কাশ্মীর সমস্যা সম্পর্কে যা জানো লেখো
অথবা ভারত স্বাধীন হওয়ার পর কাশ্মীর কিভাবে ভারতের অন্তর্ভুক্ত হয়েছিল সংক্ষেপে আলোচনা কর
কাশ্মীর সমস্যা সম্পর্কে যা জানো লেখো |
কাশ্মীর সমস্যার সূচনা : ভারতের স্বাধীনতা লাভের সময় কাশ্মীরের তৎকালীন রাজাহরিসিং কে ভারত ও পাকিস্তান নিজ নিজ দেশে যোগদানের আবেদন জানান কিন্তু হরি সিং কোনো দেশে যোগদান না করে স্বাধীন ও স্বতন্ত্র থাকার সিদ্ধান্তে নেন। অপরদিকে কাশ্মীরের প্রধান রাজনৈতিক দল ‘ন্যাশনাল কনফারেন্স’-এর নেতা শেখ আবদুল্লা কাশ্মীরের ভারতভুক্তির জন্য আন্দোলন করেন।
পাকিস্তানের কাশ্মীর আক্রমণ: এই অবস্থায় পাকিস্তানের মদতপুষ্ট হানাদার বাহিনী ১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দের ২২ অক্টোবর কাশ্মীরে প্রবেশ করে
ব্যাপক হত্যা, লুঠ ও নির্যাতনসহ হিংসাত্মক কার্যকলাপ শুরু করলে হরি সিং শ্রীনগর থেকে পালিয়ে ভারত সরকারের কাছে সামরিক সাহায্য প্রার্থনা করেন। ভারত সরকার জানায় যে, মহারাজা ভারতভুক্তির দলিলে স্বাক্ষর করা ব্যতীত সেনা পাঠানো সম্ভব নয়।
কাশ্মীরের ভারতভুক্তি : শেষ পর্যন্ত মহারাজা হরি সিং ২৬শে অক্টোবর ভারতভুক্তির দলিলে স্বাক্ষর করে এবং এটি ‘ন্যাশনাল কনফারেন্স’ দ্বারা সমর্থিত হয়।
ভারতীয় সেনার অভিযান : এদিকে ২৬শে অক্টোবরের মধ্যে হানাদার বাহিনী শ্রীনগরের ৪০ মাইলের এসে পৌঁছোয়। ২৭ অক্টোবর প্রায় ১০০টি বিমানে ভারতীয় সেনাবাহিনী কাশ্মীরে অবতরণ করে হানাদারদের বিতাড়িত করে কাশ্মীরের দুই-তৃতীয়াংশ ভূখণ্ড উদ্ধার করেন। ৩১ অক্টোবর কাশ্মীরে শেখ আবদুল্লার নেতৃত্বে আপৎকালীন শাসনব্যবস্থা প্রবর্তিত হয়। এর বিরোধিতা করে পাকিস্তান তার দখলীকৃত কাশ্মীরে ‘আজাদ কাশ্মীর' নামে একটি সমান্তরাল সরকার প্রতিষ্ঠা করে।
কাশ্মীর সমস্যা ও সম্মিলিত জাতিপুঞ্জ : লর্ড মাউন্টব্যাটেনের পরামর্শে ভারত ১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দের ৩১ ডিসেম্বর জাতিপুঞ্জের নিরাপত্তা
পরিষদে কাশ্মীর সমস্যা উত্থাপন করে। দীর্ঘ দিন যাবত আলোচনার পর ১৯৪৮ খ্রিস্টাব্দের শেষদিকে নিরাপত্তা পরিষদ কাশ্মীরে যুদ্ধবিরতি
ঘোষণা করে।
মূল্যায়ন : ১৯৪৮ খ্রিস্টাব্দের ৩১ ডিসেম্বর নিরাপত্তা পরিষদ কাশ্মীরে যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে একটি যুদ্ধবিরতি সীমারেখা (LOC) চিহ্নিত করলেও হানাদার অধিকৃত কাশ্মীর পাকিস্তানের দখলে থেকে যায়। সেই থেকে আজ পর্যন্ত কাশ্মীর সমস্যার কোনো সুষ্ঠু সমাধান হয়নি।