ত্রিশক্তি সংগ্রাম কি?|ত্রিশক্তি সংগ্রাম কাদের মধ্যে হয়েছিল?| এই সংগ্রামের মূল কারণ কি ছিল| ত্রিশক্তি সংগ্রাম এর কারণ ও ফলাফল আলোচনা করো

ত্রিশক্তি সংগ্রাম কি?|ত্রিশক্তি দ্বন্দ্ব কি?ত্রিশক্তি সংগ্রাম কাদের মধ্যে হয়েছিল এই সংগ্রামের মূল কারণ কি ছিল|ত্রিশক্তি সংগ্রাম কি?ত্রিশক্তি সংগ্রাম এর কারণ ও ফলাফল আলোচনা করো 

ত্রিশক্তি সংগ্রাম কি?ত্রিশক্তি সংগ্রাম এর কারণ

ত্রিশক্তি দ্বন্দ্ব কি?ত্রিশক্তি সংগ্রাম কাদের মধ্যে হয়েছিল এই সংগ্রামের মূল কারণ কি ছিল|ত্রিশক্তি সংগ্রাম কি? ত্রিশক্তি সংগ্রাম এর কারণ ও ফলাফল আজকের আলোচ্য বিষয়। তো বন্ধুরা আজকে তোমরা এই পোষ্টের মাধ্যমে যে সমস্ত প্রশ্নগুলির উত্তর পাবে সেগুলি হল- ত্রিশক্তি সংগ্রাম কি?|ত্রিশক্তি সংগ্রাম কত বছর চলেছিল?|ত্রিশক্তি সংগ্রাম এর মূল কারণ কি?| ত্রিশক্তি সংগ্রাম কোন স্থানকে কেন্দ্র করে ঘটে?|ত্রিপাক্ষিক সংগ্রাম এর কারণ ও ফলাফল ?|ত্রিশক্তি সংগ্রাম এর কারণ ও ফলাফল|ত্রিশক্তি সংগ্রাম এর প্রধান তিনটি শক্তি কারা ছিল ?

ত্রিশক্তি সংগ্রাম কি?|ত্রিশক্তি দ্বন্দ্ব কি?|ত্রিপাক্ষিক সংগ্রাম

উত্তরঃ- প্রাচীন ভারতের ত্রিশক্তি সংগ্রামের তিনটি শক্তি হল- বাংলার পাল পশ্চিম ভারতের গুর্জর-প্রতিহার ও দক্ষিণ ভারতের রাষ্ট্রকূট শক্তি। এই তিনটি শক্তি প্রায় দুশো বছর ব্যাপি কৌনজ দখলকে কেন্দ্র করে সংগ্রামে লিপ্ত হয়েছিল ত্রিশক্তি সংগ্রাম নামে পরিচিত।

ত্রিশক্তি সংগ্রাম এর মূল কারণ কি?|ত্রিপাক্ষিক সংগ্রাম এর কারণ|ত্রিশক্তি সংগ্রাম এর কারণ 

ত্রিশক্তি দ্বন্দ্বের কারণ:- কনৌজ দখলের জন্য পাল, গুর্জর-প্রতিহার এবং রাষ্ট্রকূট বংশের রাজাদের মধ্যে ত্রিশক্তি সংগ্রাম হয়েছিল। এই সংগ্রামের কারণগুলি হল—

১) সম্রাট হর্ষবর্ধনের রাজত্বকালে তার রাজধানী কনৌজ মহােদয়শ্রী’ বা শ্রেষ্ঠনগরীর মর্যাদা লাভ করেছিল। হর্ষবর্ধনের পরবর্তীকালে রাজনৈতিক গুরুত্ব বৃদ্ধি পায়।কৌনজ সাম্রাজ্যবাদের প্রতীকে পরিণত হয়। সেই সময় বোঝা গিয়েছিল যে কোন কনৌজ দখল করবে সেই গাঙ্গেয় উপত্যকা দখলে রাখতে পারবে।

 

২) গুপ্ত সাম্রাজ্যের আগে প্রাচীন ভারতে মগধের যে মর্যাদা ছিল হর্ষবর্ধনের পতনের পর কনৌজ সেই গুরুত্ব লাভ করে। হর্ষ-পরবর্তী যুগে উত্তর ভারতের বা দক্ষিণ ভারতের সম্রাটদের কাছে কনৌজ দখল করা ছিল মর্যাদার প্রতীক।

৩) কনৌজ অঞ্চলের নদীভিত্তিক বাণিজ্য এবং খনিজ দ্রব্য ভারতীয় রাজাদের কাছে লােভনীয় ছিল। তাছাড়া কনৌজ ছিল গাঙ্গেয় উপত্যকার কৃষি সম্পদে সমৃদ্ধ অঞ্চল। কনৌজের ভালাে অর্থনৈতিক অবস্থা ভারতীয় রাজাদের প্রলুদ্ধ করে।

 

ত্রিশক্তি সংগ্রাম এর ফলাফল আলোচনা করো | ত্রিপাক্ষিক সংগ্রাম এর কারণ ও ফলাফল 

ত্রিশক্তি সংগ্রামের ফল:- প্রায় দুশাে বছর ধরে চলা ত্রিশক্তি সংগ্রামের ফল ছিল সুদূরপ্রসারী। 

প্রথমত ত্রিশক্তি সংগ্রামে পাল, প্রতিহার এবং রাষ্ট্রকুটদের মধ্যে কেউই স্থায়ীভাবে কনৌজের উপর আধিপত্য প্রতিষ্ঠা করতে পারেনি।

দ্বিতীয়ত, দীর্ঘকাল যুদ্ধ করার ফলে প্রতিটি রাজ্যের সামন্তরাজারা স্বাধীনতাকামী হয়ে ওঠে।

