মাধ্যমিক ইতিহাস পঞ্চম অধ্যায় || বিকল্প চিন্তা ও উদ্যোগ : বৈশিষ্ট্য ও পর্যালোচনা || ২ নম্বরের প্রশ্ন ও উত্তর

2

মাধ্যমিক ইতিহাস পঞ্চম অধ্যায় || বিকল্প চিন্তা ও উদ্যোগ : বৈশিষ্ট্য ও পর্যালোচনা || ২ নম্বরের প্রশ্ন ও উত্তর



ইতিহাস পঞ্চম অধ্যায় ২ নম্বরের প্রশ্ন ও উত্তর

প্রিয় মাধ্যমিকের শিক্ষার্থীরা,

আজকে তোমাদের সঙ্গে শেয়ার করবো মাধ্যমিক ইতিহাস পঞ্চম অধ্যায়||বিকল্প চিন্তা ও উদ্যোগ : বৈশিষ্ট্য ও পর্যালোচনা||২ নম্বরের প্রশ্ন ও উত্তর |Madhyamik History Question and Answer |10th History Examination –  দশম শ্রেনীর পঞ্চম অধ্যায় বিকল্প চিন্তা ও উদ্যোগ : বৈশিষ্ট্য ও পর্যালোচনা ১ ও ২ নম্বরের প্রশ্ন ও উত্তর পেয়ে যাবে|এছাড়াও তোমরা মাধ্যমিক পঞ্চম অধ্যায় ১ নম্বরের প্রশ্ন ও উত্তর|মাধ্যমিক পঞ্চম অধ্যায় ২ নম্বরের প্রশ্ন ও উত্তর |Ten History Examination - মাধ্যমিক পঞ্চম অধ্যায় ৪ নম্বরের প্রশ্ন ও উত্তর|মাধ্যমিক পঞ্চম অধ্যায় ৮ নম্বরের প্রশ্ন ও উত্তর|দশম শ্রেণীর ইতিহাস প্রশ্ন ও উত্তর পেয়ে যাবে এগুলি তোমাদের ফাইনাল পরিক্ষার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ন হবে। 


তো বন্ধুরা বিকল্প চিন্তা ও উদ্যোগ : বৈশিষ্ট্য ও পর্যালোচনা পঞ্চম অধ্যায় থেকে বহুবিকল্পভিত্তিক, সংক্ষিপ্ত, অতিসংক্ষিপ্ত এবং রোচনাধর্মী প্রশ্ন উত্তর (MCQ, Very Short, Short,  Descriptive Question and Answer)|তোমাদের এই পোস্টের মাধ্যমে মাধ্যমিক ইতিহাস পঞ্চম অধ্যায় বিকল্প চিন্তা ও উদ্যোগ : বৈশিষ্ট্য ও পর্যালোচনা 2 নম্বরের প্রশ্ন ও উত্তর সম্পর্কে আলোচনা করা আছে। আমাদের আশা এই প্রশ্নগুলি তোমাদের পরিক্ষায় খুবই কাজে আসবে।




মাধ্যমিক ইতিহাস পঞ্চম অধ্যায় || বিকল্প চিন্তা ও উদ্যোগ : বৈশিষ্ট্য ও পর্যালোচনা || ২ নম্বরের প্রশ্ন ও উত্তর



1. শান্তিনিকেতন প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্য কী ছিল?


মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর রায়পুরের জমিদার ভুবনমোহন সিংহের কাছ থেকে 1863 খ্রিস্টাব্দে 20 বিঘা জমি কেনেন। এখানে তিনি ‘শান্তিনিকেতন’ নামে একটি আশ্রম প্রতিষ্ঠাকরেন। পরবর্তীকালে রবীন্দ্রনাথ শান্তিনিকেতনে তাঁর শিক্ষার কার্যক্রম শুরু করেন।


