লােককথার বিভিন্ন কাহিনিগুলির উদাহরণ দাও। লােককথার গুরুত্বগুলি লেখাে।
লােককথার গুরুত্ব
প্রিয় বন্ধুরা
আজকে লােককথার বিভিন্ন কাহিনিগুলির উদাহরণ সম্পর্কে সংক্ষেপে আলোচনা করব|লােককথার গুরুত্বগুলি লেখাে।|দ্বাদশ শ্রেনী ইতিহাসস প্রথম অধ্যায়|অতীত স্মরন|4 নম্বরের প্রশ্ন ও উত্তর|8 নম্বরের প্রশ্ন ও উত্তর|তোমরা West Bengal Class 12 History পেয়ে যাবে|দ্বাদশ শ্রেণীর ইতিহাস প্রশ্ন ও উত্তর|দ্বাদশ শ্রেণির ইতিহাস প্রশ্ন উত্তর|Class 12 History 1st chapter Suggestion WBBSE|উচ্চমাধ্যমিক ইতহাস প্রশ্নোত্তর|West Bengal Class Ten|Class XII History Question and Answer|itihas proshno uttor|Class 12 History 1st chapter Notes WBBSE|
এছাড়াও তোমরা পাবে দ্বাদশ শ্রেণী প্রথম অধ্যায় অতীত স্মরন থেকে বহুবিকল্প ভিত্তিক সংক্ষিপ্ত অতিসংক্ষিপ্ত এবং রচনাধর্মী প্রশ্ন উত্তর|পশ্চিমবঙ্গ দশম শ্রেণীতে পড়াশুনা করছো তাদের ইতিহাস পরীক্ষার জন্য এই 4 নম্বরের প্রশ্নগুলি খুবই গুরুত্বপূর্ন
বিভিন্ন দেশের লােককথার প্রচলিত কাহিনিগুলি হল—
(i) বিভিন্ন লােককথা:- জনশ্রুতির যে কাহিনিগুলি কাল্পনিক গল্পকথা এবং একপ্রকারের ঐতিহ্যবাহী সাহিত্য, যেগুলির সাহায্যে প্রাকৃতিক ও আধ্যাত্মিক ঘটনার ব্যাখ্যা দেওয়া হয়, সেই জনশ্রুতির কাহিনিগুলিকে লােককথা বলা হয়। প্রথমে লােককথার কাহিনিগুলি লিখিত ছিল না। আধুনিক যুগে অথাৎ বর্তমান যুগের লেখকগণ বিভিন্ন লােককথার কাহিনিগুলি সংগ্রহ করে বইয়ের আকারে প্রকাশ করেন। এর ফলে বিভিন্ন দেশের লােককথা সম্পর্কে মানুষ সহজে জানতে পারে।
(ii) পঞতন্ত্রের গল্প:- ভারতীয় লােককথাগুলির মধ্যে অন্যতম হল পতন্ত্রের গল্প। খ্রিস্টপূর্ব দ্বিতীয় শতকে বিয়ুশমা নামক এক পণ্ডিত এই গল্পগুলি রচনা করেন। এক রাজার তিনজন পুত্র ছিল। রাজার প্রচুর ধনরত্ন থাকলেও মনে কোনাে শান্তি ছিল না। কারণ তাঁর পুত্ররা ছিল মহামূখ। রাজার দুঃখ দূর করার জন্য পণ্ডিত বিষ্ণুশর্মা এগিয়ে আসেন। তিনি রাজপুত্রদের শিক্ষার দায়িত্ব নেন। তিনি ছােটো ছােটো গল্পের মাধ্যমে রাজপুত্রদের শিক্ষিত করে তােলেন। রাজপুত্ররা রাজ্যের শাসন পরিচালনার উপযুক্ত হয়ে ওঠে।
(iii) সাতভাই চম্পা:- ঠাকুরমার ঝুলি’ নামে লােককথার গ্রন্থটি প্রকাশ করেন 1907 খ্রিস্টাব্দে দক্ষিণারঞ্জন মিত্র মজুমদার। ঠাকুরমার ঝুলি’ গ্রন্থটির জনপ্রিয় গল্প হল ‘সাতভাই চম্পা। এই গল্পে কাহিনিটি হল— এক রাজার তিন রানির কোনাে সন্তান ছিল না। পরে ছােটো রানির সাতটি পুত্র ও একটি কন্যার জন্ম হয়। কিন্তু রাজার অন্য রানিরা রাজার অলক্ষ্যে শিশুগুলিকে মাটিতে পুঁতে দেয় এবং রাজাকে গিয়ে তারা জানায় ছােটো রানি সাতটি ব্যাং ও একটি ইঁদুরের জন্ম দিয়েছে। রাজা এই খবর শুনে ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। ছােটো রানিকে প্রাসাদ থেকে তাড়িয়ে দেন। পরে রাজা যখন সত্য কথা জানতে পারেন, তখন তিনি অন্যান্য রানিদের প্রাসাদ থেকে তাড়িয়ে দেন, সাত পুত্র ও কন্যাকেও ফিরে পান। তিনি ছােটো রানি ও তাঁর পুত্র-কন্যাদের প্রাসাদে নিয়ে আসেন।
