ইংল্যান্ডে কেন প্রথম শিল্পবিপ্লব ঘটেছিল?
অথবা, শিল্পবিপ্লব ইংল্যান্ডে কেন প্রথম শুরু হয়, তার পক্ষে চারটি কারণ
উল্লেখ করো।
ইংল্যান্ডে শিল্পবিপ্লব |
ভূমিকাঃ- শিল্পবিপ্লব বলতে বোঝায় শিল্পের ক্ষেত্রে
ব্যাপক অগ্রগতি বা আমূল পরিবর্তন।ঐতিহাসিকদের মতে, 1760-1780 খ্রিস্টাব্দে ইংল্যান্ডে
শিল্পবিপ্লবের সূচনা হয়েছিল।অর্থাৎ পৃথিবীর অন্যান্য দেশের তুলনায় ইংল্যান্ডে প্রথম
শিল্পবিপ্লবের সূচনা হয়েছিল।
ইংল্যান্ডে
প্রথম শিল্পবিপ্লব ঘটার কারণঃ-
ইংল্যান্ডে সর্বপ্রথম শিল্পবিপ্লব হওয়ার ক্ষেত্রে একাধিক কারণ বিদ্যমান ছিল। শিল্পবিপ্লব
তথা শিল্পের প্রসারের জন্য যেসব উপকরণ বা পরিবেশের প্রয়োজন ছিল ইংল্যান্ডে সেগুলির
অভাব ছিল না। মহাদেশের মধ্যে ইংল্যান্ডেই প্রথম শিল্পবিপ্লব হওয়ার কারণগুলি হল নিম্নরূপ।
অনুকূল
পরিবেশঃ- ইংল্যান্ডের
ভৌগোলিক অবস্থান এবং সেখানকার সাতসেঁতে আবহাওয়ার নিরিখে জলবিদ্যুৎ উৎপাদনের সুবিধা,
বায়ুশক্তি ব্যবহারের সুযোগসহ কয়লা, লোহা প্রভৃতি খনিজ দ্রব্যের প্রাচুর্য সেখানে
শিল্প বিকাশের সহায়ক হয়েছিল। কাঁচামালের
জোগানঃ- অষ্টাদশ শতকে ইংল্যান্ডেকৃষিবিপ্লবের ফলে শিল্পের প্রয়োজনীয় প্রচুর কাঁচামাল
উৎপাদিত হতে থাকে।এ ছাড়া ইংল্যান্ড, ভারত ও আমেরিকা থেকে সস্তায় নিয়মিত শিল্পের
প্রয়োজনীয় কাঁচামাল সংগ্রহ করতে সক্ষম হয়। এক্ষেত্রে উল্লেখ্য, সমসাময়িক ইউরোপীয়
দেশগুলির তুলনায় ইংল্যান্ডে আমদানিকৃত কাঁচামালের পরিমাণ ছিল অনেক গুণ বেশি।
সুলভ
শ্রমিকঃ- অষ্টাদশ শতকে
ইংল্যান্ডে জনসংখ্যার বৃদ্ধির দরুন শ্রমিকের সংখ্যাও বৃদ্ধি পেয়েছিল। তাছাড়া কারখানায়
কাজ করার জন্য প্রচুর মানুষ গ্রাম থেকে শহরে আসতে থাকে। সেই কারণে সেই সময় ইংল্যান্ডে
খুব সহজে এবং কম মজুরিতে শ্রমিকের জোগান ছিল, যা শিল্পায়নের ক্ষেত্রে সহায়ক হয়েছিল।বাণিজ্য
করে এবং ভারত, আমেরিকা ইত্যাদি দেশ থেকে নানাভাবে শিল্পের প্রয়োজনীয় মূলধনের কোনো
অভাব হয়নি। সর্বোপরি মলধনের প্রাচর্য ইংল্যান্ডের ব্যবসায়ীরা এই সময় নানা দেশে ব্যাবসাবাণিজ্য
করে এবং ভারত, আমেরিকা অর্থ শোষণ করে ইংল্যান্ডের অর্থনীতিতে সমৃদ্ধ করেছিল, যার ফলে
ইংল্যান্ডেশিল্পের সায়মলধনের কোনো ইংল্যান্ডের জাতীয় ব্যাংক ব্যাংক অফ ইংল্যান্ড’
(Bank of England) শিল্পক্ষেত্রে পাচব খন দিয়ে শিল্পবিপ্লবে সাহায্য করে।
