ভারতে ইংরেজ বণিকের মানদণ্ড’ কীভাবে রাজদণ্ডে’ পরিণত হয় ব্যাখ্যা করো। অথবা, ১৭১৭ থেকে ১৭৬৫ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত বাংলায় ইংরেজ শক্তির উত্থানের বিবরণ দাও।

0

ভারতে ইংরেজ বণিকের ‘মানদণ্ড’ কীভাবে ‘রাজদণ্ডে’ পরিণত হয় ব্যাখ্যা করো। অথবা, ১৭১৭ থেকে ১৭৬৫ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত বাংলায় ইংরেজ শক্তির  উত্থানের বিবরণ দাও।


বণিকের মানদণ্ড’ কীভাবে রাজদণ্ডে’ পরিণত হয়

বন্ধুরা আজকে তোমাদের সঙ্গে ভারতে ইংরেজ বণিকের মানদণ্ড’ কীভাবে রাজদণ্ডে’ পরিণত হয় ব্যাখ্যা করো প্রশ্নটিই আলোচনা করব|অষ্টম শ্রেণী প্রথম অধ্যায় আঞ্চলিক শক্তির উত্থান|এই পোস্টের মাধ্যমে তোমরা ১৭১৭ থেকে ১৭৬৫ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত বাংলায় ইংরেজ শক্তির  উত্থানের বিবরণ দাও প্রশ্ন সম্পর্কে আলোচনা পেয়ে যাবে।


১৭১৭ থেকে ১৭৬৫ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত বাংলায় ইংরেজ শক্তির  উত্থানের বিবরণ দাও।


ভুমিকাঃ- ইংরেজ বণিকরা ভারতে এসেছিলেন ব্যাবসা করার জন্য, কিন্তু কালক্রমে তারা রাজনৈতিক ক্ষমতা দখল করে ভারতের শাসকে পরিণত হন। তারা প্রথমে পলাশির যুদ্ধ ও পরে বক্সারের যুদ্ধে জয়লাভ করে বাংলায় ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদের ভিত্তি প্রতিষ্ঠা করেন। ফলে বণিক ইংরেজরা শাসক ইংরেজে পরিণত হয়।


বণিকের মানদণ্ড রাজদণ্ডে রূপান্তরের ক্রমপর্যায় :

1. ভারতে বণিক ইংরেজদের আগমনের সূচনা: 

রানি এলিজাবেথের রাজত্বকালে ১৬০০ খ্রিস্টাব্দের ৩১ ডিসেম্বর লন্ডনে ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৬০৮ খ্রিস্টাব্দে ইংল্যান্ডের রাজা প্রথম জেমসের সুপারিশপত্র নিয়ে ক্যাপ্টেন হকিন্স মুঘল সম্রাট জাহাঙ্গিরের দরবারে আসেন। হকিন্স জাহাঙ্গিরের কাছ থেকে ইংরেজ কোম্পানির জন্য সুরাটে একটি বাণিজ্যকুঠি স্থাপনের অধিকার লাভ করেন। ১৬১৫ খ্রিস্টাব্দে ইংরেজ দূত স্যার টমাস রো ভারতে এসে সুরাট, আগ্রাসহ অনেকগুলি স্থানে বাণিজ্যকুঠি স্থাপন করেন।


2. ফাররুখশিয়র ফরমান লাভ: 

এরপর ইংরেজরা মুঘল সম্রাট ফাররুখশিয়রের কাছে সুরম্যান-এর নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল পাঠায়। তাদের উদ্দেশ্য ছিল বাংলার ব্যাবসাবাণিজ্যে বিশেষ সুযোগ সুবিধা লাভ করা। মুঘল সম্রাট ফাররুখশিয়র ১৭১৭ খ্রিস্টাব্দে কোম্পানির অনুকূলে একটি ফরমান জারি করে বাংলায় ইংরেজদের বিনাশুল্কে বাণিজ্য করার অধিকারসহ দস্তক প্রদান করেন।


3. পলাশির যুদ্ধ জয়: 

ক্রমে ইংরেজ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি বাংলার নবাব সিরাজ উদ-দৌলাকে পলাশির যুদ্ধে (১৭৫৭ খ্রিস্টাব্দের ২৩ জুন) পরাজিত করে। পরে ইংরেজরা বাংলার নবাব পদে মির জাফরকে বসালেও তারাই বাংলার প্রকৃত শাসনকর্তা হয়ে ওঠে। বণিক ইংরেজরা বাংলার রাজনৈতিক ক্ষমতার নিয়ন্ত্রক হয়ে ওঠে।


4. বক্সারের যুদ্ধ জয়: 

ইংরেজ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি বক্সারের যুদ্ধে (১৭৬৪ খ্রিস্টাব্দের ২২ অক্টোবর) একযোগে বাংলার নবাব মির কাশিম, অযোধ্যার নবাব সুজা উদ-দৌলা, দিল্লির মুঘল সম্রাট দ্বিতীয় শাহ আলমের মিলিত জোটকে পরাজিত করে। বক্সারের যুদ্ধে জয়লাভের ফলে ইংরেজদের ক্ষমতা বাংলা ছাড়িয়ে দিল্লি পর্যন্ত বিস্তৃত হয়।


5. দেওয়ানি লাভ: 

বক্সারের যুদ্ধে পরাজিত মুঘল সম্রাট দ্বিতীয় শাহ আলম ইংরেজদের সঙ্গে এলাহাবাদের দ্বিতীয় সন্ধি স্বাক্ষর করেন। ফলে কোম্পানি বার্ষিক ২৬ লক্ষ টাকার বিনিময়ে বাংলার দেওয়ানি বা রাজস্ব আদায়ের অধিকার লাভ করে (১৭৬৫ খ্রি.)। বাংলার রাজস্বের উপর ইংরেজ কোম্পানির আইনগত কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠিত হয়। এভাবেই বণিকের মানদণ্ড রাজদণ্ডে পরিণত হয়।


মূল্যায়ন: এইভাবে ধীরে ধীরে ইংরেজ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি স্থানীয় রাজনীতিতে অংশগ্রহণ করে নিজেদের ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। ফলে বণিকের মানদণ্ড রাজদণ্ডে পরিণত হয়।

 



File Details

 

File Name/Book Name

ভারতে ইংরেজ বণিকের মানদণ্ড’ কীভাবে রাজদণ্ডে’ পরিণত হয় ব্যাখ্যা করো 

File Format

PDF

File Language

Bengali

File Size

78 KB

File Location

GOOGLE DRIVE

Download Link

Click Here to Download PDF File



Join Telegram... Members







একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)
To Top