ইঙ্গ-শিখ যুদ্ধ | Anglo-Sikh Relation | ইঙ্গ-শিখ যুদ্ধকারণ ও ফলাফল
ইঙ্গ-শিখ যুদ্ধ | Anglo-Sikh Relation |
বন্ধুরা আজকে এই পোস্টের মাধ্যমে আলোচনা করব ইঙ্গ-শিখ যুদ্ধ|Anglo-Sikh Relation|ইঙ্গ-শিখ যুদ্ধকারণ ও ফলাফল| শিখ ধর্ম সম্পর্কিত কিছু প্রশ্ন উত্তর|প্রথম ইঙ্গ শিখ যুদ্ধ সম্পর্কিত PDF |দ্বিতীয় ইঙ্গ শিখ সম্পর্কিত PDF |গুরু নানক সম্পর্কিত প্রশ্ন উত্তর |তো বন্ধুরা তোমরা যারা ইন্টারনেটে ইঙ্গ শিখ সম্পর্কিত প্রশ্ন উত্তর পিডিএফ সন্ধান করছ তাদের আর সম্মান করার প্রয়োজন নেই তোমরা নিচের পোস্টটি পাঠ করলেই সমস্ত প্রশ্নের উত্তর যেগুলি তোমাদের বিভিন্ন ক্লাস এবং তোমরা যারা বিভিন্ন প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছ তাদের অনেকটাই সাহায্য করবে।
ইঙ্গ-শিখ যুদ্ধ | Anglo-Sikh Relation | ইঙ্গ-শিখ যুদ্ধকারণ ও ফলাফল
প্রথম গুরু নানক (1469-1538 খ্রীষ্টাব্দ)
- শিখ ধর্মের প্রতিষ্ঠাতা।
- তিনি ছিলেন নির্গুণ ও একেশ্বরবাদে বিশ্বাসী।
- জন্ম পাঞ্জাবের তালবন্দী গ্রামে।
- নানকের উপদেশগুলি ‘গ্রন্থসাহেবে’ সংকলিত রয়েছে।
দ্বিতীয় গুরু অঙ্গদ (1538-1552 খ্রীষ্টাব্দ)
- তিনি লেখনা নামে পরিচিত।
- 1504 খ্রীষ্টাব্দে ভাদুরে তার জন্ম।
- তিনি গু্রুমুখী বর্ণমালা প্রচলন করেন।
- তিনি গুরু নানকের উপদেশগুলি সংগ্রহ করেন।
তৃতীয় গুরু অমরদাস(1552-1574 খ্রীষ্টাব্দ)
- তিনি সতীদাহ প্রথা নিষিদ্ধ করেন।
- তিনি লঙ্গরখানা নির্মাণ করেন।
- তিনি তার 22 জন শিশ্যকে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে দেন।
- তিনি শিখ রাজ্যকে 24টি পরিষদে ভাগ করেন।
- শিখদের সুরাপান নিষিদ্ধ করেন।
- তিনি গোইন্ডল জলাধার প্রতিষ্ঠা করেন।
চতুর্থ গুরু রাম দাস(1574-1581 খ্রীষ্টাব্দ)
- মোঘল সম্রাট আকবর অমৃতসরে একটি পুকুরসহ 500 বিঘা জমি দান করেন।
- অমৃতসর শহর প্রতিষ্ঠা করেন।
- অমৃতসরে হরমন্দির(স্বর্ন মন্দির)নির্মান করেন।
- 1577 খ্রিস্টাব্দে অমৃতসরে সরোবর খনন করেন।
পঞ্চম গুরু অর্জুন(1581-1606) খ্রীষ্টাব্দ
- তিনি আদি গ্রন্থ(গ্রন্থ সাহেব)নামে একটি গ্রন্থ লেখেন 1604 খ্রীষ্টাব্দে।
- তিনি ‘শুকমনি’ নামে একটি গ্রন্থ লেখেন।
- শিখ শক্তিকে মুঘলদের চিরশত্রুতে পরিণত করে।
- মোঘল সম্রাট জাহাঙ্গীরের বিদ্রোহী পুত্র খসরুকে সাহায্যের অপরাধে জাহাঙ্গীর অর্জুন সিংকে মৃত্যুদন্ড দেন।
- তিনি ফকিরের মতো সাজ-গোজ করতেন।
- তিনি মসন্ত নামে একটি গোষ্ঠী্র সৃষ্টি করেন কর আদায়ের জন্য।
- এই সময় থেকে গুরুপদ বংশানুক্রমিক হয়।
ষষ্ঠ গুরু হরগোবিন্দ (1606-1645 খ্রীষ্টাব্দ)
