সপ্তম শ্রেনী ইতিহাস|চতুর্থ অধ্যায়|৩ নম্বরের প্রশ্ন ও উত্তর|মুঘল সাম্রাজ্য
প্রিয় বন্ধুরা
সপ্তম শ্রেনী ইতিহাস|চতুর্থ অধ্যায়|৩ নম্বরের প্রশ্ন ও উত্তর|মুঘল সাম্রাজ্য আজকে আলোচনা করব |তোমরা West Bengal Class 7 History পেয়ে যাবে |সপ্তম শ্রেণীর ইতিহাস প্রশ্ন ও উত্তর|Class 7 History 4th chapter Suggestion WBBSE|ইতহাস প্রশ্নোত্তর| West Bengal Class Seven|Class 7 History Question and Answer|itihas proshno uttor| Class 7 History 4th chapter Notes WBBSE|ইতিহাস মক টেস্ট|History Mock Test
এছাড়াও তোমরা পাবে সপ্তম শ্রেণী চতুর্থ অধ্যায় মুঘল সাম্রাজ্য থেকে বহুবিকল্প ভিত্তিক সংক্ষিপ্ত অতিসংক্ষিপ্ত এবং রচনাধর্মী প্রশ্ন উত্তর|MCQ Very Short Question Short Questions Descriptive Question and Answer এগুলি তোমরা যারা পশ্চিমবঙ্গের VII History Examination এর জন্য পরিক্ষা দিতে যাচ্ছ অথবা পশ্চিমবঙ্গ সপ্তম শ্রেণীতে পড়াশুনা করছো তাদের ইতিহাস পরীক্ষার জন্য এই ৩ নম্বরের প্রশ্নগুলি খুবই গুরুত্বপূর্ন এবং তোমরা যারা সপ্তম শ্রেণী ইতিহাস (মুঘল সাম্রাজ্য) ৩ নম্বরের প্রশ্ন এবং উত্তর চাইছো, তারা নীচের দেওয়া প্রশ্নউত্তর গুলি ভালো করে পড়ে নিতে পারবে।
সপ্তম শ্রেনী ইতিহাস|চতুর্থ অধ্যায়|৩ নম্বরের প্রশ্ন ও উত্তর|মুঘল সাম্রাজ্য
1. তৈমুর লঙ কে ছিলেন ?
অথবা,
তৈমুর লঙ এর পরিচয় দাও:
উঃ- তৈমুর লঙ ছিলেন একজন তুর্কি নেতা। আরও বলা ভালো যে, তিনি ছিলেন
চাঘতাই তুর্কি নেতা। যুদ্ধ করতে গিয়ে তাঁর একটি পা লঙ বা খোঁড়া হয়ে যায়। এজন্য
তাঁকে বলা হয় তৈমুর লঙ।
2. পানিপতের প্রথম যুদ্ধের গুরুত্ব লেখো।
উঃ- পানিপতের প্রথম যুদ্ধ মধ্যযুগীয় ভারতের ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ
ঘটনা, কারণ—
i. লোদির পরাজয় ও মৃত্যু: ১৫২৬ খ্রিস্টাব্দে সংঘটিত পানিপতের প্রথম
যুদ্ধে বাবর সুলতানি যুগের শেষ সুলতান ইব্রাহিম লোদিকে পরাজিত ও নিহত করেন।
ii. সুলতানি শাসনের অবসান: ইব্রাহিম লোদির মৃত্যুর সঙ্গে সঙ্গেই প্রায়
৩২০ বছরের সুলতানি শাসনের অবসান হয়।
iii. আফগানদের দুর্বলতা: ইব্রাহিম লোদির মৃত্যুর ফলে ভারতে আফগানগণ দুর্বল
হয়ে পড়ে।
iv. প্রথম আগ্নেয়াস্ত্রের ইতিহাসে বাবর প্রথম কামান ও বন্দুকের ব্যবহার করেন।
v. মোগল সাম্রাজ্যের সূচনা: সুলতানি সাম্রাজ্যের পতনের সঙ্গে সঙ্গে ভারতে দিল্লিকেন্দ্রিক মোগল সাম্রাজ্যের সূচনা হয়। দিল্লি ও আগ্রায় মোগল আধিপত্য প্রতিষ্ঠিত হয়। তাই ঐতিহাসিক কালিকিঙ্কর দত্ত বলেছেন। পানিপতের যুদ্ধ ছিল ভারতে মোগল সাম্রাজ্য স্থাপনের প্রথম পদক্ষেপ বা সোপানমাত্র।
3. বাবর কীভাবে ভারতে মোগল সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠা করেন ?
