ষষ্ঠ শ্রেণী ইতিহাস তৃতীয় অধ্যায়|৫ নম্বরের প্রশ্ন ও উত্তর|ভারতীয় উপমহাদেশের প্রাচীন ইতিহাসের ধারা
প্রিয় বন্ধুরা
ষষ্ঠ শ্রেণী ইতিহাস তৃতীয় অধ্যায়|৫ নম্বরের প্রশ্ন ও উত্তর|ভারতীয় উপমহাদেশের প্রাচীন ইতিহাসের ধারা আজকে আলোচনা করব|তোমরা West Bengal Class 6 History পেয়ে যাবে|ষষ্ঠ শ্রেণীর ইতিহাস প্রশ্ন ও উত্তর|ষষ্ঠ শ্রেণী ইতিহাস তৃতীয় অধ্যায় ৫ নম্বরের প্রশ্ন ও উত্তর|West Bengal Class Six|Class 6 History Question and Answer|Class 6 History 3rd chapter Sugges -tion WBBSE|Class 6 History 3rd chapter Notes WBBSE|Class 6 History 5 marks Question and Answer|ইতহাস প্রশ্নোত্তর|ইতিহাস মক টেস্ট|itihas proshno o uttor| History Mock Test|
এছাড়াও তোমরা পাবে ষষ্ঠ শ্রেণী তৃতীয় অধ্যায় ভারতীয় উপমহাদেশের প্রাচীন ইতিহাসের ধারা থেকে বহুবিকল্প ভিত্তিক সংক্ষিপ্ত অতিসংক্ষিপ্ত এবং রচনাধর্মী প্রশ্ন উত্তর| MCQ, Very Short Question, Short Questions, Descriptive Question and Answer এগুলি তোমরা যারা পশ্চিমবঙ্গের VI History Examination এর জন্য পরিক্ষা দিতে যাচ্ছ অথবা পশ্চিমবঙ্গ ষষ্ঠ শ্রেণীতে পড়াশুনা করছো তাদের ইতিহাস পরীক্ষার জন্য এই ৫ নম্বরের প্রশ্নগুলি খুবই গুরুত্বপূর্ন এবং তোমরা যারা ষষ্ঠ শ্রেণী ইতিহাস (তৃতীয় অধ্যায় ভারতীয় উপমহাদেশের প্রাচীন ইতিহাসের ধারা) ৫ নম্বরের প্রশ্ন এবং উত্তর চাইছো, তারা নীচের দেওয়া প্রশ্নউত্তর গুলি ভালো করে পড়ে নিতে পারবে।
ষষ্ঠ শ্রেণী ইতিহাস তৃতীয় অধ্যায়|৫ নম্বরের প্রশ্ন ও উত্তর|ভারতীয় উপমহাদেশের প্রাচীন ইতিহাসের ধারা
১. আর্যদের আদি বাসস্থান কোথায় ছিল ?
উত্তর :- আর্যদের আদি
বাসস্থান কোথায় ছিল তা নিয়ে দুটি মতের সন্ধান পাওয়া যায়। যথা__
প্রথম মত :- দয়ানন্দ সরস্বতী, পারসিটার, গণনাথ ঝাঁ, প্রমুখ ঐতিহাসিকদের মতে আর্যদের আদি বাসস্থান ছিল ভারতবর্ষ। তাঁরা তাঁদের মতের সমর্থনে কিছু যুক্তি দেখিয়েছেন। যেমন—
যুক্তি :- (ক) বৈদিক সাহিত্যে সপ্তসিন্ধু ছাড়া আর কোনো নদীর নাম উল্লেখ নেই।
(খ) বৈদিক সাহিত্যে যেসব গাছ ও পশুপাখির বিবরণ আছে সেগুলি সব ভারতীয়।
(গ) ঋগবেদের মতো কোনো রচনা ভারতের বাইরে আগে কখনও কোথাও রচিত হয়নি।
দ্বিতীয় মত :- ব্র্যানডেন স্টাইন, গাইলস, ম্যাক্সমুলার প্রমুখ ঐতিহাসিকের মতে, আর্যদের
আদি বাসভূমি ছিল ইউরোপ। তাঁদের যুক্তিগুলি হল—