উদ্দেশ্যঃ-

a.প্রকৃতির কাছাকাছি আদর্শ পরিবেশের মধ্যে শিশুদের বড়ো করে তোলা।

b.রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর প্রাচীন ভারতের আশ্রমিক শিক্ষার ভাবধারায় অনুপ্রাণিত হয়েছিলেন। তাই তিনি শিক্ষার্থীদের শান্তিনিকেতনে রেখে শিক্ষা দেওয়ার পরিকল্পনা করেছিলেন।

              এই বিদ্যালয়ে গতানুগতিক সময়তালিকার বিশেষ গুরুত্ব ছিল না। শিক্ষার্থীর প্রয়োজন ও সামর্থ্য অনুসারে তা নির্ধারণ করা হত।



2. জাতীয় শিক্ষা পরিষদ কী উদ্দেশ্যে গঠন করা হয়?


বিভিন্ন কারণে 1906 খ্রিস্টাব্দের 11 মার্চ গড়ে ওঠে জাতীয় শিক্ষা পরিষদ। যেমন-

a. বিদেশি শিক্ষা-সংস্কৃতি বর্জন করে জাতীয় আদর্শ অনুসারে সাহিত্য, বিজ্ঞান ও কারিগরি শিক্ষা দান করা।

b. শিক্ষার্থীদের মধ্যে নৈতিক শিক্ষা দান করা ও দেশসেবার মনোভাব জাগিয়ে তোলা।

c. ব্রিটিশ শিক্ষা নীতির সমালোচনা করা।

d. মাতৃভাষার মাধ্যমে শিক্ষার প্রসার ঘটানো।

e. কার্লাইল সার্কুলার ও বিশ্ববিদ্যালয় আইনের বিরোধিতা করা ইত্যাদি ছিল এর উদ্দেশ্য।



3. বসু বিজ্ঞান মন্দির প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্য কি ছিল ?


জগদীশচন্দ্র বসু কর্তৃক প্রতিস্থিত বসু বিজ্ঞান মন্দির ছিল একটি গবেষণা কেন্দ্র। এখানে রসায়ন পদার্থবিদ্যা জীব বিদ্যা জৈব রসায়ন জৈব পদার্থ প্রভৃতি বিষয়ে গবেষণার জন্য এবং নতুন তত্ত্ব আবিষ্কারের জন্য 1917 সালে বসু বিজ্ঞান মন্দির প্রতিষ্ঠত হয়।



4. কবে কার উদ্যোগে বেঙ্গল টেকনিক্যাল ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠিত হয়?


১৯০৬ খ্রীষ্টাব্দের ২৫ শে জুলাই তারকনাথ পালিতের উদ্যোগে প্রতিষ্ঠা করেন বেঙ্গল টেকনিক্যাল ইনস্টিটিউট বা B.T.I . কারিগরি শিক্ষার মা্ন, উন্নয়ন এবং প্রসার ইত্যাদি ঘটাই ছিল এর উদ্দেশ্য।



5. ছাপাখানা বিস্তারে ইউ এন রায় এন্ড সন্স এর ভূমিকা লেখ?


উপেন্দ্র কিশোর রায়চৌধুরী কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত প্রকাশনা সংসস্থার নাম হল ইউ. এন. রায় আন্ড সন্স। প্রসেসিং :- উপেন্দ্রকিশোর ফটোর নেগেটিভের মান উন্নত করা, প্রসেসিং, ক্যামেরা বিষয়ে কাজকর্মে মৌলিক অবদান রাখেন।


ব্লক তৈরি :- প্রথমে কাঠের ব্লক এবং সাদা-কালো ছবি, তারপর হাফটোন ব্লক ও রঙিন ছবি তৈরি করে মুদ্রণে অভিনবত্ব আনেন তিনি।  


ফটো এনগ্রেভিং ও লিথোগ্রাফি :- উপেন্দ্রকিশাের রায়চৌধুরীর পুত্র সুকুমার রায় লন্ডনে ফটো এনগ্রেভিং ও লিথোগ্রাফি বিষয়ে শিক্ষালাভ করেন এবং ছাপার মান আরও উন্নত করেন।

এইভাবে মুদ্রণশিল্পে ইউ রায় অ্যান্ড সন্স বিশিষ্ট ভূমিকা পালন করে। ছাপাখানাটি দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে অত্যন্ত বিখ্যাত হয়ে ওঠে।



6. বিশ্বভারতী প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্য কী ছিল ?

