CLASS 11 MODEL ACTIVITY TASK BENGALI PART 1 -2021 // মডেল অ্যাক্টিভিটি টাস্ক - 1 একাদশ শ্রেনী BENGALI/বাংলা

 

CLASS 11 MODEL ACTIVITY TASK BENGALI PART 1 -2021

মডেল অ্যাক্টিভিটি টাস্ক - 1

একাদশ শ্রেনী

BENGALI/বাংলা


নীচের প্রশ্নগুলির উত্তর নিজের ভাষায় লেখো :

1. 'দেশের লোক ভারি নিশ্চিন্ত হল।' - কখন এবং কেন 'দেশের লোক' নিশ্চিন্ত হয়েছিল?

উ:-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা 'লিপিকা' গ্রন্থের অন্তর্গত 'কর্তার ভূত' গল্প থেকে নেওয়া আলোচ্য উদ্ধৃতিটির মধ্য দিয়ে ভূতগ্রস্থ দেশবাসী ভূতশাসনতন্ত্রের অধিকর্তার মৃত্যুকাল উপস্থিত হলে সমবেতভাবে জীবন সম্পর্কে সংশয় প্রকাশ করেছে।

            বুড়ো কর্তার মরণকালে ভূতগ্রস্ত দেশবাসী সমবেতভাবে তাদের সংকটের কথা প্রকাশ করলে কর্তাও চিন্তিত হয়ে ভাবল - 'আমি গেলে এদের ঠান্ডা রাখবে কে।' আসলে এই রাজনৈতিক রূপক কাহিনির মধ্যে রবীন্দ্রনাথ অতীতের প্রভাবে আছন্ন হয়ে থাকা ঔপনিবেশিক ভারতবর্ষের সমস্যা ও সংকটের কথা বলেছেন। দেড়শো বছরেরও বেশি সময় ধরেঔপনিবেশিক শাসনযন্ত্রণা ভোগ করতে করতে ভারতবর্ষের ঐশ্বর্য এবে আত্মবিশ্বাস কিছুই আর অবশিষ্ট ছিল না। আবহমান কাল ধরে চলে আসা একটা প্রথা তথা নিয়মতন্ত্রের থেকে ভারতবাসী বেরোতে চাইছিল ঠিকই, কিন্তু একটা বিকল্প প্রথা নির্মাণের জন্য যে প্রয়াস কিংবা পরিশ্রম লাগে তা করতে পারছিল না। অথচ চাইছিলই না। সুতরাং শাসক এবং শাসিতের উভয়ের চাওয়ায় ব্রিটিশ রাজতন্ত্রই বহাল রইল। আর রবীন্দ্রনাথ রূপকের আশ্রয়ে বললেন - "তবু দেবতা দয়া করে বললেন, ভাবনা কী। লোকটা ভূত হয়েই এদের ঘাড়ে চাপে থাক না। মানুষের মৃত্যু আছে, ভূতের তো মৃত্যু নেই"। অর্থাৎ সজাগ অনুভূতি ও রাজনৈতিক সচেতনতার অভাবে ইংরেজ শাসনাধীন ভারতবাসী ইংরেজ শাসনব্যবস্থাকেই মেনে নিয়ে ভারি নিশ্চিন্ত হল।


2. 'কেবল অতি সামান্য একটা কারণে একটু মুশকিল বাঁধল।' - কোন পরিপ্রেক্ষিতে এই মুশকিল বেঁধেছিল এবং তার কারণ কী ছিল?

উ:- রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা 'লিপিকা' গ্রন্থের অন্তর্গত "কর্তার ভূত" গল্প থেকে নেওয়া প্রশ্নোধৃত মন্তব্যটিতে ভূতগ্রস্থ দেশবাসীর মনে ভূতশাসনতন্ত্র নিয়ে দ্বিধা জাগাটাকেই 'মুশকিল' বলে চিহ্নিত করা হয়েছে। পৃথিবীর অন্যান্য দেশগুলিকে ভূতে পায়নি বলে সেখানকার মানুষ 'ভয়ংকর সজাগ' আছে। সেই 'সব দেশে যত ঘানি ঘোরে তার থেকে তেল বেরোয় তাদের ভবিষ্যতের রথচক্রটাকে সচল করে রাখবার জন্যে ... কাজেই মানুষ সেখানে একেবারে জুড়িয়ে যায় নি'। অন্য দেশের এই সচল - সজাগ অবস্থাই ভূতশাসনতন্ত্রের মুশকিলের কারণ।

