টিকা লিখঃ ইলবার্ট বিল আন্দোলন।ILBERT BILL MOVEMENT

0
           
টিকা লিখঃ ইলবার্ট বিল আন্দোলন


ইলবার্ট বিল আন্দোলন


ইলবার্ট বিল আন্দোলন : ১৮৭৩ খ্রিস্টাব্দের ফৌজদারি আইন অনুসারে ইউরোপীয় অপরাধীদের বিচার করার ক্ষমতা ভারতীয় বিচারকের ছিল না । একমাত্র ইউরোপীয় বিচারকগণই ইউরোপীয় অপরাধীদের বিচার করতে পারতেন। ব্রিটিশ ভারতের বিচারব্যবস্থায় জাতিভেদমূলক বৈষম্য দূর করার জন্য ভাইসরয় লর্ড রিপনের পরামর্শ অনুসারে তার কাউন্সিলের আইন সদস্য  ইলবার্টএকটি আইনের খসড়া তৈরি করেন, যা ইলবার্ট বিল [Ilbert Bill] নামে পরিচিত।

বিতর্কঃ এই খসড়া আইনে ভারতীয় বিচারকদের ইউরোপীয় বিচারকদের সমতুল্য মর্যাদা ও ক্ষমতা দেওয়ার প্রস্তাব করা হয় এবং বলা হয় যে, ভারতীয় বিচারকরাও ইউরোপীয় বিচারকদের বা শ্বেতাঙ্গদের বিচার করতে পারবেন

আন্দলোনঃ ইলবার্টের খসড়া আইনটি প্রকাশিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ইউরোপীয়রা ইলবার্ট বিলের বিরুদ্ধে তুমুল আন্দোলন শুরু করে, কারণ এই খসড়া আইনটি ব্রিটিশ পার্লামেন্টে পাস হলে ভারতীয় বিচারকদের কাছে ইউরোপীয়দের বিচার প্রার্থী হতে জাত অভিমানে লাগত এবং সেক্ষেত্রে তাদের মর্যাদা ইউরোপীয় বিচারকদের সমতুল্য হত । ইলবার্ট বিলের বিরুদ্ধে ইউরোপীয়দের এই আন্দোলন 'শ্বেতাঙ্গ বিদ্রোহ' (White mutiny) নামে খ্যাত । বিলটি প্রত্যাহারের জন্য ইংরেজ আইনজীবী কেসুয়িক, মিলার ব্রানসন -এর নেতৃত্বে ডিফেন্স অ্যাসোসিয়েশননামে এক সংস্থা গঠন করে আন্দোলন চালায়

প্রতি-আন্দোলন :- ১৮৮৩-৮৪ খ্রিস্টাব্দে ইলবার্ট বিলের বিরুদ্ধে ইউরোপীয়দের আন্দোলন ও বিক্ষোভের প্রত্যুত্তরে সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে ভারতসভা প্রতি-আন্দোলন গড়ে তোলে । ইলবার্ট বিলের সমর্থনে ভারতসভা দেশের নানা স্থানে জনসভা করে এবং সংবাদপত্রে মতামত জানাতে থাকে । কিন্তু সরকার শেষ পর্যন্ত ইউরোপীয়দের দাবির কাছে মাথা নত করে । প্রস্তাবিত আইনের খসড়াটি  বাতিল করা হল না বটে, কিন্তু তার কয়েকটি উদারনৈতিক ধারা এমন ভাবে সংশোধন করা হয় যাতে ইলবার্ট বিলের আসল উদ্দেশ্য ব্যর্থ হয়ে যায় ।

ইলবার্ট বিল আন্দোলনের গুরুত্ব  :- ভারতের জাতীয় আন্দোলনের ইতিহাসে ইলবার্ট বিল আন্দোলনের গুরুত্ব অপরিসীম ।
() ইলবার্ট বিল আন্দোলনে ইউরোপীয়দের বর্ণবিদ্বেষ ও ভারতীয়দের প্রতি ঘৃণা তাঁদের চোখ খুলে দেয় । তাঁরা উপলবদ্ধি করেন ভারতবাসী মাত্রেই ইংরেজদের চোখে ঘৃণার পাত্রফলেতারা নিজেদের সম্মান সম্পর্কে সচেতন হন ।
() ইলবার্ট বিল আন্দোলন একথা প্রমান করে যে সংবদ্ধ আন্দলন না করলে কোন কিছুর আদায় করা যায়না সেই ব্যাপারে ভারতীয় নেতৃবৃন্দ সচেতন হয়।

************ সংশোধনীতে বলা হয়, ভারতীয় বিচারক ইউরোপীয় অপরাধীদের বিচার করতে পারবেন কিন্তু সেক্ষেত্রে তাঁকে ইউরোপীয়দের মনোনীত জুরির সাহায্য নিতে হবে ইত্যাদি ।*******




****যদি আপনাদের পোস্টটি ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই শেয়ার করে অন্যদের পড়ার সু্যোগ করেদিন।****ধন্যবাদ*****

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)
To Top