মাধ্যমিক তৃতীয় অধ্যায় ( 2 নম্বরের প্রশ্ন ও উত্তর)
মাধ্যমিক তৃতীয় অধ্যায় ( 2 নম্বরের প্রশ্ন ও উত্তর)
1. খুৎকাঠি প্রথা কি?
খুৎকাঠি কথার অর্থ হল জমির যৌথ মালিকানা। এই প্রথা অনুযায়ী মুন্ডারা দীর্ঘদিন ধরে গোষ্ঠীবদ্ধভাবে জমির যৌথমালিকানা ভোগ করত। কিন্তু ভারতে ব্রিটিশ শাসনের আবির্ভাবের সঙ্গে সঙ্গে আদিবাসিদের পুরোনো ভুমিব্যবস্থার অবসান ঘটে এবং সেখানে জমি জরিপ ও ব্যাক্তিগত মালিকানার আবির্ভাব ঘটে।
2. দাদন প্রথা বলতে কী বোঝো ?
দন কথাটির অর্থ হল অগ্রিম। রায়তি চাষ বা দাদনি চাষ বা বেএলাকা চাষ পদ্ধতিতে জমিতে নীল চাষের জন্য কৃষকদের বিঘা প্রতি 2 টাকা অগ্রিম বা দাদন দেওয়া হত। এর বিনিময়ে বাংলার কৃষকদের নীল চাষে বাধ্য করা হত। একবার দাদন নিলে তা কখনই পরিশোধ হতনা। আবার দাদন না নিলে চাষিদের গোরু-বাছুর ইত্যাদি নীলকুঠিতে আটকে রাখা হত। দীন-দরিদ্র, সহজ-সরল, কৃষকরা এতে সর্বস্বান্ত হয়।
3. বারাসাত বিদ্রোহ কী? অথবা, কে, কী উদ্দেশ্যে বাঁশের কেল্লা তৈরি করেন ?
জমিদার, নীলকর ও কোম্পানির কর্মচারিদের শাসন, শোষণ, অত্যাচার ও বাড়তি করের বিরুদ্ধে তিতুমির বিদ্রোহী হন। চব্বিশ পরগণা জেলার বারাসাতের নারকেলবেড়িয়া গ্রামে তিনি একটি বাঁশেরকেল্লা বা দুর্গ নির্মাণ করে এর বিরুদ্ধে ‘জেহাদ’ ঘোষণা করেন। ইংরেজদের গোলায় তার বাঁশের কেল্লা ধ্বংস হয়। 1831 খ্রিস্টাব্দের 19 নভেম্বর যুদ্ধে তিনি নিহত হন। ইতিহাসে এটি বারাসাত বিদ্রোহ নামে পরিচিত।
4. বুদ্ধ ভগৎ কে ছিলেন দামিন-ই-কোহ শব্দের অর্থ কি ?
1831-32 খ্রিষ্টাব্দে বিহারের ছোটনাগপুর অঞ্চলে কোলরা যে বিদ্রোহ করেছিল তাদের অন্যতম নেতা ছিলেন বুদ্ধ ভগৎ
দামিন-ই-কোহ শব্দের অর্থ হল পাহাড়ের প্রান্তদেশ
5. ঔপনিবেশিক অরণ্য আইনের উদ্দেশ্য কী ছিল ?
ঔপনিবেশিক অরণ্য আইন বলতে বোঝায় মহাবিদ্রোহের পরবর্তীকালে ব্রিটিশ সরকার ভারতশাসনের দায়িত্ব নেওয়ার পর চালু হওয়া অরণ্য আইনগুলিকে।
উদ্দেশ্যঃ 1. ভারতে রেলপথ নির্মাণের উদ্দেশ্যে রেলের স্লিপার তৈরির জন্য কাঠ সংগ্রহ করা,
2. ইউরোপে নেপোলিয়নের বিরুদ্ধে যুদ্ধের জাহাজ নির্মাণের জন্য কাঠের জোগান সুনিশ্চিত করা, ও বনাঞ্চল থেকে রাজস্বের পরিমাণ বৃদ্ধি করা এবং অরণ্যগুলির উপর ঔপনিবেশিক কর্তৃত্ব বৃদ্ধি করা।
6. বিপ্লব বলতে কি বোঝায়?