           আলোচ্য গল্পে ভূতগ্রস্ত দেশ বলতে অতীতের প্রভাবাচ্ছন্ন ব্রিটিশ শাসনাধীন ভারতবর্ষের কথা বোঝানো হয়েছে। আবার ভূতশাসনতন্ত্র বলতে দেড়শো বছরেরও বেশি সময় ধরে ভারতবর্ষের ওপর চেপে বসা ঔপনিবেশিক ইংরেজ শাসনব্যবস্থাকে ইঙ্গিত করা হয়েছে। আসলে দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা উন্নয়নহীন অচলাবস্থার বিপরীতে ভূতশাসনতন্ত্রের বাইরের পৃথিবীর সচল উন্নয়নমূলক সাফল্যের দৃষ্টান্ত ভূতশাসনতন্ত্র সম্পর্কে দ্বিধা তৈরি করেছিল। বস্তুত যে-কোনো রাষ্ট্র অথবা সমাজব্যবস্থার সঠিক মূল্যায়নের জন্য পারিপার্শ্বিক অবস্থার তুল্যমূল্য বিশ্লেষণ একটি গ্রহণযোগ্য মানদন্ড। নিজেদের ভবিষ্যৎ নির্ধাণকারী স্বাধীন দেশের সজাগ নাগরিকদের দেখে ঔপনিবেশিক আগ্রাসন আর পরাধীনতা সম্পর্কে তৈরি হওয়া জিজ্ঞাসা বা দ্বিধাবোধ ভূতশাসনতন্ত্রের কাছে মুশকিলের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছিল।


3. 'সেইখানেই তো ভূত।' - বক্তা কে? কখন তিনি মন্তব্যটি করেছেন এবং এর তাৎপর্য কী?

উ:-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের 'কর্তার ভূত' রচনায় আমরা দেখি 'দেশের মধ্যে দুটো - একটা মানুষ' দিনের বেলায় ভূতের নায়েবের ভয়ে চুপ করে থাকে। কিন্তু তারাই গভীর রাতে বুড়ো কর্তার দ্বারস্থ হয়। তারা হাতজোড় করে বুড়ো কর্তাকে প্রশ্ন করে, "কর্তা এখনো কি ছাড়বার সময় হয়নি?" বুড়ো কর্তা একথা শুনে তাদের 'অবোধ' সম্বোধন করে, বলেন যে, তিনি তাদের যেমন ধরেও রাখেননি, তেমনি ছেড়েও যাননি। তারা বুড়ো কর্তাকে ছাড়লে তবেই তিনি তাদের ছেড়ে চলে যাবেন। সেকথা শুনে ওইসব মানুষ জানায় যে,  তেমনটা করতে তারা খুবই ভয় পায়।

            এখানে বুড়ো কর্তা সরাসরিই জানিয়েছেন যে, মানুষের মনের ভয়ের মধ্যেই ভূত অবস্থান করে। আসলে আলোচ্য কাহিনিটিতে রবীন্দ্রনাথ বলতে চেয়েছেন, আত্মশক্তি এবং আত্মবিশ্বাসের অভাবেই ভীত - সন্ত্রস্ত দেশবাসী আজ 'পঞ্চত্বপ্রাপ্ত' সর্বাঙ্গসম্পন্ন প্রাচীন সভ্যতার 'প্রেতযোনি-কে' আঁকড়ে রয়েছে। জনগনের ভয়ের কারনেই দেশে জীর্ণ ও অপ্রাসঙিক ধর্মীয় সংস্কার ও ধর্মীয় ও ধর্মতন্ত্র এখনও বাসা বেঁধে রয়েছে। বুড়ো কর্তার এই কথাটির মধ্য দিয়ে সেই সত্যটিই প্রকাশ করা হয়েছে। 


4. 'কি লজ্জা! দুঃখের কথা হায় কব/কারে?' - কে, কেন একথা বলেছেন? বক্তার মনোভাব আলোচনা করো।

উ:- কবি মধুসূদনের অবিস্মরণীয় সৃজন 'নীলধ্বজের প্রতি জনা' পত্রিকার জনা চরিত্রটি। অশ্বমেধ যজ্ঞের ঘোড়া আটকে দেওয়ার জন্য মাহেশ্বরীপুরীর রাজকুমার প্রবীরের পিতা নীলধ্বজ অর্জুনের সঙ্গেই সখ্য ও সন্ধিস্থাপন করেন। এ ঘটনা পুত্রশোকাতুরা মা জনাকে বিস্মিত করায় তিনি প্রশ্নে প্রদত্ত মন্তব্যটি করেন।