উঃ- সুলতানি বংশের শেষ সুলতান ইব্রাহিম লোদির অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে
পাঞ্জাবের শাসনকর্তা দৌলত খ। লোদি ও দিল্লির আলম খা লোদি কাবুল অধিপতি বাবরকে ভারত
আক্রমণের প্রস্তাব দেন। এই প্রস্তাবে সাড়া দিয়ে ১৫২৪ খ্রিস্টাব্দে তিনি প্রথম পাঞ্জাবের
লাহোর দখল করেন। কিন্তু সেবার দৌলত খাঁ লােদিরই বিরোধিতায় তিনি কাবুল ফিরে যান। কিন্তু
১৫২৬ খ্রিস্টাব্দে নিয়ে পুনরায় ভারত আক্রমণ করেন। তিনি দৌলত খাঁ লোদিকে পরাজিত করে
দিল্লি যাত্রা শুরু করেন এবং পানিপতের প্রথম যুদ্ধে ইব্রাহিম লােদিকে পরাজিত ও নিহত
করে দিল্লি স্থায়ীভাবে দখল করেন। ) এরপর ১৫২৭ খ্রিস্টাব্দে খানুয়ারের যুদ্ধে মেবারের
রানা
i. ১৫২৯ খ্রিস্টাব্দে ঘর্ঘরার যুদ্ধে আফগান নেতা শের খাঁ ও অপরাজেয়
বিদ্রোহী নেতা নসরৎ শাহকে পরাজিত করে মোগল সাম্রাজ্যের ভিত্তি আরও মজবুত করেন।
4. বাবরের রণকৌশল সম্পর্কে কী জানা যায় ?
উঃ- মোগল বাদশাহ বাবরের রণকৌশল দু-ভাগে বিভক্ত ছিল। যথা—
i. কামান ও বন্দুকধারী সৈন্য এবং
ii.আক্রমনের কৌশল: এই দুই
বাহিনী, শত্রুপক্ষকে যৌথভাবে আক্রমণ করত।ঘোড়সওয়ার বাহিনীর একটি অংশ শত্রুপক্ষকে দু-পাশ
আর পিছন দিক দিয়ে আক্রমণ করত। অন্যদিকে কামান ও বন্দুকধারী সৈন্যরা সামনে থেকে শত্রুপক্ষের
ওপর গোলা ও গুলিবর্ষণ করত।
আক্রমণের পরিণতি: একসঙ্গে দুই বাহিনীর আক্রমণে শত্রুপক্ষ দিশেহারা হয়ে
পড়ত, তখন বাকি ঘোড়সওয়ার বাহিনীর সৈন্যরা সামনে থেকে শত্রুপক্ষকে ছত্রভঙ্গ করে দিত।
এই রণকৌশল ব্যবহার করে বাবর পানিপতের প্রথম যুদ্ধ ও খানুয়ার যুদ্ধে জয়ী হন।
5. টীকা লেখো : খানুয়ার যুদ্ধ।
উঃ- ১৫২৭ খ্রিস্টাব্দে বাবরের সঙ্গে রানা সংগ্রাম সিংহের মধ্যে খানুয়ার
যুদ্ধ হয়েছিল। এই যুদ্ধে বাবর জয়লাভ করেন।
খানুয়ার যুদ্ধের ফলাফল
i. এই যুদ্ধের ফলে ভারতে মোগল সাম্রাজ্যের শাসন স্থায়ীভাবে প্রতিষ্ঠিত
হয়েছিল।
ii. রাজপুতদের পরাজয়ের ফলে তাদের ভারতশাসনের আশা বিলীন হয়ে যায়।
iii. বাবর কাবুল থেকে দিল্লিতে তাঁর রাজধানী স্থানান্তরিত করেন।
6. শেরশাহের ভূমিরাজস্ব ব্যবস্থার বৈশিষ্ট্যগুলি উল্লেখ করো।
উঃ- শেরশাহ তাঁর পাঁচ বছর রাজত্বকালে (১৫৪০-১৫৪৫ খ্রিস্টাব্দ) বেশ কিছু
গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার করেছিলেন, যার মধ্যে ভূমিরাজস্ব ব্যবস্থা উল্লেখযোগ্য।
শেরশাহের ভূমিরাজস্ব ব্যবস্থার বৈশিষ্ট্য
i. শেরশাহ তাঁর সাম্রাজ্যের সমস্ত জমি জরিপের ব্যবস্থা করেন।
ii. জমিতে উৎপন্ন ফসলের ১/৩ অথবা ১/৪ অংশ হিসেবে কৃষকদের কাছ থেকে রাজস্ব
আদায়ের ব্যবস্থা করেন। তবে এক্ষেত্রে জমির উর্বরতার ওপর তিনি বেশি নজর দিতেন।
iii. তিনি জমির ওপর কৃষকের স্বত্ব মেনে নিয়ে কৃষকের
নাম, কত রাজস্ব দিতে হবে, তার অধিকার ইত্যাদি লেখা পাট্টা নামক একটি
দলিল বিলি করার ব্যবস্থা করেন এবং তার বদলে কৃষকরা কী পরিমাণ রাজস্ব দেবে তা কবুল করে
কবুলিয়ত নামে একটি দলিল গ্রহণের ব্যবস্থা করেন।
iv. অতিবৃষ্টি অথবা অনাবৃষ্টিতে ফসলের ক্ষতি হলে ভূমিরাজস্ব মকুবের
ব্যবস্থাও তিনি নেন।
7. শেরশাহের জনকল্যাণমূলক কাজের পরিচয় দাও।
উঃ- শুধু রাজ্য বিজেতা নন; সুশাসক, সংস্কারক ও প্রজাহিতৈষণার জন্য শেরশাহ
মধ্যযুগীয় ভারতের ইতিহাসের পাতায় চিরস্মরণীয় হয়ে আছেন। & শেরশাহের প্রজাহিতৈষী
সংস্কার
i.যেগাযোগ ব্যবস্থা: দ্রুত যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে তোলার জন্য শেরশাহ
চারটি প্রধান সড়ক নির্মাণ করেন। এদের মধ্যে অন্যতম বর্তমান গ্র্যান্ড ট্রাঙ্ক রোড'
(সড়ক-ই-আজম)।
ii. ডাক ব্যবস্থা: দারোগা-ই-ডাক চৌকির মাধ্যমে দ্রুত খবরাখবর আদানপ্রদানের
জন্য তিনিই সর্বপ্রথম ঘোড়ার পিঠে ডাক পাঠানোর ব্যবস্থা করেন।
iii. জনকল্যাণমূলক কর্মসূচি: ব্যবসায়ী ও পথিকদের বিশ্রামের সুবিধার
জন্য তিনি রাস্তার দুধারে সরাইখানা, বৃক্ষরোপণ ও কূপ খনন করে প্রজাহিতৈষণার পরিচয়
দেন।
iv.পণ্ডিতদের প্রশংসা: শেরশাহের ঐতিহাসিক আব্বাস খান শেরওয়ানির মতে,
সরাইখানাগুলিতে উপযুক্ত খাদ্য ও বিশ্রামের ব্যবস্থা ছিল প্রশংসনীয়।
v. অন্যান্য কর্মচারী: এ ছাড়া গড়ে তোলেন গুপ্তচর বাহিনী এবং মহাতাসিব
নামক একশ্রেণির কর্মচারী। মহাতাসিবদের কাজ ছিল জনগণের নৈতিকমান ও মূল্যবোধের প্রতি
নজর রাখা।
মন্তব্য: সেজন্য ঐতিহাসিক উইলিয়াম আরস্কিন বলেছেন যে, “শেরশাহের মত
এমন কর্মবীর শাসক এবং প্রজাদের অভিভাবক আকবরের আগে আর কেউ ছিলেন না।”
8. শেরশাহ যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতির জন্য কী কী পদক্ষেপ গ্রহণ করেন ?