যুক্তি:- (ক) ইন্দো-ইউরোপীয় ভাষাগোষ্ঠীর সাতটি ভাষার মধ্যে পাঁচটি ইউরোপীয় ভাষা। এর থেকে বোঝা যায় আর্যরা ইউরোপীয়।
(খ) বৈদিক সাহিত্যে সিংহের উল্লেখ থাকলেও বাঘ বা হাতির মতো কোনো ভারতীয় পশুর উল্লেখ নেই।
(গ) ভারত আর্যদের আদিবাসভূমি হলে তারা প্রথমে সমগ্র ভারতে বসতি বিস্তার করত কিন্তু, তা হয়নি। আলোচনা শেষে বলা যায় যে, বেশিরভাগ ঐতিহাসিক মনে করেন আর্যরা ইউরোপ থেকে, বিশেষত কিরঘিজ স্তেপ অঞ্চল থেকে ভারতে এসেছিল।
উত্তর:- বৈদিক জীবনের
একটি উল্লেখযোগ্য স্তর বিভাজন হল- চতুরাশ্রম প্রথা। আর্য সমাজে ব্রাত্মণ, ক্ষত্রিয়
ও বৈশ্যদের জীবনকালকে চারটি সুস্পষ্ট স্তরে ভাগ করে যে-জীবন পদ্ধতি গড়ে উঠেছিল তা
চতুরাশ্রম নামে পরিচিত। এই চতুরাশ্রমের চারটি স্তর হল—
(ক) ব্রহ্মচর্য :- চতুরাশ্রমের এটি ছিল প্রথম আশ্রম। এই স্তরে আবালক গুরুগৃহে থেকে সংযম
ও সদাচারের সঙ্গে বিদ্যা শিক্ষা অর্জন করত।
(খ) গার্হস্থ্য :- চতুরাশ্রমের এটি ছিল দ্বিতীয় আশ্রম। এই স্তরে শিক্ষা শেষ করে আর্য যুবক
ঘরে ফিরে বিবাহ করত এবং সংসার ধর্ম পালন করত।
(গ) বাণপ্রস্থ :- চতুরাশ্রমের এটি ছিল তৃতীয় আশ্রিম। এই স্তরে আর্য প্রৌঢ় সংসার জীবন
শেষ করে নির্জনে ধর্ম চিন্তায় দিন কাটাত।
(ঘ) সন্ন্যাস :- এটি ছিল চতুরাশ্রমের শেয় বা চতুর্থ আশ্রম। এই স্তরে আর্য বৃদ্ধ সংসারের
সমস্ত মায়া ত্যাগ করে লোকালয় থেকে দূরে পরমাত্মার ধ্যানে নিমগ্ন থাকত।
বৈদিক সমাজে এই স্তর
বিভাজিত জীবন পদ্ধতি একটি সুষ্ঠু ও সংযমী জীবনকে নির্দেশ করত। জীবনের শেষ স্তরে আধ্যাত্মিক
বোধ এক অনন্য জীবনবোধের জন্ম দিত।
৩. আদি বৈদিক যুগে আর্যদের সামাজিক জীবন সম্বন্ধে আলোচনা করো।
উত্তর :- প্রাচীন ভারতের
ইতিহাসে আর্যদের সামাজিক জীবন বেশ কৌতুহলোদ্দীপক ছিল। তাঁদের সামাজিক জীবনের বেশ কিছু
বৈশিষ্ট্য আমাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে।
(ক) পিতৃতান্ত্রিক পরিবার :- আদি বৈদিক যুগে আর্য সমাজের ভিত্তি ছিল একান্নবর্তী পরিবার এবং পিতাই ছিলেন পরিবারের সর্বময় কর্তা। তাঁকে ‘গৃহপতি বা ‘কুলুপ’ বলা হত।
(খ) নারীর স্থান :- আদি বৈদিক যুগে নারীর স্থান যথেষ্ট সম্মানের ছিল। ইচ্ছা করলে তারা অনেক
পড়াশোনা করতে পারত। এই যুগের কয়েকজন বিদূষী মহিলা হলেন—অপালা, ঘোষা, লোপামুদ্রা প্রভৃতি।
(গ) বর্ণভেদ ও চতুরাশ্রম প্রথা :- আদি বৈদিক যুগে বৈদিক সমাজ ব্রাত্মণ, ক্ষত্রিয়,
