CLASS 11 MODEL ACTIVITY TASK BENGALI PART 2 -2021//মডেল অ্যাক্টিভিটি টাস্ক - 2 একাদশ শ্রেনী BENGALI/বাংলা

 

CLASS 11 MODEL ACTIVITY TASK BENGALI PART 2 -2021

মডেল অ্যাক্টিভিটি টাস্ক - 2

একাদশ শ্রেনী

BENGALI/বাংলা

CLASS 11 MODEL ACTIVITY TASK BENGALI PART 2 



নীচের প্রশ্নগুলির উত্তর নিজের ভাষায় লেখো :

1.'...হঠাৎ একদিন তেলেনাপোতা আপনিও আবিষ্কার করতে পারেন' - কোন্‌ পরিস্থিতিতে এমনটি সম্ভব বলে লেখক মনে করছেন?

উ:-কোনো এক শনি অথবা মঙ্গলের যোগাযোগ হলে, কিংবা হয়তো মঙ্গলবারেই হবে বোধহয়, আপনারাও তেলেনাপোতা আবিষ্কার করতে পারেন। হয়তো আপনার জীবনে আজস্র ব্যস্ততা, নয়তো আপনি কাজের লোক, কর্মী মানুষ, অর্থাৎ কাজে - কর্মে - মানুষের ভিড়ে হাঁফিয়ে উঠেছেন; এমন সময় যদি হঠাৎ দু - একদিনের জন্য আপনি খানিকটা আবকাশ তৈরি করতে পারেন, তাহলে আপনার দ্বারাও তেলেনাপোতা আবিষ্কার করার নিশ্চিত সুযোগ আছিলাও আপনার থাকবে। অর্থাৎ দেখা গেল - কেউ এসে আপনার জন্য অপেক্ষিত, যাতে পৃথিবীর সবচেয়ে সরলতম মাছেরা তাদের জলজীবনে এই প্রথম কোনো বড়শিতে হৃদয় বিদ্ধ করার জন্য উদ্‌গ্রীব হয়ে আছে কেবল আপনার জন্য।

                              অথচ আপনি হয়তো ইতিপূর্বে বড়শি গেঁথে জল থেকে পুঁটি ছাড়া অন্য মাছ টেনে তোলার কোনো সুযোগই পাননি। তাহলে হঠাৎ কোনো একদিন তেলেনাপোতা নামক অদৃশ্যপূর্ব গ্রামে আবিষ্কার অভিযানে আপনি নিশ্চয়ই শামিল হতে পারেন। তবে যদি এই আবিষ্কার - মানস আপনার হয়েই থাকে, তখন অত্যন্ত কষ্টকল্পিত পথে শুরু হবে, আপনার যাত্রা। কোনো এক পড়ন্ত রোদের বিকেলে, মানুষে - জিনিসে ঠাসাঠাসি রাস্তার ঝাঁকানি ও মানুষের আনিবার্য গুতো সহ্য করতে করতে, আপনি পা বাড়াবেন তেলেনাপোতার পথে। তারপর ভদ্রের গরমে, ঘাম ও ধূলোয় চটচটে শরীর নিয়ে ঘন্টা-দুয়েকের কষ্টকর অভিযানের শেষে হঠাৎ রাস্তার মাঝখানে নেমে, আপনি গিয়ে হাজির হবেন তেলেনাপোতার দ্বারপ্রান্তে। যেখান থেকে তেলেনাপোতার অন্দরমহলে আবিষ্কারের স্বাদগ্রহণ আপনার পক্ষে আর কঠিন থাকবে না।


2. 'হে ভারতের শ্রমজীবী!' - শ্রমজীবীদের সম্বোধন করে প্রাবন্ধিক কী বলেছেন?

