কারক বিভক্তি অনুসর্গ
কারক
বিভক্তি অনুসর্গ |
কারকঃ- বাক্যের মধ্যে যে ক্রিয়াপদের সঙ্গে বিশেষ্য বা সমপদের অন্বয় ৰা সম্বধকে কারক বলে। কারক ছয়প্রকার—(১) কর্তৃকারক (২) কর্মকারক (৩) করণকারক (৪) নিমিত্ত কর্মকারক (৫) অপাদানকারক ও (৬) অধিকরণকারক। |
কর্তৃকারকঃ- বাক্যমধ্যস্থ যে পদ ক্রিয়া সম্পাদন করে তাকে কর্তৃপদ বলে এবং ক্রিয়ার সঙ্গে তার যে সম্বন্ধ তাকে কর্তৃকারক বলে। যথা—রহিম বিদ্যালয়ে যায়—“রহিম' কর্তৃকারক নিমিত্ত কারক চেনার সহজ উপায়ঃ ‘কে’ বা ‘কারা’ দ্বারা ক্রিয়াকে প্রশ্ন করলে যে উত্তর হয় তা হল কর্তৃকারক। |
কর্মকারকঃ-যাকে আশ্রয় করে ক্রিয়ার কাজ সম্পাদিত হয়, তাকে কর্মকারক বলে। যথা—সে বই পড়ে। বই কর্মকারক। নিমিত্ত কারক চেনার সহজ উপায়ঃ ‘কী ‘দ্বারা ক্রিয়াকে প্রশ্ন করলে যে উত্তর হয় তা হল কর্মকারক। |
করণ কারকঃ- কর্তা
যার দ্বারা বা যার সাহায্যে
কোনো ক্রিয়া সম্পাদন করে, তাকে করণকারক
বলে। যথা সে কান দিয়ে শুনে। ছেলেরা ফুটবল খেলে।‘কান’ এবং ‘ফুটবল’ করণ কারক। কী দ্বারা প্রশ্ন করলে। নিমিত্ত কারক চেনার সহজ উপায়ঃ ‘কিসের দ্বারা’ বা ‘কি উপায়ে’ ক্রিয়াকে প্রশ্ন করলে যে উত্তর হয় তা হল করণ কারক। |
নিমিত্ত কারকঃ-যখন কোনো ব্যক্তি, প্রানী, বা বস্তুর নিমিত্ত বা অন্য কোনো
ক্রিয়া সম্পাদন করা হয়, তখন
যার নিমিত্ত করা হয়, তাকে
নিমিত্ত কারক বলে।
যথা—দেবতারে সমর্পিনু। যখন
কোনো ব্যক্তি, প্রাণী বা বস্তুর জন্য
বাক্যের কর্তা কোনো ক্রিয়া সম্পাদন
করে তখন যার জন্য
কাজটি করা হয় তাকে
নিমিত্তকারক বলে। যথা আমি লেখা পড়ার জন্য কলকাতায় এসেছি।‘লেখা পড়ার’ হল নিমিত্তকারক। নিমিত্ত কারক চেনার সহজ উপায়ঃ বাক্যের ক্রিয়াকে 'কী জন্যে' / 'কিসের
জন্যে' / কার জন্য / কার
তরে / কিসের নিমিত্ত দিয়ে প্রশ্ন করলে যে উত্তরটি
পাওয়া যায় সেটিই নিমিত্ত
কারক। |
অপাদান কারকঃ- যেকে কারকে কোন পদ চলতি, ভীত, পতিত, চ্যুত, রক্ষিত, বঞ্চিত, মুক্ত, গৃহীত, জাত ইত্যাদি ক্রিয়া সম্বন্ধ নিষ্পন্ন করে তাকে অপাদানকারক বলে। যথা—মেঘে বৃষ্টি হয়। বিপদে মোরে রক্ষা করো। চোখ দিয়ে জল
পড়ে। মেঘে, ‘বিপদে এবং চোখ অপাদানকারক। অপাদান কারক চেনার সহজ উপায়ঃ বাক্যের ক্রিয়াকে ‘থেকে’/‘হইতে’/দিয়া/নিকট/অপেক্ষা
দিয়ে প্রশ্ন করলে যে উত্তরটি পাওয়া যায় সেটিই অপাদান কারক। |
অধিকরণ কারকঃ- কোনো বাক্যে ক্রিয়ার আধারকে অধিকরণকারক বলে। যথা—বনে থাকে বাঘ। গাছে
থাকে পাখী। বনে
থাকে
বাঘ ‘বনে’ এবং ‘গাছে’ অধিকরণ কারক। অধিকরণ কারক চেনার সহজ উপায়ঃ বাক্যের ক্রিয়াকে ‘কোথায়’/ ‘কখন’/ কী বিষয়ে / দিয়ে প্রশ্ন করলে যে উত্তরটি পাওয়া যায় সেটিই অধিকরণ কারক। |
বিভক্তি : যে
বর্ণ বা বর্ণসমষ্টি শব্দের
সঙ্গে যুক্ত হয়ে শব্দকে পদে
পরিণত করে—অর্থাৎ শব্দকে
বাক্যে ব্যবহৃত হওয়ার যোগ্য করে তাহলে, তাকে বিভক্তি বলে। যথা—এ, কে, রে,
তে, এতে, য, র,
এর প্রভৃতি। বাক্যস্থিত
কোন পদে বিভক্তির চিহ্ন
অদৃশ্য থাকলে, তাকে শূন্য বিভক্তি
বলে। যথা-রাম ভাত খায়। এখানে
কর্তৃপদ ও কর্মপদ উভয়েই
শুন্য বিভক্তি হয়েছে বা ‘অ' বিভক্তি
হয়েছে। আবার- মেঘে বৃষ্টি হয়। এখানে মেঘে অপাদান কারক এবং বিভক্তি হলো ‘এ’ বিভক্তি |
অনুসর্গ : যে অব্যয়গুলি বিশেষ্যপদ বা সর্বনামপদের পরে বসে বিভক্তির কাজ করে, সেই অব্যয়গুলিকে অনুসর্গ বলে। যথা—হইতে, থেকে, চেয়ে, দ্বারা, দিয়া, কর্তৃক, জন্য, তরে, লাগি, নিমিত্ত, করে, বলে ইত্যাদি। |
।