বিপ্লব (Revolution) : বিপ্লব বলতে বোঝায় কোনোপ্রচলিত ব্যবস্থার অতি দ্রুত ও কার্যকরী পরিবর্তন। যখন কোনো দেশে পুরাতনতন্ত্রের অবসান ঘটিয়ে সামাজিক, অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক ক্ষেত্রে এমনকি চিন্তার জগতে ব্যাপক ও সর্বাত্মক পরিবর্তন ঘটে তখন তাকে ‘বিপ্লব’ বলে। যেমন— ফরাসি বিপ্লব।
7. মুন্ডা বিদ্রোহের প্রধান লক্ষ্য কী ছিল?
মুন্ডা বিদ্রোহের প্রধান লক্ষ্য ছিল স্বাধীন মুন্ডারাজ প্রতিষ্ঠা করা। মুন্ডাদের নিজস্ব জমি ব্যবস্থা খুঁকাঠি প্রথা, মুন্ডাদের নিজস্ব শাসন, আইন ও বিচারব্যবস্থা ফিরিয়ে এনে সমদ্র মৃন্ডাসমাজকে বেগার শ্রমদান, শোষণ ও ধর্মান্তরিতকরণের হাত থেকে রক্ষা করাই ছিল এর মূল উদ্দেশ্য।
8. নীল কমিশন কবে কেন গঠিত হয়?
1860 খ্রিস্টাব্দের 31 মার্চ নীল কমিশন গঠিত হয়। এই কমিশন গড়ে তোলার উদ্দেশ্য ছিল নীলচাষিদের অভিযোগ ও বিক্ষোভ সম্পর্কে তদন্ত করা। সরকারি সদস্যদের নিয়েই মূলত এই কমিশন গঠিত হলেও কমিশন নীলকরদের বিরুদ্ধে আনা অধিকাংশ অভিযোগ স্বীকার করে নিয়েছিল।
9. বিরসা মুন্ডা স্মরণীয় কেন?
মুন্ডা বিদ্রোহের প্রধান নেতা বিরসা মুন্ডা মুন্ডাদের দীর্ঘদিনের অরণ্য সম্পদের অধিকারের ওপর সরকারি বিধিনিষেধের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলে ব্রিটিশরাজের অবসান ঘটিয়ে স্বাধীন মুন্ডারাজ প্রতিষ্ঠা করতে চেয়েছিলেন।তিনি বলেন বিদেশিদের বহিষ্কার না করলে কখনই স্বাধীনভাবে ধর্মচারণ করা সম্ভব নয়।অচিরেই তিনি জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন ও মুন্ডাদের চোখে ভগবান রূপে পুজিত হতে থাকেন। 1900 খ্রিস্টাব্দে এই মহান নেতা মৃত্যুবরণ করেন।
10. তিন কাঠিয়া প্রথা কী?
বিহারের চম্পারণে নীলকর সাহেবরা চাষিদের বিঘা প্রতি (20 কাঠার মধ্যে তিন কাঠা অর্থাৎ 3/20 অংশ) জমিতে নীলচাষ ও নির্দিষ্ট দামে উৎপাদিত নীল নীলকর সাহেবদের কাছে বিক্রি করতে বাধ্য থাকত। এই ব্যবস্থাই তিনকাঠিয়া প্রথা নামে পরিচিত।
11. ওয়াহাবি কথার অর্থ কি ভারতে কে এই আন্দোলনের সূচনা করেন?
ওয়াহাবি কথার অর্থ নবজাগরন। ভারতে ওয়াহাবি আন্দোলনের সুচনা করেছিলেন দিল্লির বিখ্যাত মুসলিম সন্ত শাহ ওয়ালিউল্লাহ ও তার পুত্র আজিজ। শাহ ওয়ালিউল্লাহ এই আন্দোনের সুচনা করলেও ভারতে এই আন্দোলনের প্রকৃ ত প্রতিষ্ঠাতা হলেন উত্তর প্রদেশের রায় বেরিলির অধিবাসি সৈয়দ আহমেদ ব্রেল্ভি।
12. ফরাজী কথার অর্থ কি? ভারতে কে এই আন্দোলনের সূচনা করেন?
‘ফরাজি’ কথাটি এসেছে আরবি শব্দ ‘ফরাইজ’’ বা ‘ফরাইজ’ থেকে, যার অর্থ ইসলাম নির্দিষ্ট বাধ্যতামূলক কর্তব্য। ফরাজি আন্দোলনের প্রবর্তন করেছিলেন হাজি শরিয়ত উল্লাহ (1781-1837 খ্রিস্টাব্দ)।
13. ফরাজি আন্দোলন কেন হয়েছিল?
