প্রশ্ন-আনন্দমঠ উপন্যাসটি কিভাবে জাতীয়তাবাদী চেতনা
বিস্তারে সহায়তা করেছিল?
আনন্দমঠ উপন্যাস/ Anandamath |
ভূমিকা : পৃথিবীর যেকোন দেশে
স্বদেশপ্রেম ও জাতীয়তাবাদী ভাবধারা বিকাশের সঙ্গে সেই দেশের দেশাত্মবোধক ও জাতীয়তাবাদী সাহিত্যের সম্পর্ক অতি
ঘনিষ্ঠ। উনিশ শতকের দ্বিতীয়ার্ধে দেশাত্মবোধক
সাহিত্যের বিকাশ ভারত ইতিহাসের অন্যতম বৈশিষ্ট্য। যে সমস্ত মনীষীরা তাদের লেখার মাধ্যমে ভারতীয়দের
মধ্যে জাতীয়তাবোধের উন্মেষ ও প্রসার ঘটিয়েছিলেন তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল- বঙ্কিমচন্দ্র
চট্টোপাধ্যায এবং তার লেখা দেশাত্মবোধক উপন্যাস ‘আনন্দমঠ'।
আনন্দমঠ উপন্যাসের রচনা ও প্রকাশ:
রচনা : ‘আনন্দমঠ’ উপন্যাসের রচয়িতা হলেন সাহিত্যসম্রাট
বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়।
প্রকাশ : ‘আনন্দমঠ’ প্রথম
প্রকাশিত হয় ১৮৮২ খ্রিস্টাব্দের ১৫ ডিসেম্বর।
আনন্দমঠ উপন্যাসের পটভূমি : আনন্দমঠ উপন্যাসের পটভূমি হল অষ্টাদশ শতকের
সন্ন্যাসী-ফকির বিদ্রোহ ও ছিয়াত্তরের মন্বন্তর। আনন্দমঠে ছিয়াত্তরের মন্বন্তরের
মর্মস্পর্শী বর্ণনা আছে। এই উপন্যাসের মূল সুর হল দেশাত্মবোধ এবং পরাধীন
মাতৃভূমিকে মুক্ত করার জন্য সন্তানদের প্রবল প্রচেষ্টা।
সন্তান দল: বাংলায় মুসলিম রাজশক্তির পতন ও ইংরেজ রাজত্বের
প্রতিষ্ঠা এক নৈরাজ্যের সৃষ্টি করে। এই সংকটকালে ইংরেজ শাসনের অবসান ঘটিয়ে দেশমাতার মুক্তির জন্য
সন্তান দলের আবির্ভাব ঘটে। ‘আনন্দমঠ’উপন্যাসের
মূল চরিত্রই সন্তান দল। তাদের আদর্শ অনুসরণ করে দেশের যুবসমাজকে দেশমাতার
পরাধীনতার শৃঙ্খলমোচনের জন্য এগিয়ে আসার আহ্বান জানান
বঙ্কিমচন্দ্র।
আনন্দমঠের মূল বিষয় : আনন্দমঠ উপন্যাসে দেশের স্বাধীনতা অর্জনের জন্য
একদল আত্মত্যাগী সন্ন্যাসীর কার্যাবলির বিবরণ আছে। এই উপন্যাসে সত্যানন্দের
আহ্বানের মধ্যে ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে ভারতীয়দের জাতীয়তাবোধ জাগানোর চেষ্টা করা হয়েছে। আনন্দমঠ উপন্যাসে বঙ্কিমচন্দ্র পরাধীন দেশমাতার
লাঞ্ছিত রূপ তুলে ধরেছেন। তিনি এই দেশমাতার উদ্ধারের জন্য আত্মবলিদানে প্রস্তুত
একদল মাতৃভক্ত সন্তানের কথা বলে যুবসম্প্রদায়কে দেশপ্রেম ও সংগ্রামী
জাতীয়তাবাদের আদর্শে উদ্বুদ্ধ করতে চেয়েছেন। আনন্দমঠের আদর্শে উদ্বুদ্ধ হয়ে ভারতের চরমপন্থী
ও বিপ্লবীরা দেশকে মাতৃরূপে কল্পনা করে তাকে পরাধীনতার শৃঙ্খলমুক্ত করার কাজে
ব্রতী হন।
বন্দেমাতরম : বন্দেমাতরম গান ও স্লোগানটি আনন্দমঠ উপন্যাসের
অন্তর্ভুক্ত। ভারতীয়দের মধ্যে জাতীয়তাবাদের প্রসারে বন্দেমাতরম-এর অবদান
অপরিসীম। ১৮৯৬ খ্রিস্টাব্দে ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের কলকাতা অধিবেশনে রবীন্দ্রনাথ
ঠাকুর বন্দেমাতরম গানটি গেয়ে শ্রোতাদের মুগ্ধ করেছিলেন।
মূল্যায়ন : ভারতীয়দের মধ্যে জাতীয়তাবোধের বিকাশে বঙ্কিমচন্দ্রের আনন্দমঠ ও তাঁর বন্দেমাতরম গানটির
অবদান অপরিসীম। অধ্যাপক হীরেন্দ্রনাথ
দত্ত আনন্দমঠের স্রষ্টা বঙ্কিমচন্দ্রকে ভারতীয় জাতীয়তাবাদের ‘প্রকৃত জনক’ বলে
অভিহিত করেছেন (The
real father of Indian Nationalism)।
****যদি আপনাদের পোস্টটি ভালো
লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই শেয়ার করে অন্যদের পড়ার সু্যোগ করেদিন।****ধন্যবাদ*****
বলছিলাম কি এই যে উত্তর টা কত নম্বর এর জন্য???
উত্তরমুছুন4 মার্কের জন্য
মুছুনSir I am soumyadip and thanks you
উত্তরমুছুনস্যার,, বিশ শতকে জাতীয় রাজনীতিতে বামপন্থী প্রবণতা বৃদ্ধির কারনগুলি লেখো |
উত্তরমুছুন