মাধ্যমিক প্রথম অধ্যায় ইতিহাসের ধারনা ২নম্বরের প্রশ্ন উত্তর || Madhyamik 1st Chapter The Concept of History 2 Marks Question And Answers With PDF Link

0

মাধ্যমিক প্রথম অধ্যায় ইতিহাসের ধারনা ২নম্বরের প্রশ্ন উত্তর || Madhyamik 1st Chapter The Concept of History 2 Marks Question And Answers With PDF Link





প্রিয় দশমশ্রেনীর শিক্ষার্থীরা,

আজকে তোমাদের সঙ্গে শেয়ার করবো, মাধ্যমিক প্রথম অধ্যায় ইতিহাসের ধারনা ২নম্বরের প্রশ্ন উত্তর || Madhyamik 1st Chapter The Concept of History 2 Marks Question And Answers With PDF Link, তোমরা এই ওয়েবসাইটের মাধ্যমে দশমশ্রেনী ইতিহাস ২ নম্বরের প্রশ্ন ও উত্তর (Class 10 History 2 Marks Question Answers) মাধ্যমিক ইতিহাসের ধারনা প্রশ্ন ও উত্তর(Madhyamik 1st Chapter Question Answers) মাধ্যমিক ইতিহাসের ধারনা প্রশ্ন উত্তর,মাধ্যমিক প্রথম অধ্যায় ইতিহাসের ধারনা (Concept Of History) 2 নম্বরের প্রশ্ন ও উত্তর With PDF Download পেয়ে যাবে। এগুলি তোমাদের ফাইনাল পরিক্ষার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ন হবে। তো বন্ধুরা তোমাদের এই পোস্টের মাধ্যমে মাধ্যমিক প্রথম অধ্যায় ইতিহাসের ধারনা ২নম্বরের প্রশ্ন উত্তর || Madhyamik 1st Chapter The Concept of History 2 Marks Question And Answers With PDF Link দেওয়া আছে। আমাদের আসা এই প্রশ্নগুলি তোমাদের খুবই কাজে আসবে।



1.ইতিহাসকে জ্ঞানের প্রধান উৎস  বলা হয় কেন?

উঃ- ইতিহাস হল স্থান ও কালের পরিপ্রেক্ষিতে মানবসভ্যতা ও তার সাংস্কৃতিক বিবর্তনের বিজ্ঞানসম্মত বিশ্লেষণ।  ইতিহাসকে জ্ঞানের প্রধান উৎস বলার কারণ :

(a)অতীত অভিজ্ঞতার ভাণ্ডার : মানবসভ্যতার প্রগতির পথে যে সব বাধা এসেছিল, কীভাবে তার সমাধান করেছিল মানুষ এবং কীভাবে ভবিষ্যতে এগিয়ে যাওয়া উচিত—ইতিহাস সেই পথের নির্দেশ প্রদান করে। (b)বহুতথ্যের ভাণ্ডার : সময়ের সঙ্গে সঙ্গে জ্ঞানের পরিধির প্রসার ঘটেছে। জ্ঞান-বিজ্ঞানের বিভিন্ন শাখা, মানুষ, সমাজ, পরিবেশ বিকশিত হয়েছে। সব তথ্যই ইতিহাসের ভাণ্ডারে জমা আছে। এজন্য জি.এম ট্রেভেলিয়ান ইতিহাসকে অন্যান্য বিদ্যার জননী’ বলেছেন।



2.ইতিহাসের বৈশিষ্ট্য কী?

উঃ-স্থান ও কালের পরিপ্রেক্ষিতে সমাজবদ্ধ মানবপ্রগতির বিজ্ঞানসম্মত বিশ্লেষণ হল ইতিহাস।

বৈশিষ্ট্য:  

(a) মানবপ্রগতি: আদিম মানুষ কীভাবে ধীরে ধীরে সভ্য ও উন্নত হল তার কাহিনি হল ইতিহাস।

(b)যূথবদ্ধতা: অনেক মানুষের একসাথে জোটবদ্ধ হওয়া বা বসবাস করা হল এর প্রধান বৈশিষ্ট্য।

(c) স্থায়ী বসতি: বনেজঙ্গলে ঘুরে বেড়ানোর পর্যায় পার হয়ে মানুষ স্থায়ী বসতি গড়ে তোলে, যা ইতিহাসের অপর একটি বৈশিষ্ট্য।



3.আধুনিক ইতিহাসচর্চা কেন বৈচিত্র্যপূর্ণ?

উঃ- বৈচিত্র্যের কারণ : মানবসভ্যতার ইতিহাসের বহমান ধারা বিভিন্ন যুগে বিভিন্ন রূপ গ্রহণ করে। তাই ইতিহাসচর্চা বৈচিত্র্যপূর্ণ হয়ে ওঠে। 

(a) ধারণা বদল : ইতিহাস যেহেতু বহমান, তাই ইতিহাসকে নির্দিষ্ট স্থান ও কালের সীমার মধ্যে আবদ্ধ রাখা যায় না। ইতিহাস বিশ্বজনীন হয়ে ওঠে।

(b)ক্ষেত্র বদল : ইতিহাসের যুগান্তর, সর্বজনীন দৃষ্টিভঙ্গি গবেষণার ক্ষেত্রকে প্রসারিত করেছে।এই পরিপ্রেক্ষিতে আধুনিক ইতিহাসচর্চাও বৈচিত্র্যপূর্ণ হয়ে উঠেছে।


4.আধুনিক ইতিহাসচর্চা কত রকমের ও কী কী?

উঃ- প্রকারভেদ : বর্তমানে প্রধানত ছয় প্রকারের ইতিহাসচর্চার পদ্ধতি রয়েছে। 

নাম : এই ছয় প্রকার ইতিহাসচর্চা হল- 

(1)জাতীয়তাবাদী 

(2)সাম্রাজ্যবাদী, 

(3)কেমব্রিজ গোষ্ঠী, 

(4)মার্কসবাদী, 

(5)অ্যানাল গোষ্ঠী ও 

(6) নিম্নবর্গীয় ইতিহাসচর্চা।

বিষয়বস্তু ও দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তনের জন্য ইতিহাসচর্চার  প্রকারভেদ ঘটেছে।



5.ইতিহাসচর্চা (Historiography) বলতে কী বোঝো?

উঃ-সময়ের অগ্রগতির সঙ্গে সঙ্গে দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন হয়, ফলে ইতিহাস সম্বন্ধে ধারণা বদলায়।

ইতিহাসচর্চা:- বিভিন্ন ঐতিহাসিক ঘটনার বিভিন্ন ধরনের ব্যাখ্যা ও লেখা হল ইতিহাসচর্চা।

(a)বিষয়বস্তু : গতানুগতিক ইতিহাস লেখা হত রাজাদের গৌরব কাহিনি নিয়ে। নবজাগরণ, যুক্তিবাদ, জনগণের কথাও ক্রমশ ইতিহাসের বিষয় হয়ে ওঠে। 

(b)লিখন পদ্ধতি : বহু বিতর্কের পর ইতিহাসের লিখন পদ্ধতি তথ্যনির্ভর ও বিজ্ঞানভিত্তিক রূপ গ্রহণ করার ফলে ইতিহাসচর্চায় পরিবর্তন এসেছে।



6.ইতিহাসচর্চায় ভিকো-র মতামত কী?

উঃ-ইতিহাসচর্চার বিভিন্ন ধারা বিদ্যমান। প্রথাগত ইতিহাসচর্চার বাইরে নতুন সামাজিক ইতিহাসচর্চা শুরু হয়েছে। এক্ষেত্রে ভিকো-র মতামত বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। বিখ্যাত ইতালীয় চিন্তাবিদ ভিকো ইতিহাস ও সমাজবিজ্ঞানকে যৌথভাবে মানবিক বিদ্যাচর্চায় প্রয়োগ করেছেন। এক্ষেত্রে তিনি ঐতিহাসিকের সৃষ্টিশীল মানসিকতার উপর গুরুত্ব দেন।ভিকোর ইতিহাসচর্চার ফলে ইতিহাস ক্রমে সাধারণ মানুষের ইতিহাস হয়ে ওঠে।



7.সাম্রাজ্যবাদী ইতিহাসচর্চা (Imperialist School) বৈশিষ্ট্যগুলি কী কী?

উঃ- সাম্রাজ্যবাদী ইতিহাসচর্চা : সাম্রাজ্যবাদী ইতিহাসচর্চার বৈশিষ্ট্য হল—

(a) বৃহত্তর পরিসর : এই ধরনের ইতিহাসচর্চায় নিজ দেশ ও তার উপনিবেশ-এর আলোচনা গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। 

(b) স্বার্থ: নিজ দেশ ও জনগণের স্বার্থ এক্ষেত্রে প্রাধান্য পায়। জাতীয়তাবাদী ধারার সম্পূর্ণ বিপরীত হল এই ধারা।অন্য দেশ দখল করা, শোষণ ও শাসন করা, নিজ দেশের স্বার্থে তাকে ব্যবহার করা প্রভৃতিকে বৈধতা দানের চেষ্টা এই ধরনের ইতিহাসচর্চার উদ্দেশ্য। রুডিয়ার্ড কিপলিং, জেমস মিল, উইলিয়ম হান্টার, ভিনসেন্ট স্মিথ প্রমুখ ছিলেন এই শ্রেণির ঐতিহাসিক।



8.নিম্নবর্গের ইতিহাসচর্চা (Subaltern School) বলতে কী বোঝো ?  

উঃ- নিম্নবর্গের ইতিহাস : সমাজে যারা তথাকথিত অন্ত্যজ। ও দলিত নামে পরিচিত সেইসব শ্রেণির মানুষদের কথা ও কাহিনি এই ধরনের ইতিহাসচর্চার বিষয়বস্তু। যুগ যুগ ধরে চলে আসা এইসব মানুষদের ঐতিহ্য-সংস্কৃতি, নবাগত সংস্কৃতির সঙ্গে তাদের বিরোধ এবং পরিণামে বিক্ষোভ-বিদ্রোহ নিয়ে এক শ্রেণির ঐতিহাসিকরা গবেষণা করেন। রণজিৎ গুহ, শাহিদ আমিন, জর্জ রুদে, গৌতম ভদ্র প্রমুখ এই শ্রেণির ঐতিহাসিক। ইতিহাসচর্চার এই নতুন ধারাকে বলা হয় নিম্নবর্গের ইতিহাসচর্চা।



9.হুইগ ঐতিহাসিক গোষ্ঠী (Whig school) কাদের বলা হয় ? এই গোষ্ঠীর কয়েকজন ঐতিহাসিকের নাম লেখো। 

উঃ-হুইগ ঐতিহাসিক গোষ্ঠী : মানবসভ্যতার একমুখী অগ্রগতির কথা যে ইংরেজ ঐতিহাসিকদের ইতিহাসচর্চার মূল নিয়ন্ত্রক, তাদের বলা হয় হুইগ ঐতিহাসিক গোষ্ঠী (Whig School)। এই গোষ্ঠীর কয়েকজন বিখ্যাত ঐতিহাসিক হলেন জেবি বিউরি, জি এম ট্রেভেলিয়ান প্রমুখ।



10.কেমব্রিজ গোষ্ঠীর ইতিহাসচর্চা (Cambridge School) কী ধরনের?

