সপ্তম শ্রেনী ইতিহাস| ষষ্ঠ অধ্যায়|৩ নম্বরের প্রশ্ন ও উত্তর| জীবনযাত্রা ও সংস্কৃতি সুলতানি ও মুঘল যুগ

0

সপ্তম শ্রেনী ইতিহাস| ষষ্ঠ অধ্যায়|৩ নম্বরের প্রশ্ন ও উত্তর| জীবনযাত্রা ও সংস্কৃতি সুলতানি ও মুঘল যুগ


সপ্তম শ্রেনী ষষ্ঠ অধ্যায় ৩ নম্বরের প্রশ্ন ও উত্তর



প্রিয় বন্ধুরা 

সপ্তম শ্রেনী ইতিহাস| ষষ্ঠ অধ্যায়|৩ নম্বরের প্রশ্ন ও উত্তর| জীবনযাত্রা ও সংস্কৃতি সুলতানি ও মুঘল যুগ আজকে আলোচনা করব | তোমরা West Bengal Class 7 History পেয়ে যাবে|সপ্তম শ্রেণীর ইতিহাস প্রশ্ন ও উত্তর|Class 7 History 6th chapter Suggestion WBBSE|ইতহাস প্রশ্নোত্তর| West Bengal Class Seven|Class 7 History Question and Answer |itihas proshno uttor|Class 7 History 6th chapter Notes WBBSE|ইতিহাস মক টেস্ট|History Mock Test 


এছাড়াও তোমরা পাবে সপ্তম শ্রেণী ষষ্ঠ অধ্যায় জীবনযাত্রা ও সংস্কৃতি সুলতানি ও মুঘল যুগ থেকে বহুবিকল্প ভিত্তিক সংক্ষিপ্ত অতিসংক্ষিপ্ত এবং রচনাধর্মী প্রশ্ন উত্তর|MCQ Very Short Question Short Questions Descriptive Question and Answer এগুলি তোমরা যারা পশ্চিমবঙ্গের VII History Examination এর জন্য পরিক্ষা দিতে যাচ্ছ অথবা পশ্চিমবঙ্গ সপ্তম শ্রেণীতে পড়াশুনা করছো তাদের ইতিহাস পরীক্ষার জন্য এই ৩ নম্বরের প্রশ্নগুলি খুবই গুরুত্বপূর্ন এবং তোমরা যারা সপ্তম শ্রেণী ইতিহাস (জীবনযাত্রা ও সংস্কৃতি সুলতানি ও মুঘল যুগ) ৩ নম্বরের প্রশ্ন এবং উত্তর চাইছো, তারা নীচের দেওয়া প্রশ্নউত্তর গুলি ভালো করে পড়ে নিতে পারবে।


সপ্তম শ্রেনী ইতিহাস| ষষ্ঠ অধ্যায়|৩ নম্বরের প্রশ্ন ও উত্তর| জীবনযাত্রা ও সংস্কৃতি সুলতানি ও মুঘল যুগ


1. মধ্যযুগের ভারতে কৃষি ও কারিগরি শিল্পের অবস্থা কেমন ছিল ?

উঃ- i. মধ্যযুগে ভারতের কৃষি : মধ্যযুগে এযুগের শাসকেরা কৃষকের ফসলের একটি মোটা অংশ কর হিসেবে আদায় করতেন। এসময় গাঙ্গেয় সমভূমিতে যেসব শস্য উৎপাদিত হত সেগুলির মধ্যে আম, খেজুর, জাম, কলা, কাঁঠাল, নারকেল প্রভৃতি ছিল বিশেষ উল্লেখযোগ্য। এছাড়া ভারতে নানা ধরনের ফুল, চন্দনকাঠ, ঘৃতকুমারী, নানা ভেষজ উদ্ভিদ এবং লংকা, আদা ও অন্যান্যমশলাও উৎপাদিত হত। এ ছাড়া গৃহপালিত পশুপাখিও বিশেষ উল্লেখযোগ্য ছিল।

ii.মধ্যযুগে ভারতের কারিগরি শিল্প: মধ্যযুগে কৃষিপণ্যকে ভিত্তি করেই বিভিন্ন গ্রামে কারিগরি শিল্প চলত। যেগুলির মধ্যে চিনি ও সুগন্ধি এবং আতর তৈরির শিল্প ছিল বিশেষ উল্লেখযোগ্য। 


2. নানক সম্পর্কে কী জানো ? তিনি কী প্রচার করেন ?