উনিশ শতকে ভারতে মুসলমানদের মধ্যে কুসংস্কার, অনাচার দূর করে তাদেরকে পবিত্র ইসলামধর্মের অনুগামী করে তোলার জন্য হাজি শরিয়তউল্লাহ এক পুনরুজ্জীবনবাদী আন্দোলন গড়ে তোলেন। এটি ফরাজি আন্দোলন নামে পরিচিত। 1818 খ্রিস্টাব্দে থেকে 1906 খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত এই আন্দোলন চলেছিল।
14. সাঁওতাল বিদ্রোহের দুটি গুরুত্ব লেখ ?
সাঁওতাল বিদ্রোহ ব্যর্থ হলেও এর পরোক্ষ ফলাফল বা গুরুত্ব ছিল সুদূরপ্রসারী।
গুরুত্বঃ-(i) এই বিদ্রোহের ভয়াবহতা লক্ষ্য করে সরকার তাদের প্রতি নমনীয় নীতি গ্রহণ করে, যেমন—সাঁওতালদের পৃথক উপজাতি রূপে স্বীকৃতিদান করে, সাঁওতাল অধ্যুষিত এলাকা নিয়ে পৃথক ‘সাঁওতাল পরগনা’ গঠন করে, (ii) সাঁওতাল পরগনায় বাঙালি মহাজনসহ বহিরাগত দিকুদের প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়, (ii) সরকার কর্তৃক সুদের হার নির্দিষ্ট কর হয়, (iv) সাঁওতাল পরগনাকে ব্রিটিশ আইনের প্রভাবমুক্ত করা হয়। (v) খ্রিস্টান মিশনারিদের সাঁওতালদের মধ্যে খ্রিস্টধর্ম প্রচারের অবাধ সুযোগ দান করা ইত্যাদি।
15. বিদ্রোহ ও বিপ্লবের মধ্যে পার্থক্য কি?
i. বিদ্রোহ হলপ্রচলিত ব্যাবস্থার তীব্র বিরোধিতা করা। বিপ্লব বলতে বোঝায় কোনো প্রচলিল ব্যাবস্থার অতিদ্রুত ও কার্যকারী পরিবর্তন।
ii. বিদ্রোহ স্বল্প মেয়াদি বা দীর্ঘমেয়াদি হতে পারে , অন্যদিকে বিপ্লব দীর্ঘস্থায়ী হয়।
iii. বিদ্রোহ যেমন- নীল বিদ্রোহ, সাঁওতাল বিদ্রোহ, রংপুর বিদ্রোহ, অন্যদিকে বিপ্লব যেমন- ফরাসি বিপ্লব, ইংল্যান্ডের শিল্প বিপ্লব।
16. বিরসা মুন্ডার উলগুলানো বলতে কী বোঝো ?
আদিবাসী শব্দ ‘উলগুলান’ কথাটির অর্থ হল ভয়ঙ্কর বিশৃঙ্খলা’ বা ‘প্রবল বিক্ষোভ। বীরসা মুন্ডার নেতৃত্বে আদিবাসী মুন্ডারা 1899-1900 খ্রিস্টাব্দে ছোটনাগপুর ও তার সন্নিহিত অঞ্চলে যে-শক্তিশালী বিদ্রোহ শুরু করে তা উলগুলান নামে পরিচিত। মহাজন, জমিদার ও ইংরেজ কর্মচারীদের শোষণ ও অত্যাচার ইত্যাদি ছিল এই মুন্ডা উলগুলানের গুরুত্বপূর্ণ কারণ।
17. চুয়াড় বিদ্রোহের দুটি বৈশিষ্ট্য লেখ ?
1898-99 খ্রিস্টাব্দে সংঘঠিত জঙ্গলমহলসহ মেদিনীপুরের বিস্তীর্ণ অঞ্চলে সংঘঠিত হয় চুয়াড় বিদ্রোহ। এই বিদ্রোহের কতগুলি বৈশিষ্ট্য লক্ষ করা যায়।
বৈশিষ্ট্য : (i) চুয়াড়রা ছিল সশস্ত্র উপজাতি সম্প্রদায়ভুক্ত মানুষ। (i i) বিদ্রোহী চুয়াড় উপজাতিদের সাথে জমিদারগণও বিদ্রোহে অংশগ্রহন করে।( i i i)এই বিদ্রোহ দুটি পর্যায়ে ঘটে।
18. বিদ্রোহ’ বলতে কী বোঝায়?