উঃ- কেমব্রিজ গোষ্ঠীর ইতিহাসচর্চা: স্যার লিউইস নেমিয়ার কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে এক বিশেষ ধারার ইতিহাসচর্চা শুরু করেন। এর বৈশিষ্ট্য হল— (a)প্রতিক্রিয়াশীল চরিত্র : এই ধারার ইতিহাসচর্চায় বিভিন্ন দেশের জাতীয়তাবাদকে অবজ্ঞা করা হয়। (b)সংকীর্ণতা : কেমব্রিজ গোষ্ঠীর ইতিহাসচর্চা এবং গবেষণার মান খুব উন্নত হলেও তা সংকীর্ণ স্বার্থে পরিচালিত। গণ আন্দোলন বা জাতীয়তাবাদকে অগ্রাহ্য করার জন্য তার অন্তর্দ্বন্দ্ব ও ত্রুটিবিচ্যুতির অনুসন্ধানে তারা ব্যস্ত।জন গ্যালাহার, গর্ডন জনসন, অনিল শীল, ফ্রান্সিস রবিনসন প্রমুখ হলেন কেমব্রিজ গোষ্ঠীর ঐতিহাসিক।



11.কেমব্রিজ ঐতিহাসিক কাদের বলা হয়? এরা কার ইতিহাস দর্শনে বিশ্বাস করেন?

উঃ-কেমব্রিজ ঐতিহাসিক গোঁষ্ঠী: 

(1) ইংল্যান্ডের একটি বিখ্যাত বিশ্ববিদ্যালয় হল কেমব্রিজ। কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের ঐতিহাসিক গবেষক-অধ্যাপকবৃন্দ সাধারণভাবে কেমব্রিজ ঐতিহাসিক গোষ্ঠী (Cambridge School) নামে পরিচিত। (2)কয়েকজন উল্লেখযোগ্য কেমব্রিজ ঐতিহাসিকরা হলেন—জন গ্যালাহার, গর্ডন জনসন, অনিল শীল, ফ্রান্সিস রবিনসন প্রমুখ। 

(3)কেমব্রিজ ইতিহাস গোষ্ঠী স্যার লিউইস নেমিয়ার-এর ইতিহাস দর্শনে বিশ্বাস করে।





12.মাকর্সবাদী ইতিহাসচর্চা (Marxist School) বলতে কী বোঝো?

উঃ- আধুনিক ইতিহাসচর্চার যে বিভিন্ন ধারা রয়েছে, তার মধ্যে অন্যতম হল মাকর্সবাদী ইতিহাসচর্চা।

মার্কসবাদী ইতিহাসচর্চা : সাম্যবাদের প্রণেতা কার্ল মার্কস অর্থনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকে ইতিহাসের (ঐতিহাসিক বস্তুবাদ, দ্বন্দ্বমূলক বস্তুবাদ) ব্যাখ্যা করেন। এই ইতিহাস দর্শনের অনুসারী ঐতিহাসিকেরা মার্কসবাদী ঐতিহাসিক নামে পরিচিত।মানুষ, সমাজ ও উৎপাদন ব্যবস্থার শোষক-শোষিত সম্পর্কের ঘাতপ্রতিঘাতের মাধ্যমে সমাজ আবর্তিত হয়, এগিয়ে চলে। মরিস ডব, ক্রিস্টোফার হিল, রজনীপাম দত্ত, বিপানচন্দ্র, সুশোভন সরকার প্রমুখ ছিলেন মার্কসবাদী ঐতিহাসিক।



13.জাতীয়তাবাদী ইতিহাসচর্চা (Nationalist School) কী?

উঃ- জাতীয়তাবাদী ইতিহাসচর্চা : নিজ দেশ ও দেশবাসীর স্বার্থে জাতীয়তাবাদী ইতিহাস লেখা হয়। এর বৈশিষ্ট্য হল। (a)স্বল্প পরিসর:এই ধরনের ইতিহাসচর্চার ক্ষেত্রে কেবল একটি দেশ। ও জনগণের কথা আলোচিত হয়।(b)স্বার্থ : এই ধরনের ইতিহাসচর্চায় দেশ ও জনগণের স্বার্থ প্রধান হয়ে ওঠে। দেশীয় ঐতিহ্য ও সংস্কৃতিকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়।ভারতে যদুনাথ সরকার, তারাচাঁদ, রমেশচন্দ্র মজুমদার প্রমুখরা ছিলেন জাতীয়তাবাদী ঐতিহাসিক।



14.জাতীয়তাবাদী ইতিহাসচর্চার (Nationalist School) মূল কথা কী? কোন জাতীয়তাবাদী ঐতিহাসিক চেক জাতির ইতিহাস রচনায় খ্যাতি লাভ করেছেন?

উঃ- স্বদেশের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতিকে সর্বাধিক গুরুত্ব প্রদান করে ইতিহাসচর্চা করেন জাতীয়তাবাদী ইতিহাসবিদরা। জাতীয়তাবাদী ইতিহাসচর্চার মূল কথা : জাতীয়তাবাদী ইতিহাসচর্চার (Nationalist School) মূল কথা হল স্বদেশ ও স্বজাতির ঐতিহ্য ও সংস্কৃতিকে যথাযথ গুরুত্ব প্রদান করে ইতিহাস রচনার কাজটি সম্পন্ন করা। বলকান অঞলে চেক জাতির ইতিহাস রচনা করে খ্যাতি লাভ করেছেন ফ্রান্টিসেক পালাকি।



15.নতুন সামাজিক ইতিহাস’ বলতে কী বোঝো?অথবা, সামাজিক ইতিহাস কী?

উঃ- নতুন সামাজিক ইতিহাস : গতানুগতিক শাসককেন্দ্রিক ইতিহাসচর্চার বাইরে মানুষের সমাজ, সংস্কৃতি ও অর্থনীতি নিয়ে নতুন সামাজিক ইতিহাসচর্চা আবর্তিত হয়। এর বৈশিষ্ট্য হল— সমাজ: এইইতিহাসে প্রতিষ্ঠানভিত্তিক ইতিহাস থেকে সরে এসে সাধারণ মানুষের ইতিহাস রচনার উপর গুরুত্ব দেওয়া হয়। সংস্কৃতি; মানুষের আচার-আচরণ, খাদ্যাভ্যাস, পোশাক-পরিচ্ছদ,বিনোদন, শিক্ষা, ধর্মবিশ্বাস প্রভৃতির উপর গুরুত্ব দেয়। অর্থনীতি : মানুষের বিভিন্ন ধরনের পেশা সম্বন্ধে এখানে আলোচিত হয়।


আরও পড়ুন......


16.নতুন সামাজিক ইতিহাসচর্চা কবে থেকে শুরু হয়েছে?এতে কোন কোন বিষয়ের উপর গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে?

উঃ- নতুন সামাজিক ইতিহাসচর্চার সূচনা : সামাজিক ইতিহাস মানুষের চিরাচরিত ইতিহাসের নতুন ব্যাখ্যা দেয়। ১৯৬০-এর দশক থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিম ইউরোপে নয়া সামাজিক ইতিহাসচর্চা শুরু হয়েছে।

বিষয় : এতে যে যে বিষয়গুলির উপর গুরুত্ব দেওয়া হয় সেগুলি হল মানুষের সমাজ, আচার-আচরণ, সভ্যতা-সংস্কৃতি, খাদ্যাভ্যাস, পোশাক-পরিচ্ছদ, শিক্ষা, বিনোদন, মূল্যবোধ প্রভৃতি।



17.আধুনিক সামাজিক ইতিহাসচর্চায় ট্রেভেলিয়ানের অবদান কী ?

উঃ-জি এম ট্রেভেলিয়ানের অবদান: ইংরেজ ঐতিহাসিক তথা হুইগ ঐতিহাসিকদের অন্যতম জি এম ট্রেভেলিয়ান আধুনিক সামাজিক ইতিহাসচর্চার ক্ষেত্রে এক প্রাতঃস্মরণীয় ব্যক্তিত্ব। তার মতে, জনসাধারণের কাহিনিই হল প্রকৃত ইতিহাস। সামাজিক ইতিহাসের ক্ষেত্রে তাঁর বিখ্যাত গ্রন্থ হল—ইংলিশ সোশ্যাল হিস্ট্রি,  সার্ভে অফ সিক্স সেরিস , চসার টু কুইন ভিক্টোরিয়া



18.ইউরোপে খেলাধুলা চর্চার ইতিহাসের পরিচয় দাও।

উঃ- ইউরোপে খেলাধুলা চর্চার ইতিহাস : খেলাধুলা চর্চার ইতিহাস তুলনামূলকভাবে সাম্প্রতিককালের। ইউরোপে ১৯৭০-এর দশকে এ বিষয় নিয়ে চর্চা শুরু হয়। (a)সমাজবিজ্ঞানী : জেএম্যাঙ্গান, টনি ম্যাসন, অ্যালেন গ্যাটম্যান, রিচার্ড হোল্ট, রে, ভ্যামপ্লিউ প্রমুখ সমাজবিজ্ঞানী বিভিন্ন গ্রন্থ প্রকাশ করেন।(b)সরকারি উদ্যোগ : ব্রিটিশ সোসাইটি অফ স্পোর্টসহিস্ট্রি এবং তার মুখপত্র ইন্টারন্যাশনাল জার্নাল অফ দ্য হিস্ট্রি অফ স্পোর্ট প্রকাশিত হয়।



19.ভারতে ক্রিকেটের ইতিহাসচর্চায় কারা উল্লেখযোগ্য গবেষণা ও রচনা করেছেন? একটি বিখ্যাত রচনার নাম উল্লেখ করো।


উঃ- গবেষকগণ : ভারতে ক্রিকেটের ইতিহাসের বিবর্তন ও বিবর্ধন নিয়ে সাম্প্রতিক অতীতে উল্লেখযোগ্য গবেষণাধর্মী কাজ করেছেন আশিস নন্দী, বোরিয়া মজুমদার, রামচন্দ্র গুহ, অর্জুন আঞ্জাদুরাই, হর্ষ ভোগলে, গৌতম ভট্টাচার্য প্রমুখ। এক্ষেত্রে একটি বিখ্যাত রচনা হল বোরিয়া মজুমদারের ‘টোয়েন্টি-টুইয়ার্ডস টু ফ্রিডম’ (Twenty-two Yards to Freedom)।



20.ভারতে খেলাধুলার ইতিহাস নিয়ে কী ধরনের চর্চা হয়েছে?

উঃ-ভারতে খেলাধুলার ইতিহাসচর্চা: ইউরোপে ১৯৭০-এর দশকে শুরু হলেও ভারতে খেলাধুলার ইতিহাসচর্চা ১৯৯০-এর দশকে শুরু হয়। (a)ক্রিকেট : বোরিয়া মজুমদার-এর ‘টোয়েন্টি-টুইয়ার্ডসটু ফ্রিডম’ ভারতীয় ক্রিকেট বিষয়ে

লেখা গুরুত্বপূর্ণ গ্রন্থ।ফুটবল : বোরিয়া মজুমদার ও কৌশিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের (b)‘গোললেস : দ্য স্টোরি অফ এ ইউনিক ফুটবলিং নেশনস’হল ফুটবল বিষয়ক প্রামাণ্য গ্রন্থ। (c)অন্যান্য : জে এ ম্যাঙ্গনের ‘দ্য গেমস এথিক অ্যান্ড গ্রন্থটিও তথ্যভিত্তিক ও প্রামাণ্য। এ ছাড়া আশিস নন্দী,আঞ্জাদুরাই, রামচন্দ্র গুহ-র লেখাও এক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য।



21.আধুনিক ইতিহাসচর্চায় খেলার ইতিহাস গুরুত্বপূর্ণ কেন?