উঃ- শেরশাহ যোগাযোগ ব্যবস্থার
উন্নতি ঘটাতে সড়কপথের উন্নতি করেন। এক্ষেত্রে তিনি কয়েকটি সড়ক নির্মাণ করেন। যেমন—
i. পশ্চিমের পেশোয়ার পর্যন্ত বিস্তৃত একটি সড়ক, যার নাম ছিল সড়ক-ইআজম।
এই রাস্তাই পরবর্তীকালে গ্র্যান্ড ট্রাঙ্ক রোড (GT Road) নামে খ্যাত।
ii. এ ছাড়া আগ্রা থেকে যোধপুর, আগ্রা থেকে চিতোর, আগ্রা থেকে বুরহানপুর, লাহাের থেকে মুলতান প্রভৃতি রাস্তাগুলিও এইসময় তৈরি হয়েছিল।
9. টীকা লেখো : হলদিঘাটির যুদ্ধ।
উঃ- ১৫৭৬ খ্রিস্টাব্দে হলদিঘাটির যুদ্ধে বাদশাহ আকবরের সেনাপতি মানসিংহ
ও আসফ খাঁ মেবারের রানা প্রতাপ সিংহকে পরাজিত করেন। এই যুদ্ধে রানা প্রতাপ সিংহ অসাধারণ
বীরত্ব ও দেশপ্রেমের আদর্শ স্থাপন করেছিলেন।
হলদি ঘাটির যুদ্ধ ও ফলাফল
এই যুদ্ধে
i. রানা প্রতাপ সিংহের প্রায় চোদ্দো হাজার সৈন্য মারা যান।
ii. রাজপুত জাতির গৌরব লুণ্ঠিত হয়। আকবরের প্রধান সেনাপতি মানসিংহও
একজন রাজপুত ছিলেন অর্থাৎ মোগলদের বিরুদ্ধে রাজপুত শক্তি মিলিত হয়ে লড়াই করেনি।
iii. ভারতের রাজপুতানা অঞ্চলে মোগলদের আধিপত্য সুদৃঢ় হয়।
10. শেরশাহের কেন্দ্রীয় ও প্রাদেশিক শাসনব্যবস্থা সম্পর্কে যা জানো লেখো।
উঃ- শেরশাহের কেন্দ্রীয় ও প্রাদেশিক শাসনব্যবস্থা ছিল নিম্নরূপ:
কেন্দ্রীয় মন্ত্রী : সম্রাট স্বয়ং শাসনব্যবস্থার সর্বময় কর্তা ছিলেন
কিন্তু স্বেচ্ছাচারী ছিলেন না। তাঁকে সাহায্য করার জন্য কয়েকজন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী
ছিলেন, যথা-দেওয়ান-ই-উজিরাৎ (প্রধানমন্ত্রী), দেওয়ানই-আর্জ (রাজস্ব মন্ত্রী), দেওয়ান-ই-ইনসা
সমরমন্ত্রী দেওয়ান-ই-কাজি (প্রধান বিচারপতি) এবং দেওয়ানই-বারিদ (গুপ্তচর বিভাগের