বিশ্বভারতী প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্য ছিল-

a. প্রাচ্যের আদর্শ ও বাণীকে বিশ্বের কাছে তুলে ধরে প্রাচ্য-পাশ্চাত্য সংস্কৃতির সমন্বয় সাধন করা,

b. প্রাচীন ও আধুনিক শিক্ষাব্যবস্থার সমন্বয় সাধন করা,

c. মনুষ্যত্বের বিকাশ ঘটানো,

d. শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন বিষয়ে ব্যবহারিক বিদ্যা শিক্ষা দান করা,

e. প্রকৃতি, মানুষ ও শিক্ষার সমন্বয় সাধন করা,  একে বিশ্ব মানবতার মিলনক্ষেত্রে ইত্যাদি রূপে গড়ে তোলাই ছিল এর উদ্দেশ্য।



7.কাকে কেন বিদ্যাবনিক বলা হয়?


ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরকে বিদ্যাবনিক বলা হয়। তিনি 1856 খ্রিষ্টাব্দে সংস্কৃত প্রেসের মালিক হলে নিজের লেখা ও অন্যান্যদের লেখা বই ছাপান। বিদ্যাসাগর সংস্কৃত প্রেস ডিপোজিটরি, কলকাতা পুস্তকালয় নামে বইয়ের দোকান খোলেন। আধুনিক বাংলা বই ব্যবসার প্রথম পথপ্রদর্শক হিসাবে করেছিলেন তাই তিনি ''বিদ্যাবনিক'' নামে পরিচিত।



8. তারকানাথ পালিত বিখ্যাত কেন?


বাংলায় বিজ্ঞানচর্চা ও কারিগরি শিক্ষার ক্ষেত্রে যারা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা গ্রহণ করেছিলেন শিক্ষাদরদী ও বিশিষ্ট আইনজীবী তারকনাথ পালিত তাদের মধ্যে অন্যতম।


কৃতিত্ব :- তারক নাথ পালিত ও স্যার রাসবিহারী ঘোরে অর্থ ও জমিদানের ফলে 1914 খ্রিস্টাব্দে গড়ে ওঠে কলকাতা বিজ্ঞান কলেজ। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের বালিগঞ্জ ক্যাম্পাসটি তাই

তারকনাথ পালিত শিক্ষা প্রাঙ্গণ' নামেই পরিচিত।



9. বিজ্ঞান চর্চার আচার্য জগদীশচন্দ্র বসুর অবদান লিখ?


স্যার জগদীশচন্দ্র বসু ছিলেন ভারতের একজন খ্যাতনামা বিজ্ঞানী। তিনি বিজ্ঞানের বিভিন্ন শাখায় মৌলিক গবেষণার উদ্দেশ্যে 1917 খ্রিস্টাব্দে কলকাতায় বসু বিজ্ঞান মন্দির প্রতিষ্ঠা করেন। এখানে পদার্থবিজ্ঞান, রসায়নবিদ্যা, উদ্ভিদবিদ্যা, মাইক্রোবায়োলজি, বায়োকেমিস্ট্রি, বায়োফিজিক্স, পরিবেশ বিজ্ঞান প্রভৃতি বিজ্ঞানের বিভিন্ন শাখায় বিশ্বমানের গবেষণা হত। তিনি ক্রেসকোগ্রাফ যন্ত্র আবিষ্কার করে প্রমাণ করেন যে, গাছের প্রাণ আছে। রেডিও সহ বিভিন্ন বিষয়ে তার মৌলিক গবেষণা বিশ্ব দরবারে স্বীকৃতি পেয়েছে।



10.জাতীয় শিক্ষা পরিষদ ব্যর্থ হয়েছিল কেন?