উঃ- আধুনিক ইতিহাসচর্চায় খেলার ইতিহাস গুরুত্বপূর্ণ। কারণ—  (a)সমাজ সম্পর্কিত তথ্য : খেলার ইতিহাস থেকে একটি সমাজের মানুষের মানসিকতা, শারীরিক সক্ষমতা, সামাজিক ও অর্থনৈতিক অবস্থা, নারীর মর্যাদা প্রভৃতি বিষয় সম্পর্কেমূল্যবান তথ্য পাওয়া যায়। (b)জাতীয়তাবোধ সম্পর্কিত তথ্য : খেলার দর্শক ও শ্রোতাদের প্রতিক্রিয়া থেকে জাতীয়তাবোধ সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়। প্রসঙ্গত উল্লেখযোগ্য, ১৯১১ খ্রিস্টাব্দে মোহনবাগান ইংরেজ ফুটবল দলকে পরাজিত করে IFA শিল্ড জয় করলে বাঙালি তথা ভারতীয়দের মধ্যে ব্রিটিশবিরোধী জাতীয়তাবাদী চেতনার বহিঃপ্রকাশ ঘটে।




22.মোহনবাগান অ্যাথলেটিক ক্লাব (১৮৮৯খ্রি:) কীভাবে জাতীয়তাবাদের জাগরণে অনুঘটকের কাজ করেছিল?

উঃ-জাতীয়তাবাদ জাগরণে মোহনবাগান অ্যাথলেটিক ক্লাবের ভুমিকা : ১৯১১ খ্রিস্টাব্দে সম্পূর্ণভাবে ভারতীয় খেলোয়াড়দের নিয়ে তৈরি হওয়া মোহনবাগান অ্যাথলেটিক ক্লাবের ফুটবল দল ইংরেজ সৈন্যদের নিয়ে তৈরিইস্ট ইয়র্কশায়ার রেজিমেন্ট দলের বিরুদ্ধে খেলায় অবতীর্ণ হয়। সম্পূর্ণ খালি পায়ে খেলেআই এফ এ শিল্ড (IFA Shield) জয় করে মোহনবাগান।১৯১১ খ্রিস্টাব্দে আই এফ এশিল্ডবিজয়ী ভারতীয় ফুটবল দল কয়েকজন বাঙালি বিপ্লবী এই দলের খেলোয়াড় ছিলেন। মোহনবাগান দলের এইশিহরণ জাগানো সাফল্য ভারতে জাতীয়তাবাদের জাগরণে অনুঘটকের কাজ করেছিল।




23.অ্যানাল গোষ্ঠীর ইতিহাসচর্চা (Annales School) কী ধরনের?

উঃ-স্যানাল গোষ্ঠীর ইতিহাসচর্চা : ফ্রান্সের অ্যানাল (Annales) পত্রিকায় কয়েকজন ঐতিহাসিক তাঁদের মত প্রকাশ করেন। এঁরা ছিলেন মার্ক ব্লখ, জর্জ ব্ৰদেল, রয় লাদুরি প্রমুখ। এঁরা সবাই মার্কসবাদে বিশ্বাসী ছিলেন। কিন্তু শুধু আর্থিক বিষয়কে বেশি গুরুত্ব না দিয়ে সমাজ-সংস্কৃতিকে বেশি গুরুত্ব দিয়ে ইতিহাসের ব্যাখ্যা করেছেন এঁরা।




24.যুক্তিবাদী ঐতিহাসিক গোষ্ঠী (Positivist School) বলতে কাদের বোঝানো হয়? এদের মধ্যে কারা প্রসিদ্ধ ?

উঃ-যুক্তিবাদী ঐতিহাসিক গোষ্ঠী : ইতিহাস সর্বতভাবে বৈজ্ঞানিক ও যুক্তিবাদী ধ্যানধারণা প্রয়োগের পক্ষপাতী। এইসব ঐতিহাসিকদের বলা হয় যুক্তিবাদী বা প্রত্যক্ষবাদী ঐতিহাসিক গোষ্ঠী (Positivist School) এদের মধ্যে প্রসিদ্ধ ঐতিহাসিকেরা হলেন বেনেদিতে ক্রোস, বার্কলে, লাইবনিজ প্রমুখ।




25.উত্তর আধুনিকতাবাদী ঐতিহাসিক গোষ্ঠী (Post Modernist school) কাদের বলা হয় ? এদের কয়েকজন ঐতিহাসিকের নাম লেখো।

উঃ- উত্তর আধুনিকতাবাদী ঐতিহাসিক গোষ্ঠী :আধুনিক যুগ পার হয়ে সাম্প্রতিককালের একমেরু বিশ্ব রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে জীবন-জগৎসংসার-সংস্কৃতি সবই অনিত্য’ এবং নিয়ত পরিবর্তনশীলতার মধ্য দিয়ে ক্যালাইডোস্কোপের মতো সদাসর্বদা নতুন নতুন ‘ফর্ম’ সৃষ্টি করে চলেছে বলে যারা মনে করেন, সেই দার্শনিক ঐতিহাসিকেরা বর্তমানে পরিচিত উত্তর-আধুনিকতাবাদী ঐতিহাসিক গোষ্ঠী’ (Post-modernist School) নামে।

এঁদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন—মিশেল ফুকো, জাক দেরিদা, কেতকী কুশারী ডাইসন প্রমুখ।




26.সামাজিক ইতিহাসচর্চার গুরুত্ব কী?

উঃ- সামাজিক ইতিহাসের গুরুত্ব : লা। সামাজিক ইতিহাসচর্চা সামগ্রিকভাবে ইতিহাসচর্চার ক্ষেত্র ও জ্ঞানের প্রসার ঘটিয়েছে। গৃহভিত্তিকবিষয়, গণসংস্কৃতি, নিপীড়িত জনগোষ্ঠী, নারীসমাজের কথা এর অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। শ্রেণি, শিল্পায়ন, নগরায়ণ, সামাজিক চলমানতা প্রভৃতির উপর। সামাজিক ইতিহাস আলোকপাত করে।আধুনিক ইতিহাসচর্চায়নানা বিষয়ের ইতিহাস অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ। সামাজিক ইতিহাসচর্চার মাধ্যমে দীর্ঘদিনের উপেক্ষিত বিষয়গুলিকে আলোকিত করে তোলা হয়।




27.মানবসভ্যতার অগ্রগতির কথা খাদ্যাভ্যাস থেকে কীভাবে জানা যায় ?

উঃ-খাদ্যাভ্যাস : খাদ্যাভ্যাস থেকে মানবসভ্যতার অগ্রগতির কথা জানা যায়। (a)প্রাচীন যুগ : এ যুগে মানুষ বনের ফলমূল ও শিকার করা পশুর কাঁচা মাংস খেত। আগুনের ব্যবহার শিখলে মাংস পুড়িয়ে খেতে শেখে তারা। পরে রান্না করা খাবার খেতে শেখে। (b)মধ্যযুগ : এ সময় মানুষ বিভিন্ন স্বাদের রকমারি খাবার খেত।রান্নার মশলার ব্যবহার শুরু হয় এই সময় থেকেই।(c)আধুনিক যুগ : আধুনিক যুগে মানুষের খাদ্যের ব্যবহার রকমারি এবং বৈচিত্র্যপূর্ণ। এভাবে খাদ্যের গুণমান বিচার করে মানবসভ্যতার অগ্রগতির ধারণা করা যায়।




28.ভারতীয়দের খাদ্যাভ্যাসে মিশ্র সংস্কৃতি লক্ষ করা যায় কেন?

উঃ-কারণ : প্রাচীনকাল থেকেই ভারতবর্ষে বিভিন্ন জাতির আগমন ও অভিবাসন ঘটেছে। আর্য থেকে শুরু করে মধ্যযুগে সুলতানি ও মুঘল যুগে আফগান, মুঘল প্রভৃতি জাতির মানুষেরা এসেছেন। আধুনিক যুগে এসেছেন ইউরোপীয় জাতিগোষ্ঠীর মানুষজন।এরফলে এদেশের মানুষজনের খাদ্যাভ্যাসেমিশ্র সংস্কৃতির প্রভাব পুরানো মাত্রায় লক্ষ করা যায়।




29.আধুনিক ইতিহাসচর্চার খাদ্যাভ্যাসের ইতিহাস গুরুত্বপূর্ণ কেন?

উঃ-গুরুত্ব : আধুনিক ইতিহাসচর্চায় খাদ্যাভ্যাসের ইতিহাস একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।(a)জনগোষ্ঠীসম্পর্কে ধারণা : খাদ্যাভ্যাসের ইতিহাস বিশ্লেষণ করলে কোনো জনগোষ্ঠী জাতির ভৌগোলিক অবস্থান, অর্থনৈতিক অবস্থা, ধর্মীয় বিশ্বাস, নারীর মর্যাদা প্রভৃতি বিষয়ে নানান তথ্য পাওয়া যায়। (b)বৈদেশিক যোগাযোগ সম্পর্কে ধারণা : খাদ্যাভ্যাসের ইতিহাস থেকে একটি নির্দিষ্ট এলাকার জনগোষ্ঠীর সঙ্গে বিদেশের যোগাযোগ সম্পর্কে ধারণা করা যায়। ভারতীয়দের খাদ্যাভ্যাসে মুঘল, পোর্তুগিজ ও ব্রিটিশদের প্রভাবে নতুন নতুন খাবারের সংযোজন হয়।




30.খাদ্য সংগ্রাহক মানুষের খাদ্য উৎপাদকে রুপান্তরিত হওয়া ইতিহাসচর্চায় গুরুত্বপূর্ণ কেন?

উঃ- গুরুত্ব : (a)স্বাতন্ত্র্য : জীবজগতে মানুষই একমাত্র জীব যে খাদ্য উৎপাদন করতে শিখেছিল। (b)কৃষির সূচনা : খাদ্য উৎপাদনের সঙ্গে সঙ্গে কৃষিকাজের সূচন হয়।(c)স্থায়ী বসতি : কৃষির সূচনার সঙ্গে মানুষ যাযাবর জীবন ছেড়ে স্থায়ী বসতি গড়ে তোলে। (d)উদবৃত্ত : মানুষ কৃষির সূচনা করলে নিজের প্রয়োজনীয় খাদ্যের অতিরিক্ত উদবৃত্ত হয় এবং এই উদবৃত্তকে কেন্দ্র করে শুরু হয় দ্বন্দ্ব, যা ইতিহাসের মূল চালিকাশক্তিতে পরিণত হয়েছিল। তাই ইতিহাসচর্চায় খাদ্যের ইতিহাসচর্চা গুরুত্বপূর্ণ।






31.শিল্পচর্চার ইতিহাস বলতে কী বোঝো ?

উঃ- শিল্পচর্চা : আদিম মানুষের নাচ, করতালি, বিভিন্ন শব্দ করার মধ্য দিয়ে শিল্পচর্চার সূচনা হয়েছে। ক্রমশ শিল্পকলা ও তার বিভিন্ন বিভাগগুলির বিকাশ ঘটে। এই শিল্পগুলির মধ্যে প্রধান হল— সংগীত, নৃত্য, নাটক ও চলচ্চিত্র। এগুলির মধ্য দিয়ে অতীত জেগে ওঠে, ঐতিহ্যের এবং লোকশিল্পের সংরক্ষণ হয়।এই ধরনের শিল্পকলা চর্চার মাধ্যমে সমাজ-সংস্কৃতির একটি বিশেষ যুগের চিত্র পাওয়া যায়। মানুষের জীবনধারার নানান পরিবর্তন সম্পর্কেও জানতে পারা যায়। 



32.শিল্পচর্চার ইতিহাসে সংগীতের ভূমিকা লেখো।

উঃ- শিল্পচর্চার বিভিন্ন ধারার মধ্যে অন্যতম হল সংগীত।

সংগীত: সংগীত হল মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত আনন্দ অথবা বেদনার অনুভূতির প্রকাশ। কিন্তু এর মধ্য দিয়ে একটি যুগের ইতিহাস ও সংস্কৃতি ফুটে ওঠে।সংগীতকার, পৃষ্ঠপোষক ও সমঝদার থেকে একটি সামাজিক চিত্র পাওয়া যায়। সংগীতের বিষয়বস্তু থেকে মানসিকতা ও সমাজচিত্র ফুটে ওঠে। এভাবে সংগীত শিল্পচর্চার ইতিহাসের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।




33.আধুনিক ইতিহাসচর্চায় শিল্পচর্চা গুরুত্বপূর্ণ কেন?

