সপ্তম শ্রেনী ইতিহাস|পঞ্চম অধ্যায়|৩ নম্বরের প্রশ্ন ও উত্তর|নাগর বণিক বাণিজ্য
প্রিয় বন্ধুরা
সপ্তম শ্রেনী ইতিহাস|পঞ্চম অধ্যায়|৩ নম্বরের প্রশ্ন ও উত্তর |নাগর বণিক বাণিজ্য আজকে আলোচনা করব|তোমরা West Bengal Class 7 History পেয়ে যাবে| সপ্তম শ্রেণীর ইতিহাস প্রশ্ন ও উত্তর|Class 7 History 5th chapter Suggestion WBBSE|ইতহাস প্রশ্নোত্তর| West Bengal Class Seven|Class 7 History Question and Answer|itihas proshno uttor|Class 7 History 5th chapter Notes WBBSE| ইতিহাস মক টেস্ট| History Mock Test
এছাড়াও তোমরা পাবে সপ্তম শ্রেণী পঞ্চম অধ্যায় নাগর বণিক বাণিজ্য থেকে বহুবিকল্প ভিত্তিক সংক্ষিপ্ত অতিসংক্ষিপ্ত এবং রচনাধর্মী প্রশ্ন উত্তর| MCQ Very Short Question Short Questions Descriptive Question and Answer এগুলি তোমরা যারা পশ্চিমবঙ্গের VII History Examination এর জন্য পরিক্ষা দিতে যাচ্ছ অথবা পশ্চিমবঙ্গ সপ্তম শ্রেণীতে পড়াশুনা করছো তাদের ইতিহাস পরীক্ষার জন্য এই ৩ নম্বরের প্রশ্নগুলি খুবই গুরুত্বপূর্ন এবং তোমরা যারা সপ্তম শ্রেণী ইতিহাস (নাগর বণিক বাণিজ্য) ৩ নম্বরের প্রশ্ন এবং উত্তর চাইছো, তারা নীচের দেওয়া প্রশ্নউত্তর গুলি ভালো করে পড়ে নিতে পারবে।
সপ্তম শ্রেনী ইতিহাস|পঞ্চম অধ্যায়|৩ নম্বরের প্রশ্ন ও উত্তর |নাগর বণিক বাণিজ্য
1. সুলতানি আমলে শহরের জনবসতি কেমন ছিল?
উঃ- সুলতানি আমলে দিল্লি শহরের জনবসতি ছিল মিশ্র প্রকৃতির। এখানে কোনাো ধর্ম বা জাতপাতের ভিত্তিতে এই বসতি গড়ে ওঠেনি। সাধারণত একই পেশার কারিগররা জাতিধর্মবর্ণনির্বিশেষে এক মহল্লায় থাকতেন।
শহরের আশেপাশে গড়ে উঠেছিল ছাোটো শহরের মতাো জনবসতি। এগুলিকে বলা হত কসবা বা শহরতলি। অনেকে এগুলিকে হাোটো শহরও বলতেন। শহরগুলি পাঁচিল দিয়ে সুরক্ষিত থাকলেও শহরতলিতে তেমন পাঁচিলের ব্যবহার ছিল না। গ্রাম ও শহরতলির মধ্যে কোনাো নির্দিষ্ট সীমানা ছিল না। সুলতানরা নানাভাবে শহরে জল ত্রাহের ব্যবস্থা করতেন। তবে গত জনসংখ্যা বৃদ্ধির ফলে শহরগুলিতে জলাভাব দেখা দেয়।
2. সুলতানি ও মাোগল আমলের মুদ্রা ব্যবস্থা কেমন ছিল?