1906 খ্রিস্টাব্দের 11 মার্চ সত্যেন্দ্রনাথ ঠাকুরের সভাপতিত্বে কলকাতায় 92 জন সদস্য নিয়ে গড়ে ওঠে জাতীয় শিক্ষা পরিষদ। বিপুল আশা-আকাক্ষার মধ্য দিয়ে জাতীয় শিক্ষা পরিষদগঠিত হলেও নানা কারণে তা ব্যর্থ হয়।


ব্যার্থতার কারণঃ-

a. এই প্রতিষ্ঠানের প্রদত্ত ডিগ্রি গুরুত্বহীন হওয়ায় অভিভাবকেরা সরকারের শিক্ষার প্রতি আকৃষ্ট হয়।

b. স্বল্প বেতনের জন্য অনেক শিক্ষক এই প্রতিষ্ঠান ত্যাগ করেন।

c. অর্থ সংকট, সরকারি বাধা, কলকাতাকেন্দ্রিকতা, চরমপন্থী কর্তৃক এই পরিষদকে স্বীকৃতি দান না করা ইত্যাদি এর পতন ত্বরান্বিত করে। 



11.কার্লাইল সার্কুলার কি?


বাংলা সরকারের চিফ সেক্রেটারি ‘কার্লাইল বয়কট’ ও ‘স্বদেশি’ আন্দোলনে ছাত্রদের সক্রিয় ভূমিকা দেখে আতঙ্কিত হন। ছাত্রদের দমনের জন্য ও স্বদেশি আন্দোলন থেকে তাদের দূরে সরিয়ে রাখারজন্য তিনি 1905 খ্রিস্টাব্দের 10 অক্টোবর একটি সার্কুলার জারি করেন। এটি ‘কার্লাইল সার্কুলার’ নামে পরিচিত। ছাত্রদের রাজনৈতিক সভা সমিতি ও পিকেটিং থেকে নিবৃত্ত করাই ছিল এর উদ্দেশ্য।



12.হিকির বেঙ্গল গেজেট কি?


বাংলার প্রথম ইংরেজি সাপ্তাহিক পত্রিকা ছিল জেমস অগাস্টাস হিকি বেঙ্গল গেজেট প্রথম  প্রকাশ্য  1 জানুয়ারি  1780 সালে।


প্রকৃতিঃ- এই সংবাদপত্রে-

a.ব্যবসা-বাণিজ্য সম্পর্কে সংবাদ ও বিজ্ঞাপন থাকত।

b.ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি কর্মচারী থেকে লাটসাহেবের কাজের সমালোচনা ও কীর্তিকলাপ প্রকাশ হত।

            ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির সঙ্গে বিতরকের ফলে 1782 সালে পত্রিকাটি বন্ধ হয়ে যায়।



13.কিভাবে বাংলার ছাপার অক্ষর ব্যবহৃত হয়?


1778 খ্রিস্টাব্দে ব্রাসি হ্যালহেড ইংরেজ কোম্পানির কর্মচারী বা ইংরেজদের বাংলা শিক্ষার জন্য ইংরেজি ভাষায় ‘A Grammar of the Bengal Language' নামক একটি গ্রন্থ প্রকাশ করেন। এই গ্রন্থের মোট পৃষ্ঠার চারভাগের একভাগ অংশে উদাহরণরুপে বাংলা হরফ ব্যবহার করা হয়। এইভাবে প্রথম বাংলা মুদ্রণ বা ছাপার কাজ শুরু হয়।



14.শ্রীরামপুর ত্রয়ী কারা?


হুগলি জেলার শ্রীরামপুরে ব্যাপটিস্ট মিশন খ্রিস্টধর্ম প্রচার ও শিক্ষাবিস্তারের কাজ শুরু করে। শ্রীরামপুর এয়ী উইলিয়ম কেরি, ফ্রাসোয়া মার্শম্যান ও উইলিয়ম ওয়ার্ড— এই তিনজন পাশ্চাত্য শিক্ষাবিস্তারে অগ্রণী ভূমিকা নিয়েছিলেন। এঁদের একত্রে বলা হয় শ্রীরামপুর ত্রয়ী।


অবদান : এঁরা ছাপাখানা প্রতিষ্ঠা, “দিগদর্শন’ ও ‘সমাচার দর্পণ পত্রিকা প্রকাশ, 26টি আঞ্চলিক ভাষায় বাইবেল অনুবাদ এবং বিভিন্ন স্কুল ও কলেজ প্রতিষ্ঠা করেন।



15.সংস্কৃত যন্ত্র বিখ্যাত কেন?



