জার্মানির ঐক্য আন্দোলনে বিসমার্কের ভূমিকা আলোচনা করো
জার্মানির ঐক্য আন্দোলনে বিসমার্কের ভূমিকা আলোচনা করো
জার্মানির ঐক্য আন্দোলনে বিসমার্কের ভূমিকা |
প্রিয় নবমশ্রেনীর শিক্ষার্থীরা,
আজকে তোমাদের সঙ্গে শেয়ার করবো, নবমশ্রেনীর তৃতীয় অধ্যায় (উনবিংশ শতকের: ইউরোপ তান্ত্রিক ও জাতীয়তাবাদী ভাবধারার সংঘাত) থেকে জার্মানির ঐক্য আন্দোলনে বিসমার্কের ভূমিকা আলোচনা করো। With PDF Download, তোমরা এই ওয়েবসাইটের মাধ্যমে নবমশ্রেনী ইতিহাস ১ নম্বরের প্রশ্ন ও উত্তর (Class 9 History 1 Mark Question And Answers), নবমশ্রেনী ইতিহাস ২ নম্বরের প্রশ্ন ও উত্তর (Class 9 History 2 Mark Question And Answers),নবমশ্রেনী ইতিহাস ৪ নম্বরের প্রশ্ন ও উত্তর (Class 9 History 4 Mark Question And Answers),নবমশ্রেনী ইতিহাস ৮ নম্বরের প্রশ্ন ও উত্তর (Class 9 History 8 Mark Question And Answers) পেয়ে যাবে। এগুলি তোমাদের ফাইনাল পরিক্ষার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ন হবে। তো বন্ধুরা তোমাদের এই পোস্টের মাধ্যমে জার্মানির ঐক্য আন্দোলনে বিসমার্কের ভূমিকা আলোচনা করো। এর উত্তর দেওয়া আছে আমাদের আসা এই প্রশ্নটি তোমাদের খুবই কাজে আসবে।
জার্মানির ঐক্য আন্দোলনে বিসমার্কের ভূমিকা আলোচনা করো
ভূমিকা: ফরাসি বিপ্লবের পূর্বে তথা নেপােলিয়নের জার্মানি জয়ের আগে জার্মানি প্রায় তিনশটি ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র রাজ্যে বিভক্ত ছিল। পরবর্তীকালে নেপােলিয়ন সেই রাজ্যগুলি জয় করে পুনর্গঠন করে এবং ৩০০ টি রাজ্যকে ৩৯ টি রাজ্যে বিভক্ত করে কনফেডারেশন অফ দ্য রাইন নামে একটি রাষ্ট্র সংগঠন করেন। পরবর্তীকালে ভিয়েনা সম্মেলনে ন্যায্য অধিকার নীতি প্রয়ােগ করে জার্মানিকে আবার ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র রাজ্যে পরিণত করে দেওয়া হয় এবং প্রতিষ্ঠিত হয় অস্ট্রিয়া কর্তৃত্ব। পরবর্তী সময়ে বিসমার্কের নেতৃত্বে জার্মানির ঐক্য সম্পন্ন হয়।
প্রাক বিসমার্ক যুগে জার্মানির ঐক্য সাধন
নেপােলিয়নের ভূমিকা: নেপােলিয়ন জার্মানি জয় করে সমগ্র জার্মানিতে একই ধরনের আইনকানুন শাসন ব্যবস্থা প্রবর্তন করেন যার সুফল সাধারণ মানুষ ভােগ করতে শুরু করলে প্রথম জার্মানবাসীর মনে জাতীয় চেতনার উন্মেষ ঘটে এবং তারা স্বাধীন ঐক্যবদ্ধ জার্মান রাষ্ট্র গঠনের স্বপ্ন দেখতে শুরু করেন।
জোলভেরাইন ও অর্থনৈতিক ঐক্য: ১৮১৯ খ্রিস্টাব্দে প্রাশিয়ার নেতৃত্বে জার্মান অর্থনীতিবিদ ম্যাজনের উদ্যোগে জোলভেরাইন নামক একটি শুল্ক সংঘ প্রতিষ্ঠিত হয়। অবাধ, বাণিজ্য নীতি, আন্তশুল্ক হ্রদ প্রভৃতি ব্যবস্থার ফলে জার্মান রাজ্যগুলির মধ্যে অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক একতা গড়ে উঠে। সর্বজাৰ্মানবাদ—জার্মানির বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র, অধ্যাপক, বুদ্ধিজীবী, কবি, সাহিত্যিক, দার্শনিক, ঐতিহাসিকরা সর্ব জার্মানবাদে উৎসাহিত হয়ে জাতীয়তাবাদী আন্দোলন শুরু করেন।
আরও পড়ুন......