বিশ্বব্যাপী
বাজারঃ- এই সময় ইংল্যান্ডের
কৃষকদের আর্থিক সচ্ছলতা বৃদ্ধি পেলে তাদের শিল্পপণ্য কেনার ক্ষমতা বা
পেলে তাদের শিল্পপণ্য কেনার
ক্ষমতা বাড়ে। তাছাড়া ইংল্যান্ড নিজের দেশে বিক্রির পর তার উত্তশিল্পদ্রব্য বিভিন্ন
উপনিবেশের বাজারগুলিতে বিক্রির সযোগ পেয়েছিল। এই উপান
রগুলিতে বিক্রির সুযোগ পেয়েছিল।
এই উপনিবেশগুলি পরবর্তীকালে ইংল্যান্ডে উৎপাদিত শিল্পদ্রব্যের একচেটিয়া বাজারে পরিণত
হয়।
যোগাযোগ
ব্যবস্থার উন্নতিঃ- ইংল্যান্ডের
ভৌগোলিক অবস্থান, শক্তিশালী নৌবহর ইত্যাদি কারণও সেদেশে সর্বপ্রথম শিল্পাবন করেছিল।
ইংল্যান্ডের সুবিস্তৃত সমুদ্র উপকূল,উন্নত নৌশক্তি ও বন্দর প্রভৃতির ফলে শিল্প উৎপাদনের
জন্য প্রয়োজনীয় কাঁচামাল বিভিন্ন দেশ থেকে জলপথে সহজেই ইংল্যান্ডে আনা হত। আবার শিল্পোৎপাদিত
পণ্যসামগ্রী বোঝাই ব্রিটিশ জাহাজগুলি অনায়াসে সব দেশে যাতায়াত
করতে পারত। এ ছাড়া দেশের
অভ্যন্তরে খাল ও নদীপথে যোগাযোগ ও পণ্য পরিবহণের ব্যবস্থা ছিল যথেষ্ট উন্নত। বাণিজ্যের
গুরুত্ব বৃদ্ধিঃ- সপ্তদশ শতকের মধ্যেই ইংল্যান্ড কৃষিনির্ভর রাষ্ট্র থেকে বাণিজ্যনির্ভর
রাষ্ট্রে পরিণত হয়। বিদেশের সঙ্গে বাণিজ্যের ফলে ইংল্যান্ডের অর্থনীতি খুবই শক্তিশালী
হয়ে ওঠায় তারা শিল্প প্রতিষ্ঠায় বিপুল অর্থ বিনিয়োগের সুযোগ পায়।
বৈজ্ঞানিক
আবিষ্কারঃ- অষ্টাদশ শতাব্দীতে
ইংল্যান্ডে সর্বপ্রথম শিল্পবিপ্লব ঘটার ক্ষেত্রে শিল্প সহায়ক বিভিন্ন বৈজ্ঞানিক যন্ত্রের
আবিষ্কার ছিল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। স্পিনিং জেনি, উড়ন্ত মাকু, ওয়াটার ফ্রেম, মিউল,
পাওয়ার লুম, বাষ্পীয় ইঞ্জিন, নিরাপত্তা বাতি, ব্লাস্ট ফার্নেস প্রভৃতি আবিষ্কারের
ফলে বস্ত্রশিল্পের উন্নতির পাশাপাশি ইংল্যান্ডের কারখানায় উৎপাদন ব্যবস্থারও অগ্রগতি
ঘটে।
পোস্ট টি পড়ার জন্য ধন্যবাদ ভাল লেগে থাকলে অবশ্যই অন্যদের শেয়ার কর
England k kano Europe ar sikhok bola hoy?
উত্তরমুছুনইংল্যান্ডকে কেন ইউরোপের শিক্ষক বলা হয়? এই উত্তরের লিঙ্ক নিচে দেওয়া হল
উত্তরমুছুনhttps://history4u3.blogspot.com/2022/05/blog-post.html
সত্যি বলতে আমার কোনো ভাষাই খুঁজে পাচ্ছি না। অনেক অনেক ধন্যবাদ আপনাকে
উত্তরমুছুনThanks for your Google
উত্তরমুছুনb do
উত্তরমুছুন