উঃ-আধুনিক ইতিহাসচর্চায় শিল্পচর্চার গুরত্ব : (a)সামাজিক ও অর্থনৈতিক অবস্থা সম্পর্কে ধারণা ; শিল্পচর্চার। ইতিহাস থেকে সমকালীন সমাজের নারীর মর্যাদা, শ্রেণিবৈষম্য, সমাজের অর্থনৈতিক অবস্থা সম্পর্কে তথ্য পাওয়া যায়। (b)জাতীয়তাবোধ সম্পর্কে ধারণা : আধুনিক যুগে রাজনৈতিক ইতিহাসচর্চার ক্ষেত্রে শিল্পচর্চা গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। প্রাচীন ও মধ্যযুগে সংগীত, নৃত্য এবং নাটক রাজার মনোরঞ্জন ও ধমীয় উদ্দেশ্যে মঞ্চস্থ হত। কিন্তু ব্রিটিশ আমলে এগুলি ভারতীয়দের মধ্যে জাতীয়তাবোধ বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। উদাহরণ হিসেবে দেশাত্মবােধক সংগীত ও নাটকের (নীলদর্পণ) কথা বলা যায়।




34.বিশ্বায়ন মানুষের পোশাক-পরিচ্ছদকে কীভাবে প্রভাবিত করেছে?

উঃ-খেলাধুলা, খাদ্যাভ্যাস, শিশ্নকার মতো গাশাক-পরিচ্ছ একটি দেশ ও জাতির নিজস্ব সংস্কৃতির অংশ।

পোশাক-পরিচ্ছদের উপর বিশ্বায়নের প্রভাব : এক্ষেত্রে আধুনিক ই গণমাধ্যমে প্রদর্শিত বিভিন্ন পোশাকের দৃশ্য প্রধানত দায়ী। ইন্টারনেট যোগাযোগ পৃথিবীকে ছোটো করেছে। পৃথিবীর একদেশের ব্যবহৃত পোশাক অন্যদেশে ছড়িয়ে পড়ছে। কাজের প্রয়োজনে, রুচির কারণে, শৌখিন বিলাসিতার জন্য বিশ্বায়ন পোশাক-পরিচ্ছদকে প্রভাবিত করেছে নানাভাবে।




35.শিল্পচর্চার ইতিহাসে চলচ্চিত্রের ভূমিকা লেখো?

উঃ- শিল্পচর্চার বিভিন্ন ধারার মধ্যে অন্যতম হল চলচ্চিত্র। 

চলচ্চিত্র : চলচ্চিত্র যদিও প্রথম যুগে নির্বাক ছিল, কিন্তু পরে তা সবাক হয়। কোনো ঘটনাকে বর্ণনা না করে পর্দায় দর্শনীয় করে তোলাই হল চলচ্চিত্র। এর মধ্যে গান, নাচ, কথাবার্তা সব কিছুর সমন্বয় ঘটে। সমাজে ঘটে যাওয়া ঘটনা বা কাহিনি চলচ্চিত্রে দেখানো হয়। চলচ্চিত্রের মাধ্যমে লোকশিক্ষা হয়।




36.চলমান ছবি বা চলচ্চিত্রের উদ্ভাবনের ক্ষেত্রে থমাস আলভা এডিসন এবং লুই এবং অগাক্ত লমিয়েরের অবদান কী ছিল?

উঃ- (a) থমাস আলভা এডিসন : পৃথিবীতে চলমান ছবি বা চলচ্চিত্রের সূচনার ক্ষেত্রে থমাস আলভাএডিসনের ‘কিনেটোস্কোপ’ যন্ত্রটির বড়ো ভূমিকা ছিল। প্রোজেক্টরের  মতো কাজ করা ওই যন্ত্রে স্লাইড-এর মাধ্যমে চলমান ছবি | দেখানো যেত। (b)লুই এবং অগাস্ত মিয়ের : অগাস্ত এবং লুই লুমিয়ের সিনেমাটোগ্রাফি যন্ত্রের সাহায্যে চলচ্চিত্র দেখানো শুরু করেন ১৮৯৫ খ্রিস্টাব্দে।অগাস্ত এবং লুই লুমিয়ের এই সকল আবিষ্কারগুলি আধুনিক চলচ্চিত্রের উদ্ভাবন ও বিকাশের গতিকে সমৃদ্ধ করেছিল।




37.শিল্পচর্চার ইতিহাসে নৃত্যের ভূমিকা লেখো।

উঃ-শিল্পচর্চার বিভিন্ন ধারার মধ্যে অন্যতম হল নাচ বা নৃত্য।

(a) নৃত্য : নাচ বা নৃত্য হল মানুষের আদিমতম আনন্দের বহিঃপ্রকাশ।

(b) সংস্কৃতি: নৃত্যকলা একটি জনগোঁষ্ঠীর পরিচয় তুলে ধরে—একট সময়ের সংস্কৃতির পরিচয় দেয়।

(c) প্রকারভেদ:  বিভিন্ন প্রকারের নৃত্য, যেমন- ভরতনাট্যম, কথাকলি, কুচিপুড়ি, মণিপুরি, ওড়িশি, ভাংরা প্রভৃতি আলিক সংস্কৃতির পরিচয়বাহী। এভাবে নৃত্য শিল্পচর্চার ইতিহাসের ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করে।



38.বাংলা চলচ্চিত্রের দুজন বিখ্যাত পরিচালকের নাম লেখো।  

উঃ- চিত্রপরিচালক : বাংলা চলচ্চিত্রের দুজন বিখ্যাত পরিচালক হলেন— সত্যজিৎ রায় ও  ঋত্বিক ঘটক।(1) সত্যজিৎ রায় পথের পাঁচালী, অপুর সংসার, সোনার কেল্লা, চিড়িয়াখানা, মহানগর ইত্যাদি আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন সিনেমা পরিচালনা করেন। ১৯৯০ খ্রিস্টাব্দে তিনি অস্কার পুরস্কার লাভ করেন। (2) ঋত্বিক ঘটক, তার মেঘে ঢাকা তারা'-সহ অন্যান্য চলচ্চিত্রের জন্য আন্তর্জাতিক খ্যাতি লাভ করেন।




39.বাংলার চলচ্চিত্রকে সত্যজিৎ রায় কীভাবে বিশ্বের দরবারে পৌছে দিয়েছিলেন?

উঃ-বাংলা চলচ্চিত্রকে আন্তর্জাতিক স্তরে পৌছে দেওয়ার ক্ষেত্রে সত্যজিৎ রায়ের অবদান : বিশ্ববিখ্যাত বাঙালি চিত্র পরিচালকদের মধ্যে সত্যজিৎ রায় সর্বাগ্রগণ্য। বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাহিনি অবলম্বনে তৈরি তার চলচ্চিত্র ‘পথের পাঁচালী’ ১৯৫৫ খ্রিস্টাব্দে মুক্তি পায় এবং কান, ভেনিস-সহ বিভিন্ন চলচ্চিত্র উৎসবে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি ও প্রশংসা অর্জন করে। বাংলা চলচ্চিত্রে তার অবদানের জন্য তিনি অস্কার পুরস্কার লাভ করেছিলেন।পথের পাঁচালী-র পাশাপাশি অপরাজিত, অপুর সংসার-সহ একাধিক বিখ্যাত ছবির মধ্য দিয়ে সত্যজিৎ রায় বাংলা চলচ্চিত্রকে বিশ্বের দরবারে পৌছে দিয়েছেন।




40.‘পথের পাঁচালী' চলচ্চিত্রের একটি বিখ্যাত দৃশ্য চলচ্চিত্র কীভাবে সামাজিক সমস্যার কথা তুলে ধরে?

উঃ- চলচ্চিত্রে সামাজিক সমস্যা : সামাজিক ইতিহাসের উপাদান হিসেবে চলচ্চিত্রের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। ১৯৩০-এর দশকের একাধিক চলচ্চিত্রে জাতিভেদ প্রথা, পণপ্রথা এবং নারী  স্বাধীনতার কথা বলা হয়েছে, যার মধ্যে অন্যতম মাস্টার বিনায়কের ব্রম্মচারী’, প্রমথেশ বড়ুয়ার ‘দেবদাস ইত্যাদি। স্বাধীনতার পরবর্তীতে দেশভাগ ও শরণার্থী সমস্যাকে কেদ্র করে তৈরি হয়েছিল ঋত্বিক ঘটকের “মেঘে ঢাকা তারা', 'তিতাস একটি নদীর নাম', মৃণাল সেনের 'ভুবন সোম’, সত্যজিৎ রায়ের 'মহানগর' প্রভৃতি। পরবর্তীকালে ও বর্তমানে সামাজিক ও পারিবারিক নানান বিষয়কে কেন্দ্র করে চলচ্চিত্র তৈরি হয়; যেখানে অপরাধ, প্রতিরোধ, হিংসা, যৌনতা প্রভৃতি সামাজিক সমস্যাও স্থান পায়।




41.শিল্পচর্চার ইতিহাসে নাটকের ভূমিকা লেখো।

উঃ-নাটক : কোনো ঘটনাকে বর্ণনা না করে মঞ্চে অভিনয়ের মাধ্যমে দর্শনীয় করে তোলাই হল নাটক। সমাজে ঘটে যাওয়া কোনো ঘটনা বা কাহিনি অবলম্বনে নাটক রচিত হয়। নাটকের চরিত্রগুলি মানুষের খুব পরিচিত হয় এবং অভিনয় যারা করেন, তারাও পরিচিত। নাচ, গান, অভিনয়ের মাধ্যমে নাটক দেখে মানুষ মুগ্ধ হয়। নাটকের মাধ্যমে লোকশিক্ষা হয়। মানুষের মনে নাটকের কাহিনি অনেক দিন স্মৃতি হয়ে থেকে যায়।




41.স্থানীয় ইতিহাস বলতে কী বোঝো?

উঃ- আধুনিক ইতিহাসচর্চায় স্থানীয় ইতিহাস বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। এর বিশেষত্বগুলি হল—

স্থানীয় গুরুত্ব : এই ধরনের ইতিহাসে স্থানীয় ঐতিহাসিক নিদর্শন,স্থানীয় গল্পকাহিনিকে গুরুত্ব দেওয়া হয়।

স্থানীয় সংস্কৃতি: স্থানীয় জনগোষ্ঠীর কথা,তাদের ঐতিহ্য-সংস্কৃতি এক্ষেত্রে প্রাধান্য লাভ করে।এভাবে বৃহত্তর বা জাতীয় ইতিহাস রচনার উপাদান হিসেবে স্থানীয় ইতিহাস উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করে।




42.শহরের ইতিহাস কীভাবে রচিত হয় ?

উঃ-আধুনিক ইতিহাসচর্চায় স্থানীয় ইতিহাসের মতো শহরের ইতিহাসও বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ।

শহরের ইতিহাস রচনার উপাদানসমূহ: (a)উৎপত্তি : কোনো শাসক শহরটি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন কি না, রাজধানী ছিল কিনা, শহরটি ওই স্থানে গড়ে ওঠার কারণ কী ছিল, স্থাপত্যের বিভিন্ন তথ্যাদি সংগ্রহ করতে হয়। (b) সামাজিক : শহরে জনবসতি, সমাজতত্ত্ব, শিক্ষা-সংস্কৃতি বিষয়ে তথ্যের অনুসন্ধান প্রয়োজন হয়।(c) আর্থিক : ব্যাবসাবাণিজ্য, শিল্প, যোগাযোগ, যানবাহন প্রভৃতি বিষয়ে নানা তথ্য প্রয়োজন।এইসব তথ্যের সাহায্যে শহরের ইতিহাস রচনা করা হয়। 




43.বাংলায় চলচ্চিত্রের ক্ষেত্রে হীরালাল সেনের অবদান কী ছিল?

