সমাজ সংস্কারে রাজা রামমোহন রায় ও বিদ্যাসাগর ভূমিকা আলোচনা কর।

13

সমাজ সংস্কারে রাজা রামমোহন রায় ও বিদ্যাসাগর ভূমিকা আলোচনা কর।


সমাজ সংস্কারে রাজা রামমোহন  ও বিদ্যাসাগর 

সমাজ সংস্কারে রাজা রামমোহন রায় ও বিদ্যাসাগর ভূমিকা আলোচনা কর।

রাজা রামমোহন রায় ও তাঁর সংস্কার আন্দোলন


ভূমিকা : উত্তর উনিশ শতকে বাংলার সমাজসংস্কার আন্দোলনের ইতিহাসে যে-সমস্ত জ্যোতিষ্ক চিরস্মরণীয় অবদান রেখেগেছেন, তাঁদের মধ্যে একজন বাস্তববাদী ও মানবতাবাদী সংস্কারক ছিলেন ‘ভারত পথিক’ রাজা রামমোহন রায়। রাজা রামমোহন রায় সমাজের কুসংস্কার দূর করে আধুনিক সমাজ গঠনে প্রথম সচেষ্ট হয়েছিলেন। কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বলেছেন যে, রামমোহন রায় ছিলেন সমকালীন বিশ্বের সেই ব্যক্তি যিনি আধুনিক যুগের গুরুত্ব উপলব্ধি করেছিলেন।


সমাজ সংস্কার:


ক) সতীদাহপ্রথার বিরুদ্ধে আন্দোলন : সমাজসংস্কারের ক্ষেত্রে রাজা রামমোহন রায়ের সবচেয়ে বড়ো অবদান সতীদাহপ্রথার বিরুদ্ধে আন্দোলন। তৎকালীন হিন্দুসমাজের উচ্চবর্ণে অমানবিক সতীদাহপ্রথা প্রচলিত ছিল। এই প্রথা অনুসারে মৃত স্বামীর চিতায় তার জীবিত স্ত্রীকে পুড়িয়ে মারা হত। ধর্মশাস্ত্র ব্যাখ্যা-সহ বিভিন্নভাবে চেষ্টা করে রামমোহন এই পৈশাচিক প্রথা বন্ধ  করার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করেন। তিনি এই প্রথার বিরুদ্ধে জনমত গঠন করে ব্রিটিশ সরকারের কাছে আবেদন করেন। তার এই প্রচেষ্টার ফলে শেষপর্যন্ত গভর্নর জেনারেল লর্ড উইলিয়ম বেন্টিঙ্ক 1829 খ্রিস্টাব্দে 17 নং রেগুলেশন জারি করে সতীদাহপ্রথা নিষিদ্ধ বলে ঘোষনা করেন।


খ) নারীদের অধিকার প্রতিষ্ঠা : রাজা রামমোহন রায় নারীদের অধিকার ও দাবি প্রতিষ্ঠার জন্য আন্দোলন করেছিলেন। স্বামীর মৃত্যুর পর যাতে তার বিধবা স্ত্রী স্বাধীনভাবে বেঁচে থাকতে পারে তার জন্য তিনি স্বামীর সম্পত্তির উপর স্ত্রীর অধিকার প্রতিষ্ঠার বিষয়েও আন্দোলন করেন কারণ তখন পিতা বা স্বামীর সম্পত্তিতে নারীদের কোনো অধিকার ছিল না।


আরও পড়ুন( মাধ্যমিক ইতিহাসের কিছু গুরত্বপূর্ন প্রশ্ন ও উত্তর)

https://pic.sopili.net/pub/emoji/twitter/2/72x72/1f50d.png স্থানীয় ইতিহাসচর্চার গুরুত্ব আলোচনা কর

Click Here

 https://pic.sopili.net/pub/emoji/twitter/2/72x72/1f50d.png নীল বিদ্রোহের কারণ ফলাফল/গুরুত্ব/ তাৎপর্য বৈশিষ্ট্য গুলি আলোচনা কর

Click Here

 https://pic.sopili.net/pub/emoji/twitter/2/72x72/1f50d.png বিশ্বভারতী প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্য কি ছিল?

Click Here

 https://pic.sopili.net/pub/emoji/twitter/2/72x72/1f50d.png হুতোমপ্যাঁচার নক্সা গ্রন্থ থেকে উনিশ শতকের বাংলা সমাজের কী ধরনে চিত্র পাওয়া যায়?

Clic

k Here

 https://pic.sopili.net/pub/emoji/twitter/2/72x72/1f50d.png নারী শিক্ষা বিস্তারে ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের অবদান লেখ

Click Here

 https://pic.sopili.net/pub/emoji/twitter/2/72x72/1f50d.png উচ্চ শিক্ষার বিকাশে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূমিকা আলোচনা করো

Click Here




গ) বহুবিবাহের বিরুদ্ধে আন্দোলন : রামমোহন বহুবিবাহ প্রথার বিরুদ্ধেও আন্দোলন করেছিলেন। তিনি ভারতীয় শাস্ত্রের ব্যাখ্যা করে তা দেখিয়েছিলেন যে, প্রাচীন শাস্ত্রে পুরুষের বহুবিবাহের যথেচ্ছ অধিকার দেওয়া হয়নি। তবে প্রাচীনকালে কোন স্ত্রী ব্যাভিচারিণী, সুরাসক্ত ও বন্ধ্যা হলে পুরুষ পুনরায় বিবাহ করতে পারত।


