পঞ্চম শ্রেণীর দ্বিতীয় অধ্যায়ের ভারতের রাজনৈতিক ইতিহাসের কয়েকটি ধারা 5 নম্বরের প্রশ্ন ও উত্তর

0

সপ্তম শ্রেণী দ্বিতীয় অধ্যায়ের

ভারতের রাজনৈতিক ইতিহাসের কয়েকটি ধারা

5 নম্বরের প্রশ্ন ও উত্তর

পঞ্চম শ্রেণীর দ্বিতীয় অধ্যায়ের  ভারতের রাজনৈতিক ইতিহাসের কয়েকটি ধারা  5 নম্বরের প্রশ্ন ও উত্তর

1. গুপ্ত পরবর্তী যুগে ভারতের রাজনৈতিক অবস্থার পরিচয় দাও।

উ:- গুপ্ত রাজাদের দুর্বলতা তথা গুপ্ত সাম্রাজ্যের পতনের পর সপ্তম-অষ্টম শতকে ভারতবর্ষের নানা স্থানে নানা আঞ্চলিক রাজ্য এবং রাজবংশ গড়ে ওঠে।

গুপ্তোত্তর যুগে ভারতের আঞ্চলিক রাজ্যগুলি হল

i. বলভি: পঞ্চম শতকের শেষদিকে ভট্টারক নামে  সেনাপতি সৌরাষ্ট্রের বলভিতে একটি স্বাধীন রাজ্যের সূচনা করেন। এই বংশের শ্রেষ্ঠ রাজা ছিলেন দ্বিতীয় ধ্রুবসেন। অষ্টম শতকের মধ্যে তারা সাম্রাজ্য বিস্তারে দুর্বল হয়ে পড়ে।

ii. বকাটক বংশ: এই সময় পশ্চিম ভারতে দ্বিতীয় রুদ্রসেনের নেতৃত্বে বকাটক বংশ শক্তিশালী হয়ে ওঠে। তিনি ছিলেন গুপ্ত সাম্রাজ্যের চরম প্রতিদ্বন্দ্বী। তিনি

আক্রমণে তিনি মারা যান। খবর পেয়ে রাজ্যবর্ধন শশাঙ্ক ও মালবাজ দেবগুপ্তের বিরুদ্ধে যুদ্ধে অগ্রসর হন। কিন্তু যুদ্ধে তিনি মারা যান। রাজ্যবর্ধনের মৃত্যুর পর ১৮ বছর বয়সে ৬০৬ খ্রিস্টাব্দে হর্ষবর্ধন থানেশ্বরের রাজা হন।

iii. কনৌজ দখল: গ্রহবর্মার মৃত্যুর পর শশাঙ্ক কনৌজে নিজের অধিকার স্থাপন করেন। আর গ্রহবর্মার স্ত্রী রাজ্যশ্রীকে বন্দি করে রাখেন। এমতাবস্থায় হর্ষবর্ধন শশাঙ্কের বিরুদ্ধে অভিযান করেন। তিনি রাজ্যশ্রীকে উদ্ধার করেন এবং কনৌজ দখল করেন।

iv. রাজধানী স্থানান্তর: কনৌজ দখল করে সেখান থেকে শশাঙ্ক আশ্রিত সুরসেনকে বিতাড়িত করেন। এই অবস্থায় হর্ষবর্ধন উভয় সংকটে পড়েন। তাই বাধ্য হয়ে ৬১২ খ্রিস্টাব্দে তিনি তাঁর রাজধানী (থানেশ্বর) কনৌজে নিয়ে আসেন।

2. শাসক হিসেবে সম্রাট হর্ষবর্ধনের প্রজা বাৎসল্য ও সংস্কৃতির প্রতি অনুরাগের পরিচয় দাও ?

উ:- হর্ষবর্ধন শুধু রাজ্য বিজেতাই ছিলেন না; তিনি ছিলেন সুশাসক। হর্ষচরিত, ‘সি-ইউ-কি প্রভৃতি গ্রন্থ থেকে তাঁর শাসনব্যবস্থা সম্পর্কে তথ্য জানা যায়। & হর্ষবর্ধনের কৃতিত্ব

i. প্রজারঞ্জক: হর্ষবর্ধন একজন প্রজারঞ্জক শাসক ছিলেন। প্রজাদের সুখশান্তির প্রতি তিনি সর্বদা নজর দিতেন। জানা যায়, হর্ষবর্ধনের সময় রাজ্যে চোরডাকাতের ভয় ছিল না। প্রজারা মাত্র ১/৬ অংশ কর দিত। এ ছাড়া প্রজাদের সুবিধার জন্য সরাইখানা ও চিকিৎসালয় স্থাপন করেন।

ii. উদারতা: হর্ষবর্ধন ছিলেন একজন উদারধর্মী রাজা। তিনি নিজে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী ছিলেন। তবুও পরধর্মের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতেন। ৬৪৩ খ্রিস্টাব্দে তিনি কনৌজে একটি ধর্ম সম্মেলন আহ্বান করেন। প্রয়াগে কুম্ভমেলার আয়াোজন করেন। কুম্ভমেলায় গরিব-দুঃখীদের অকাতরে দান করতেন।

iii. সংস্কৃতিবান: এ ছাড়া তিনি শিক্ষা-সংস্কৃতির পৃষ্ঠপাোষক ছিলেন। নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্থ সাহায্য করতেন। তিনি নিজে রত্নাবলী, প্রিয়দর্শিকা ও নাগানন্দা নামক তিনটি নাটক রচনা করেন। তাঁর সভাকবি বাণভট্ট লেখেন ‘হর্ষচরিত।

iv. মূল্যায়ন: সম্রাট অশাোকের মতাো হর্ষবর্ধন ছিলেন একজন পরম প্রজাদরদি উদার শাসক। এজন্য ড. রাধাকুমুদ মুখাোপাধ্যায় যথার্থই বলেছেন যে, “হর্ষবর্ধনের মধ্যে অশাোক ও সমুদ্রগুপ্তের গুণাবলির সমন্বয় লক্ষ করা যায় I



একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)
To Top