উঃ- হীরালাল সেনের অবদান : বাংলা চলচ্চিত্রের জনক বলা হয় হীরালাল সেনকে। ১৮৯৮ খ্রিস্টাব্দে বাংলায় প্রথম চলচ্চিত্র দেখানো শুরু করেন তিনি। এর জন্য তিনি যে সংস্থাটি প্রতিষ্ঠা

করেন, তার নাম হল রয়্যাল বায়োস্কোপ কোম্পানি’। পূর্ণ দৈর্ঘ্যের ছবি না হলেও হীরালাল সেন তাঁর সংস্থার দ্বারা যেভাবে চলচ্চিত্র দেখানোর ব্যবস্থা করেন তার ফলে বাংলা চলচ্চিত্রের যথেষ্ট অগ্রগতি ঘটেছিল।




44.যানবাহন ও যোগাযোগ ব্যবস্থার ইতিহাস কেন ইতিহাসচর্চায় গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে?

উঃ-আধুনিক ইতিহাসচর্চায় যানবাহন ও যোগাযোগ ব্যবস্থার ইতিহাস গুরুত্বপূর্ণ।

(a)দেশের অর্থনীতি সম্পর্কে ধারণা : যানবাহন ও যোগাযোগের ইতিহাস থেকে একটি দেশের অর্থনীতি, ব্যাবসাবাণিজ্য সম্পর্কে জানা যায়। (b)প্রযুক্তিসম্পর্কে ধারণা :যানবাহন ও যোগাযোগব্যবস্থার ইতিহাস থেকে যানবাহন ও যোগাযোগের উন্নয়নের ধারাবাহিকতা ও প্রযুক্তি সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়।




45.ইতিহাসচর্চায় ছবি আঁকা বা চিত্রকলার গুরুত্ব লেখো।

উঃ- চিত্রকলার গুরুত্ব : 1.ছবি আঁকা বা চিত্রকলার মধ্য দিয়ে প্রাকৃতিক দৃশ্য, যুদ্ধের খণ্ডচিত্র,ব্যক্তির চিত্র, ব্যঙ্গচিত্র, জীবজন্তু বা অন্য কিছুর চিত্র পাওয়া যায়।আঁকা ছবির মাধ্যমে তা বাস্তবরূপ লাভ করে। 2.আঁকা ছবি থেকে শিল্পকলা, শিল্পরীতি, সংস্কৃতি, পৃষ্ঠপোষক,সময়কাল সম্বন্ধে ধারণা করা যায়।ছবি আঁকা শিল্পীমনের পরিচয় দেয়। ফলে একটি অতীত সময় বা ঘটনা জীবন্ত হয়ে থাকে চিত্রটির মধ্যে। তাই ইতিহাসচর্চায় এর স্থান গুরুত্বপূর্ণ।




46.আধুনিক বাংলায় দৃশ্যশিল্পের বিকাশে অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুরের অবদান কী ছিল?

উঃ-অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুরের অবদান : আধুনিক বাংলায় দৃশ্যশিল্পের বিকাশে অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুরের অবদান ছিল গুরুত্বপূর্ণ। চিত্রকলার ক্ষেত্রে তিনি নব্যবঙ্গীয় চিত্ররীতি’-র উদ্ভাবক ছিলেন।কলকাতা আর্ট কলেজের হ্যাভেল সাহেবের সঙ্গে একযোগে তিনি গড়ে তোলেন বঙ্গীয় কলা সংসদ (১৯০৫ খ্রি.)। দৃশ্যশিল্পের ইতিহাস নিয়ে তিনি একটি গ্রন্থও রচনা করেছিলেন বাগেশ্বরী শিল্প প্রবন্ধাবলী’ নামে। কাঠের মূর্তি তৈরির শিল্পকে তিনি এক নতুন উচ্চতায় পৌছে দিয়েছিলেন, কাটুম-কুটুম’ নামে যা অত্যন্ত জনপ্রিয়।




47.ইতিহাসচর্চায় ফোটোগ্রাফির গুরুত্ব লেখো৷

উঃ-আধুনিক ইতিহাসচর্চায় বিভিন্ন উপাদানের মধ্যে ফোটোগ্রাফ একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান।

গুরুত্ব: 1.ফোটোগ্রাফির মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের ছবিকে ক্যামেরাবন্দি করা যায়। এগুলি কোনো গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা, কোনো মহান ব্যক্তি, কোনো হত্যাকাণ্ড বা অন্য কিছু হতে পারে। গৃহীত আলোকচিত্র তাই প্রামাণ্য তথ্য হয়ে ওঠে। গান্ধিজির সঙ্গে ছোট্ট ইন্দিরা গান্ধির একটি আলোকচিত্র 

2.ফোটোগ্রাফি থেকে অতীতের কোনো বিষয়ের আলোকচিত্র।ইতিহাসের উপাদান হিসেবে তথ্য জোগায়। তবে ফোটোগ্রাফকে পুরোপুরি নির্ভরযোগ্য উপাদান বলে ঐতিহাসিকরা মনে করেন না।



48.আধুনিক ইতিহাসচর্চায় আঁকা ছবি ও ফোটোগ্রাফির ইতিহাস গুরুত্বপূর্ণ কেন?

উঃ-আধুনিক ভারতের ইতিহাসচর্চায় আঁকা ছবি ও ফোটোগ্রাফির ইতিহাস বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ।

সমকালীন ইতিহাসের তথ্য : আঁকা ছবি ও ফোটোগ্রাফি থেকে সমকালীন ইতিহাসের অনেক তথ্য পাওয়া যায়। প্রাচীন ভারতের আঁকা ছবি মুঘল যুগের ছবি থেকে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ঐতিহাসিক তথ্য পাওয়া যায়। অবিকৃত তথ্য : আঁকা ছবি বা ফোটোগ্রাফি থেকে অবিকৃত তথ্য ।পাওয়া যায় বলে পরবর্তীকালের গবেষকগণের কাছেও এইগুলি। তথ্যসংগ্রহের ক্ষেত্রে সমান গুরুত্বপূর্ণ উপাদান বলে বিবেচিত হয়। তবে এইগুলিরও কিছু সীমাবদ্ধতা রয়েছে।




49.ইতিহাসের উপাদান হিসেবে নাটক ও চলচ্চিত্রের সীমাবদ্ধতাগুলি কী কী?

উঃ- ইতিহাস রচনার বিভিন্ন উপাদানের মধ্যে নাটক ও চলচ্চিত্র অন্যতম।

সীমাবশ্যতা : (a) কাল্পনিক কাহিনি : ঐতিহাসিক ঘটনাকে কেন্দ্র করে রচিত নাটক ও চলচ্চিত্রে অনেক সময় কাল্পনিক চরিত্র ও কাহিনি সংযোজিত হয়। (b)বিকৃতি : নাটক ও চলচ্চিত্রে অনেক সময় প্রকৃত তথ্য বা সত্য ঘটনাকে বিকৃত করা হয়। (c)ব্যক্তিগত মতামত : নাট্যকার ও চলচ্চিত্র নির্মাতার ব্যক্তিগত মতামত, ভাবনাচিন্তা তাদের সৃষ্টির মধ্যে প্রতিফলিত হয়। ইতিহাস রচনার জন্য বস্তুনিষ্ঠ ও সঠিক তথ্যের প্রয়োজন হয়।নাটক ও চলচ্চিত্রের ক্ষেত্রে অনেক সময়ে তার অভাব থাকে।




50.থাপত্যের ইতিহাসের গুরুত্ব কী?

উঃ- মানবসভ্যতার অগ্রগতির প্রতীক হল স্থাপত্য নিদর্শন।

গুৱত্ব:- 

1.স্থাপত্য নিদর্শন থেকে পৃষ্ঠপোষকতা, সমকালীন আর্থসামাজিক ও রাজনৈতিক অবস্থার কথা জানা যায়।

2. স্থাপত্যরীতির মধ্যে সাংস্কৃতিক সমন্বয় ফুটে ওঠে।

3.স্থাপত্যের প্রয়োজন ও উপযোগিতার পরিচয় পাওয়া যায়। 




51.আধুনিক ইতিহাসচর্চায় শহরের ইতিহাস গুরুত্বপূর্ণ কেন?

উঃ- আধুনিক ইতিহাসচর্চায় শহরের ইতিহাস গুরুত্বপূর্ণ।

(a)শহরের জীবনযাত্রা সম্পর্কে ধারণা : শহরের ইতিহাসচর্চার ফলে শহরের পতনের কারণ, শহরের অদিবাসীদের জীবনযাত্রা, ব্যাবসাবাণিজ্য প্রভৃতি বিষয়ে জানা যায়। (b) পৌর শাসনব্যবস্থা সম্পর্কে ধারণা : শহরের ইতিহাসচর্চার ফলে পৌরশাসন, রাজনৈতিক অবস্থা, স্থাপত্য, শিল্প-সংস্কৃতি, উন্নয়নের ধারা, বিবর্তন প্রভৃতি বিষয়ে ধারণা পাওয়া যায়।




52.স্বাধীন ভারতের কোন কোন ক্ষেত্রে ভারতীয় সৈন্যবাহিনী নিজেদের সুনাম ও দক্ষতা বৃদ্ধি করেছিল?

ভারতীয় সৈন্যবাহিনীর অবদান ; আধুনিক ভারতীয় সৈন্যবাহিনীর বিবর্তন ঘটেছে ব্রিটিশ আমলের

সেনাবাহিনীগুলির মধ্য দিয়ে। স্বাধীন ভারতে সংঘটিত চিন ও পাকিস্তানের বিরুদ্ধে যুদ্ধগুলিতে ভারতীয় বাহিনী উল্লেখযোগ্য দক্ষতা দেখিয়েছিল। সম্মিলিত জাতিপুঞ্জের হয়ে বিশ্বশান্তি স্থাপনের যুগেও এই বাহিনী তার দক্ষতা প্রমাণ করেছিল। সবশেষে কার্গিল যুদ্ধেও (১৯৯৯ খ্রি.) ভারতীয় বাহিনীর সমরকুশলতা প্রমাণিত হয়েছে।




53.আধুনিক ইতিহাসচর্চায় সামরিক ইতিহাস গুরুত্বপূর্ণ কেন?

উঃ-আধুনিক ইতিহাসচর্চায় সামরিক ইতিহাস অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

(a) সৈনিকদের অবস্থা সম্পর্কে ধারণা : সামরিক ইতিহাসচর্চায় যোদ্ধা বা সৈনিকদের অবস্থা সম্পর্কে জানা যায়। সামরিক ইতিহাসচর্চায় সৈন্যদের পোশাক, অস্ত্রশস্ত্র, খাবার, বেতন, রণকৌশল প্রভৃতি সম্পর্কে জানা যায়।(b)যুদ্ধের (c)খুঁটিনাটি ও আদর্শ সম্পর্কে ধারনা সামরিক ইতিহাসচর্চার।ফলে যুদ্ধের নীতি, কৌশল, খুঁটিনাটি বিষয়, প্রকৃত কারণ, আদর্শ প্রভৃতি বিষয়ে বিস্তৃত জানা যায়।




54.পরিবেশ বিষয়ক দুটি ইতিহাস গ্রন্থের নাম লেখো।

উঃ-গ্রন্থের নাম: পরিবেশ বিষয়ে বহু গ্রন্থের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল- র্যাচেল কারসন-এর লেখা সাইলেন্ট স্প্রিং (Silent Spring) এবং আলফ্রেড ক্রসবি-এর লেখা ইকোলজিক্যাল ইম্পিরিয়ালিজম (Ecological Imperialism)।এইসব গ্রন্থগুলির মাধ্যমে পরিবেশের ইতিহাসের বিভিন্ন তথ্য পাওয়া যায়।




55.আধুনিক ইতিহাসচর্চায় পরিবেশের ইতিহাস গুরুত্বপূর্ণ কেন?