বৈশ্য ও শূদ্র এই চারটি বর্ণে বিভক্ত ছিল। এ ছাড়া আর্যদের জীবনকাল ব্রম্মচর্য, গার্হস্থ্য,
বাণপ্রথ, সন্ন্যাস এই চারটি সুস্পষ্ট স্তরে বিভাজিত ছিল।
(ঘ) খাদ্য :- এই যুগে মানুষেরা ভাত, পিঠে, দুধ, ফলমূল প্রভৃতি খাদ্য হিসেবে গ্রহণ
করত। তা ছাড়া উৎসবের দিনগুলিতে তারা সোমরস পান করত।
(ঙ) পোশাক :- এই যুগের মানুষেরা নিবি, বাস ও অধিবাস নামে তিন ধরনের পোশাক ব্যবহার
করত।
আর্যরা অবসর সময়ে রথ
চালনা, শিকার করা, পাশা খেলা, মল্লযুদ্ধ ইত্যাদির মাধ্যমে সময় কাটাত। স্বাভাবিকভাবে
আর্যদের সামাজিক জীবনে বিভিন্ন স্তর বিভাজন এবং বৈশিষ্ট্য আমাদের কাছে বেশ আকর্ষণীয়
বলে মনে হয়।
৪. ঋকবৈদিক যুগে আর্যদের অর্থনৈতিক জীবন সম্বন্ধে আলোচনা করো।
উত্তর:- বেদ, সংহিতা,
ব্রাক্ষ্মণ, আরণ্যক বা বিভিন্ন সূত্র সাহিত্য থেকে আমরা আর্যদের জীবনের বিভিন্ন দিকগুলি
জানতে পারি। নীচে আর্যদের অর্থনৈতিক জীবন সম্বন্ধে আলোচনা করা হল__
(খ) পেশা :- কৃষি ও পশুপালন ছাড়া আর্যদের অর্থনৈতিক জীবনে বিভিন্ন পেশার যথেষ্ট
গুরুত্বপূর্ণ স্থান ছিল। ঋগবেদে সূত্রধর, চর্মকার, তন্তুবায়, কুম্ভকার ও ধাতু শিল্পীর
উল্লেখ পাওয়া যায়।
(গ) মুদ্রা :- ঋকবৈদিক যুগে যদিও মুদ্রাভিত্তিক অর্থনীতি তেমনভাবে বিকশিত হয়নি, তবুও
সেসময় ‘নিষ্ক’, ‘মনা’ নামে দু-রকমের মুদ্রার প্রচলন ছিল বলে জানা যায়।
(ঘ) ব্যাবসাবাণিজ্য :- ঋগবেদে সমুদ্রপাতের উল্লেখ আছে। বলে জানা যায়।
আর্যরা অভ্যন্তরীণ বাণিজ্যের সঙ্গে সঙ্গে বৈদেশিক বাণিজ্যেও অংশগ্রহণ করত।
উপসংহার:- প্রথমদিকে অর্থাৎ ঋকবৈদিক যুগে আর্যদের অর্থনৈতিক জীবন মূলত কৃষির ওপরই নির্ভরশীল ছিল।
৫. আদি বৈদিক যুগের ধর্মীয় জীবন আলোচনা করো।
উত্তর :-আদি বৈদিক যুগের
আর্যদের ধর্মীয় জীবন বেশ আকর্ষণীয় ছিল। যেমন__
(ক) যাগযজ্ঞ :- ঋকবৈদিক যুগে পুজো বলতে আজকের মতো মূর্তি পুজো বোঝাত না। যজ্ঞই ছিল ধর্মাচরণের একমাত্র পথ। জ্বলন্ত আগুনে ঘি, দুধ, ফল, মধু, মাংস, সোমরস ইত্যাদি এবং মন্ত্র উচ্চারণের সঙ্গে আহুতি দেওয়া হত। (খ) দেবদেবী : প্রথমদিকে দেবদেবী অর্থাৎ আকাশ এবং পৃথ্বী অর্থাৎ পৃথিবী ছিল আর্যদের দেবদেবী। ক্রমে ক্রমে ইন্দ্র, বরুণ, অগ্নি, মরুৎ, সূর্য, সরস্বতী প্রভৃতি দেবদেবীর উল্লেখ পাওয়া যায়। দেবদেবীরা আবার স্বর্গলোক, বিষ্ণুলোক, পার্থিবলোক এই তিন লোকে বিভক্ত ছিল।
৬. পরবর্তী আদি বৈদিক যুগে আর্যদের সামাজিক জীবনে কী কী পরিবর্তন এসেছিল ?