উ:-স্বামী বিবেকানন্দ নিম্নবর্গীয়দের কথা সর্বদা চিন্তা করতেন। 'শূদ্র জাগরণ' প্রবন্ধে বিবেকানন্দ শ্রমজীবী সম্পর্কে ধারণা ব্যক্ত করেছেন।

                           স্বামীজি মনে করেন, ভারতের খেটে খাওয়া শ্রমজীবী সম্প্রদায় চিরকালই রয়ে গিয়েছে বঞ্চিতের দলে। বিদেশি আক্রমণকারী সর্বদাই তাদের অপমানিতের তালিকাতেই রেখেছে। আবার স্বাজাতির কাছেও তাঁতি-জেলে-চাষিরা উপযুক্ত সম্মান পায়নি। স্বামীজির ভাষায়, এরা "বিজাতিবিজিত স্বজাতিনিন্দিত ছোটো জাত"। এরা চিরকাল নিরবে কাজ করে কিন্তু পরিশ্রমের দাম পায় না। তাঁর আরো মনে হয়েছে কাব্যে বা সাহিত্যের এরা উপেক্ষিত। স্বামীজি এদের আসতে রাজি হয় কিন্তু নিতান্ত ছোটো কাজে যারা কর্তব্যপরায়ণতা প্রদর্শন করে, তাদের কথা কোথাও লেখা হয় না। এই প্রবন্ধে সেই পদদলিত শ্রমজীবীকেই প্রণাম জানিয়েছেন তিনি।


3. 'পড়শি যদি আমায় ছুঁত...' -পড়শির পরিচয় দাও। তাঁর স্পর্শে বক্তার মধ্যে কোন্‌ লক্ষণীয় পরিবর্তন ঘটবে?

উ:বাউলসাধক তথা গীতিকার লালন তাঁর অজস্র গানে আরাধ্যকে বারে বারে নানা অভিহিত করেছেন। একটি গানে তিনি বলছেন -

"এই মানুষে আছে রে মন

যারে বলে মানুষ রতন।"

               ইনিই আবার কখনও 'আধরচাঁদ'। এই গানে লৌকিক উপাদানে তিনি 'পড়শী'। 'পড়শি' শব্দের অর্থ প্রতিবেশী। বাউলসাধক যেহেতু বিশ্বাস করেন, দেহমন্দিরেই আধরচাঁদ অবস্থান করেন, তাই তিনি ,পড়শী'। আসলে নিকটতম প্রতিবেশীর মতো অন্তরেই অন্তরতমের অবস্থিতি বলে ব্যঞ্জনায় তাঁকে বলা হয়েছে 'পড়শী'।

                  'পড়শী' তথা পরমারাধ্য জীবনদেবতা যদি লালন ফকিরকে ছুঁতেন, তবে তাঁর 'মনের মানুষ' - কে পাওয়া সহজ হত। উদ্ধৃতিটিতে 'যদি' শব্দটির প্রয়োগ লক্ষণীয়। যা দিয়ে কবিমনের গভীর আক্ষেপ ও দ্বন্দ্ব প্রকাশিত হয়েছে। সেই 'পরম তিনি', তাঁর স্পর্শলাভই সাধকের উদ্দেশ্য, পরম সান্নিধ্য ও স্পর্শ দিয়ে যিনি যথার্থ সাধকের মনের খেদ, দেহের যন্ত্রনা তথা এই ভববাসের নরকযন্ত্রণায় অবধি নেই। ইন্দ্রিয়সুখ, বিষয়বাসনা ও বস্তুপ্রেম মানুষকে যে নৈতিকবোধ দেয়, লালন তার থেকে আত্মিক মুক্তির কথা বলেছেন, যম-যাতনা' হল পার্থিব দুঃখ - শোক - যন্ত্রণা। এর থেকে মুক্তির আকাঙ্ক্ষাই এখানে দ্যোতিত।

4. 'বিশাল ডানাওয়ালা এক থুরথুরে বুড়ো' - গল্পে মাকড়সায় রূপান্তরিত হয়ে যাওয়া মেয়েটির গুরুত্ব নির্ধারণ করো।