উঃ- আধুনিক ইতিহাসচর্চায় পরিবেশের ইতিহাস খুব গুরুত্বপূর্ণ।

গুরুত্ব : পরিবেশের ইতিহাস বিভিন্ন দিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ। যেমন— (a)মানবসভ্যতার উপর পরিবেশের প্রভাব: পরিবেশের ইতিহাসচর্চার ফলে মানবসভ্যতার উপর পরিবেশের প্রভাব ও জলবায়ুর পরিবর্তনের ফলে মানুষের প্রতিক্রিয়া সম্পর্কে জানা যায়।(b)পরিবেশ রক্ষার জন্য আন্দোলন সম্পর্কে ধারণা : ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলের মানুষ বিভিন্ন পরিবেশের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত। তাদের নিজেদের পারিপার্শ্বিক পরিবেশ রক্ষার জন্য আন্দোলন সম্পর্কে সঠিক ধারণা পাওয়া যায়।




56.আধুনিক ইতিহাসচর্চায় বিজ্ঞান-প্রযুক্তি ও চিকিৎসাবিদ্যার ইতিহাস গুরুত্বপূর্ণ কেন?

উঃ- আধুনিক ইতিহাসচর্চায় বিজ্ঞান-প্রযুক্তি ও চিকিৎসাবিদ্যার ইতিহাস গুরুত্বপূর্ণ।

(a) বিজ্ঞান-প্রযুক্তির ক্রমোন্নতির ধারণা: আধুনিক যুগ হল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির যুগ। বিজ্ঞান-প্রযুক্তির ইতিহাসচর্চার ফলে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি কীভাবে ক্রমান্বয়ে আধুনিক পর্যায়ে উন্নীত হল সে সম্পর্কে জানা যায়। (b)চিকিৎসাবিদ্যার ক্রমোন্নতির ধারণা : চিকিৎসাবিদ্যা কেমন ছিল এবং চিকিৎসাবিদ্যা কীভাবে আধুনিক পর্যায়ে উন্নীত হল সে সম্পর্কে জানা যায়।




57.ভারতে আধুনিক যুগে নারীর ক্ষমতায়নের সূচনা কবে হয় ? নারীমুক্তির ক্ষেত্রে কারা উল্লেখযোগ্য ভূমিকা নিয়েছিলেন?

উঃ- (a) নারীর ক্ষমতায়নের সূচনা : ঊনবিংশ শতাব্দীতে বঙ্গীয় নবজাগরণের যুগে ভারত পথিক রাজা রামমোহন রায়ের উদ্যোগে সতীদাহপ্রথা নিবারণ আইনের (১৮২৯ খ্রি.) মধ্য দিয়ে ভারতে নারীর ক্ষমতায়নের সূত্রপাত হয়। ১৮৫৬ খ্রিস্টাব্দে বিদ্যাসাগরের উদ্যোগে ‘হিন্দু বিধবা পুনর্বিবাহ আইন পাস হওয়ার ফলে নারীপ্রগতির উল্লেখযোগ্য অধ্যায় শুরু হয়। (b)উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিত্ব : সারা দেশে নারীমুক্তি ও নারীকল্যাণের ক্ষেত্রে যাঁরা উল্লেখযোগ্য ভূমিকা নিয়েছিলেন তাঁরা হলেন বীরেশলিঙ্গম পান্ডুলু, জ্যোতিবা ফুলে, সাবিত্রী বাঈ, ডি কে কারভে প্রমুখ।






58.নারীসমাজের ইতিহাসচর্চার ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য দুটি গ্রন্থের নাম লেখো।  

উঃ- উল্লেখযোগ্য গ্রন্থসমূহ : নারীসমাজের ইতিহাস বিষয়ক বিভিন্ন গ্রন্থ রচিত হয়েছে। এগুলি হল— 1, জেরাল্ডিন ফোর্বস-এর লেখা উইমেন ইন মডার্ন ইন্ডিয়া’(Women In Modern India) 2. মালবিকা কার্লেকর-এর লেখা ভয়েসেস ফ্রম উইদিন’ (Voices from Within)




59.আধুনিক ইতিহাসচর্চায় পোশাক-পরিচ্ছুদের ইতিহাস গুরুত্বপূর্ণ কেন?

উঃ- গুরুত্ব : আধুনিক ইতিহাসচর্চায় পোশাক-পরিচ্ছদের ইতিহাস গুরুত্বপূর্ণ।

(a)সামাজিক ও অর্থনৈতিক অবস্থা সম্পর্কে ধারণা : পোশাক পরিচ্ছদের ইতিহাস বিশ্লেষণ করলে একটি সমাজের রক্ষণশীলতা, প্রগতিশীলতা, নারীর মর্যাদা, নারী-পুরুষ বৈষম্য প্রভৃতি সম্পর্কে তথ্য পাওয়া যায়।(b)রাজনৈতিক ও ধর্মীয় অবস্থা সম্পর্কে ধারণা: পোশাক-পরিচ্ছদ থেকে রাজনৈতিক ও ধর্মীয় অবস্থা সম্পর্কে জানা যায়। উদাহরণ হিসেবে জহর কোট’ ও ‘গান্ধি টুপি’-র কথা বলা যেতে পারে।




60.স্থাপত্যের বিভিন্ন বৈশিষ্ট্যগুলি কীভাবে ইতিহাসচর্চায় সাহায্য করে?

বৈশিষ্ট্য: (a)অমসৃণ পাথর-ইটের কাঠামো : প্রাচীন যুগে বিশেষত মিশর(পিরামিড), হরপ্পা, মেসসাপটেমিয়া সভ্যতায় এই ধরনের কাঠামো লক্ষণীয়।(b)মসৃণ ও কারুকার্যময় সৌধ : মধ্যযুগের ইউরোপীয় চার্চ, ভারতের তাজমহল ও প্রাসাদ ইত্যাদি স্থাপত্যশিল্পের উৎকৃষ্ট নিদর্শন। (c)ভাস্কর্য ও চিত্রকলা : নবজাগরণেরযুগেইটালি ও অন্যান্য জায়গার নানান চার্চ ও প্রাসাদে এগুলি বিশেষভাবে দেখা যায়।এভাবে স্থাপত্যের বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য ইতিহাসচর্চায় সাহায্য করে।




61.নারী ইতিহাসচর্চার গুরুত্ব লেখো।

উঃ- সামাজিক ইতিহাসের বিভিন্ন শাখার মতো নারী ইতিহাসচর্চা বর্তমানে প্রাধান্য লাভ করেছে।

গুরুত্ব : (a)অধিকার প্রতিষ্ঠা : বিভিন্ন আন্দোলনের মাধ্যমে নারীর অধিকার প্রতিষ্ঠা, সামাজিক অবস্থান জানতে সাহায্য করে। উপেক্ষার প্রতিবাদ : পুরুষের প্রাধান্যের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের। ইতিহাস তুলে ধরে।(b)পারিবারিক সম্পর্ক: পরিবারে নারীর আচরণ, লিঙ্গবৈষম্য, নারী নির্যাতন সম্পর্কে সচেতন করে।





62.আধুনিক ভারতের ইতিহাসচর্চার প্রধান প্রধান উপাদানগুলি কী কী ?

উঃ-আধুনিক ভারতের ইতিহাসচর্চায় বিভিন্ন ধরনের উপাদান ব্যবহার করা হয়।

উপাদান: আধুনিক ভারতের ইতিহাসচর্চায় ব্যবহৃত উপাদানগুলি হল—সরকারি নথিপত্র, আত্মজীবনী ও স্মৃতিকথা, চিঠিপত্র, সাময়িক পত্রপত্রিকা ইত্যাদি। এই উপাদানগুলির নিরপেক্ষ বিশ্লেষণ প্রয়োজন, কারণ—এই সকল উপাদানগুলির মধ্যে আমলাতান্ত্রিক দৃষ্টিভঙ্গি, ব্যক্তিগত মনোভাবের প্রাধান্য লক্ষ করা যায়।




63.আধুনিক ভারতের ইতিহাসচর্চায় সরকারি নথিপত্রের গুরুত্ব লেখো।

উঃ-আধুনিক ভারতের ইতিহাসচর্চায় সরকারি নথিপত্রের ভূমিকা বিশেষ উল্লেখযোগ্য।

গুরুত্ব : (a)তথ্যভাণ্ডার : দেশের শাসন, আইন ও বিচার সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য সরকারি মহাফেজখানা বা লেখ্যাগারে সংরক্ষিত থাকে। গোয়েন্দা তথ্য : পুলিশ ও গোয়েন্দা বিভাগের নথিপত্র থেকে গণ আন্দোলন, বিপ্লবীদের গতিবিধি ও তৎপরতা, জনগণের ক্ষোভ-বিদ্রোহের নানান তথ্য পাওয়া যায়। (b)সীমাবদ্ধতা: এইসব তথ্য ব্যবহারে সতর্কতা দরকার। কারণ— আমলাতান্ত্রিক মানসিকতা এই উপাদানগুলিকে প্রভাবিত করেছিল।




64.ইতিহাসচর্চায় ফোটোগ্রাফির গুরুত্ব লেখো।

উঃ- গবেষণামূলক কাজ বা নির্ভুল ঐতিহাসিক তথ্যের জন্য গোপন সরকারি নথিপত্র ব্যবহার করা হয়।

গোপন নথিপত্র ব্যবহারের নিয়ম : গোপন নথির মধ্যে  বিশেষ উল্লেখযোগ্য হল পুলিশ, গোয়েন্দা ও স্বরাষ্ট্র দপ্তরের বিভিন্ন রিপোর্ট। এই নথিগুলি ব্যবহারের সময় ঐতিহাসিকদের সতর্ক থাকতে হয়। কারণ— এই নথিগুলি ঐতিহাসিক উপাদান হিসেবে রচিত হয়নি। এগুলি থেকে যদি তথ্যসংগ্রহ করতে হয় তাহলে বিশ্লেষণ দরকার। কারণ বিদেশি শাসকদের ঔপনিবেশিক দৃষ্টিভঙ্গি, শাসন ও দমনমূলক মানসিকতা এগুলিতে প্রতিফলিত হয়েছে।




65. Rlght to Informatlon Act বা তথ্য জানার অধিকার আইন’ কী?

উঃ-ভারতীয় সংবিধান তার জনগণকে বিভিন্ন অধিকার দান করেছে। তার মধ্যে তথ্য জানার অধিকার আইন বা Right to Information Act (2005) হল অন্যতম। তথ্য জানার অধিকার আইন: ভারত সরকার এই আইন পাস করে জনগণকেতথ্য জানার অধিকার দান করেছে। এর দ্বারা যে-কোনো ব্যক্তি যে-কোনো বিষয়ে বিভিন্ন তথ্য জানতে পারে। সরকার জনগণকে তথ্য জানাতে বাধ্য হয়।




66.আত্মজীবনী কীভাবে ইতিহাসের উপাদান হয়ে ওঠে? কয়েকটি ইতিহাস সহায়ক আত্মজীবনীর উদাহরণ দাও।

উঃ- ইতিহাসের উপাদানরুপে আত্নজীবনী : আত্মজীবনী হল এক ধরনের অ-উপন্যাসধর্মী সাহিত্য, যেখানে রচয়িতা নিজের জীবন ও সমকালীন বিভিন্ন ঘটনাবলির বিবরণী পেশ করেন। যে-কোনো আত্মজীবনীতেই ব্যক্তিজীবনের আখ্যানের সঙ্গে জড়িয়ে থাকে বিশেষ এক সামাজিক-সাংস্কৃতিক ঘটনা ও রাষ্ট্রের আখ্যান। এই কারণেই আত্মজীবনী হয়ে ওঠে ইতিহাসের উপাদান।ইতিহাস সহায়ক বিভিন্ন আত্মজীবনীর মধ্যে বিপ্লবী বিপিনচন্দ্র পালের ‘সত্তর বৎসর’,রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জীবনস্মৃতি’, সরলাদেবী চৌধুরাণীর জীবনের ঝরাপাতা, বীণা দাসের শৃঙ্খল ঝংকার’, বুদ্ধদেব বসুর আমার জীবন’ ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য।




67.রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জীবনস্মৃতি' গ্রন্থ থেকে আধুনিক ভারতের ইতিহাসচর্চার কী তথ্য পাওয়া যায় ?  

