সমাজ সংস্কারক হিসেবে বিদ্যাসাগরের অবদান উল্লেখ করো।

0

সমাজ সংস্কারক হিসেবে বিদ্যাসাগরের অবদান উল্লেখ করো। 

সমাজ সংস্কারক হিসেবে বিদ্যাসাগরের অবদান উল্লেখ করো



প্রিয় মাধ্যমিকের শিক্ষার্থীরা,
আজকে তোমাদের সাথে শেয়ার করব সমাজ সংস্কারক হিসেবে বিদ্যাসাগরের অবদান। মাধ্যমিক ইতিহাস দ্বিতীয় অধ্যায় ৪ নম্বরের প্রশ্নের জন্য সমাজ সংস্কারক হিসেবে বিদ্যাসাগরের অবদান খুবই গুরুতপুর্ন। তোমরা আমাদের ওয়েবসাইটে পেয়ে যাবে Madhyamik History 2nd Chapter 4 Marks Question The Role Of Vidyasagar in Social Reform এছাড়াও পেয়ে যাবে মাধ্যমিক দ্বিতীয় অধ্যায় ১ নম্বরের প্রশ্ন ও উত্তর মাধ্যমিক দ্বিতীয় অধ্যায় ২ নম্বরের প্রশ্ন ও উত্তর মাধ্যমিক দ্বিতীয় অধ্যায় ৪ নম্বরের প্রশ্ন ও উত্তর মাধ্যমিক দ্বিতীয় অধ্যায় ৮ নম্বরের প্রশ্ন ও উত্তর। তো প্রিয় বন্ধুরা আজকে সমাজ সংস্কারক হিসেবে বিদ্যাসাগরের অবদান আলোচনা করা হল আমাদের আশা এই প্রশ্নটি তোমাদের পরিক্ষায় খুব কাজে আসবে। 

সমাজ সংস্কারক হিসেবে বিদ্যাসাগরের অবদান উল্লেখ করো। 


উত্তর:- উনিশ শতকে বাংলায় সমাজ সংস্কার আন্দোলনে ইতিহাসে ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের নাম স্বর্ণাক্ষরে লেখা আছে। তিনি ছিলেন একজন বাস্তববাদী সমাজ সংস্কারক। নারীশিক্ষা প্রসার তথা নারীমুক্তি আন্দোলনে তিনি ছিলেন অগ্রগামী ।


বিধবা বিবাহ: হিন্দু-সমাজে অবহেলিত, বঞ্চিত ও নিপীড়িত নারী সমাজের মুক্তির জন্য বিদ্যাসাগর আজীবন লড়াই করেন। সে যুগে হিন্দু সমাজে বাল্য বিবাহের চল ছিল। কন্যাদায় গ্রস্ত পিতারা সমাজের ভয়ে তাদের কমবয়সি মেয়েদের বয়স্ক লোকেদের সঙ্গে বিবাহ দিতেন। তাই অনেক সময় অল্প বয়সেই এই সমস্ত মেয়েরা বিধবা হত। এর ফলে তাদের দুর্দশার শেষ থাকত না।


নারীজাতির এই করুণ অবস্থা তাঁকে ব্যথিত করে।হিন্দু শাস্ত্র ও পরাশর সংহিতা' অধ্যয়ন করে বাল্যবিধবাদের পুনর্বিবাহের পক্ষে জনমত গঠনের কাজে তিনি মন দেন। শেষপর্যন্ত ব্রিটিশ সরকার বিদ্যাসাগরের পক্ষে দাঁড়ায় এবং ১৮৫৬ খ্রিস্টাব্দে বড়োলাট লর্ড ডালহৌসি ১৫নং বিধি দ্বারা বিধবা বিবাহ আইন বলবৎ করেন। বিদ্যাসাগর মহাশয় নিজের পুত্র নারায়ণের সঙ্গে ভবসুন্দরী নামে অষ্টাদশী এক বিধবার বিবাহ দেন। এরকম তিনি ৬০টি বিবাহ দেন।


বাল্যবিবাহ: হিন্দুধর্মে মেয়েদের বাল্যবিবাহ নামক সামাজিক ব্যাধি দূর করার জন্য তিনি নিরলস সংগ্রাম করেন। তিন ‘সর্ব শুভকরী’ পত্রিকায় বাল্য বিবাহের দোষ’ শীর্ষক নিবন্ধ প্রকাশ করে বাল্য বিবাহের বিরুদ্ধে জনমত গঠন করেন। এ ব্যাপারে তিনি সফলও হন। ১৮৬০ খ্রিস্টাব্দে সরকার আইন করে মেয়েদের বিবাহের বয়স কমপক্ষে ১০ বছর ধার্য করে।


বহুবিবাহ: সে যুগে হিন্দুসমাজে পুরুষের বহু বিবাহ করার অধিকার ছিল। ফলে কুলিন সমাজে এই প্রথার বহুল প্রচলন ছিল।বিদ্যাসাগর এই প্রথার বিরুদ্ধে সরব হন এবং এর বিরুদ্ধে জনমত গঠন করেন।১৮৭৩ খ্রিস্টাব্দে বহুবিবাহ রহিত হওয়া উচিত কি না এতদ্বিষয়ক বিচার’ নামক একটি পুস্তিকাও রচনা করেন। এ ছাড়া তিনি সরকারি সাহায্য প্রার্থনা করেন। কিন্তু বহুবিবাহ প্রসঙ্গে তিনি বিশেষ সাফল্য পাননি।