উ:- গাবরিয়েল গার্সিয়া মার্কেজের 'বিশাল ডানাওয়ালা এক থুরথুরে বুড়ো' গল্পে আমরা দেখি কীভাবে সাগর উপকূলে বড়ো ডানাওয়ালা বুড়োর আবির্ভাবকে ঘিরে বিশালসংখ্যক কৌতূহলী মানুষের সমাগম ঘটেছিল। পেলাইও আর তার স্ত্রী এলিসেন্দা, যারা প্রথমে সেই বুড়োকে দেখেছিল, তারা সকলের কাছ থেকে বুড়োকে দেখার দর্শনী বাবদ পাঁচ সেন্ট অরে মাথাপিছু ধার্য করেছিল। কিন্তু সেই জনসমাগমে ঘিরে সেখানে মেলা - সার্কাস প্রভৃতি বসে গিয়েছিল এবং সেইভাবেই সেখানে এসেছিল একটি ভ্রাম্যমান প্রদর্শনী, সেখানে বাবা-মার অবাধ্য হওয়ার ফলে মাকড়সা হয়ে যাওয়া মেয়েকে দেখানো হচ্ছিল। হুজুগে দর্শকেরর দল ডানাওয়ালা বুড়ো বা দেবদূতকে দেখার চেয়ে মাকড়সা মেয়েকে দেখার বেশি আকর্ষণ অনুভব করেছিল। কেননা দর্শনীয় হার ছিল কম, মেয়েটিকে খুঁটিয়ে দেখা বা তার এই অবস্থার জন্য তাকে প্রশ্ন করার সুযোগ ছিল দর্শকদের। মেয়েটির চেহারা ভয়ংকর, মুখটা করুণ এবং কন্ঠস্বরে দুঃখী ভাব ছিল। মা-বাবার কথার অবাধ্য হওয়ার পরিণতির গল্পও সকলকে আকৃষ্ট করেছিল। অপরদিকে দেহদূতের নামে এমন সব অলৌকিক ঘটনা প্রচারিত হচ্ছিল, যা স্থূল কৌতূককর। এইসব কারণে ধাবিত হয়েছিল।

5. 'সব শিক্ষা একটি সার্কাস' - 'শিক্ষার সার্কাস' কবিতায় কীভাবে এই ধারণাটি  ব্যক্ত হয়েছে?

উ:-সার্কাস এক বিনোদনমূলক ক্রীড়া, মানুষ ও জীবজন্তুর সমারোহে যেখানে দর্শকের মনোরঞ্জন করা হয়। বর্তমান শিক্ষা সার্কাসের নানা কসরতের মতোই শিক্ষার্থীদের ধাপে ধাপে উঁচুতে তুলে দেয়। শিক্ষার্থীদের অভ্যস্তকরে পরস্পরের সঙ্গে অশুভ প্রতিযোগিতায় মত্ত হতে। সার্কাসের একের পর এক খেলা প্রদর্শনের মতোই এই শিক্ষা একের পর এক শ্রেণিতে নিয়ে যায়। কিন্তু এ শিক্ষা কখনোই অন্তরের বিকাশ ঘটায় না, করে তোলে না উদ্‌ভাবনী শক্তির অধিকারী, দেয় না Perfection। এজন্যই এ শিক্ষাব্যবস্থাকে সার্কাসের সঙ্গে তুলনা করে কবি আইয়াপ্পা পানিকর তাঁর অনাস্থা প্রকাশ করেছেন।

     কবি জানেন শিক্ষার অর্থ শিক্ষার্থীর মানসবিকাশ। সে শিক্ষাপদ্ধতি প্রথাগত, প্রথাগত বা প্রথাবর্হিভূত যাই হোক না কেন, বর্তমান শিক্ষাব্যবস্থা ছাত্রছাত্রীর আত্মবিকাশের বদলে তাকে এক আশ্চর্য প্রহসনের শরিক করে তুলেছে। শিক্ষাব্যবস্থা, প্রতিধন্দ্বিতা, ক্রমোন্নয়নের প্রবল চেষ্টা শিক্ষার্থীর জ্ঞান ও চেতনার বিকাশের বদলে তাকে ক্রমশ অবদমিত, সমাজবিভিন্ন, সামাজিক বোধশূন্য করে তুলেছে।

     শিক্ষার্থী এখানে সার্কাসের মই বেয়ে ওঠার মতো একের পর এক শ্রেণিতে ওঠে। বিনোদিত দর্শকের মতো পারিপার্শ্বের প্রশংসা পায়। বৈচিত্র্যময় সার্কাসের খেলার মতো বিচিত্র শিক্ষা শিক্ষার্থীদের বিভ্রান্ত, বিহ্বল করে। সার্কাসের খেলায় যেমন সামান্য ভুল খেলা পন্ড করে, প্রচলিত শিক্ষাব্যবস্থাতেও সাফল্য না এলে জীবন ব্যর্থ। এভাবেই কবি এ শিক্ষাব্যবস্থায় শিক্ষার্থীর করুণ অবস্থা তুলে ধরেছেন।

 6. 'আমি পাপ করেছি।' - বক্তা কে? সে কেন তার কাজকে 'পাপ' মনে করেছে?