উত্তর :-আদি বৈদিক যুগ
ও পরবর্তী ঋকবৈদিক যুগে আর্যদের সামাজিক জীবনের মধ্যে বেশ কিছু পরিবর্তন আমাদের চোখে
পড়ে। মূলত লোহার ব্যাপক ব্যবহারের ফলে জীবনযাত্রায় বেশকিছু পরিবর্তন সূচিত হয়েছিল।
(খ) নারীর মর্যাদা :- পরবর্তী বৈদিক যুগে পূর্বের তুলনায় নারীর সামাজিক
মর্যাদা কিছুটা ক্ষুন্ন হয়। সম্পত্তির অধিকার থেকে নারীকে বঞ্চিত করা হয়। বাল্যবিবাহ,
বিধবাবিবাহ প্রথা প্রভৃতি কুপ্রথার এসময় উদ্ভব হয়।
(গ) খাদ্য ও পোশক :- পরবর্তী ঋকবৈদিক যুগে খাদ্যাভাসের দিক থেকে যেমন মাংস ভক্ষণের প্রবণতা
বৃদ্ধি পেয়েছিল তেমনি সুতি ও পশমের পোশাকের সঙ্গে রেশম বস্ত্রের চলও এই সময় শুরু
হয়েছিল। এই যুগে আয়না, চিরুনি ও জুতোর ব্যবহারের প্রমাণ পাওয়া গেছে।
উপসংহার :-পূর্বের তুলনায় পরবর্তী বৈদিক যুগে আর্যদের সামাজিক জীবন অনেক জটিল ও আচারসর্বস্ব হয়ে পড়েছিল আর্যদের সামাজিক জীবনের এই জটিলতা জীবনের অন্যান্য ক্ষেত্রকেও প্রভাবিত করেছিল।
উত্তর:- পরবর্তী বৈদিক
যুগে আর্যদের অর্থনীতি ও ধর্মীয় জীবনে মূলত পরিবর্তিত হয়েছিল__
(ক) অর্থনৈতিক জীবন পরিবর্তন :- পরবর্তী বৈদিক যুগে আর্যদের গ্রামীণ অর্থনীতিরও পরিবর্তন ঘটে। এই যুগে জমিতে যেমন ব্যক্তিগত মালিকানা বৃদ্ধি পায় তেমনি কৃষির উন্নতিতে সার ও সেচ ব্যবস্থার প্রচলন শুরু হয়। এযুগে কৃষির পাশাপাশি বাণিজ্যও বিশেষ -ভাবে সম্প্রসারিত হয়েছিল। চিন, মেসোপটেমিয়া প্রভৃতি দেশের সঙ্গে সমুদ্র বাণিজ্যও চলত। তা ছাড়া বাণিজ্যিক স্বার্থ ও নিরাপত্তার জন্য বণিকরা এসময় ‘গিল্ড’ নামে একটি সংগঠন গড়ে তুলেছিল।
(খ) ধর্মীয় জীবনে পরিবর্তন :- পরবর্তী বৈদিক যুগে পুরোহিত ও মূর্তি পুজোর প্রাধান্য
এবং আড়ম্বরতা বৃদ্ধি পায়। পূর্ববর্তী বৈদিক যুগের ইন্দ্র, অগ্নি প্রভৃতি দেবতার স্থানে
ব্ৰত্মা, বিষ্ণু, রুদ্র প্রভৃতি দেবতা বেশি প্রাধান্য পায়। যজ্ঞানুস্থানে ব্রাত্মণকে
প্রচুর জমি দান করতে হত, তা ছাড়া এই সময় ধর্মে অবতার বাদ, তন্ত্রমন্ত্র, জাদু, ইন্দ্রজাল
প্রভৃতি যুক্ত হয়েছিল।
৮. বৈদিক যুগে নারীর স্থান আলোচনা করো।
উত্তর :- বৈদিক যুগ
মূলত দুটি ভাগে বিভক্ত, এই দুই যুগে নারীদের অবস্থান সম্পর্কে নীচে আলোচনা করা হল।