‘বিদ্রোহ’ বলতে বোঝায় নির্দিষ্ট কোনো অঞ্চলে প্রচলিত কোনো ব্যবস্থার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানানো বা বিরোধিতা করা। এটি স্বল্পমেয়াদি বা দীর্ঘমেয়াদি, ব্যক্তিগত বা সমষ্টিগত, সশস্ত্র বা শান্তিপূর্ণ যে-কোনোভাবে হতে পারে।
উদাহরণ : ইংরেজ শাসনকালে ভারতে বেশ কয়েকটি বিদ্রোহ সংঘটিত হয়। এগুলির মধ্যে সন্ন্যাসী-ফকির বিদ্রোহ’ (1763 খ্রি:), রংপুর বিদ্রোহ (1783 খ্রি.), চুয়াড় বিদ্রোহ’ (1798 খ্রি.), নীল বিদ্রোহ (1859 খ্রি.), সন্ন্যাসী-ফকির বিদ্রোহ’ (1763 খ্রি:), সাঁওতাল বিদ্রোহ (1855খ্রি.) প্রভৃতি ছিল বিশেষ উল্লেখযোগ্য।
19. ‘বিপ্লব’ বলতে কী বোঝায়?
বিপ্লব’ বলতে কোন দেশের প্রচলিত ব্যবস্থা বা অবস্থার দ্রুত ও কার্যকরী পরিবর্তনকে বোঝায়। এটি শান্তিপূর্ণভাবে অর্থাৎ বিনা রক্তপাতে হতে পারে কিংবা রক্তাক্ত সংগ্রামের মাধ্যমে হতে পারে। যেমনঃ- আমেরিকার বিপ্লব, ফরাসি বিপ্লব, ইংল্যান্ডের শিল্পবিপ্লব।
20. অভ্যুত্থান বলতে কী বোঝো?
কোনো দেশের প্রচলিত শাসনব্যবস্থা বা শক্তির বিরুদ্ধে একাংশের কিংবা সমষ্টির সশস্ত্র সংগ্রামকে বলা হয় অভ্যুত্থান। নিজেদের দাবিপূরণ বা ক্ষমতা দখলই এর প্রধান উদ্দেশ্য। 1857 খ্রিস্টাব্দের ‘সিপাহি বিদ্রোহ’ বা 1946 খ্রিস্টাব্দের নৌবিদ্রোহ হল অভ্যুত্থান-এর উদাহরণ।
21. চুয়াড় বিদ্রোহের বৈশিষ্ট্য গুলি লেখ?
a. সশস্ত্র বিদ্রোহঃ-এই বিদ্রোহ ছিল একটি সশস্ত্র বিদ্রোহ এই বিদ্রোহ বিভিন্ন অস্ত্র ব্যবহার হয় বলা হয় যে কর্নগড়ের রানী শিরোমণি ও নাড়াজালের রাজারা আড়াল থেকে গোলাবারুদ ও অস্ত্র দিয়ে সাহায্য করেন।
b. ব্রিটিশবিরোধী বিদ্রোহঃ-চুয়াড় বিদ্রোহ ছিল ব্রিটিশ বিরোধী অভ্যুত্থান। অন্যান্য বিদ্রোহে কৃষকরা জমিদারদের ওপর ক্ষিপ্ত হয় কিন্তু এই বিদ্রোহ ছিল কৃষক ও জমিদারদের মিলিত ব্রিটিশ অত্যাচারের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ।
c. দীর্ঘস্থায়ী বিদ্রোহঃ-এই বিদ্রোহ ছিল একটি দীর্ঘস্থায়ী বিদ্রোহ 1768 1799 সাল পর্যন্ত প্রায় 30 বছর পর্যন্ত এই বিদ্রোহ চলেছিল।
22. অরণ্য আইন বলতে কী বোঝো?