উঃ-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জীবনস্মৃতি থেকে উনিশ শতকের শেষ ও বিংশ শতকের গোড়ার অনেক ঐতিহাসিক তথ্য পাওয়া যায়। তথ্যসমূহ: সামাজিক : হিন্দুমেলা, চিত্রকলা, সেকালের বাঙালিদের খাদ্যাভ্যাস, পোশাক-পরিচ্ছদ, শিক্ষা-সংস্কৃতি ইত্যাদির পরিচয় পাওয়া যায়। ত্রি রাজনৈতিক : বঙ্গভঙ্গ, স্বদেশি আন্দোলনের সম্পর্কে নানান তথ্য জানা যায়। রবীন্দ্রনাথ ও সমকালীন বিভিন্ন ঘটনা সম্বন্ধে জানতে গ্রন্থটি অতুলনীয়।




68.সরলাদেবী চৌধুরাণীর “জীবনের ঝরাপাতা থেকে কোন্ সময়কালের কথা এবং কোন কোন বিখ্যাত ব্যক্তিত্বদের কথা জানা যায় ?


উঃ-জীবনের ঝরাপাতা : সরলাদেবী চৌধুরাণীর আত্মজীবনী জীবনের ঝরাপাতা’ গ্রন্থ থেকে উনিশ শতকের শেষ দুই দশক এবং বিংশ শতকের প্রথম কয়েক বছরের বাংলা তথা ভারতের কথা জানা যায়।ওই জীবনীগ্রন্থ থেকে সমকালীন নানান ব্যক্তিত্বদের কথা জানা যায়। এদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, স্বামী বিবেকানন্দ, অরবিন্দ ঘোষ, মহাত্মা গান্ধি, বাল গঙ্গাধর তিলক প্রমুখ।




69.সরলাদেবী কর্তৃক প্রবর্তিত একটি ব্রতের নাম ও এর উদ্দেশ্য ব্যক্ত করো।  

উঃ-সরলাদেবী চৌধুরাণী বাংলাদেশে হিন্দু জাতীয়তাবাদ জাগরণে  বিশেষ উদ্যোগী ছিলেন।

ব্রত : সরলাদেবীর উদ্যোগে বীরাষ্টমী ব্রত’ পালিত হয়। মহাঅষ্টমীর দিন গ্রামে গ্রামে পুকুরে সাঁতার প্রতিযোগিতা এবং রাখিবন্ধন কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।

উদ্দেশ্য: বীরাষ্টমী ব্রতের উদ্দেশ্য ছিল শরীরচর্চা, আত্মশক্তির বিকাশ, হীনমন্যতা দূরীকরণের মাধ্যমে জাতীয় মানসিকতার জাগরণ ঘটানো ইত্যাদি। এই কাজে সরলাদেবী সর্বদা সচেষ্ট ছিলেন।




70.সরলাদেবীর কর্মকাণ্ডকে বহুমুখী ও বৈচিত্র্যপূর্ণ বলা হয় কেন?

উঃ- বহুমুখী ও বৈচিত্র্যপূর্ণ কর্মকাণ্ড: সরলাদেবী চৌধুরাণীর জীবনপ্রবাহের পরতে পরতে যুক্ত ছিল দেশপ্রেম ও স্বাদেশিকতা। কখনও তিনি বিপ্লবী কর্মকাণ্ডের অন্যতম অনুপ্রেরণার উৎস হয়ে উঠেছেন, আবার কখনও হয়ে উঠেছেন বীরাষ্টমী ব্রতের প্রবর্তক।মহিলা শিল্পমেলার উদ্যোক্তারূপে, খাদিবস্ত্রের প্রচারে গান্ধিজির  সহযোগীরূপে, প্রতাপাদিত্য উৎসব ও উদয়াদিত্য উৎসবের সংগঠক হিসেবে সরলাদেবী চৌধুরাণী তাঁর জীবনীগ্রন্থে যে রামধনু সদৃশ বর্ণময়তার আভাস দিয়েছেন তার ভিত্তিতে বলা যায় যে, তার কর্মকাণ্ড ছিল বহুমুখী ও বৈচিত্র্যপূর্ণ।




71.আধুনিক ভারতের ইতিহাসচর্চায় আত্মজীবনী ও স্মৃতিকথার গুরুত্ব কী?

উঃ-আধুনিক ভারতের ইতিহাসচর্চায় আত্মজীবনী ও স্মৃতিকথার গুরুত্ব অপরিসীম।

(a)গুরুত্ব: লেখক প্রত্যক্ষদর্শীরূপে বিবরণী ও স্মৃতি রোমন্থন করেন। এই ধরনের লেখায় একটি বিশেষ সময়কালের সমাজ-সংস্কৃতি,রাজনীতি ও অর্থনৈতিক অবস্থার আখ্যান ফুটে ওঠে। 

(b) সীমাবদ্ধতা : এই উপাদান ব্যবহারে সতর্ক থাকা উচিত। কারণ লেখকের ব্যক্তিগত মতামত এখানে প্রাধান্য লাভ করে।




72.বিপিনচন্দ্র পালের সত্তর বৎসর গ্রন্থ থেকে আধুনিক ভারতের ইতিহাসচর্চার কী তথ্য পাওয়া যায় ?  

উঃ- সত্তর বৎসর হল বিপিনচন্দ্র পালের আত্মজীবনী। এতে ১৮৫৮ খ্রিস্টাব্দ থেকে ১৮৮০ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত ভারতের ইতিহাস রচনার গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া যায়।

বিপিনচন্দ্র পাল সম্পর্কে তথ্য : ভারতের জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের অন্যতম প্রধান নেতা বিপিনচন্দ্র পালের ছেলেবেলা, শিক্ষাজীবন, রাজনৈতিক আন্দোলনে যোগদান ইত্যাদি বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে জানা যায়। সমকালীন ইতিহাস সম্পর্কে তথ্য : সত্তর বৎসর থেকে সমকালীন শ্রীহট্ট জেলার পল্লীজীবন, পুরোনো কলকাতা, ব্রাহ্রসমাজ ও ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলন সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া যায়।




73.সরলাদেবী চৌধুরাণীর জীবনের ঝরাপাতা’ গ্রন্থে কী ধরনের ঐতিহাসিক তথ্য পাওয়া যায়?

উঃ-আধুনিক ভারতের ইতিহাসচর্চার উপাদান হিসেবে সরলাদেবী চৌধুরাণীর লেখা আত্মজীবনীমূলক গ্রন্থ ‘জীবনের ঝরাপাতা’ বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ।(a)ঠাকুরবাড়ির কথা : এই গ্রন্থ থেকে ঠাকুরবাড়ির শিশুদের ছেলেবেলা, নারীদের জীবনচর্চা, তাদের শিক্ষা-সংস্কৃতিসহ অন্দরমহলের নানান কথা জানা যায়। (b)সরলাদেবীর কথা : জীবনের ঝরাপাতা থেকে সরলাদেবীর লক্ষ্মীর ভাণ্ডার’ ও ‘ভারত স্ত্রী মহামণ্ডল’ প্রতিষ্ঠা, স্বদেশি আন্দোলনে যোগদান, সশস্ত্র বিপ্লবে সমর্থন প্রভৃতি নানা বিষয় সম্পর্কে বহু তথ্য পাওয়া যায়।




74. "Letters from a Father to His Daughter” গ্রন্থটির মধ্য দিয়ে নেহরুর ইতিহাসবোধের বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করো।

উঃ- নেহরুর ইতিহাসবোধ : 

1. পৃথিবী সম্বন্ধে জানার জন্য সমস্ত দেশ ও তার জনগণের কথা জানা দরকার— এ কথার মধ্য দিয়ে তার আন্তর্জাতিক দৃষ্টিভঙ্গি ফুটে ওঠে। 

2.জাতিবিদ্বেষ এবংবর্ণবিদ্বেষ যে অমূলক তার প্রমাণ হিসেবে আদিম মানুষের পরিযান ও আবহাওয়ার কথা বলেন। 

3. ভয় থেকে সৃষ্ট ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ির বিরোধিতা করেন। কৃষি, বাণিজ্য ও রাজশক্তির উত্থানের কথা বলেন।এই সকল বক্তব্যের মধ্য দিয়ে নেহরুর ইতিহাসবোধ স্পষ্ট ও তথ্যভিত্তিক হয়ে উঠেছে।




75.ইতিহাসের উপাদানরূপে সংবাদপত্রের গুরুত্ব কী?

উঃ- আধনিক ভারতের ইতিহাসের উপাদান হিসেবে সাময়িকপত্র ও সংবাদপত্রের গুরুত্ব অপরিসীম।

(a)গুরুত্ব :  তৎকালীন সমাজচিত্র সংবাদপত্র ও সাময়িক পত্রপত্রিকার মাধ্যমে তৎকালীন দেশের সামাজিক, অর্থনৈতিক এবং রাজনৈতিক বিষয় সম্পর্কেজানা যায়।যেমন—সোমপ্রকাশ’পত্রিকায়নীলকৃষকদের।প্রতি ব্রিটিশ নীলকর সাহেবদের অত্যাচারের কথা প্রকাশ করা হত। বিধবাবিবাহ আন্দোলন সম্পর্কেও ‘সোমপ্রকাশ’ পত্রিকা বিশেষ ভূমিকা পালন করেছিল। (b) জনমত গঠন : দেশে ঘটে চলা বিভিন্ন ঘটনার সংবাদ প্রচারের মাধ্যমে জনমত গঠন করতে সংবাদপত্র অদ্বিতীয়।




76‘সোমপ্রকাশ’ পত্রিকা থেকে কী ধরনের ঐতিহাসিক তথ্য পাওয়া যায় ?  

উঃ-তথ্যসমূহ: ‘সোমপ্রকাশ’ পত্রিকা থেকে পাওয়া তথ্যগুলি হল— (a)সামাজিক : বিধবাবিবাহ, নারীশিক্ষা বিষয়ক সংবাদ এই পত্রিকায় এ প্রকাশিত হয়। (b)রাজনৈতিক : ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দে মহাবিদ্রোহ, নীল বিদ্রোহ, মহারানির ঘোষণা, ইলবার্ট বিল আন্দোলন, দেশীয় ভাষা সংবাদপত্র আইন, জাতীয় কংগ্রেস প্রতিষ্ঠার সংবাদ প্রচারিত হয়। (c)আর্থিক : জমিদারি শোষণ ও ভূমিরাজস্ব, শিল্পায়ন বিষয়ে নানা নিবন্ধ প্রকাশিত হয়।




77.পত্রিকাটি সম্পর্কে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কী মন্তব্য করেছেন ?