প্রধান)।
শাসক: শাসনকার্যের সুবিধার জন্য দের শাহ সমগ্র প্রদেশ ৪৭টি সরকার,
সরকারগুলি পরগনা, বিভক্ত করেন এগুলি আবার গ্রামে বিভক্ত ছিল। প্রত্যেক সরকার দেখাশোনা
করতেন শিকদার-ই-শিকদার (আইনশৃঙ্খলা বিভাগীয়) ও মুনসেফ-ই-মুনসেকান (দেওয়ানি মামলা
ও জমিজরিপ বিভাগীয়)। পরগনর দায়িত্বশীল কর্মচারীগণ ছিলেন শিকদার, মুনসেফ, আমিন, কানুনগো,
কারকুন, চৌধুরী, পাটোয়ারি প্রমুখ। শিকদার ছিলেন পরগনার প্রধান সামরিক কর্তা। মুনসেফের
কাজ ছিল রাজস্ব আদায় ও জমি সংক্রান্ত বিরোধের বিচার করা। আমিন জমি জরিপ তেল এবং কানুনগো
জমি ও রাজস্বের হিসাব রাখতেন গ্রামের শাসনভার ন্যস্ত ছিল গ্রাম পঞ্জুয়েতের ওপর।
11. শেরশাহের ভূমিরাজস্ব নীতি সম্পর্কে কী জানো ?
উঃ- শেরশাহ তাঁর সাম্রাজ্যে এক উন্নত রাজস্ব নীতি প্রবর্তন করেন, যেমন—
i. জমি জরিপ : মোগল রাজত্বকালে
শেরশাহ প্রথম জমি জরিপ বা মাপের ব্যবস্থা করেন। জমির উর্বরতার ভিত্তিতে তিনি রাজস্ব
আদায় করতেন। তার পরিমাণ ছিল ১/৩ বা ১/৪ অংশ।
ii. পাট্টাব্যবস্থা: রাজস্ব দু-ভাগে দেওয়া যেত, নগদে অথবা শস্য দ্বারা।
রাজস্ব ব্যবস্থা সহজ করার জন্য তিনি পাট্টা ও কবুলিয়ত প্রথা চালু করেন। পাট্টা থাকত
প্রজার কাছে। আর কী পরিমাণ রাজস্ব ও কবে দেওয়া হয়েছে তার বিবরণ সম্বলিত কবুলিয়ত
থাকত সরকারের কাছে।
iii. অন্যান্য ব্যবস্থা : তিনি জায়গিরদারদের নগদে বেতন দানের ব্যবস্থা
করেন। এর উদ্দেশ্য ছিল তাদের দুর্নীতি রোধ করা। এ ছাড়া খরা বা দুর্ভিক্ষের সময় তিনি
প্রজাদের সুবিধার জন্য কর মকুব বা ঋণদানের ব্যবস্থা করেন।
12. হুমায়ুন কীভাবে মোগল সাম্রাজ্য পুনঃপ্রতিষ্ঠা করেন ?