- 1609 খ্রীষ্টাব্দে হর মন্দিরের সামনে ‘অকাল তখত’ নির্মাণ করেন।
- তিনি লৌহগড় নামে দুর্গ তৈরি করেন।
- শিখদের সম্মিলিত প্রার্থনা চালু করেন।
- 1628 খ্রিস্টাব্দের সংগ্রামের যুদ্ধে মুঘলদের পরাজিত করেন।
সপ্তম গুরু হর রায়(1645-1661 খ্রীষ্টাব্দ )
- শাহজাহানের পুত্রদের মধ্যে বিরোধ দেখা দিলে তিনি দ্বারার পক্ষ নেই এবং এই অপরাধে ওরঙ্গজেব তাকে হত্যা করে।
- তিনি ক্ষুদ্র শিখবাহিনী গঠন করেন।
অষ্টম গুরু হরকিষণ (1661-1664 খ্রীষ্টাব্দ)
নবম গুরু তেগবাহাদর (1664-1675 খ্রীষ্টাব্দ)
- ষষ্ঠ গুরু হরগোবিন্দের পুত্র।
- মোঘল বিরোধী কাশ্মিরী পন্ডিতদের পক্ষ নেওয়ায় ঔরঙ্গজেব তেগবাহাদুরকে মৃত্যুদন্ড দেন।
- এই সময় শিখদের পবিত্র গ্রথ ‘গ্রন্থসাহেব’ সম্পূর্ণ হয়।
দশম গুরু গোবিন্দ(1675-1708 খ্রীষ্টাব্দ)
- ইনি নবম গুরু তেগবাহাদুরের পুত্র।
- তিনি ‘খালসা বাহিনী’ গঠন করেন।
- তিনি শিখদের জন্য ‘পঞ্চক’ প্রবর্তন করেন। পঞক যথা কেশ কনখা(চিরুন) কড়া(বালা) কচ্ছ(অন্তর্বাস) ও কৃপাণ(তরবারী)।
- তিনি সকল পুরুষকে ‘পঞ্চক’ ধারণ করার কথা বলেন।
- এখন থেকে শিখ পুরুষদের ‘সিংহ' এবং শিখ মহিলাদের ‘কাউর’ পদবি নিতে হবে।
- তিনি ঘোষণা করেন এরপর কোন গুরু থাকবে না।
- ‘গ্রন্থসাহেব’ গুরুর সর্বোচ্চ মর্যাদা পাবে।
- “হিয়াকত’ ও ‘মাফরনামা’ তিনি ফার্সিতে লেখেন।
- সরহিন্দের যুদ্ধে মুঘল সেনার হাতে তার সকল পুত্র মারা যায় এবং দুজন পাঠান তাকে হত্যা করে।
- তার উপদেশ কে বলা হয় গুরু মন্ত্র।
শিখ নেতা বন্দা বাহাদুর (1708-1715 খ্রীষ্টাব্দ)
- দশম তথা শেষ গুরু গোবিন্দের মৃত্যুর পর শিখ জাতির নেতৃত্ব দেন বান্দা বাহাদুর তার আসল নাম ছিল লখন্দর।
- তিনি প্রথম জীবনে সন্ন্যাসধর্ম নিয়ে মাধব দাস নাম নেন।
- তিনি শিখদের শক্তিশালী করার জন্য হুকুমনামা চালু করেন।
- 1715 খ্রিস্টাব্দে মুঘলদের সঙ্গে যুদ্ধে মুঘল সেনাপতি আব্দুস সামাদ খানের কাছে বন্দি হলে 1716 খ্রিস্টাব্দে তাকে হত্যা করা হয়।
রণজিৎ সিংহঃ-
- শিখরা 12টি মিশল(দল)-এ ভাগ হয়ে সমগ্র পাঞ্জাব শাসন করেন।
- মিশল কথার অর্থ হল বিজিত অঞ্চল বা দল।
- সুকরচুকিয়া মিশলের অধিপতি মহাসিংহের পুত্র রণজিৎ সিংহ 1780 খ্রিস্টাব্দে জন্মগ্রহণ করেন।
- 1792 খ্রিস্টাব্দে তিনি সুকরচুকিয়া মিশলের অধিপতি হন।
- 1798 খ্রিস্টাব্দে আফগানিস্তানের শাসক জামান শাহ (আহমদ শাহ আবদালী পৌত্র)রণজিৎ সিংহকে ‘রাজা’ উপাধি দেন এবং কাবুলের গভর্নর নিয়োগ করেন।
- 1799 খ্রিস্টাব্দে রণজিৎ সিংহ লাহোর জয় করেন এবং লাহোরের ‘মহারাজা’ উপাধি নেন।