    শৌর্য, বীর্য, সাহস, পুরুষকার, যুদ্ধে পরাঙনুখ না হওয়া, শত্রু বিনাশ, ক্ষত্রান্তকের নাশ ক্ষত্রান্তকের নাশ ক্ষত্রিয়ের ধর্ম। জনার স্বামী নীলধ্বজ ক্ষত্রধর্ম ভুলে পুত্রহন্তকের নাশ পার্থের সঙ্গে সখ্য ও সন্ধিস্থাপন করেছেন। পুত্রঘাতককে হত্যা করে প্রতিশোধস্পৃহা নিবারণের বদলে নৃত্য-গীত-বাদ্যে তাকে বন্দনা করছেন নীলধ্বজ সভায় বসিয়ে। স্বামীর ক্ষত্রধর্ম, বীরধর্ম, পিতৃধর্ম থেকে বিচ্যুতি লজ্জা ও দুঃখে জনার মন ভেঙে দিয়েছে। অথচ একান্ত স্বজনের এমন আচরণ কাউকে বলাও যায় না। একদিকে পুত্রশোক অন্যদিকে স্বামীর আশ্চর্য আচরণে দগ্ধ জনা এ মানসাবস্থা থেকেই এই উক্তিটি করেছেন।


5. 'মিথ্যা কথা, নাথ।' - বক্তা কোন কথাকে 'মিথ্যা' বলেছেন? কীভাবে তিনি নিজের বক্তব্যকে প্রতিষ্ঠা করেছেন?

উ:-কবি মধুসূদনের অনবদ্য সাহিত্যসৃজন 'বীরাঙ্গনা' কাব্যের একাদশ সর্গ, 'নীলধ্বজের প্রতি জনা' পত্রিকার মুখ্য চরিত্র জনার উক্তি এটি। তিনি পার্থকে রথিকুল - পতি বলাকে 'মিথ্যা কথা' বলেছেন।

     স্বমত প্রতিষ্ঠার্থে তিনি অর্জুনের মহাভারতীয় কীর্তিকলাপের দুষ্টান্ত তুলে তার কাপুরুষতা, ভন্ডামি, ছদ্ম বীরত্ব, নরাধমতা ইত্যাদির ব্যাখ্যা দিয়েছেন।

কবি মাইকেল মধুসূদন দত্ত তাঁর 'বীরাঙ্গনা' কাব্যের একাদশ পত্রিকা নীলধ্বজের প্রতি জনা' রচনায় জনা চরিত্রটিকে এক ব্যতিক্রমী নারীসত্তারূপে গড়ে তুলেছেন। তিনি একাধারে জায়া ও জননী, অন্যদিকে বীরাঙ্গনা ক্ষত্ররমণী। পুত্রহন্তারকের বিরুদ্ধে তার প্রবল ক্ষোভ স্বযুক্তি ভাষ্যে উন্মোচিত করেছে অর্জুনের চরিত্র। কেবল আক্রোশ প্রকাশ নয় তিনি দৃষ্টান্তসহ তুলে ধরেছেন অর্জুনের হীন চরিত্র, জঘন্য মানসিকতা, ঘৃণ্য আচরণ এবং কাপুরুষতাকে। পাষন্ড পান্ডুরথী পার্থ সম্পর্কে তিনি প্রথমেই বলেছেন - ভোজবালা স্বৈরিণী কুন্তির জারজ সন্তান অর্জুন।

দ্বিতীয়ত, স্বয়ংবর সভায় ব্রাহ্মণের ছদ্মবেশ ধারণ করে সে লক্ষ ক্ষত্রিয় রাজাদের ছলনা করেছে এবং ব্রাহ্মণ বিবেচনায় ক্ষত্ররাজারা তার সঙ্গে যুদ্ধ না করার সুযোগ নিয়েই সে স্বয়ংবরে বিজয়ী হয়েছে। 

তৃতীয়ত, খান্ডব দহন করে দেবতা অগ্নির ক্ষুধামান্দ্য বা অগ্নিমান্দ্য রোগ দূর করে অর্জুন যশোলাভ করেন এবং দেবতাদের আশিষ ও অস্ত্রশস্ত্র পান। কিন্তু এ কাজ তিনি করতে সক্ষম হন কৃষ্ণর কৃপা ও সাহচর্যে। অতএব খান্ডবহনজনিত অর্জুন গৌরব প্রকৃত গৌরব প্রকৃত গৌরব নয়।

চতুর্থত, পিতামহ ভীষ্মকে অর্জুন হত্যা করেছে নপুংসক শিখন্ডীর সহায়তায় আত্মরক্ষা করে। এ কর্ম কখনই প্রকৃত বীরোচিত নয়।

পঞ্চমত, গুরু দ্রোণকে হত্যা করার ঘটনাটি আরও নিন্দনীয়। মিথ্যা বচনে অস্ত্রত্যাগী যোদ্ধাকে হত্যা করেছে অর্জুন। এ আচরণ প্রামান করে সে নরাধম।

 


Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url