উঃ- ১৫৩০ খ্রিস্টাব্দে বাবরের মৃত্যুর পর মোগল সম্রাট হন হুমায়ুন।
কিন্তু শুরুতেই তাঁকে আফগানদের বিরোধিতার সম্মুখীন হতে হয়। ফলে শেরশাহ ৫ বছরের জন্য
দিল্লির মসনদ দখল করে রাখেন। যদিও তাঁর মৃত্যুর পর হুমায়ুন উদ্ধার করেন। হুমায়ুনের
মসনদ
i. পুর্ব ঘটনা: ইতিমধ্যেই হুমায়ুনের ভাই কামরান বিদ্রোহ করে পাঞ্জাবের
দখল নেন। গুজরাটের শাসক বাহাদুর শাহ এবং বিহারের আফগান নেতা শের খা মোগল কর্তৃত্বকে
অস্বীকার করেন। প্রাথমিকভাবে তিনি গুজরাট ও মালব দখল করলেও পূর্ব ভারতে তিনি শের খার
নিকট পরাস্ত হন। ১৫৩৯ খ্রিস্টাব্দে চৌসা ও ১৫৪০ খ্রিস্টাব্দে বিলগ্রামের যুদ্ধে পরাজিত
হয়ে হুমায়ুন কাবুলে পালিয়ে যান।
ii. মোগল আধিপত্য পুনঃপ্রতিষ্ঠা: ১৫৪৫ খ্রিস্টাব্দে শেরশাহের মৃত্যুর পর দিল্লিতে আফগানদের মধ্যে সিংহাসন নিয়ে দ্বন্দ্ব বেধে যায়। এই সুযোগে রাজ্যচ্যুত হুমায়ুন ১৫৫৫ খ্রিস্টাব্দে পুনরায় ভারত আক্রমণ করেন। তিনি একে একে লাহোর, দিল্লি, আগ্রা প্রভৃতি অঞ্চল পুনরুদ্ধার করেন এবং ভারতে মোগল শক্তি পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করেন।
13. আকবরের রাজপুত নীতি সম্পর্কে যা জানো লেখো।
উঃ- দূরদর্শী আকবর শক্তিশালী রাজপুতদের সঙ্গে সংঘর্ষের রাস্তায় না
গিয়ে মিত্রতা নীতি গ্রহণ করেন। কারণ তিনি বুঝেছিলেন ভারতবর্ষে মোগল আধিপত্য প্রতিষ্ঠা
করতে গেলে স্বাধীনচেতা রাজপুতদের সহযোগিতা ছাড়া সম্ভব নয়। এজন্য তিনি নিম্নলিখিত
রাজপুত নীতি গ্রহণ করেন।
সম্পর্ক স্থাপন: ১৫৬২ খ্রিস্টাব্দে আকবর অম্বরের রাজা বিহারিমলের কন্যা
যোধাবাঈকে হিন্দুমতে বিবাহ করেন। পরে তিনি বিকানীরের রাজকন্যাকে বিবাহ করেন এবং ভগবানদাসের
কন্যা মানবাঈয়ের সঙ্গে নিজপুত্র সেলিমের বিবাহ দেন।
i. মর্যাদা দান: তিনি তাঁর সেনাবাহিনী ও রাজদরবারে রাজপুতদের উচ্চপদে
নিয়োগ করেন। তিনি ভগবানদাস ও তাঁর পৌত্র মানসিংহকে রাজদরবারে উপযুক্ত সম্মান জ্ঞাপন
করেন। মোগলবাহিনীতে অর্ধেকের বেশি রাজপুত সৈন্য নয়োগ করেন।
ii. ধর্মীয় উদারতা: সম্রাট রাজপুতদের প্রতি বিশেষ ধর্মীয় উদারতা প্রদর্শন
করেন। তাদের ধর্মপালনে অবাধ স্বাধীনতা দেন। মন্দির নির্মাণ ও ধর্মীয় উৎসব। পালনের
ক্ষেত্রেও কোনো হস্তক্ষেপ করেননি। তিনি স্বয়ং উৎসবে অংশগ্রহণ করে রাজপুতদের সঙ্গে
আনন্দে মেতে উঠতেন। ফলে তাদের সম্পর্ক সুদৃঢ় হয়।
iii. যুদ্ধনীতি: মেবারের রানা প্রতাপ সিংহ মোগল শাসনের বিরোধিতা করেন।
আকবর তাঁর বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেন। রানা প্রতাপ সিংহ ১৫৭৬ খ্রিস্টাব্দে হলদিঘাটির
যুদ্ধে আকবরের কাছে পরাজিত হন।
File Details |
|
File Name/Book Name | সপ্তম শ্রেনী চতুর্থ অধ্যায় ৩ নম্বরের প্রশ্ন ও উত্তর |
File Format | PDF |
File Language | Bengali |
File Size | 139.6 KB |
File Location | GOOGLE DRIVE |
Download Link |