উঃ- নানক ছিলেন মধ্যযুগের শ্রেষ্ঠ ধর্মপ্রচারক। তিনি ছিলেন শিখধর্মের প্রথম গুরু। তিনি ১৪৬৯ খ্রিস্টাব্দে লাহোরের তালবন্দি গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর বাবা ছিলেন এক ব্যবসায়ী। বাল্যকালেই ধর্মের প্রতি নানকের গভীর অনুরাগ জন্মায়। বিবাহ করার পর তিনি ধর্মপ্রচারের উদ্দেশ্যে ভারতের নানা স্থান ভ্রমণ করেন। সত্যের সন্ধানে তিনি মক্কাতেও যান। গ্রন্থসাহিব

i. প্রচারিত মতবাদ : হিন্দু ও মুসলমান ধর্মের যা কিছু ভালো তার ওপর ভিত্তি করে তিনি তাঁর ধর্মমত প্রচার করেন।

ii.  নানক জাতিভেদপ্রথা ও মূর্তিপুজো বিশ্বাস করতেন।

iii. তিনি একেশ্বরবাদে বিশ্বাসী ছিলেন।

iv. হিন্দুধর্মের বাহ্যিক আচার-অনুষ্ঠানের প্রতি তাঁর কোনো আস্থা ছিল না।

v. তাঁর ধর্মমত তিনটি বিষয়কেন্দ্রিক ছিল, যথানাম বা ভগবানের নামকীর্তন, দান বা জীবসেবা এবং স্নান বা দৈহিক পরিচ্ছন্নতা। তাঁর মতে, ধর্মপথে গেলে গুরুর সাহায্য দরকার। তাঁর পবিত্র বাণী সংকলিত হয়েছে গ্রন্থসাহিব নামক গ্রন্থে। অগণিত হিন্দু ও মুসলমান সম্প্রদায়ের মানুষ তাঁর শিষ্যত্ব গ্রহণ করে।


3. সুলতানি যুগে দিল্লিকেন্দ্রিক প্রধান স্থাপত্যশিল্পের নমুনা দাও।

উঃ- সুলতানি যুগে দিল্লি ও তার আশেপাশে অনেক স্থাপত্য, যেমনমসজিদ, মিনার, প্রাসাদ, দুর্গ ইত্যাদি নির্মিত হয়। এগুলি নির্মিত হয় হিন্দু মুসলিম শিল্পরীতির সংমিশ্রণে। এযুগে নির্মিত প্রধান প্রধান স্থাপত্যগুলি হলআড়াই দিন কা ঝোপড়া তরাইনের দ্বিতীয় যুদ্ধ জয়ের পর কুতুবউদ্দিন আইবক সর্বপ্রথম কুয়াত-উল-ইসলাম নামে একটি মসজিদে নির্মাণ করেন। গঠনশৈলীর দিক থেকে এটি ছিল একটি হিন্দু স্থাপত্যের নিদর্শন। 

তিনি কুতুবমিনারের নির্মাণ কাজ শুরু করেন। সুলতান এই মিনারটির নামকরণ করেন সুফি সাধক কুতুবউদ্দিন কাকির নামে। যদিও ইলতুৎমিশ কুতুবমিনারের কাজ সম্পূর্ণ করেন। এ ছাড়া তিনি আজমিরে আড়াই-দিনকা-ঝোপড়া নামে একটি মসজিদ নির্মাণ করেন।

আলাউদ্দিন খলজি ৭টি দুর্গ, বহু প্রাসাদ ও মসজিদ নির্মাণ করেন। এগুলির মধ্যে উল্লেখ্য কুতুবমিনারের আলাই দরওয়াজা, সিরি নগরী, হজ-ই-খাস নামক একটি সরোবর এবং হাজার-ই-সিতুন নামক প্রাসাদ। তুঘলক আমলে স্থাপিত হয় তুঘলকবাদ নগরী, মোহম্মদ-বিন-তুঘলকের আদিলবাদ দুর্গ, ফিরােজ তুঘলকের ফিরোজবাদ দুর্গ প্রভৃতি


4. শাহজাহানের সৌন্দর্যপ্রিয়তার পরিচয় দাও। অথবা, তার আমলের স্থাপত্য-ভাস্কর্য শিল্পের পরিচয় দাও।

উঃ- স্থাপত্য-ভাস্কর্যের ক্ষেত্রে মোগল সম্রাট শাহজাহানের রাজত্বকাল ছিল চরম উৎকর্ষতার পরিচায়ক।