1847 খ্রিস্টাব্দে পণ্ডিত মদনমোহন তর্কালঙ্কার ও ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর কলকাতার 62 নং আমহার্স্ট স্ট্রিটে যৌথভাবে ‘সংস্কৃত যন্ত্র’ নামক ছাপাখানাটি প্রতিষ্ঠা করেন। পরবর্তীকালে বিদ্যাসাগর এই ছাপাখানার একক মালিকানা স্বত্ব লাভ করেন। উনিশ শতকে ছাপাখানার ইতিহাসে বিখ্যাত এই ছাপাখানা থেকে বিদ্যাসাগরের রচিত বিভিন্ন গ্রন্থও প্রকাশিত হয়।



আরও পড়ুন......





16.ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশন ফর দ্য কালটিভেশন অফ সায়েন্স প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্য কি ছিল?


ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশন ফর দ্য কাল্টিভেশন অফ সায়েন্স বা সংক্ষেপে IACS হল কলকাতায় অবস্থিত একটি বিজ্ঞান গবেষণা ও উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান। 1876  খ্রিস্টাব্দে ড. মহেন্দ্রলাল সরকার এটি প্রতিষ্ঠা করেন। IACS প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্যগুলি হল—

a. বিজ্ঞানকে সাধারণ মানুষের মধ্যে জনপ্রিয় করে তোলা।

b. বৈজ্ঞানিক গবেষণার মান উন্নত করা।

c. পাশ্চাত্য দেশের বিজ্ঞানের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলা।

d. পাশ্চাত্যের বৈজ্ঞানিক গবেষণা নিয়ে আলোচনা করা প্রভৃতি।



17.মহেন্দ্রলাল সরকার বিখ্যাত কেন?


উনিশ শতকের বিশিষ্ট বাঙালিদের অন্যতম ছিলেন ডঃ মহেন্দ্রলাল সরকার।


চিকিৎসকঃ- তিনি কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ থেকে পাস করা এক বিশিষ্ট চিকিৎসক (MD) ছিলেন।


প্রতিষ্ঠাতাঃ- তিনি বিজ্ঞানচর্চার জন্য ‘ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশন ফর দ্য কাল্টিভেশন অফ সায়েন্স’ প্রতিষ্ঠা করেন 1876 খ্রিস্টাব্দে। এই বিশিষ্টব্যক্তিত্ব বাঙালির বিজ্ঞানচর্চাকে উন্নত করার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করেছিলেন। তাঁকে ভারতীয় বিজ্ঞানচর্চার ‘জনক’ বলা হয়।



18.পঞ্চানন কর্মকার বিখ্যাত কেন?


বাংলা মুদ্রাক্ষর তৈরির ক্ষেত্রে উইলকিনসের সহযােগী ছিলেন হুগলি নিবাসী শিল্পী পানন কর্মকার। তার তৈরি মুদ্রাক্ষর হ্যালহেডের বাংলা ব্যাকরণে ব্যবহৃত হয়। পরবর্তীকালে 1793 খ্রিস্টাব্দে ‘কর্নওয়ালিশ কোড’-এর বাংলা সংস্করণেও তার তৈরি উন্নত বাংলা মুদ্রাক্ষর ব্যবহার করা হয়। তাঁর প্রচেষ্টাতেই বাংলা হরফ নির্মাণ একটি স্থায়ী শিল্পে পরিণত হয়।



19.বসু বিজ্ঞান মন্দির এ কোন কোন বিষয়ে গবেষণা হত?