উঃ- সুলতানি ও মাোগল আমলের মুদ্রা ব্যবস্থা ছিল নিম্নরূপ
i. সুলতানি আমলের মুদ্রা : সুলতানি আমলে সাোনা, রুপাো ও তামার মুদ্রার প্রচলন ছিল। সাোনার মুদ্রা ‘মাোহর', রুপাোর মুদ্রা তকা ও তামার ত্রাকে বলা হত ‘জিতল। সুলতানি আমলের শেষদিকে উত্তর ভারতে এক ধরনের তামা ও রুপাো মেশানাো মুদ্রার প্রচলন ছিল। এই ধরনের মুদ্রা পরবর্তীকালে মাোগলরাও অনুকরণ করেছিল।
ii. মাোগল আমলের মুদ্রা: মাোগল আমলে সোনারত্রকে বলা হত ‘মাোহর’ বা ‘আশরফি। তৰে মাোগলযুগে বহুল প্রচলিত মুদ্রা হল রুপাোর মুদ্রা, যাকে বলা হত রুপায়া”। এই মুদ্রা একদিকে বাণিজ্যিক বিনিময়ের মাধ্যম হিসেবে ও অন্যদিকে কর প্রদানে ব্যবহৃত হত। এ ছাড়া এই যুগে ‘দাম’ নামে পরিচিত তামার মুদ্রারও প্রচলন লক্ষ করা যায়।
3. সুলতানি আমলের ভারতীয় যাোগাযাোগ ব্যবস্থার সংক্ষিপ্ত পরিচয় দাও।
উঃ- সুলতানি আমলে উত্তর ভারতে গঙ্গা ও যমুনা নদী ছিল যাোগাযাোগ মাধ্যমের প্রধান জলপথ। নদীগুলির মাধ্যমে আগ্রা, এলাহাবাদ, বারাণসী, পাটনা, রাজমহল, হুগলি, ঢাকা প্রভৃতি শহরে যাতায়াত করা যেত। উত্তর ভারত থেকে গুজরাটে যাতায়াত করা যেত দুটি সড়ক পথ দিয়ে।
এই পথের একটি রাজপুতানার আজমির হয়ে এবং অন্যটি মধ্যভারতের বুরহানপুর হয়ে প্রসারিত ছিল।পূর্ব ও পশ্চিম ভারতে যাোগাযাোগের জন্যও কতকগুলি গুরুত্বপূর্ণ সড়কপথ ছিল। গুজরাটের সুরাট থেকে ঔরঙ্গাবাদ গাোলকোণ্ডা হয়ে বঙ্গোপসাগরের তীরে মসুলিপটনম পর্যন্ত একটি সড়কপথ ছিল।
4. সুলতানি আমলে দিল্লির গুরুত্ব কতখানি ছিল ?
উঃ- কুতুবউদ্দিন আইবকের আমলে দিল্লি শহরটি তৈরি হয়েছিল কিলা রাই পিথোরাকে কেন্দ্র করে। এই শহরটিকে বলা হত কুতুব দিল্লি। গিয়াসউদ্দিন বলবন গিয়াসপুরে একটি নতুন শহর তৈরি করেন। কায়কোবাদ যমুনা নদীর তীরে কিলোঘড়ি প্রাসাদ তৈরি করেন। জালালউদ্দিন খলজির আমলে একে ঘিরেই নতুন শহর শহর-ই-নও তৈরি হয়েছিল। উচ্চশ্রেণির লোকেরা এই শহরকে কেন্দ্র করে তাদের কর্মকাণ্ড চালু করেন।
সুলতান আলাউদ্দিন খলজি সিরিতে কেল্লা বানান। তাঁর উদ্দেশ্য ছিল মোগোল আক্রমণের হাত থেকে নগরকে রক্ষা করা। গিয়াসউদ্দিন তুঘলক তুঘলকাবাদ’ নামে একটি শহর তোর করেন। মহম্মদ বিন-তুঘলক পুরোনো দিল্লি, সিরি এবং তাঁর নিজের তৈরি জাহানপনাহকে প্রাচীর দিয়ে ঘেরার চেষ্টা করেন। কিন্তু তা সমাপ্ত হয়নি। এতগুলি নতুন শহর গড়ে উঠলেও দিল্পি তার পুরোনো অবস্থানেই ছিল। দিল্লির গুরুত্ব কখনও কমেনি।
5. মধ্যযুগে জলসংরক্ষণ ও জলসরবরাহ ব্যবস্থা সম্পর্কে লেখো।