উ:-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের 'গুরু' নাটকে অচলায়তনের বালক সুভদ্র আলোচ্য উক্তিটির বক্তা। সাধারণভাবে গুরুতর অন্যায়কে পাপ বলা হয়, যদিও এটি একটি আপেক্ষিক ধারনামাত্র। আচলায়তনের সবাই নিয়মতন্ত্রের নিগড়ে বাঁধা। সবাই জানত উত্তরদিকের জানলা খোলা বারণ। ঐ দিকে রাগি একজটা দেবীর অধিষ্ঠান, তিনি অভিশাপ দেবেন। তাছাড়া অচলায়তনের মন্ত্রপুত বিশুদ্ধ বাতাসকে বাইরের হাওয়া এসে অশুচি করে দেবে। তাই জানলা খোলার নিয়ম নেই। সুভদ্র এই যুক্তিহীন নিয়ম না মেনে কোনো অন্যায় করেনি, এতে তার নিজের বা অচলায়তনের কোনো ক্ষতি হয়নি। বরং যুগ যুগ ধরে প্রচলিত ভ্রান্ত সংস্কার দূর করে সে সাহসের পরিচয় দিয়েছে। সে আসলে মানবিক চেতনার জানলা ঘুলে দিয়ে মুক্তির দূত গুরুর আগমন পথকে সুগম করেছে। তাই পঞ্চক তাকে বলেছে, "গুরু আসার পথ তুমিই প্রথম খোলসা করে দিলে।" উপাধ্যায়, উপাচার্য, মহাপঞ্চকের মতো রক্ষণশীল, নিয়মনিষ্ঠাদের কাছে সুভদ্রের আচরণ পাপ বলে বিবেচিত। যুক্তিহীন সংস্কারে লালিত সুভদ্র স্বয়ং পাপবোধে ভুগলেও সাধারণ শুভবুদ্ধিসম্পন্ন সমস্ত মানুষের কাছে সুভদ্রের কতকর্মটি পাপ নয়, বরং তথাকথিত পুণ্যের কাজ।

7. বিভিন্ন বাঙালি জাতির মধ্যে নৃতাত্ত্বিক সম্পর্কের বিষয়টি ব্যাখ্যা করো।

উ:-ভারতের পূর্ব প্রান্তের এই স্থানটিতে যেসব মানুষ বাস করত, তারা আর্য - পূর্ব ভারতের প্রাচীলতম জনগোষ্ঠী নিগ্রোজাতির একটি শাখা - নিগ্রোবটু। এই গোষ্ঠী কালক্রমে ভারতীয় ভূখন্ড থেকে নিশ্চিহ্ন হয়েছে। পরবর্তী জনগোষ্ঠী আস্ট্রিক গোষ্ঠীর বংশধরেরা 'ভারতের প্রধান আদিবাসী গোষ্ঠী - সাঁওতাল, মুণ্ডারি, হো, শবর, খাসি ও নিকোবরী প্রভৃতি' নামে পরিচিত। আরও পরে দ্রাবিড় গোষ্ঠীর লোকেরা ভারতে প্রবেশ করে। এই সমস্ত অনার্য গোষ্ঠীর মানুষেরাই ভারতের আদি জনগোষ্ঠী। 

                     খ্রিস্টীয় সপ্তম শতকের মধ্যেই দেশের এই অঞ্চলে আর্যদেব সামাজিক ও সাংস্কৃতিক বিজয় সম্পূর্ণ হতে পেরেছে। নৃতত্ত্ববিদদের সাক্ষ্য মেনে নিয়ে বলা যায় যে, জাতিগতভাবে বাঙালির কোনো অবিমিশ্র নরগোষ্ঠী নয়। এই বিশেষ অঞ্চলে পৃথক পৃথক নৃগোষ্ঠীর সংমিশ্রণ ঘটেছে যুগ যুগ ধরে; আর এইসব গোষ্ঠে, আর্যজাতি - কোম থেকে একেবারে আলাদা ছিল। তারা পুরোপুরি আর্য হয়েগেল না, আবার অনার্যও রইল না। এভাবে বাঙালিজাতির উদ্ভব হল।

 


Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url