 শাহজাহানের সৌন্দর্যপ্রিয়তা

i. বিভিন্ন স্থাপত্য নির্মাণ: শাহজাহানের রাজত্বকাল ছিল স্থাপত্যশিল্পের আকর। তাঁর আমলে সৃষ্ট স্থাপত্যকর্মগুলির তালিকায় ছিল লালকেল্লা, মোতি মসজিদ, খাসমহল, শিশমহল, জামা মসজিদ, দেওয়ান-ই-খাস, দেওয়ান-ই-আম, তাজমহল ইত্যাদি।

ii. তাজমহল: পত্নী মমতাজের স্মৃতির উদ্দেশ্যে তিনি সৃষ্টি করেন তাজমহল নামক স্মৃতিসৌধটি। শ্বেতপাথরে তৈরি এই মর্মর সৌধটি আজও বিশ্ববাসীকে বিমুগ্ধ করে। তাই পণ্ডিতগণ একে শ্বেতপাথরের স্বপ্ন বলে অভিহিত করেন। এর রূপকার ছিলেন পারস্যের শিল্পী ইশা খাঁ।ভারতীয় স্থাপত্যশিল্পের শ্রেষ্ঠ নিদর্শন হল তাজমহল

iii. ময়ূর সিংহাসন: তাঁর স্থাপত্য-ভাস্কর্য কর্মের অনবদ্য নমুনা হল ময়ূর সিংহাসন। মণি, মুক্তা, হিরে, জহরত

খচিত এই সিংহাসনটি সেযুগে ব্যয় হয় প্রায় এক কোটি টাকা এবং তৈরি করতে সময় লেগেছিল প্রায় সাতবছর। এটি তৈরি করেন পারস্যের শিল্পী বেবাদল খা ।

iv. কুতুবমিনার: কুতুবমিনারের নাম রাখা হয়ে সুফি সাধক কুতুবউদ্দিন কাকির নামে। যদিও এই মিনারটির কাজ শুরু করেছিলেন কুতুবউদ্দিন আইবক। কিন্তু এর কাজ সম্পূর্ণ করেন ইলতুতমিস। 

v.কোহিনুর মণি: শাহজাহানের সৌন্দর্যবোধ শিল্পবো -ধের অপর একটি পরিচয় হল তাঁর কোহিনুর মণি। এই বহু মূল্যবান ও দুষ্প্রাপ্য হিরেটি সম্রাটের মুকুটে শোভা পেত।


5. সুলতানি যুগের আঞ্চলিক স্থাপত্যগুলির পরিচয় দাও'।

উঃ- সুলতানি যুগে আঞ্চলিকভাবে অনেকগুলি স্থাপত্য সৃষ্টি হয়। সেগুলি হল

i.আতাল মসজিদ: জৌনপুরে গড়ে ওঠে আতাল মসজিদ। এতে হিন্দু থাপত্যরীতির বৈশিষ্ট্য লক্ষ করা যায়।

ii. বাংলাদেশে স্থাপত্য: এযুগে বাংলাদেশে অনেকগুলি স্থাপত্যকর্ম সৃষ্টি হয়, যেমনসিকিন্দার শাহ নির্মিত পাণ্ডুয়ার আদিনা মসজিদ। বডো সোনা মসজিদ, কদম রসুল মসজিদ,ছোটো সোনা মসজিদ ইত্যাদি। তবে এখানকার স্থাপত্যগুলিতে পাথরের বদলে ইট ব্যবহৃত হত।

iii.গুজরাটের মসজিদ:গুজরাটের অন্যতম মসজিদটি

হল জাম-ই-মসজিদ। এতে হিন্দু থাপত্যরীতির প্রাধান্য চোখে পড়ে।

iv. দাক্ষিণাত্যের স্থাপত্য: দাক্ষিণাত্যের উল্লেখযোগ্য স্থাপত্যগুলি হলবাহমনি রাজ্যের জাম-ই-মসজিদ, দৌলতাবাদের চাঁদ মসজিদ, বিজাপুরের আদিল শাহের স্মৃতিসৌধ ইত্যাদি।


6.জোড়-বাংলা ও ‘রত্ন মন্দির কী? বাংলার স্থাপত্য শিল্পের উল্লেখযোগ্য নিদর্শনগুলি কী ?

উঃ- খ্রিস্টীয় ত্রয়োদশ শতক নাগাদ বাংলাদেশে মুসলমান শাসন প্রতিষ্ঠিত হয়। এসময় বাংলায় ইসলামি রীতি অনুযায়ী স্থাপত্য নির্মাণ করা হত। তবে বাইরের কারুকার্য ও কাঁচামাল ব্যবহারের ক্ষেত্রে অবশ্য বাংলার লৌকিক রীতিরই স্পষ্ট ছাপ পাওয়া যায়।

i. জোড়বাংলা: বাংলার মন্দির ও বাড়িগুলি ঢালু ধাঁচে তৈরি করা হত। এই রীতিকে বলা হত ‘বাংলা। আর পাশাপাশি দুটি কাঠামো জুড়ে দিয়ে তাকে বলা হত ‘জোড়-বাংলা।

