প্রশ্নঃ নেপোলিয়নের রুশ অভিযান বিবৃত কর।The invasion of Rassia by Nepolian Bonapat?

3
প্রশ্নঃ নেপোলিয়নের রুশ অভিযান বিবৃত কর।



 নেপোলিয়নের রুশ অভিযান


টিলসিটের সন্ধি দ্বারা ১৮০৭ খ্রিস্টাব্দে ফ্রান্স ও রাশিয়ার মধ্যে মৈত্রীগড়ে ওঠে।মহাদেশীয় ব্যবস্থাকে কেন্দ্র করে শীঘ্রই ফরাসি-রুশ মৈত্রীতে চিড় ধরে। জার প্রথম আলেকজান্ডার (তাকে রাশিয়ায় A crowned Hamlet বলা হত) প্রথমে মহাদেশীয় ব্যবস্থা মেনে নেন কিন্তু ব্রিটিশপণ্যের ওপর নির্ভরশীল রাশিয়া প্রবল চাপের মধ্যে পড়ে, তাই জনগণের চাপে ১৮১০ খ্রিস্টাব্দে তিনি ব্রিটিশপণ্যের জন্য রাশিয়ার বন্দরগুলি খুলে দেন। ক্ষুদ্ধ নেপোলিয়ন ১৮১২ খ্রিস্টাব্দে ৬ লক্ষ সৈন্যের গ্র্যান্ড আর্মি নিয়ে রাশিয়া আক্রমণ করেন।

                 রুশ জার প্রথম আলেক জান্ডার এক নতুন রনকৌশল অবলম্বন করেন। রুশবাহিনী যুদ্ধ না-করে পোড়ামাটি নীতি অনুসরণ করে গ্রাম ও শহরের শস্যভাণ্ডারগুলিতে আগুন লাগিয়ে দেয়, পানীয় জলে বিষ প্রয়োগ করে এবং ক্রমশ পিছু হটতে হটতে ফরাসি বাহিনীকে রাশিয়ার ভিতর ঢুকতে বাধ্য করে। মস্কোর কাছে বোরোডিনো নামক স্থানে দু-পক্ষের যুদ্ধ হয়। যুদ্ধে ফরাসি বাহিনী জয়লাভ করে। জার শান্তির প্রস্তাব পাঠাবেন- এই আশায় নেপোলিয়ন সেখানে পাঁচ সপ্তাহকাল অতিবাহিত করেন। ইতিমধ্যে রাশিয়ায় প্রচণ্ড শীত পড়ে, তুষারপাত শুরু হয়। ফলে খাদ্যের ঘাটতি দেখা দেয়। এরসঙ্গে যুক্ত হয় শীত বস্ত্র এবং বাসস্থানের অভাব এবং টাইফাস  নামক জ্বরের প্রকোপ। পরিস্থিতি বুঝে তিনি সেনাবাহিনীকে দেশে ফিরে যেতে নির্দেশ দেন। কিন্তু ইতিমধ্যেই শীত, জ্বরের প্রকোপ ও অনাহারে অনেক সেনা মারা যায়। বিপর্যস্ত সৈন্য, অপমানের বোঝা ও পরাজয়ের গ্লানি মাথায় নিয়ে নেপোলিয়ন দেশে ফিরে আসেন।
                   এইভাবে রাশিয়া অভিযানে তার ব্যক্তিগত ও সামরিক মর্যাদা ক্ষুন্ন হয়। গ্রান্ড আর্মি ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়। নেপোলিয়নের মস্কো অভিযানের ব্যর্থতা ইউরোপে নতুন উন্মাদনার সৃষ্টি করে। তাঁর বিরুদ্ধে প্রাশিয়া, ইংল্যান্ড, অস্ট্রিয়া এবং রাশিয়া এই চারটি দেশ নিয়ে চতুর্থ শক্তিজোট গঠিত হয়।১৮১৩ খ্রিস্টাব্দে তাদের বিরুদ্ধে লিপজিগের যুদ্ধে বা সম্মিলিত জাতিবর্গের যুদ্ধে নেপোলিয়ন পরাজিত হন। এই যুদ্ধে ইউরোপের ১৩ টি জাতি নেপোলিয়নের বিরুদ্ধে যুদ্ধে অবতীর্ণ হয়।১৮১৪ খ্রিস্টাব্দের ৩১ মার্চ সম্মিলিত জাতিবর্গের সেনাবাহিনী প্যারিস দখল করলে নেপোলিয়নের সাম্রাজ্য ভেঙে পড়ে।এই অবস্থায় নেপোলিয়ান শক্তি জোটের সঙ্গে ফন্টেন ব্লু-র সন্ধি স্বাক্ষর করে ফ্রান্সের সিংহাসন ত্যাগ (৬ এপ্রিল) করতে বাধ্য হন। এরপর ৩ মে এলবা দ্বীপে নির্বাসন দণ্ড দেওয়া হয়। যাওয়ার সময় তিনি বলেছিলেন, “আমি সিংহাসন ত্যাগ করলাম, কিন্তু আমি কিছুই ছেড়ে গেলাম না।”
                     এইভাবে নেপোলিয়ন ইংল্যান্ডকে বিপর্যস্ত করতে গিয়ে নিজেই পরাজিত হন। তাই ঐতিহাসিক লজ বলেছেন যে, মহাদেশীয় অবরোধ ছিল একজন কূটনীতিক হিসেবে নেপোলিয়নের ব্যর্থতার সর্বাপেক্ষা বড়ো প্রমান ইংল্যান্ডকে শায়েস্তা করতে গিয়ে তিনি দেশ ও দেশের বাইরে নিত্যনতুন সংস্থার জালে জড়িয়ে পড়েছিলেন ।নেপোলিয়নের প্রকৃত বিপর্যয় ঘটে রাশি আক্রমণে। রাশিয়া আক্রমণ ছিল তার সাম্রাজ্যবাদের কফিনে পোঁতা শেষ পেরেক।








****যদি আপনাদের পোস্টটি ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই শেয়ার করে অন্যদের পড়ার সু্যোগ করেদিন।****ধন্যবাদ*****

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

3 মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
To Top