(iv) টম থাম্ব ও দৈত্য:- ইউরােপের বহুল। প্রচলিত লােককাহিনিগুলির মধ্যে অন্যতম হল টম থাম্ব ও দৈত্যের কাহিনি। এই কাহিনিটি 1621 খ্রিস্টাব্দে রিচার্ড জনসন ইংরেজি ভাষায় প্রথম প্রকাশ করেন। এটি ইংরেজি ভাষায় প্রথম মুদ্রিত লােককথা। এই কাহিনিটি হল— টম থাম্ব তার বাবার বুড়াে আঙুলের থেকেও ছােটো। এত ছােটো হওয়ার জন্য গরুও তাকে অতি সহজে গিলে খেতে পারে। এক রাক্ষস টম থাম্বকে গিলে খেয়ে নেয়। কিন্তু রাক্ষস তাকে হজম করতে না পেরে সমুদ্রের জলের ওপর বমি করে উগরে দেয়। এরপর টমকে সমুদ্রের একটি মাছ খেয়ে ফেলে। ঘটনাচক্রে জেলেরা সেই মাছটি ধরে কিং লীয়ারের খাবারের জন্য রাজপ্রাসাদে নিয়ে যায়। মাছটি কাটতেই টম থাম্ব বেরিয়ে আসে। এরপর টম থাম্ব রাজপ্রাসাদে থাকতে থাকতে রাজার অত্যন্ত প্রিয় পাত্র হয়ে ওঠে।
(v) বুড়াে আংলা:- টম্ব থাম্বের গল্পের অনুকরণে অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর বাংলা ভাষায় রচনা করেন বুড়াে আংলা'। বুড়াে আঙুলের মতাে আংলা হাঁসের পিঠে চড়ে সারা দেশে ঘুরে বেড়ায়। দেশের পরিচয় তুলে ধরে।
(vi) আলিবাবা ও চল্লিশ চোর:- ‘আরব্য রজনীর অন্যতম লােককথা হল ‘আলিবাবা ও চল্লিশ চোর’। এই কাহিনি অনুসারে আলিকে ঠকিয়ে কাশেম তার সব বিষয়সম্পত্তি কেড়ে নেয়। জঙ্গল থেকে কাঠ এনে বিক্রি করে সংসার চালায় আলি। একদিন আলিবাবা জঙ্গলে দূর থেকে দেখে চল্লিশ জ চোর। ‘চিচিং ফাক’ বলতেই গুহার দরজার পাথর সরে গেল। তারা গুহার ভিতরে ঢুকে গেল, তারপর গুহা থেকে বেরিয়ে ‘চিচিং বন্ধ’ বলতেই গুহার দরজা বন্ধ হয়ে গেল। চোরেরা চলে গেলে আলিবাবা চিচিং ফাক বলে গুহাতে ঢুকে প্রচুর ধনরত্ন নিয়ে ফিরে আসে। এই কথা শুনে তার ভাই কাশেম ‘চিচিং ফাক’ বলে গুহার ভিতরে ঢুকে পড়ে প্রচুর ধনরত্ন নেয় কিন্তু ‘চিচিং বন্ধ’ কথাটি ভুলে যায়, ফলে সে গুহা থেকে বের হতে পারেনি। পরে চোরেরা এসে কাশেমকে হত্যা করে।
লােককথার গুরুত্ব
লােককথায় কাহিনিগুলি কাল্পনিক ক্ষেত্রে গল্পকথা। ইতিহাস নির্ভর না হলেও ইতিহাস জানার লােককথার কাহিনিগুলির বিশেষ গুরুত্ব লক্ষণীয়।
(i) অর্থনৈতিক ইতিহাস:- লােককথায় কল্পনার আধিক্য থাকলেও এই কাহিনিগুলি থেকে সেই সময়ের সমাজ ও অর্থনীতির কথা জানা যায়। যেমন মনসামঙ্গল থেকে আমরা বাংলার বণিকদের নদী ও সমুদ্রপথে দূরদেশে বাণিজ্যের কথা” জানতে পারি।
(ii) সমাজ ও সংস্কৃতির পরিচয়:- লােককাহিনি যে দেশের কাহিনিগুলি সেই দেশের সামাজিক ও সংস্কৃতির চিত্র তুলে ধরে। তাই লােককথার কাহিনি থেকে আমরা অতীতকালের সামাজিক, সাংস্কৃতিক, ধর্মীয় জীবনের কথা জানতে পারি।
(iii) শিক্ষাদান:- লােককথার কাহিনিগুলি মানুষকে যথাযথ ভাবে শিক্ষিত করে তােলে। এই কারণে বিখ্যাঁত বিজ্ঞানী আইনস্টাইন শিশুদের আরও বুদ্ধিমান করে তােলার জন্য পিতামাতাকে শিশুর হাতে লােককথার গ্রন্থ তুলে দেওয়ার পরামর্শ দেন।
(iv) বিনােদন:- লােককথার কাহিনিগুলি যুগের পর যুগ ধরে মানুষকে আনন্দ দান করেছে। যখন টেলিভিশনে সিনেমা বা অন্যান্য বিনােদনের মাধ্যমগুলির প্রসার ঘটেনি তখন লােককথার কাহিনিগুলি মানুষের প্রধান বিনােদন ছিল।
মূল্যায়ন:- লােককথায় অনেক কাল্পনিক কাহিনি থাকে। যেহেতু কাহিনিগুলির কোনাে ঐতিহাসিক বা বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই সেহেতু লােককথার আজব কাহিনির ওপর ভিত্তি করে লেখা ইতিহাস ভ্রান্তপথে পরিচালিত হতে পারে।
File Details |
|
File Name/Book Name | লােককথার বিভিন্ন কাহিনিগুলির উদাহরণ দাও। লােককথার গুরুত্বগুলি লেখাে। |
File Format | PDF |
File Language | Bengali |
File Size | 70 KB |
File Location | GOOGLE DRIVE |
Download Link |