ii.রত্ন: সাধারণভাবে বাংলায় আয়তক্ষেত্রাকার কাঠামোর ওপর একাধিক চূড়াযুক্ত মন্দির এসময় নির্মাণ করা হত। এই ধরনের মন্দিরকে বলা হত “রত্ন। একটি চূড়াযুক্ত মন্দিরকে বলা হত একরত্ন আর পাঁচটি চূড়াযুক্ত মন্দিরকে বলা হত ‘পরত্ন মন্দির। এই ধরনের মন্দিরের গায়ে পোড়ামাটির কাজ করা হত। এই মন্দিরগুলির নিদর্শন পাওয়া যায় পশ্চিমবঙ্গের বাঁকুড়া জেলাসহ অন্যান্য স্থানে।


7. সুলতানি ও মোগল আমলের ভারতীয় নৃত্য সম্পর্কে কী জানো সংক্ষেপে লেখো।

উঃ- সুলতানি ও মোগল আমলে ভারতে ধ্রুপদি নৃত্যের ছ-টি ধারা ছিল। যথাভারতনাট্যম, কথাকলি, ওডিশি, কুচিপুডি, কথক এবং মণিপুরী। আঠারো শতকে ভক্তিধর্মের প্রবল প্রভাব পড়ে মণিপুরী নৃত্যে। এই নৃত্যে ঐতিহ্যবাহী আদি নৃত্যধারার সঙ্গে ভক্তিরসের মিলন দেখা যায়। সৃষ্টি হয় সংকীর্তন ও রাসলীলা। রাধাকৃয়ের লীলাই ছিল এর প্রধান বিষয়বস্তু। মণিপুরের মহারাজা ভাগ্যচন্দ্রই মণিপুরী রাসলীলার ধারাগুলির অন্যতম পৃষ্ঠপোষক ছিলেন।


8. মোগল যুগের স্থাপত্য শিল্পের বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করো।

উঃ- মোগল যুগের স্থাপত্য শিল্পের প্রধান বৈশিষ্ট্য গুলি হল

i. সুলতানি যুগের মতো মোগল যুগেও ইন্দোইসলামীয় স্থাপত্য রীতি অনুসৃত হয়।

ii. তবে সম্রাট আকবরের পর ভারতীয় স্থাপত্যশৈলীতে পারসিক প্রভাব ক্রমশ বিলুপ্ত হয় এবং হিন্দু শিল্পের উপাদান ও প্রভাব বৃদ্ধি পায়।

iii. সম্রাট আকবরের সময় স্থাপত্যশিল্পে লাল পাথরের ব্যবহার বৃদ্ধি পায়, কিন্তু শাহজাহানের আমলে শ্বেত পাথরের ব্যবহার বেশি হয়।

iv. আকবরের আমলে ধর্মনিরপেক্ষ বা কোনো কোনো ক্ষেত্রে হিন্দু ও বৌদ্ধ স্থাপত্য রীতি অনুসৃত হয়।


9. মঙ্গলকাব্য বলতে কী বোঝো ?

উঃ- বাংলা সাহিত্যের অন্যতম প্রধান ধারা হল মঙ্গলকাব্য। ও মঙ্গল কাব্য: বাংলাদেশে চণ্ডী, মনসা, ধর্মঠাকুর

প্রভৃতি নানা দেবদেবীর পুজোর সময় তাদের মহিমা গান করে শোনানো হত। সেই গানগুলির মধ্যেও থাকত একটি কাহিনি। এই কাহিনি বা গল্পগুলিকে নিয়ে সেকালে বেশ কিছু সাহিত্য রচিত হয়েছিল। যেগুলিকে বলা হয় মঙ্গলকাব্য। মঙ্গল কথার অর্থ ভালো। মঙ্গলকাব্যের মাধ্যমে দেবদেবীর পুজো করলে মঙ্গল হবে এ কথাই বলা হয়েছে। বিভিন্ন মঙ্গল কাব্য: যেমন চণ্ডীদেবীকে নিয়ে লেখা হয়েছিল চণ্ডীমঙ্গল। মনসাদেবীকে নিয়ে লেখা হয়েছিল মনসামঙ্গল। ধর্মঠাকুরকে নিয়ে লেখা হয়েছিল ধর্মমঙ্গল ইত্যাদি। অনেক কবিই এধরনের মঙ্গলকাব্য লিখেছিলেন।


 

File Details

 

File Name/Book Name

সপ্তম শ্রেনী ষষ্ঠ অধ্যায় ৩ নম্বরের প্রশ্ন ও উত্তর

File Format

PDF

File Language

Bengali

File Size

131.5 KB

File Location

GOOGLE DRIVE

Download Link

Click Here to Download PDF File


Join Telegram... Members


একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)
To Top