উঃ-বঙ্গদর্শন পত্রিকার লেখক তালিকায় ছিলেন একাধিক প্রখ্যাত ব্যক্তিত্ব, যেমন—হরপ্রসাদ শাস্ত্রী, বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর প্রমুখ।রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের অবদান: বঙ্গদর্শন পত্রিকাটির ব্যাপারে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের আকর্ষণ ছিল ছোটোবেলা থেকেই। বস্তুত সমগ্র বাঙালি অধীর আগ্রহে এই মাসিক পত্রিকাটির জন্য অপেক্ষায় থাকত। জীবনস্মৃতি’-তে রবীন্দ্রনাথ লিখেছিলেন, “অবশেষে বঙ্কিমের বঙ্গদর্শন আসিয়া বাঙালির হৃদয় একেবারে লুট করিয়া লইল।”




78.জাতীয়তাবাদ জাগরণের ক্ষেত্রে পত্রপত্রিকার অবদান লেখো।

উঃ-ভারতে জাতীয়তাবাদ জাগরণে বিভিন্ন পত্রপত্রিকার বিশেষ অবদান ছিল।

অবদান : ঊনবিংশ শতকের বিভিন্ন পত্রপত্রিকা জাতীয়তাবাদ জাগরণে অনুঘটকের কাজ করেছিল।

 (a)সংবাদ প্রচার : দেশে ঘটে চলা বিভিন্ন ঘটনার সংবাদ প্রচার করা। 

(b)জনমত গঠন : সংবাদ প্রচারের মাধ্যমে জনমত গঠন করা। 

(c)দেশপ্রেম জাগিয়ে তোলা : দেশবাসীর প্রতি সহানুভূতি দেখিয়ে দেশপ্রেম জাগিয়ে তোলা ইত্যাদি।




79.বাংলার সভ্যতা-সংস্কৃতির কোন কোন ক্ষেত্রকে বঙ্গদর্শন সর্বাধিক প্রভাবিত করেছিল?

উঃ- বাদর্শন’-এর অবদান:বাংলা ও বাঙালিরসভ্যতা-সংস্কৃতি ও মননশীলতার ক্ষেত্রে আধুনিকতার উদবোধন ঘটিয়েছিল বঙ্গদর্শন’ পত্রিকা। আধুনিক বাংলার ইতিহাসচর্চা, গদ্যসাহিত্যের পরিপূর্ণতা, জাতীয়তাবাদী জনমত গঠন—প্রতিটি ক্ষেত্রে পত্রিকাটির গুরুত্বপূর্ণ অবদান ছিল। বেদ-বেদান্ত ও পুরাণ সাহিত্যের পুনরাবিষ্কার করেছিল বঙ্গদর্শন। বঙ্গদর্শনের লেখক তালিকায় কারা উল্লেখযোগ্য ছিলেন?




80.সনারীজাতির উন্নয়নের ক্ষেত্রে সোমপ্রকাশ’ পত্রিকার দুটি বিশেষ অবদান কী ছিল?  

উঃ- ‘সোমপ্রকাশ’ পত্রিকার অবদান: উদারনৈতিক সামাজিক মতাদর্শভিত্তিক ‘সোমপ্রকাশ’ পত্রিকা নারীজাতির উন্নয়নে বিশেষ। অবদান রেখেছিল। 1. নারীশিক্ষার প্রসারের ক্ষেত্রে পত্রিকাটি। প্রথম থেকেই আগ্রহী ও উদ্যোগী ছিল এবং 2. বিধবা পুনর্বিবাহ আন্দোলনের পক্ষে জনমত গঠন করা এবং আন্দোলনে সহযোগিতা করার মধ্য দিয়ে নারীজাতির উন্নয়নের ক্ষেত্রে ‘সোমপ্রকাশ’ পত্রিকা বিশেষ অবদান রেখেছিল।




81.নীল বিদ্রোহের ক্ষেত্রে ‘সোমপ্রকাশ’ কী ভূমিকা নিয়েছিল?

উঃ- ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদের তীব্র বিরোধী পত্রিকা হিসেবে। ‘সোমপ্রকাশ’ কৃষকদের চেতনা জাগরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছিল।

সোমপ্রকাশের ভূমিকা: নীলকর সাহেব এবং জমিদারবিরোধী তীব্র জনমত গঠন করে পত্রিকাটি এক গুরুত্বপূর্ণ ঐতিহাসিক চাহিদা পূরণ করেছিল। নীল কমিশনে সাক্ষ্য দিতে গিয়ে রেভারেন্ড জেমস লং পত্রিকাটির নানা সংবাদের কাটিং জমা দিয়েছিলেন। তিনি যথার্থই বলেছিলেন, “নীলবিদ্রোহের সময়পর্বে সোমপ্রকাশ হয়ে উঠেছিল ভারতীয় জনসমাজের মুখপত্র।”




82.জাতীয় কংগ্রেসের প্রতিষ্ঠাকে(১৮৮৫ খ্রি:)‘সোমপ্রকাশ কীভাবে স্বাগত জানায়?

উঃ- জাতীয় কংগ্রেসের প্রতিষ্ঠা বিষয়ে সোমপ্রকাশ; ভারতে জাতীয় কংগ্রেসের প্রতিষ্ঠা হয় ১৮৮৫ খ্রিস্টাব্দে। এই ঘটনাকে অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে প্রকাশ করেছিল সোমপ্রকাশ পত্রিকা। ভারতের সর্ববৃহৎ রাজনৈতিক দলটির প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে বাংলায় যে ধর্মনিরপেক্ষ চিন্তাধারার প্রবর্তন হয়, এই পত্রিকাটি তাকে স্বাগত জানায় এবং প্রতিষ্ঠানটিকে এক নতুন শক্তির আবির্ভাব’ বলে অভিহিত করে। এইভাবে উনিশ শতকের দ্বিতীয়ার্ধে বাঙালির জাতীয় জাগরণের ইতিহাস রচনার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হয়ে ওঠে ‘সোমপ্রকাশ।




83.ব্রিটিশ সরকার কেন ১৮৯৮ খ্রিস্টাব্দে ‘সোমপ্রকাশ সাময়িকপত্রের প্রকাশ বন্ধ করে দেয়?

উঃ-সংবাদ পরিবেশন, জনমত গঠন এবং জাতীয়তাবাদের উদ্ভব ও বিকাশে সংবাদপত্রের গুরুত্ব অপরিসীম। বাংলা ‘সোমপ্রকাশ’ পত্রিকাও অনুরূপ ভূমিকা পালন করে।

প্রকাশনাস্থগিত হওয়ার কারণ: ১৮৭৫ খ্রিস্টাব্দে বড়োলাট লর্ড লিটন দেশীয় মুদ্রণ আইন পাস করেন। এর দ্বারা সরকারের সমালোচনা প্রকাশ করে এমন দেশীয় সংবাদপত্রগুলিকে নিষিদ্ধ করা হয়। এই কারণে বাংলা ভাষায় প্রকাশিত ‘সোমপ্রকাশ’ পত্রিকার প্রকাশনা প্রায় এক বছর বন্ধ থাকে। পরে ১৮৮০ খ্রিস্টাব্দ থেকে এটি পুনরায় প্রকাশিত হয়, কিন্তু ধীরে ধীরে এর জনপ্রিয়তা কমতে থাকে এবং অবশেষে ১৮৯৮ খ্রিস্টাব্দে এর প্রকাশনা বন্ধ হয়ে যায়।




84. আধুনিক ভারতের ইতিহাসচর্চায় ‘সোমপ্রকাশ’ পত্রিকা গুরুত্বপূর্ণ কেন?

উঃ- আধুনিক ভারতের ইতিহাসচর্চায় সোমপ্রকাশ’ পত্রিকা বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। 

(a) সমকালীন ঘটনা:‘সোমপ্রকাশ’ পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদ থেকে সমকালীন বাংলার জনগণের প্রতি ব্রিটিশ সরকার, জমিদার ও নীলকরদের অত্যাচার ও শোষণ, সাধারণ মানুষের অবস্থা, বিক্ষোভ, আন্দোলন প্রভৃতি বিষয়ে তথ্য পাওয়া যায়। (b)স্বদেশপ্রেমের সার : ‘সোমপ্রকাশ’ পত্রিকা বাংলার একটি জনপ্রিয় পত্রিকা। এই পত্রিকার মাধ্যমে বাঙালি জাতির মধ্যে স্বদেশপ্রেমের সার ও প্রসার ঘটে। কারণ সোমপ্রকাশে নির্ভীকভাবে ব্রিটিশবিরোধী লেখা প্রকাশিত হত।




85.আধুনিক ভারতের ইতিহাসচর্চায় বঙ্গদর্শন' পত্রিকা গুরুত্বপূর্ণ কেন?

উঃ-আধুনিক ভারতের ইতিহাসচর্চায় বঙ্গদর্শন’ পত্রিকা বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ।

(a)সমকালীন ঘটনা : বঙ্গদর্শন পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদ থেকে সমকালীন বাংলার জনগণের উপর ব্রিটিশ সরকার ও জমিদারের শোষণ, সাধারণ মানুষের অবস্থা, বিক্ষোভ, আন্দোলন প্রভৃতি বিষয়ে বিভিন্ন তথ্য পাওয়া যায়। (b)স্বদেশপ্রেমের প্রসার : বঙ্গদর্শন পত্রিকা বাঙালি জাতির মধ্যে স্বদেশচেতনার সঞ্চার করে। এই পত্রিকায় প্রকাশিত বন্দেমাতরম’ সংগীত পরবর্তীকালে ভারতীয় জাতীয়তাবাদের সমার্থক হয়ে উঠেছিল।



86. কী কী কারণে ফোটো গ্রাফি আধুনিক ভারতের ইতিহাসচর্চার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হয়ে উঠেছে?  

উঃ-১৯৯০-এর দশক থেকে ইতিহাসচর্চার ক্ষেত্রে ফোটোগ্রাফির ব্যবহার ব্যাপক মাত্রা পেয়েছে। গবেষকগণ এই বিষয়টিকে ইতিহাসের ‘visual Turn' বলে থাকেন।

কারণ : 1.ফোটোগ্রাফ অতীতের ঘটনাবলির হুবহু প্রতিচ্ছবি তুলে ধরে এবং 2.সাংস্কৃতিক ও সামাজিক ইতিহাসে বর্ণময়তা আনে ফোটোগ্রাফের ব্যবহার।




87.আধুনিক ইতিহাসচর্চায় ফোটোগ্রাফের ব্যবহার কেন জটিল হয়ে উঠছে?

উঃ-ব্যবহারের ক্ষেত্রে জটিলতা : আধুনিক ইতিহাসচর্চায়  যত দিন অতিবাহিত হচ্ছে ততই ফোটোগ্রাফের ব্যবহারের বিষয়টি জটিল হয়ে উঠেছে। কারণ কম্পিউটারে ফোটো এডিটিং-এর  নানা অত্যাধুনিক সফটওয়্যার-এর আবিষ্কার ও প্রয়োগের ফলে।ফোটোগ্রাফে নানা ধরনের বিকৃতি বা ইচ্ছামতো পরিবর্তন ঘটানো সম্ভবপর হয়ে উঠেছে। তাই উপাদান হিসেবে ফোটোগ্রাফের বিশ্বাসযোগ্যতার উপর সংশয় দেখা দিয়েছে।


আরও পড়ুন......

  • বন্ধুরা ২০২২ সালের অধ্যায় ভিত্তিক ইতিহাস সাজেশন এর জন্য  Click Here


File Details

 

File Name/Book Name

Madhyamik History Suggestion 1st chapter ( Concept of History) Marks- 2

File Format

PDF

File Language

Bengali

File Size

334 KB

File Location

GOOGLE DRIVE

Download Link

Click Here to Download PDF File



Join Telegram... Members






একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)
To Top