(ক) আদি বৈদিক যুগ:- আদি বৈদিক যুগে পুরুষ -তান্ত্রিক সমাজে কন্যাসন্তান লালনপালনে কোনো ত্রুটি ছিল না। সমাজে নারী-পুরুষ উভয়ের সমান অধিকার ছিল। এই যুগে নারীর মর্যাদা ছিল যথেষ্ট সম্মানজনক। তারা ইচ্ছা অনুসারে উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত হতে পারতেন। এই যুগের কয়েকজন বিদূষী নারীরা হলেন- অপপালা, ঘোষা, মমতা, লোপামুদ্রা প্রভৃতি।
(খ) পরবর্তী বৈদিক যুগ :- পরবর্তী বৈদিক যুগে নারীর মর্যাদা পূর্বের তুলনায়
হ্রাস পায়। তারা সামাজিক ও রাজনৈতিক অধিকার থেকে বিচ্যুত হন। বহুবিবাহ, বাল্যবিবাহ,
পণপ্রথা প্রভৃতি কুপ্রথার উদ্ভব হয়। শারীরশিক্ষার সুযোগ এযুগেও ছিল। এই যুগের দুইজন
বিদূষী নারী হলেন- গার্গী ও মৈত্রেয়ী।
৯. আর্য সভ্যতার সঙ্গে সিন্ধু সভ্যতার তুলনামূলক আলোচনা করো।
উত্তর :- আর্য সভ্যতা
বা বৈদিক সভ্যতা এবং হরপ্পা সভ্যতা ভারতের দুটি প্রাচীন ঐতিহাসিক সভ্যতা। প্রাচীন এই
সভ্যতা দুটির মধ্যে অনেক বৈচিত্র্য ও সাদৃশ্য লক্ষ করা যায়।
(ক) প্রকৃতি :- আর্য সভ্যতা ছিল গ্রামকেন্দ্রিক সভ্যতা। সিন্ধু সভ্যতা ছিল উন্নত নগরকেন্দ্রিক
সভ্যতা।
(খ) সমাজের প্রধান :- সিন্ধু সভ্যতার সমাজ ছিল মাতৃতান্ত্রিক। আর্যসমাজ
ছিল পিতৃতান্ত্রিক।
(গ) জীবিকা :- সিন্ধু সভ্যতার মানুষ ব্যাবসাবাণিজ্যের সাহায্যে জীবন ধারণ করত। আর্য
সভ্যতার মানুষের জীবিকা ছিল কৃষিকাজ।
(ঘ) যুগ :- সিন্ধু সভ্যতা ছিল তা-ব্রোঞ্জ যুগের সভ্যতা। আর্য সভ্যতা ছিল লৌহ যুগের
সভ্যতা।
(ঙ) মৃতদেহ অন্তেষ্টিক্রিয়া :- সিন্ধু সভ্যতায় মৃতদেহ সমাধি দেওয়া হত। আর্যরা
মৃতদেহকে দাহ করতেন।
(চ) ব্যাবসাবাণিজ্যের মাধ্যম :- সিন্ধু সভ্যতার মানুষ বিনিময় প্রথার সাহায্যে
ব্যাবসাবাণিজ্য করত। আর্যরা মুদ্রার সাহায্যে ব্যাবসাবাণিজ্য করত।
(ছ) মানুষের আকৃতি :- সিন্ধু সভ্যতার মানুষেরা ছিলেন খর্বাকৃতি ও কুম্ভকার।
আর্য সভ্যতার মানুষেরা ছিলেন গৌরবর্ণ দীর্ঘকায়।
(জ) বাড়িঘর :- সিন্ধু সভ্যতার বাড়িগুলি ছিল পোড়া ইটের তৈরি একতলা থেকে তিনতলা পর্যন্ত
বিস্তৃত। আর্য সভ্যতার বাড়িঘরগুলি ছিল মাটির তৈরি।
(ঝ) বর্ণভেদ প্রথা :- সিন্ধু সভ্যতায় বর্ণভেদ প্রথা ছিল না। আর্যসমাজে
বর্ণভেদ প্রথা ছিল।
(ঞ) মূর্তিপুজো :- সিন্ধু সভ্যতার মানুষ মূর্তিপুজো করত। আর্য সভ্যতার মানুষ মূর্তি পুজো