পরিশেষে বলা যায়, সামরিকঅবক্ষয়, অর্থনৈতিকদুর্বলতা, সামন্তরাজাদের বিদ্রোহ এবং সর্বোপরি ভারতের রাজনৈতিক অনৈক্য ভারতে বৈদেশিক আক্রমণের পথ সুপ্রশস্ত করে।

 

ত্রিশক্তি সংগ্রাম এর বৈশিষ্ট্য 

১) খ্রিস্টীয় অষ্টম ও নবম শতাব্দীর মধ্যবর্তী সময়কাল (৭৬০-৯৪৪ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে) প্রায় দুইশত বৎসরব্যাপী এই দ্বন্দ্ব চলেছিল।

২) পূর্ব ভারতের পাল বংশ, পশ্চিমভারত অর্থাৎ মালব রাজপুতানার প্রতিহারগণ এবং দক্ষিণ ভারতের রাষ্ট্রকূটগণ।

 

৩) ভৌগােলিক, অর্থনৈতিক, রাজনৈতিকও সামরিকদিক থেকে কনৌজছিল ভারতরেসর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র। কনৌজ দখলকে কেন্দ্র করে তিন শক্তির (পাল, প্ৰহিদর, রাষ্ট্রকূট) মধ্যে লড়াই সংঘটিত হয়।

 

ত্রিশক্তি সংগ্রাম এর বিভিন্ন পর্ব  ও সময়কাল 


• প্রথম পর্ব : পাল রাজা ধর্মপাল প্রতিহার রাজ বৎসরাজের কাছে পরাজিত হলে রাষ্ট্রকূট রাজা ধ্রুব বৎসকে আক্রমণ করেন। বৎস পরাজিত হয়ে রাজপুতানায় এবং ধ্রুব দক্ষিণ ভারতে ফিরে গেলে ধর্মপাল কনৌজের উপর নিজের কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করেন। :

 

• দ্বিতীয় পর্ব : পরবর্তী প্রতিহার রাজ দ্বিতীয় নাগভট্ট পুনরায় কনৌজ দখল করে নিলে এবং মুঙ্গেরের যুদ্ধে ধর্মপালকে পরাজিত করলে আবার ত্রিশক্তি সংঘর্ষ শুরু হয়। অবশ্য অল্প দিনের মধ্যেই রাষ্ট্রকূট রাজা তৃতীয় গােবিন্দ আক্রমণ করে দ্বিতীয় নাগভট্টকে পরাজিত ও বিতাড়িত করে দাক্ষিণাত্যে ফিরে গেলে উক্ত অঞ্চলে ধর্মপালের কর্তৃত্ব অব্যাহত থাকে।

 

• তৃতীয় পর্ব: প্রতিহার রাজ রামভদ্র এবং তার উত্তরাধিকারী মিহিরভােজবা প্রথমভােজ পালরাজা দেবপালের আমলে পাল প্রতিহার সংঘর্ষে শেষ পর্যন্ত দেবপাল প্রতিহারদের পরাজিতও বিতাড়িত করতে সক্ষম হন। রাষ্ট্রকূট রাজা প্রথম অমােঘবর্ষও তার কাছে পরাজিত হন। দেবপালের মৃত্যুর পর পালশক্তি দুর্বল হলে শেষ পর্যন্ত রাষ্ট্রকূটদের সাফল্যে ত্রিশক্তি যুদ্ধ সমাপ্ত হয়। 

 

ত্রিশক্তি সংগ্রাম এর পরিণতি 

 

(১) তিন শক্তিই আর্থিক দিক থেকে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছিল।

(২) এই পর্বে প্রত্যেকটি বংশেরই সামরিক শক্তি ভেঙে পড়েছিল, যার সুযােগ নিয়ে পরবর্তী সময়ে তুর্কীরা আক্রমণ করেছিল। 

(৩) এই সংঘর্ষে রাষ্ট্রীয় ঐক্য ধূলিসাৎ হয়ে গিয়েছিল। এর ফলে ছােটো ছােটো আলিকতার জন্ম হয়েছিল।

 

FAQ’s  (ত্রিশক্তি সংগ্রাম থেকে যে সমস্ত প্রশ্ন গুলি খুবই গুরুত্বপূর্ণ) 

 

১) ত্রিশক্তি সংগ্রাম কত বছর চলেছিল- 

উত্তরঃ- প্রায় দুশো বছর (200 বছর)


২) ত্রিশক্তি সংগ্রাম এর মূল কারণ কি-  

উত্তরঃ- ভৌগােলিক, অর্থনৈতিক, রাজনৈতিকও সামরিকদিক থেকে কনৌজ ছিল ভারতরেসর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র। 

কনৌজ দখলকে কেন্দ্র করে তিন শক্তির (পাল, প্ৰহিদর, রাষ্ট্রকূট) মধ্যে লড়াই সংঘটিত হয়।

 

৩) ত্রিশক্তি সংগ্রাম কোন স্থানকে কেন্দ্র করে ঘটে 

উত্তরঃ-  কনৌজ কেন্দ্র করে সংগ্রাম হয়েছিল 

 

৪) ত্রিশক্তি সংগ্রাম এর প্রধান তিনটি শক্তি কারা ছিল 

উত্তরঃ- পূর্ব ভারতের পাল বংশ, পশ্চিমভারত অর্থাৎ মালব রাজপুতানার প্রতিহারগণ এবং দক্ষিণ ভারতের রাষ্ট্রকূটগণ।


File Details
File Name/Book Name ত্রিশক্তি সংগ্রাম কি
File Format PDF
File Language Bengali
File Size 108 KB
File Location GOOGLE DRIVE
Download Link Click Here to Download



Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url