বসু বিজ্ঞান মন্দিরে পদার্থবিজ্ঞান, রসায়নবিদ্যা, উদ্ভিদবিদ্যা, মাইক্রোবায়োলজি, বায়োকেমিস্ট্রি, বায়োফিজিক্স, পরিবেশ বিজ্ঞান প্রভৃতি বিজ্ঞানের বিভিন্ন শাখায় বিশ্বমানের গবেষণা হত।



20.কাকে কেন বাংলার গুটেনবার্গ বলা হয়?


‘বাংলা চলনশীল’ বা ‘মুভেবল বাংলা’ হরফ নির্মাতা প্রাচ্যবাদী পণ্ডিত চার্লস উইলকিনসকে বাংলার গুটেনবার্গ বলা হয়।


কারণঃ- ১৪৫৫ খ্রিস্টাব্দে জার্মানির গুটেনবার্গ ‘চলনশীল’ বা ‘মুভেবল’ মুদ্রাক্ষর তৈরি করে ইউরোপের মুদ্রণ ক্ষেত্রে এক বৈপ্লবিক পরিবর্তন এনেছিলেন। অনুরূপভাবে, চার্লস উইলকিনসও ভারতে চলনশীল বাংলা হরফ বা মুদ্রাক্ষর তৈরি করে বাংলা ভাষার বিকাশে অনবদ্য অবদান রাখেন। তাই তাকে বাংলার গুটেনবার্গ বলা হয়।



21.বেঙ্গল টেকনিক্যাল ইনস্টিটিউট এর পাঠক্রম কি ছিল?


বেঙ্গল টেকনিক্যাল ইন্সটিটিউটের পাঠ্যক্রম ছিল কারিগরি শিক্ষাকেন্দ্রিক। এখানে তিন বছরের ইন্টারমিডিয়েট ও চার বছরের সেকেন্ডারি বা মাধ্যমিক শিক্ষা পদ্ধতি চালু করা হয়। সমকালীন শিক্ষক বিনয়কুমার সরকার উপহাস করে এই প্রতিষ্ঠানকে ‘মিস্তিরি তৈরির কারখানা’ বলে অভিহিত করেন।




22.বাংলা ছাপাখানা উদ্ভবের পেছনে কারণ কি ছিল?


ছাপাখানার প্রসারের কারণঃ-


A.ক্রমবর্ধমান শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানঃ- বাংলাদেশে প্রচলিত দেশজ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ছাড়াও সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগে বহু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গড়ে ওঠে। ফলে বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থীর পাঠ্যবই ছাপার জন্য ছাপাখানা দরকার হয়।


B.মুনাফাঃ-ছাপাখানা ব্যাবসাতে প্রচুর মুনাফা হয়। তাই নতুন নতুন উদ্যোগীরা ছাপাখানা প্রতিষ্ঠায় এগিয়ে আসেন। এছাড়াও বাংলা ভাষায় প্রশাসনিক কাজকর্ম পরিচালনার প্রয়োজনে এবং শাসক ও শাসিতের মধ্যে সুসম্পর্ক গড়ে তোলার জন্য বাংলায় ছাপাখানার উদ্ভব ঘটে।



23.গোলদিঘির গোলামখানা কাকে কেন বলা হয়?


ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির আমলে ভারতে ঔপনিবেশিক শিক্ষা প্রবর্তনের উদ্দেশ্য ছিল সস্তার কেরানি তৈরি করা। কারণ স্বল্প বেতনের কেরানির চাকরি করার জন্য বিদেশ থেকে লোক পাওয়া সম্ভব ছিল না। এর ফলস্বরূপ এই বিশ্ববিদ্যালয় ইংরেজ-প্রসাদ-গর্বিত কর্তাভজা ভদ্রলোক তৈরির কারখানায় পরিনত হয়েছিল, দাস্যভক্তি ছিল এদের মধ্যে লক্ষনীয়। এই কারণে অনেকে এই সময় কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় কে ব্যঙ্গ করে ‘গোলদীঘির গোলামখানা’ বলতেন।



24.ভারতের ছাপাখানার স্থাপনের প্রভাব কি রকম ছিল?