করত না।
(ট) ঘোড়ার ব্যবহার :- সিন্ধু সভ্যতার মানুষেরা ঘোড়ার ব্যবহার জানত না।
আর্য সভ্যতার মানুষেরা ঘোড়ার ব্যবহার জানত।
(ঠ) লোহার ব্যবহার :- সিন্ধু সভ্যতার মানুষ লোহার ব্যবহার জানত না। আর্যরা
লোহার ব্যবহার জানত।
(ড) দুর্গের অস্তিত্ব :- সিন্ধু সভ্যতায় দুর্গের অস্তিত্ব ছিল। আর্য সভ্যতায়
কোনো দুর্গের সন্ধান পাওয়া যায়নি।
(ট) সমুদ্র বাণিজ্য :- সিন্ধু সভ্যতার মানুষেরা ছিল সমুদ্র বাণিজ্যে দক্ষ।
আর্যরা সমুদ্র বাণিজ্যে পারদর্শী ছিল না।
১০. প্রাচীন ভারতের ব্যাবসা বাণিজ্য সম্বন্ধে আলোচনা করো।
উত্তর:- প্রাচীনকালে
ভারতীয়রা ব্যাবসাবাণিজ্যে যথেষ্ট তৎপর ছিল। সিন্ধু সভ্যতায় এবং আর্য সভ্যতায় ভারতীয়রা
কৃষির পাশাপাশি ব্যাবসাবাণিজ্য ও শিল্পকে যথেষ্ট গুরুত্ব দিত।
(ক) সিন্ধু সভ্যতার ব্যাবসাবাণিজ্য :- সিন্ধু সভ্যতায় বস্ত্র শিল্পের পাশাপাশি মৃৎশিল্প, রঞ্জনশিল্প, কারুশিল্প প্রভৃতিতে উন্নত ছিল। এই সমস্ত শিল্পকার্য দেশে এবং বিদেশে যথেষ্ট সমাদৃত হত। হরপ্পা, মহেনজো-দারো, চানহুদাড়ো, লোথাল প্রভৃতি শহরগুলিকে কেন্দ্র করে তখন ব্যাবসাবাণিজ্যের প্রসার ঘটেছিল। মূল্যবান পাথর, শঙ্খ, সোনা তখনকার দিনে দক্ষিণ ভারত থেকে আমদানি করা হত। ইরান, সুমার প্রভৃতি দেশের সঙ্গে সিন্ধু সভ্যতার বাণিজ্যিক সম্পর্ক ছিল।
(খ) বৈদিক যুগে বাণিজ্য :- ঋগবেদ থেকে জানা যায় যেবৈদিক যুগের শুরুতে ‘পাণি’-রা এবং পরে বৈশ্যরা ব্যাবসাবাণিজ্যকে জীবিকা হিসেবে
বেছে নেয়। জলপথে সিধুর পাঁচটি শাখানদীর দ্বারা ব্যাবসাবাণিজ্য চলত। আর্যরা মেসোপটেমিয়াসহ
পশ্চিম এশিয়ার দেশগুলির সঙ্গে ব্যাবসা করত। তবে আর্যরা সমুদ্র বাণিজ্যে পারদর্শী ছিল
না। পরবর্তী ঋকবৈদিক যুগে বাণিজ্যের উন্নতির ফলে কৌশান্তি, কৌশল, বৈশালী প্রভৃতি বহু
নগর, এবং শ্রেষ্ঠী নামে এক শ্রেণির ধনবান গোষ্ঠীর জন্ম হয়। সবমিলিয়ে প্রাচীনভারতে
ব্যাবসাবাণিজ্যের যথেষ্ট উন্নতি হয়েছিল।
File Details |
|
File Name/Book Name | ষষ্ঠ শ্রেণী ইতিহাস তৃতীয় অধ্যায় ৫ নম্বরের প্রশ্ন ও উত্তরy |
File Format | PDF |
File Language | Bengali |
File Size | 84.7 KB |
File Location | GOOGLE DRIVE |
Download Link |