- ফরাসী বিপ্লবের সামাজিক,অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক কারনগুলি আলোচনা কর।
- নবম শ্রেণী প্রথম অধ্যায় ফরাসী বিপ্লবের কয়েকদিক (১ নম্বরের প্রশ্ন এবং উত্তর )
জুলাই বিপ্লব: ১৮৩০ খ্রিস্টাব্দে ফ্রান্সে জুলাই বিপ্লব কালে জার্মানির বিভিন্ন রাজ্যে গণ-অভ্যুত্থানের সূচনা করেছিল। কিন্তু মেটারনি তৎপরতার সঙ্গে তা দমন করেন। ফেব্রুয়ারি বিপ্লব ও ফ্রাঙ্কফোর্ট পার্লামেন্ট—১৮৪৮ খ্রিস্টাব্দের ফেব্রুয়ারি বিপ্লবের প্রভাবে জার্মান রাজ্যগুলিও আন্দোলিত হয় জার্মান জাতীয়তাবাদীরা ফ্রাঙ্কফোর্টে একটি পার্লামেন্ট আহ্বান করা হয় জার্মানির জন্য একটি শাসনতন্ত্র রচনা করা এবং জার্মানিকে ঐক্যবদ্ধ করার জন্য কিন্তু শেষ পর্যন্ত তা ব্যর্থ হয়।
বিসমার্কের ভূমিকা:
রক্ত ও লৌহ নীতিঃ- অটো ফন বিসমার্ক ছিলেন একজন সুশিক্ষিত তীক্ষন বুদ্ধি সম্পন্ন বাস্তববাদী রাজনীতিবিদ ব্যক্তিগতভাবে ছিলেন তিনি রক্ষণশীল অদম্য ইচ্ছা শক্তির অধিকারী। বিসমার্ক বুঝেছিলেন একমাত্র প্রাশিয়ার নেতৃত্বেই জার্মানির ঐক্য সম্ভব। সেই কারণেই তিনি 1862 খ্রিস্টাব্দে প্রাশিয়ার প্রধানমন্ত্রী পদ গ্রহণ করেন। প্রাশিয়ার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে বিসমার্ক জার্মানির ঐক্য সাধনের জন্য যে নীতিটি প্রয়ােগ করেন তা ‘লৌহ ও রক্ত’ নীতি নামে পরিচিত। এই নীতির মূল কথা হল উদ্দেশ্য সাধনের জন্য প্রয়ােজনে বল প্রয়ােগ করতে হবে। বিসমার্ক মনে করতেন একমাত্র যুদ্ধের মাধ্যমেই জার্মানির ঐক্য সম্ভব এই জন্য তিনি অল্প সময়ের মধ্যে প্রাশিয়ার বাহিনীকে ইউরােপের অন্যতম সেরা বাহিনীতে পরিণত করেন। প্রাশিয়ার আইন সভায় তিনি ঘােষণা করেন গুরুত্বপূর্ণ কাজ বক্তৃতা বা ভােটের দ্বারা হবে না, তা করতে হবে রক্ত ও লৌহ নীতি দিয়ে।
রক্ত ও লৌহ নীতির প্রয়ােগ: বিসমার্ক যুদ্ধের অনুকূল পরিস্থিতিকে কাজে লাগিয়ে ১৮৬৪ থেকে ১৮৭০ এই ছয় বছরের মধ্যে তিনটি যুদ্ধের সাহায্যে জার্মানির ঐক্য সম্পূর্ণ করেন।
ডেনমার্কের সঙ্গে যুদ্ধ : প্রথমে শ্লেজউইগ ও হলস্টেন পুনরুদ্ধারের জন্য বিসমার্ক অস্ট্রিয়াকে সঙ্গে নিয়ে ডেনমার্কের বিরুদ্ধে যুদ্ধ (1864 খ্রিস্টাব্দ) করেন এবং ডেনমার্ক পরাজিত হয়। গ্যাস্টিনের সন্ধি দ্বারা প্রাশিয়া পায় শ্লেজউইগ, অস্ট্রিয়া পায় হলস্টেইন।
অস্ট্রিয়ার সঙ্গে যুদ্ধ: গ্যাস্টিনের সন্ধি এমনভাবে করা হয়েছিল যাতে শীঘ্রই অস্ট্রিয়া ও প্রাশিয়ার মধ্যে যুদ্ধ বাঁধে। সেজন্য বিসমার্ক আগাম প্রস্তুত ছিলেন। 1866 খ্রিস্টাব্দে প্রাশিয়া স্যাডােয়ার যুদ্ধে অস্ট্রিয়াকে পরাজিত করে। ফলে উত্তর ও মধ্য জার্মানি থেকে অস্ট্রিয়ায় প্রাধান্য দূর হয়।
ফ্রান্সের সঙ্গে যুদ্ধ: এরপর দক্ষিণ জার্মানি থেকে ফ্রান্সের প্রাধান্য দূর করার জন্য বিসমার্ক 1870 খ্রিস্টাব্দে ফ্রান্সের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেন। সেডানের যুদ্ধে ফ্রান্স পরাজিত হয়ে জার্মানি ত্যাগ করে।
মূল্যায়ন: এইভাবে বিসমার্কের ইতিবাচক নেতৃত্বে জার্মানির রাষ্ট্রীয় ঐক্য সম্পন্ন হয়। এই নবগঠিত জার্মানির রাজা হন প্রথম উইলিয়াম।
জার্মানির ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনে ঐতিহাসিকদের মন্তব্য
Bhalo
জার্মানি ইয়কও আন্দোলন
জার্মানির ঐক্য আন্দোলনে বিসমার্কর ভূমিকা লেখ।
এক কথায় অসাধারণ