ঘ)কৌলীন্য প্রথা ও বাল্যবিবাহের বিরোধিতা: রামমোহন কৌলীন্য প্রথাবিরোধী ছিলেন। কারণ এই কৌলীন্য প্রথার জন্যই সমাজচ্যুত হওয়ার আশঙ্কায় অল্পবয়স্ক মেয়েদের মৃত্যুপথযাত্রী বৃদ্ধের সঙ্গে বিবাহ দেওয়া হত।

       এছাড়াও রামমোহন রায় 1828 খ্রিস্টাব্দে  ব্রাত্মসভা প্রতিষ্ঠা করেন, তা 1830 খ্রিস্টাব্দে ব্রাত্মসমাজ নামে খ্যাতি লাভ করে। এই প্রতিষ্ঠানের উদ্দেশ্য ছিল পৌত্তলিকতা পরিহার করে নিরাকার পরমব্রহ্মের উপাসনা করা।তিনি এখানেই থেমে যাননি;শিক্ষা-সংস্কৃতির জগতেও রামমোহন অগ্রণী ব্যক্তিত্ব ছিলেন। তাঁর উদ্দেশ্য ছিল শিক্ষাবিস্তার ও গণতান্ত্রিক চেতনা প্রসারের চেষ্টা।


মূল্যায়ন: এভাবে অন্ধবিশ্বাস ও কুসংস্কারের উপর যুক্তির প্রাধান্য— যা নবজাগরণের মূল কথা, তা রামমোহনের কার্যকলাপে লক্ষ করা যায়। তার সামাজিক ও সাংস্কৃতিক আন্দোলনের জন্য তাকে ‘ভারতের প্রথম আধুনিক মানুষ’ বলা হয়। 



File Details

 

File Name/Book Name

সমাজ সংস্কারে রাজা রামমোহন রায় ও বিদ্যাসাগর ভূমিকা আলোচনা কর।

File Format

PDF

File Language

Bengali

File Size

176 KB

File Location

GOOGLE DRIVE

Download Link

Click Here to Download PDF File



একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

13 মন্তব্যসমূহ



  1. ভাইসরয় লর্ড লিটনের শাসনকাল সর্বাধিক বিতর্কিত তাঁর ১৮৭৮  খ্রীস্টাব্দে ১৪ মার্চ দেশীয় সংবাদপত্রের স্বাধীনতা হরণের জন্য প্রণীত ভার্নাকুলার প্রেস অ্যাক্ট এর জন্য। ভার্নাকুলার প্রেস অ্যাক্টের উদ্দেশ্য ছিল দেশীয় সংবাদপত্রের মাধ্যমে সরকারের বিরুদ্ধে পরিচালিত প্রচারণা বন্ধ করা। ভাইসরয়  লর্ড লিটন দেশীয় ভাষায় প্রকাশিত সংবাদপত্রকে ‘কুচক্রী বাজে লেখকদের প্রকাশ্য রাজদ্রোহী প্রচারণা’ বলে অভিযুক্ত করেন। তিনি মন্তব্য করেন যে, অধিকাংশ দেশীয় সংবাদপত্রের সুস্পষ্ট উদ্দেশ্য হচ্ছে ব্রিটিশ রাজের পতন ঘটানো।

    যেসব পত্রিকা সরকারকে উদ্বিগ্ন করে তুলছিল তা হলো  সোমপ্রকাশ, সুলভ সমাচার, হালিশহর পত্রিকা, অমৃত বাজার পত্রিকা, ভারত মিহির,  ঢাকা প্রকাশ, সাধারণী ও ভারত সংস্কারক। এর সবগুলো পত্রিকাকে সরকারের বিরুদ্ধে রাজদ্রোহমূলক আন্দোলন পরিচালনার দায়ে অভিযুক্ত করা হয়। এ আইনের আওতায় অনেক সংবাদপত্রকে জরিমানা করা হয় এবং সম্পাদকদের কারাদন্ড দেওয়া হয়।
    ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে দেশের সকল সংগঠন একযোগে এই পদক্ষেপের প্রতি নিন্দা জ্ঞাপন করে এবং তাদের প্রতিবাদ অব্যাহত থাকে।যাইহোক পরবর্তী ভাইসরয়  লর্ড রিপন উদ্ভূত পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে শেষ পর্যন্ত আইনটি প্রত্যাহার করে নেন। 

    উত্তরমুছুন
  2. এই মন্তব্যটি লেখক দ্বারা সরানো হয়েছে।

    উত্তরমুছুন
  3. 2019 সালের পরীক্ষায় ডিগ্রী পরীক্ষায় অনুষ্ঠিত হয়েছিল 2021 সালে এবং দর্শন বিভাগের পঞ্চম পত্র এই প্রশ্নটা এসেছিল, এখান থেকে দিতে পেরে আনন্দিত লাগছে।

    উত্তরমুছুন
    উত্তরগুলি
    1. তোমাদের এই ধরনের পজিটিভ ফিডব্যাক আমাদের অনেকটাই অনুপ্রানিত করে......আমাদের পাশে থাকার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ

      মুছুন
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
To Top