্দ্র বসু, প্রফুল্লচন্দ্র রায়, রাজেন্দ্রসুন্দর ত্রিবেদী, নীলরতন সরকার প্রমুখ বিজ্ঞানী ও শিক্ষাবিদ। 

D. কলিকাতা বিজ্ঞান কলেজ : ১৯১৪ খ্রিস্টাব্দে স্যার আশুতােষ মুখােপাধ্যায় কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন গড়ে তােলেন কলিকাতা বিজ্ঞান কলেজ। এখানে অধ্যাপনার কাজে নিযুক্ত ছিলেন আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র রায়, সি ভি রমন, শিশির কুমার মিত্র প্রমুখ বিজ্ঞানী। সত্যেন্দ্রনাথ বসু, মেঘনাদ সাহা, জ্ঞানেন্দ্রনাথ মুখার্জি, জ্ঞানচন্দ্র ঘােষ প্রমুখ ছিলেন এই কলেজের ছাত্রসম্পদ। 

E. বসু বিজ্ঞান মন্দির প্রতিষ্ঠা : বিজ্ঞান বিষয়ক মৌলিক গবেষণার কাজকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য ১৯১৭ খ্রিস্টাব্দে আচার্য জগদীশচন্দ্র বসু প্রতিষ্ঠা করেন ‘বােস ইন্সটিটিউট (যার বর্তমান নাম ‘বসু বিজ্ঞান মন্দির’)। প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই দেশবিদেশের গবেষক ছাত্ররা এখানে ভীড় জমান। ক্রমে তাঁদের হাত ধরে বেরিয়ে আসে একাধিক মৌলিক আবিষ্কার।

F. বঙ্গীয় বিজ্ঞান পরিষদ : ১৯৪৮ খ্রিস্টাব্দে বিজ্ঞানী সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত প্রতিষ্ঠা করেন ‘বঙ্গীয় বিজ্ঞান পরিষদ’। বাংলাদেশে বিজ্ঞানশিক্ষা প্রসারের জন্য তিনি মাতৃভাষায় বিজ্ঞানচর্চার ওপর বিশেষ জোর দেন। বাঙালি মননে বিজ্ঞানমনস্কতা গড়ে তােলার জন্য তিনি বাংলা ভাষায় জ্ঞান ও বিজ্ঞান নামক একটি পত্রিকা নিয়মিত প্রকাশ করতেন।

মন্তব্য: এইভাবে উনিশ-কুড়ি শতকে ব্যক্তিগত উদ্যোগে ও প্রতিষ্ঠানগতভাবে বাংলায় বিজ্ঞানচর্চার এক সন্তোষজনক পরিবেশ গড়ে ওঠে। ফলে বিজ্ঞান শাস্ত্রের বিভিন্ন শাখায় বাঙালির জয়যাত্রা এক অন্য মাত্রা লাভ করে। বলা বাহুল্য যে, সেই ধারা আজও সমানভাবে বহমান।





File Details

 

File Name/Book Name

 ঔপনিবেশিক ভারতে বাংলায়  বিজ্ঞান শিক্ষার বিকাশ সম্পর্কে কী জান ? 

File Format

PDF

File Language

Bengali

File Size

87 KB

File Location

GOOGLE DRIVE

Download Link

Click Here to Download PDF File



Join Telegram... Members

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

2 মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
To Top