ভারতের ছাপাখানার স্থাপনের প্রভাব ছিল সুদূরপ্রসারী। ছাপাখানা বিস্তারের ফলে একদিকে যেমন ছাপা বই পত্র-পত্রিকা প্রকাশিত হয় এবং এর মাধ্যমে পাশ্চাত্যের জ্ঞান-বিজ্ঞান, গণতন্ত্র, উদারনীতিবাদ,যুক্তিবাদ ছড়িয়ে পড়ে, দেশ বিদেশের খবরা খবর সংবাদপত্রের মাধ্যমে মানুষ জানতে পেরেছিল; তেমনি অন্যদিকে ভারতীয়রা নিজেদের দুরবস্থা, সামাজিক কুসংস্কার সম্বন্ধে সম্যক সচেতনা হয়ে পড়েছিল। এছাড়াও জনমত গঠন, সাহিত্য রীতি এবং শ্রেনী চরিত্র গঠন করার ক্ষেত্রে ছাপাখানার ব্যাপক অবদান রয়েছে।



25.বাংলা মুদ্রণ শিল্পের ফোর্ট উইলিয়াম কলেজের ভূমিকা লেখ?


প্রশাসনিক প্রয়োজনে প্রতিষ্ঠিত ফোর্ট উইলিয়াম কলেজের সিভিলিয়ানদের ইংরেজির পাশাপাশি দেশীয় ভাষাতেও শিক্ষাদান করা হত। তাই এরকম শিক্ষাদানের জন্য বাংলায় মুদ্রিত পাঠ্যপুস্তকের প্রয়োজনীয়তা থেকেই ফোর্ট উইলিয়াম কলেজ শ্রীরামপুর মিশনের ছাপাখানা সহ সংস্কৃত প্রেস, হিন্দুস্থানি প্রেস-এ ছাপার বরাত (Order) দিত। এভাবেই বাংলা মুদ্রণ শিল্পে গতির সৃষ্টি হয়।



26.ছাপাখানা শিক্ষা বিস্তারে কি ভূমিকা নিয়েছিল?


বাংলায় ছাপাখানার উদ্ভবের আগে জ্ঞান বা শিক্ষাজগৎ ছিল হাতে লেখা পুথি বা মুখস্থবিদ্যার উপর নির্ভরশীল। কিন্তু ছাপা বইয়ের ফলে মুষ্টিমেয় ব্যক্তির মধ্যে সীমাবদ্ধ জ্ঞান অন্যদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়তে শুরু করে। ফোর্ট উইলিয়াম কলেজ, শ্রীরামপুর মিশন, স্কুল বুক সোসাইটির উদ্যোগে বাংলায় পাঠ্যপুস্তক রচনা ও পরিবেশনার কাজও শুরু হয়।



27.প্রকাশনা জগতে বর্ণপরিচয়ের গুরুত্ব কি?


ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর রচিত বর্ণপরিচয় ছিল একটি শিশুপাঠ্যপুস্তক। এখানে বাংলা স্বরবর্ণ ও ব্যঞ্জনবর্ণ নির্দিষ্ট করা হয়। এই বইয়ে ব্যবহৃত বাংলা হরফ প্রকাশনা জগতে একটি আদর্শ হরফ ব্যবস্থার প্রবর্তন করে।



28.ছাপাখানার দুটি ফলাফল লেখ?


a. বাংলায় ছাপাখানা প্রবর্তনের ফলে বাংলা ভাষা ও জ্ঞানের এবং শিক্ষার বিস্তার ঘটে।

b.  ছাপাখানা ব্যবস্থাকে কেন্দ্র করে কলকাতা-কেন্দ্রিক নতুন পেশার উদ্ভব ঘটে।

c. বাংলার সমাজ ও ধর্ম সংস্কার আন্দোলনের সমর্থনে বিভিন্নধর্মী পত্রপত্রিকা ও সাহিত্যের উদ্ভব ঘটে।



29.রবীন্দ্রনাথের শিক্ষা ভাবনা কি ছিল?

অথবা 

শিশু শিক্ষা সম্পর্কে রবীন্দ্রনাথ কি বলেছেন?