উঃ- দিল্লি শহরের প্রধান সমস্যা হল জলের অভাব। তাই জলাধার নির্মাণ এবং খাল খননের মাধ্যমে দিল্লির সুলতানেরা দিল্লি শহরে দৈনন্দিন জীবনে জলসরবরাহ ব্যবস্থার উন্নতি ঘটানাোর চেষ্টা করেন। জনসাধারণের জন্যই এই ব্যবস্থার উদ্যোগ নিতেন শাসকরা। এই জলাধারকে বলা হত ‘হৌজ’ বা ‘তালাও। যেমন- সুলতান ইলতুৎমিশ, নির্মাণ করেছিলেন ‘হৌজ-ই-শামসি’। আলাউদ্দিন খলজির চারকোনা জলাধারকে বলা হত ‘হৌজ-ই-আলাই।
এই জলাধারগুলি শুধুমাত্র মানুষের দৈনন্দিন জীবনে জলের চাহিদাই মেটাত না, পাশাপাশি কৃষিকাজের জন্য জমিতে জলের প্রয়োজনীয় চাহিদা মেটানো হত। সুলতানের বিরাোধীরা শহরের অধিবাসীদের বিপদে ফেলার জন্য খালগুলির ওপর বাঁধ নির্মাণ করে জল আটকে দিত। পরবর্তীকালে ফিরোজ তুঘলক বিরোধী শক্তির দেওয়া বাঁধগুলিকে ভেঙে দিয়ে জল সরবরাহ স্বাভাবিক করেছিলেন।
6.মোগল সম্রাট শাহজাহানের তৈরি শাহজাহা -নাবাদ নগরের বৈশিষ্ট্যগুলি লেখো।
উঃ- মোগল সম্রাট শাহজাহান শাহজাহানাবাদ যে শহরটি তৈরি করেন তার বৈশিষ্ট্য হল—
i.শাহজাহানাবাদ’ শহরের স্থাপত্যরীতিতে পারসিক ছাপ স্পষ্ট লক্ষ করা যায়। শহরের চারপাশ প্রাচীর দিয়ে ঘেরা ছিল।
ii. প্রাচীরের গায়ে ছোটো-বডো দরজা ছিল।
iii. বিভিন্ন শ্রেণির মানুষের জন্য নানা ধরনের বাড়ি ছিল মাোগল যুগে ভারতে বস্ত্রশিল্পের কীরূপ উন্নতি হয়েছিল
7. টীকা লেখো : মোগল যুগের বহির্বাণিজ্য।
উঃ- মোগল যুগে ইউরোপ ও এশিয়ার বিভিন্ন দেশের সঙ্গে ভারতের বাণিজ্যিক লেনদেন চলত। সিংহল, ব্ৰহ্বদেশ, চিন, জাপান, নেপাল, পারস্য প্রভৃতি দেশগুলির সঙ্গে ভারতের বাণিজ্যিক সম্পর্ক গড়ে ওঠে। পোর্তুগিজ, ওলন্দাজ ও ইংরেজ বণিকগণ ভারতে বাণিজ্য করতে আসে
i. রপ্তানি পণ্য : সে সময় ভারত থেকে বিদেশে নীল, আফিম, সুতিবস্ত্র, মসলিন বস্ত্র, চিনি, সাোরা ও ধনসম্পত্তি রপ্তানি করা হত।
ii. আমদানি পণ্য আমদানিকৃত পণ্যের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল— চিনামাটির তৈজসপত্র, রুপো, অশ্ব, মণিমুক্তা, ভেলভেট, হাতির দাঁত, ব্রোকেট, সুগন্ধি প্রভৃতি
iii. বাণিজ্য কেন্দ্র ও বহির্বাণিজ্যের উল্লেযোগ্য বাণিজ্য কেন্দ্র ও বন্দরগুলির মধ্যে ছিল— সাতগা, চট্টগ্রাম, নেগাপটনম, মাদ্রাজ, লাহোর, গুজরাটের ক্যাম্বে ও সুরাট, ব্রোচ, কালিকট, গোয়া প্রভৃতি।
iv. বাণিজ্য শুল্ক: মোগল সম্রাটগণ বাণিজ্য শুক্ষের হার কমিয়ে দিয়েছিলেন। একসময় সুরাট বন্দরে রপ্তানির ওপর শুল্কের হার ছিল ৩.৫ শতাংশ।
8. ফারুকশিয়ারের ফরমান কী ?