- 1802 খ্রীষ্টাব্দে তিনি অমৃতসর দখল করেন এবং 1805 খ্রীষ্টাব্দে ভাঙ্গি রামগড়িয়া কানহাইয়া আলুওয়ালিয়া প্রভুতি শতদ্রু নদীর পশ্চিমতীরের সকল মিশলগুলি দখল করেন।
- শতদ্রু নদীর পুর্ব তীরের রাজ্যগুলি দখলের তিনবার চেষ্টা করেন এবং শেষ পর্যন্ত 1806 খ্রিস্টাব্দে লুধিয়ানা দখল করেন।
- শতদ্রু নদীর পুর্বতীরের রাজ্যগুলিকে দখল করার চেষ্টা করলে রাজ্যগুলি ইংরেজদের শরনাপন্ন হন।শেষ পর্যন্ত বড়োলাট লর্ড মিন্টো নির্দেশে চার্লস মেটকাফ 1809 খ্রিস্টাব্দে লাহরের দরবারে হাজির হয় এবং স্বাক্ষরিত হয় শিখ ও ইংরেজদের মধ্যে অমৃতসরের সন্ধি।
চুক্তির ফলে শতদ্রুর পুর্বতীরের রাজ্যগুলির উপর নিজের অধিকার ত্যাগ করে, ফলে রণজিৎ সিংহের অখন্ড শিখ সাম্রাজ্য গঠনের পরিকল্পনা বিনষ্ট হয়।
শতদ্রু নদীর পূর্বতীরস্থ মিশলগুলি ইংরেজদের নিয়ন্ত্রণ এসেছিল। তিনিকাংড়া (1809) অ্যাটক(1813) মুলতান(1818) কাশ্মির(1819) পেশোয়ার(1823)দখল করেন।
- রণজিৎ সিংহ 1818 খ্রিস্টাব্দে শাহ সুজার(পারস্যের সম্রাট)কাছ থেকে কোহিনুর মাণি দখল করে নেন।
- 1831 খ্রিস্টাব্দে বেন্টিঙ্কের সঙ্গে রণজিৎ সিংহের ‘চিরস্থায়ী মিত্রতা চুক্তি’ স্বাক্ষরিত হয়
- 1838 খ্রীষ্টাব্দের 26শে জুন রণজিৎ সিংহ, পারস্যের সম্রাট শাহ সুজা ও উইলিয়াম বেন্টিঙ্কের এর মধ্যে ত্রিশক্তি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।
- 1839 খ্রিস্টাব্দে রণজিৎ সিংহের মৃত্যু হয়।
- ফরাসী পর্যটক ভিক্টর জ্যাকুমে রণজিৎ সিংহকে ক্ষুদ্র ‘নেপোলিয়নের ক্ষুদ্র সংস্করণ’ আখ্যা দিয়েছেন।
- রণজিৎ সিংহকে ‘পাঞ্জাব কেশরী’ বলা হয়।
- ‘সব লাল হো জায়েগা’— এই ঐতিহাসিক উক্তিটি করেন রণজিৎ সিংহের।
- রণজিৎ সিংহের পর সিংহাসনে বসেন তার পুত্র খড়গ সিংহ।
- তার পর ভাই নওনেহাল সিং 1840 খ্রীষ্টাব্দে সিংহাসনে বসেন।
- এক বছর পর গৃহযুদ্ধ শুরু হলে শিখদের ঐক্য নষ্ট হয়।
- খালসা বাহিনী প্রধান লাল সিংহ ও তেজ সিংহ রণজিৎ সিংহের নাবালক পুত্র দিলীপ সিংহকে সিংহাসনে বসান এবং অভিভাবক হন রাজমাতা ঝিন্দন।
- 1842-1848 খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত রাজমাতা ঝিন্দন শিখদের অভিভাবক হিসাবে শাসনকার্য পরিচালনা করেন।
চুক্তির ফলে শতদ্রুর পুর্বতীরের রাজ্যগুলির উপর নিজের অধিকার ত্যাগ করে, ফলে রণজিৎ সিংহের অখন্ড শিখ সাম্রাজ্য গঠনের পরিকল্পনা বিনষ্ট হয়।
শতদ্রু নদীর পূর্বতীরস্থ মিশলগুলি ইংরেজদের নিয়ন্ত্রণ এসেছিল। তিনিকাংড়া (1809) অ্যাটক(1813) মুলতান(1818) কাশ্মির(1819) পেশোয়ার(1823)দখল করেন।