অন্যান্য পদক্ষেপ: এ ছাড়া বিদ্যাসাগর মহাশয় সে যুগের কৌলিন্য প্রথা, গঙ্গায় সন্তান বিসর্জন প্রথা, জাতিভেদ প্রথা, ও কুষ্ঠরোগী হত্যা প্রভৃতি নানাবিধ প্রথার বিরুদ্ধে সোচ্চার হন। তাঁর উদ্যোগেই খ্যাতনামা চিকিৎসক মহেন্দ্রলাল সরকার বৈদ্যনাথ রাজকুমারী কুষ্ঠাশ্রম প্রতিষ্ঠা করেন।


মূল্যায়ন: উনিশ শতকে বাংলার অচলায়তন সমাজ ব্যবস্থার বিরুদ্ধে লড়াই করার যে-সাহসিকতা তিনি দেখিয়েছেন তা অভূতপূর্ব। সেই কারণেই রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এই নির্ভীক সমাজ সংস্কারক সম্পর্কে বলেছেন, এই ভীরুর দেশে তিনিই একমাত্র পুরুষ সিংহ। ড. অমলেশ ত্রিপাঠির মতে তিনি ছিলেন একজন ‘ট্রাডিশনাল মর্ডানাইজার’। মাইকেল মধুসূদন দত্ত তাঁর মধ্যে দেখতে পেয়েছিলেন এমন এক মানুষ—“যার মনীষা প্রাচীন ঋষির মতো, কর্মদক্ষতা ইংরেজের মতো এবং হৃদয়বত্তা বঙ্গজননীর মতো।”



FAQs 


বিদ্যাসাগর সম্পর্কীত কিছু গুরুত্বপুর্ন প্রশ্ন যেগুলি পরিক্ষায় আসে 


1.প্রথম বিধবা বিবাহ কবে অনুষ্ঠিত হয়?

উঃ- ১৮৫৬ সালের ৭ ডিসেম্বর ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর-এর উপস্থিতিতে প্রথম বিধবা বিবাহের অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়।


2.হিন্দু বিধবা বিবাহ আইন পাস হয় কত সালে

উঃ- হিন্দু বিধবা বিবাহ আইন দ্য হিন্দু উইডো'স রিম্যারেজ অ্যাক্ট(The Hindu Widows Remarriage act) ১৮৫৬ আইনটি ২৬ জুলাই পাস করা হয়েছিল। 


3.বিধবা বিবাহ আইন কে পাস করেন?

উঃ- ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর এর আন্দোলনের ফলে ডালহৌসি ১৫ নং রেগুলেশন দ্বারা হিন্দু বিধবাবিবাহ আইন প্রণয়ন করেন এবং পরবর্তী বড়োেলাট লর্ড ক্যানিং আইনে স্বাক্ষর করে বিধবাবিবাহকে আইনি স্বীকৃতি দেন।


4.মাদ্রাজ প্রেসিডেন্সি তে বিধবা বিবাহ আন্দোলন শুরু হয় কার নেতৃত্বে?

উঃ- মাদ্রাজ প্রেসিডেন্সি তে বিধবা বিবাহ আন্দোলন শুরু হয় বীরসালিঙ্গম পান্তলুর নেতৃত্বে।


5.কোন গভর্নর জেনারেলের আমলে বিধবা বিবাহ আইন প্রণীত হয়

উঃ- গভর্নর জেনারেলের ডালহৌসি আমলে হিন্দু বিধবাবিবাহ বিধবা বিবাহ আইন প্রণীত হয়।



6.বিদ্যাসাগরের লেখা দুটি বইয়ের নাম

উঃ- 'বর্ণপরিচয়'(১৮৫৫), 'ঋজুপাঠ' (১৮৫১-৫২),'সংস্কৃৃত ব্যাকরণের উপক্রমণিকা'(১৮৫১), 'ব্যাকরণ কৌমুদী' (১৮৫৩); 


7.সীতার বনবাস কার লেখা

উঃ- ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের 


9.ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের ছদ্মনাম কি

উঃ- ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের ছদ্মনাম কস্যচিৎ উপযুক্ত ভাইপোস্য'





আরও পড়ুন......



  • বন্ধুরা ২০২২ সালের অধ্যায় ভিত্তিক ইতিহাস সাজেশন এর জন্য  Click Here
  • নারী শিক্ষা বিস্তারে ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের অবদান আলোচনা করো Click Here

File Details

 

File Name/Book Name

 সমাজ সংস্কারক হিসেবে বিদ্যাসাগরের অবদান উল্লেখ করো। 

File Format

PDF

File Language

Bengali

File Size

94 KB

File Location

GOOGLE DRIVE

Download Link

Click Here to Download PDF File



Join Telegram... Members


একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)
To Top