উঃ- মাোগলসম্রাট ফারুকশিয়ারের আমলে বাংলার নবাব ছিলেন মুরশিদকুলি খাঁ। তিনি ছিলেন বিচক্ষণ নবাব। তিনি বাংলায় ইংরেজ বণিকদের বিনা শুল্কে বাণিজ্য করার অধিকার দেননি। ফলে বাংলায় বাণিজ্য করার জন্য ব্রিটিশ প্রতিনিধি হিসেবে স্যার জন সুরমান ১৭১৫ খ্রিস্টাব্দে সম্রাট ফারুকশিয়ারের দরবারে এসে উপস্থিত হন।
ইংরেজগণ ১৭১৭ খ্রিস্টাব্দে সম্রাটের কাছ থেকে কিছু শর্তের - বিনিময়ে বাংলায় বিনা শুল্কে বাণিজ্য করার ‘ফরমান আদায় ফারুকশিয়ার নেয়। ইতিহাসে এই ফরমান ফারুকশিয়ারের ফরমান’ নামে খ্যাত।
9. ভারত এবং ইউরোপের সঙ্গে যোগাযোগের ক্ষেত্রে পোর্তুগিজদের অবদান সংক্ষেপে লেখো।
উঃ- ইউরোপ থেকে ভারতে আসার জলপথ। প্রথম আবিষ্কার করেছিল। পোর্তুগিজরা। ১৪৯৮ খ্রিস্টাব্দে পোর্তুগিজ নাবিক ভাস্কো-দা-গামা ভারতে আসার জলপথ। প্রথম আবিষ্কার। করেছিলেন। পোর্তুগালের রাজা এবং পোর্তুগিজরা ভেবেছিলেন যে, ভারত থেকে মশলা এবং অন্যান্য দ্রব্য ক্রয় করে ইউরোপের বাজারে আলবুকাক বিক্রি করে প্রচুর লাভবান হবেন।
ভারতের কালিকট বন্দর ছিল ইউরোপের সঙ্গে একমাত্র বাণিজ্যিক যোগাযোগের কেন্দ্র। ভাস্কো-দা-গামার পর ভারতে আসেন আলবুকার্ক। পোর্তুগিজরা নিজেদের প্রাধান্য প্রতিষ্ঠার জন্য অন্যান্য ইউরাোপীয় শক্তিগুলিকে ভারত থেকে তাড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে। কিন্তু তাদের সেই চেষ্টা সফল হয়নি। পোর্তুগিজদের পথ ধরেই অন্যান্য শক্তি ভারতে তাদের বাণিজ্যিক আধিপত্য প্রতিষ্ঠা করে।
File Details |
|
File Name/Book Name | সপ্তম শ্রেনী পঞ্চম অধ্যায় ৩ নম্বরের প্রশ্ন ও উত্তর |
File Format | PDF |
File Language | Bengali |
File Size | 11.4 KB |
File Location | GOOGLE DRIVE |
Download Link |