ভারতে ইংরেজ শাসন প্রতিষ্ঠার পর সরকার ভারতের অরণ্য সম্পদের ওপর নিজ কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠার জন্য কতগুলি আইন প্রণয়ন করেন। এগুলি ‘অরণ্য আইন’ নামে পরিচিত। এগুলির মধ্যে 1865,1878 ও 1927 খ্রিস্টাব্দের আইন উল্লেখযোগ্য। এতে একদিকে সরকারের স্বার্থ সুরক্ষিত হয়, অন্যদিকে আদিবাসী সম্প্রদায় তাদের অধিকার হারায়।
23. কোল বিদ্রোহের বৈশিষ্ট্য গুলি লেখ?
i. কোল বিদ্রোহে আধিবাসি সম্প্রদায়ভুক্ত কোলদের কাছে বহিরাগত দিকু ও ইংরেজদের অত্যাচার থেকে মুক্তি ছিল স্বাধীনতা শামিল।
ii. অরন্যের অধিকার রক্ষায় তারা একজোট হয়েছিল।
24. কেনারাম ও বেচারাম বলতে কী বোঝো?
‘কেনারাম’ ও ‘বেচারাম’ দু-ধরনের তারতম্য যুক্ত বাটখারা। ‘কেনারাম' নামক বাটখারা দ্বারা সাঁওতাল অধ্যুষিত অঞ্চলের বহিরাগত ব্যবসায়ীরা সাঁওতালদের কাছ থেকে বেশি ওজনের বাটখারা দিয়ে কৃষিপণ্য ক্রয় করে তাদের ঠকাতো। আবার ‘বেচারাম’ নামক কম ওজনের বাটখারা দিয়ে তাদের বিভিন্ন দ্রব্য যেমন—চিনি, লবণ ইত্যাদি বিক্রি করা হত। এর ফলে দুভাবেই অসহায়, দরিদ্র সাঁওতালদের ঠকানো হত।
25. পাগলা পন্থী দের বিদ্রোহ কি?
1825-27 খ্রিস্টাব্দে ফকির করম শাহের পুত্র টিপু শাহের নেতৃত্বে ময়মনসিংহ জেলার শেরপুর পরগনায় গারো উপজাতির লোকেরা যে বিদ্রোহ শুরু করেছিল তা পাগলাপন্থী বিদ্রোহ নামে পরিচিত।
26. ভিল বিদ্রোহ কি?
1819 খ্রিস্টাব্দে ত্রিম্বকজির প্রেরণায় ও শিবুরামের নেতৃত্বে পশ্চিমঘাট পর্বতমালার পাদদেশে খান্দেশ অঞ্চলের শান্তিপ্রিয় আদিবাসী বা উপজাতি ভিলরা যে আন্দোলন গড়ে তোলে তা ভিল বিদ্রোহ নামে পরিচিত। সরকার অত্যন্ত নির্মমভাবে এই বিদ্রোহ দমন করেছিলেন।
27. রংপুর বিদ্রোহ কি?
1783 খ্রিস্টাব্দে পূর্ণিয়ার অত্যাচারী ইজারাদার দেবীসিংহের বিরুদ্ধে রংপুর তথা সমগ্র উত্তরবঙ্গের কৃষকরা নুরুলউদ্দিনের নেতৃত্বে যে বদ্রোহ শুরু করে তা রংপুর বিদ্রোহ নামে পরিচিত।মোগলহাট ও পাটগ্রামের যুদ্ধে বিদ্রোহিরা পরাস্ত হলে এই বিদ্রোহের অবসান ঘটে।
28. দুদু মিঞা স্মরণীয় কেন?
1837 খ্রিস্টাব্দে ফরাজি আন্দোলনের প্রবর্তক হাজি শরিয়তউল্লাহ-এর মৃত্যুর পর তাঁর সুযোগ্য পুত্র মহম্মাদ মহসিন বা দুদুমিঞা আন্দোলনের নেতৃত্ব গ্রহন করেন ।তিনি ছিলেন দক্ষ সংগঠক ও রাজনৈতিক চেতনা সম্পন্ন ব্যাক্তিত্ব ও এই আন্দোলনের প্রাণপুরুষ।
তিনি জমিদারদের পূজা-পার্বণ ইত্যাদিতে কর না দেওয়ার পরামর্শ দেন।তার সুযোগ্য নেতৃত্বে ফরাজি আন্দোলন ধার্মীয়-সামাজিক আন্দোলন থেকে সামাজিক –অর্থনোইতিক-রাজনোইতিক আন্দোলনে পরিনত হয়।এই জন্য দুদুমিঞা স্বরণীয়।