রবিন্দনাথের মতে শিক্ষার মূল উদ্দেশ্য হবে শিক্ষার্থীর স্বাভাবিক বুদ্ধি ও কল্পনার বিকাশের সুযোগ দান করা। তিনি প্রাচীন ভারতের আশ্রম ও গুরুকুল প্রথাকে আধুনিক জীবনে আনতে চেয়েছিলেন। তিনি মাতৃভাষায় শিক্ষাদানের উপর গুরুত্ব আরোপ করেছেন এবং কাজেও তা করে দেখিয়েছেন। তিনি মনে করতেন বিজ্ঞান শুধু পরীক্ষাগারের চার দেওয়ালের মধ্যে নেই, তার স্থান ক্লাস ঘরের বাইরে, হাটে-মাঠে-মাটিতে। রবীন্দনাথ মনে করতেন পল্লিচর্চা ও পল্লিসংগঠন ছাড়া ভারতের শিক্ষা অসম্পূর্ণ।



30.রবীন্দ্রনাথের বিশ্বভারতীর শিক্ষানীতির দুটি প্রধান বৈশিষ্ট্য উল্লেখ কর?


রবীন্দ্রনাথের বিশ্বভারতীর শিক্ষানীতির দুটি প্রধান বৈশিষ্ট্য হল-

a.  প্রাচ্যের আদর্শ ও বানীকে বিশ্বের কাছে তুলে ধরে প্রাচ্য-পাশ্চাত্য সংস্কৃতির সমন্ব্য সাধন      করা।

b.  প্রকৃতি ও মানুষের সান্নিধ্যে শিক্ষাদান।

c.   শিক্ষক ও শিক্ষার্থীর মধ্যে নিবিড় সম্পর্ক স্থাপন করা।



31.স্কুল বুক সোসাইটি কে কবে কেন প্রতিষ্ঠা করেন?


1817 খ্রিস্টাব্দে ডেভিড হেয়ার কলকাতায় স্কুলবুক সোসাইটি প্রতিষ্ঠা করেন।


উদ্দেশ্যঃ-


a. ভালো পাঠ্যবই প্রকাশ করাঃ-ডেভিড হেয়ার ইংরেজি ও ভারতীয় ভাষায় ভালো             পাঠ্যবই রচনা করার জন্য এই সোসাইটি প্রতিষ্ঠা করেন।


b. শিক্ষার প্রসার ঘটানোঃ-তিনি অল্প দামে বই বিক্রি করে, আবার কখনও বিনা মুল্যে          বিতরণ করে শিক্ষার প্রসার ঘটাতে চেয়েছিলেন।



32.ভারতের ছাপাখানার ইতিহাসে হিকির অবদান কি?


বাংলার ছাপাখানার ইতিহাসে জেমস অগাস্টাস হিকি একজন উদ্যোগী ও অগ্রণী ব্যক্তিত্ব ছিলেন।

অবদানঃ-


প্রথম উদ্যোগী:- হিকির উদ্যোগেই কলকাতায় প্রথম ছাপাখানা প্রতিষ্ঠিত হয় 1777 খ্রিস্টাব্দে।


প্রথম প্রকাশক:- হিকি ছিলেন বাংলাদেশ তথা ভারতের প্রথম সংবাদপত্র প্রকাশক। তিনি সাপ্তাহিক ইংরেজি পত্রিকা ‘বেঙ্গল গেজেট’ প্রকাশনা করতেন।


প্রথম সাংবাদিক:- পেশাদার সাংবাদিক না হলেও তিনিই বাংলা তথা ভারতের সাংবাদিকতার পথপ্রদর্শক ছিলেন।




File Details

 

File Name/Book Name

মাধ্যমিক ইতিহাস পঞ্চম অধ্যায়  ২ নম্বরের প্রশ্ন ও উত্তর

File Format

PDF

File Language

Bengali

File Size

187 KB

File Location

GOOGLE DRIVE

Download Link

Click Here to Download PDF File



Join Telegram... Members


একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

2 মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
To Top